ইসলামি পরকালবিদ্যা
এই নিবন্ধটিকে উইকিপিডিয়ার জন্য মানসম্পন্ন অবস্থায় আনতে এর বিষয়বস্তু পুনর্বিন্যস্ত করা প্রয়োজন। (জানুয়ারি ২০১৫) |
ইসলামি পরকালবিদ্যা হল ইসলামি বিদ্যার একটি শাখা যেখানে ইয়াওমাল ক্বিয়ামাহ (আরবি: ﻳﻮﻡ ﺍﻟﻘﻴﺎﻣﺔ "বাংলা: পুনরুত্থান দিবস") বা ইয়াওমিদ-দ্বীন (আরবি: ﻳﻮﻡ ﺍﻟﺪﻳﻦ বাংলা: বিচার দিবস") সম্পর্কে অধ্যয়ন করা হয়। মুসলমানগণ বিশ্বাস করেন যে, কিয়ামতের দিন আল্লাহ তায়ালা বিশ্বজগৎ ধ্বংস করবেন, মানব ও জ্বীন দেহের পুনুরুত্থান ঘটাবেন, তাদের বিচার করবেন এবং চিরস্থায়ীভাবে কর্মফল প্রদান করবেন।[২][৩][৪]
অন্যান্য আব্রাহামীয় ধর্মের অনুরূপ, শিক্ষা দেয় যে "ভবিষ্যতে কিছু অনির্ধারিত সময়ে" ভয়ানক "ক্লেশ" হবে, একটি "মশীহীয় ব্যক্তিত্ব" যিনি শৃঙ্খলা পুনরুদ্ধারের জন্য পৃথিবীতে ফিরে আসবেন, মৃতদের পুনরুত্থিত করা হবে, পৃথিবী শেষ হবে, এবং "ঈশ্বর সমস্ত মানুষের বিচার করবেন, ন্যায়সঙ্গতভাবে কিছু জান্নাতে এবং কিছু জাহান্নামে প্রবেশ করবে।
ঈমান বা বিশ্বাসের ছয়টি বিষয়
সম্পাদনাবিচার অথবা পুনরুত্থান দিবস "আল-ক্বিয়ামাহ" হল ইসলামের ছয়টি বিশ্বাসের মধ্যে একটি। পবিত্র কুরআন ও হাদিসে, এবং আল-গাজ্জালি, ইবনে কাসীর, ইবনে মাজাহ, ইমাম বুখারী, ইবনে খুজাইমাহ প্রমুখ[৫][৬][৭][৮][৯][১০] ইসলামি তাফসিরবিদদের তাফসিরসমূহে (ধারাবর্ণনা) সে সময়কার অসহনীয় যন্ত্রণাদায়ক পরিস্থিতি কথা বলা হয়েছে। কিয়ামত বা বিচার দিবসকে বিবেচনা দিবস (the Day of reckoning), প্রতীক্ষিত ঘণ্টা (the Hour) ও শেষ দিবসও (the Last Day) বলা হয়ে থাকে। বিচার বা পুনরুত্থান দিবস, আল-ক্বিয়ামাহ হল ইসলামের ছয়টি (সুন্নি) বা সাতটি (শিয়া) আকীদার (মূলনীতির) একটি অংশ।
কুরআনে শেষ বিচার
সম্পাদনাকুরআনে শেষ বিচারের বর্ণনা রয়েছে এবং এ সম্পর্কিত আয়াতসমূহের বহুসংখ্যক তফসির বা ব্যাখ্যা রয়েছে। এ সকল আয়াতসমূহের সারকথা নিম্নরুপ:
- এই নির্দিষ্ট সময়টি শুধু আল্লাহ পাকই জানেন।[১১]
- নবী হজরত মুহাম্মদ (স.) একে এগিয়ে নিয়ে আসতে পারবেন না।[১২]
- যারা মারা গিয়েছিল তারা মনে করবে যে, জন্ম ও মৃত্যুর মধ্যকার একটি স্বল্প সময় অতিক্রান্ত হয়েছে।[১৩] তখন আল্লাহ ছাড়া আর কিছুই অবশিষ্ট থাকবে না।[১৪]
- আল্লাহ সকলকে পুনরুত্থিত করবেন, এমনকি তারা যদি পাথর এবং লোহায় রূপান্তরিত হয় তবুও।[১৫]
- যারা মিথ্যা দেবদেবীকে উপাস্যরূপে গ্রহণ করেছিল তারা পরকালে শাস্তি ভোগ করবে।[১৬]
তিনটি পর্যায়
সম্পাদনাবড় লক্ষণ বা কিয়ামতের আলামতসমূহ
সম্পাদনা- মিথ্যা মসীহ বা মসীহ দাজ্জাল; একচোখ অন্ধ, একচোখ সুস্থ, কপালে লিখা থাকবে কাফির শব্দ এবং বিশাল ক্ষমতা নিয়ে জেরুজালেম থেকে আত্মপ্রকাশ করবে এবং নিজেকে আল্লাহ বলে মিথ্যা দাবি করবে।[১৯]
- ইমাম মাহদীর আত্মপ্রকাশ।[২০][২১][২২][২৩]
- মানুষ মদীনা ত্যাগ করবে, খাঁটি মুমিনগণ মাহদীকে অনুসরণ করবে এবং কাফিররা করবে দাজ্জালকে।
- দাজ্জাল সয়তানকে হত্যা এবং ইসলামকে প্রতিষ্ঠিত করার জন্য দ্বিতীয় আসমান থেকে ঈসা (আ.)-এর প্রত্যাবর্তন।[২৪] মৃত্যুর পূর্ব পর্যন্ত তিনি পৃথিবী শাসন করবেন।
- ইয়াজুজ ও মাজুজ নামক অবাধ্য প্রাণীর দুটি গোত্র, যারা জুলকারনাইনের সাহায্যে বন্দী হয়েছিল তারা বেরিয়ে আসবে।[২৫]
- মক্কায় আক্রমণ করা হবে এবং পবিত্র কাবাঘর[২৬] ধ্বংস করা হবে।
- দক্ষিণদিক থেকে এক সুখকর বাতাসের আগমণ যার স্পর্শে সকল মুমিনের প্রশান্তিময় মৃত্যু ঘটবে।
- মানুষ কুরআন ভুলে যাবে এবং কেউ এর আয়াত স্মরণ করবে না। কিয়ামতের চল্লিশ দিন পূর্বে পবিত্র আল কুরআন শরীফের আরবি হরফ মুছে যাবে।
- ইসলামি জ্ঞান লোপ পাবে যেখানে কেউ কালেমা "লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ" পাঠ করবে না, কিন্তু তার পরিবর্তে বৃদ্ধ লোকেরা না বুঝে "আল্লাহ, আল্লাহ" বলে বিড়বিড় করবে।
- দাব্বাতুল আরদ নামক পশু মানুষের সাথে কথা বলার জন্য ভূগর্ভ থেকে বেরিয়ে আসবে।[২৭]
- মানুষ রাস্তাঘাটে 'গাধাদের মত' ব্যভিচার করবে।
- একটি বিশাল কালো ধোঁয়ার মেঘ পৃথিবীকে ঢেকে ফেলবে।[২৮]
- কিয়ামতের চল্লিশ দিন পূর্বে পশ্চিমদিক থেকে সূর্য উঠবে।[২৯][৩০]
- ইস্রাফিল (আ.)-এর প্রথম শিঙার ফুঁকে আল্লাহর নিষিদ্ধ বস্তু ছাড়া সবকিছু ধ্বংস হবে ও চল্লিশ দিন নীরবতা থাকবে।
- দ্বিতীয় ফুঁকে সকল মৃত মানুষ পুনরুত্থিত হবে এবং একটি অগ্নিকুণ্ড তাদের বিচারের জন্য হাশরের মাঠে একত্রিত করবে।
কেয়ামতের ৭৭টি ছোট লক্ষণ বা আলামতসমূহ
সম্পাদনা- সময় খুব দ্রুত বয়ে যাবে। [বুখারী, মুসলিম, ও আহমাদ]
- ভাল কাজ হ্রাস পাবে। [বুখারী]
- মানুষ কৃপণ হয়ে যাবে। [বুখারী]
- খুন এবং হত্যা বেড়ে যাবে। [বুখারী, মুসলিম, ইবন মাজাহ, ও আহমাদ]
- ভুল ব্যক্তিকে ক্ষমতা ও কর্তৃত্ব দেওয়া হবে। [বুখারী]
- সততা হারিয়ে যাবে। [বুখারী]
- জ্ঞানের বিলোপ ও মূর্খতা বৃদ্ধি। [বুখারী, মুসলিম, ইবন মাজাহ, ও আহমাদ]
- ফোরাত নদীর তল থেকে একটি স্বর্ণের পাহাড় বের হবে ৷
- ৩০ জন ভন্ড নবীর আগমণ। [বুখারী]
- একই ধর্মের দুটি বৃহত্তর ধর্মীয় দল একে অপরের সঙ্গে লড়াই করে অসংখ্য দুর্ঘটনা ঘটাবে। [বুখারী ও মুসলিম]
- ভুমিকম্প বৃদ্ধি পাবে। [বুখারী ও মুসলিম]
- সম্পদের প্রাচুর্য এতটাই বৃদ্ধি পাবে যে যাকাত নেয়ার মত লোক খুঁজে পাওয়া কষ্টকর হবে। [বুখারী]
- যখন লোকেরা বড় বড় দালান তৈরি করতে একে অপরের সাথে প্রতিযোগিতায় লেগে যাবে। [বুখারী]
- কোন এক লোক কবরের পাশে দিয়ে হেটে যাবে আর আশা করবে যদি সে নিজে সেখানে থাকতে পারতো। [বুখারী]
- মুসলিমদের দ্বারা কনস্টানটিনোপল বিজয়। [আহমাদ, মুসলিম]
- গাছ ও পাথর ইহুদির বিরুদ্ধে লড়তে মুসলিমদের সাহায্য করবে।
- মাদকদ্রব্য গ্রহণ ব্যাপক বিস্তার লাভ করবে। [বুখারী ও মুসলিম]
- ব্যভিচার ও অবৈধ যৌন সম্পর্ক সহজ হয়ে যাবে। [বুখারী, মুসলিম, ইবন মাজাহ]
- নারীদের সংখ্যা পুরুষের তুলনায় বেড়ে যাবে, এমনকি একজন পুরুষের বিপরীতে হবে পঞ্চাশজন মহিলা হবে। [বুখারী, মুসলিম, ও আহমদ]
- মানুষ মসজিদের ক্ষমতার জন্য কঠোর সংগ্রাম করবে।
- ভাল মানুষেরা প্রতারিত হবে। [ইবন মাজাহ]
- যাকাত প্রদানকে সবাই বোঝা মনে করবে এবং কৃপণতা বেড়ে যাবে; দান করা হবে অনিচ্ছুকভাবে। [তিরমিযী, ইবন মাজাহ]
- নেতাগণ আল্লাহর বিধান অনুযায়ী শাসন করবেন না।
- শুধু ধনীরাই লাভের ভাগ পাবে, গরিবেরা পাবে না। [তিরমিযী]
- নিকৃষ্টতম লোকেরা জনগণের নেতা হবে।
মাহাদি
সম্পাদনাইমাম মাহদী (আরবী: مهدي,পথ প্রদর্শক) হচ্ছে কেয়ামতের পুর্বে আগমনকারী মুসলমানদেরকে নেতৃত্ব দানকরী শাসক,যিনি পৃথিবীতে সাত অথবা নয় বছর শাসন করবেন। তার কথা হাদিসের (ইসলামের শেষ নবী মুহাম্মদের বাণী) বহু জায়গায় বলা হয়েছে। তিনি মদিনায় জন্মগ্রহণ করবেন এবং তাকে দেখতে ইসলামের শেষ নবী মুহাম্মদ-এর মত লাগবে। যখন তার আগমনের সময় হবে তখন পৃথিবীতে অনেক নামধারী ইমাম মাহদির ছড়াছড়ি থাকবে। তার আগমন কিয়ামতের অন্যতম বড় আলামত।
পিউ গবেষণার মাধ্যমে ২০১২ সালের জরিপে দেখা গেছে যে বেশ কয়েকটি মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ দেশ (তুরস্ক, মালয়েশিয়া, আফগানিস্তান, পাকিস্তান, ইরাক, তিউনিসিয়া, লেবানন, মরক্কো) ৫০% বা তার বেশি উত্তরদাতারা মাহদীকে তাদের জীবদ্দশায় ফিরে আসার প্রত্যাশা করেছিল।[৩১][৩২]
ঈসা
সম্পাদনাদজ্জাল
সম্পাদনাদজ্জালের পরিচয়
সম্পাদনামহানবী (স.) দজ্জালকে স্বপ্নে দেখে তার শারীরিক গঠনের বর্ণনা প্রদান করেছেন। তিনি বলেন, দজ্জাল হবে স্থুলকায় লাল বর্ণের, কোঁকড়ানো চুল, এক চোখ কানা, চোখটি যেন ফোলা আঙ্গুরের মত।| সহীহ বুখারী, হাদীস সংখ্যা- ৭১২৮)[৩৩]
দাজ্জাল নির্বংশ হবে। তার কোন সন্তান থাকবে না। (সহীহ মুসলিম- কিতাবুল ফিতান)[৩৪]
দজ্জালকে চেনার সবচেয়ে বড় আলামত হল তার কপালে কাফির (كافر) লেখা থাকবে। (সহীহ বুখারী, হাদীস সংখ্যা- ৭১৩১)[৩৫] অপর বর্ণনায় আছে তার কপালে (ك ف ر) এই তিনটি বর্ণ লেখা থাকবে। প্রতিটি মুসলিম ব্যক্তিই তা পড়তে পারবে। (সহীহ মুসলিম- কিতাবুল ফিতান)[৩৬][৩৭]
- দজ্জালের সাথে থাকবে জান্নাত-জাহান্নাম
নবী বলেন, “দজ্জালের সাথে যা থাকবে তা আমি অবগত আছি। তার সাথে দু’টি নদী প্রবাহিত থাকবে। বাহ্যিক দৃষ্টিতে একটিতে সুন্দর পরিষ্কার পানি দেখা যাবে। অন্যটিতে দাউ দাউ করে আগুন জ্বলতে দেখা যাবে। যার সাথে দজ্জালের সাক্ষাৎ হবে সে যেন দজ্জালের আগুনে ঝাপ দিয়ে পড়ে এবং সেখান থেকে পান করে। কারণ উহা সুমিষ্ট পানি। তার চোখের উপরে মোটা আবরণ থাকবে। কপালে কাফের লেখা থাকবে। মূর্খ ও শিক্ষিত সকল ঈমানদার লোকই তা পড়তে সক্ষম হবে”। (সহীহ মুসলিম- কিতাবুল ফিতান)[৩৮][৩৯]
- জড় পদার্থ দজ্জালের ডাকে সাড়া দেবে
নবী বলেন “দজ্জাল এক জনসমাজে গিয়ে মানুষকে তার প্রতি ঈমান আনয়নের আহবান জানাবে। এতে তারা ঈমান আনবে। দাজ্জাল তাদের উপর বৃষ্টি বর্ষণ করার জন্য আকাশকে আদেশ দিবে। আকাশ বৃষ্টি বর্ষণ করবে, যমিন ফসল উৎপন্ন করবে এবং তাদের পশুপাল ও চতুষ্পদ জন্তুগুলো অধিক মোটা-তাজা হবে এবং পূর্বের তুলনায় বেশি দুধ প্রদান করবে। অতঃপর অন্য একটি জনসমাজে গিয়ে মানুষকে তার প্রতি ঈমান আনয়নের আহবান জানাবে। লোকেরা তার কথা প্রত্যাখান করবে। দজ্জাল তাদের নিকট থেকে ব্যর্থ হয়ে ফেরত আসবে। এতে তারা চরম অভাবে পড়বে। তাদের ক্ষেত-খামারে চরম ফসলহানি দেখা দিবে। দাজ্জাল পরিত্যক্ত ভূমিকে তার নিচে লুকায়িত গুপ্তধন বের করতে বলবে। গুপ্তধনগুলো বের হয়ে মৌমাছির দলের ন্যায় তার পিছে পিছে চলতে থাকবে”। (সহীহ মুসলিম- কিতাবুল ফিতান) [তথ্যসূত্র প্রয়োজন]
- মুমিন যুবককে হত্যা করে পুনরায় জীবিত করা
নবী (স.) বলেন, “দজ্জাল বের হলে একজন (বিশিষ্ট) ঈমানদার ব্যক্তি তার দিকে রওয়ানা হয়ে যাবে। খবর পেয়ে দজ্জালের পক্ষ থেকে তার অস্ত্রধারী ব্যক্তিরা গিয়ে তার সাথে মিলিত হবে। তারা তাঁকে জিজ্ঞেস করবে, ‘তুমি কোথায় যাওয়ার সংকল্প করেছে?’ তিনি বলবেন, ‘ঐ ব্যক্তির কাছে যে আবির্ভূত হয়েছে’। তখন তারা তাঁকে জিজ্ঞেস করবে, ‘তুমি কি আমাদের প্রভুর প্রতি ঈমান আনবে না?’ তিনি বলবেন, ‘আমাদের প্রভু সম্পর্কে কোন সন্দেহ নেই’। এরপর তারা পরস্পর বলবে, ‘একে হত্যা কর’। তারপর একে অপরকে বলবে, ‘তোমাদের প্রভু যে নিষেধ করেছেন যে, তোমরা তাকে না দেখিয়ে কাউকে হত্যা করবে না?’ রাবী বলেন, ‘অতঃপর তারা তাঁকে দজ্জালের নিকট নিয়ে যাবে। যখন মুমিন ব্যক্তি দজ্জালকে দেখতে পাবেন, বলবেন, ‘হে জনগণ! এ তো সেই দজ্জাল যার কথা রাসূলুল্লাহ আলোচনা করেছেন’। এরপর দজ্জালের আদেশে তার চেহারাকে ক্ষত-বিক্ষত করা হবে। বলা হবে, একে ধরে চেহারা ক্ষত-বিক্ষত করে দাও। এরপর তার পেট ও পিঠকে পিটিয়ে বিছিয়ে ফেলা হবে। তারপর দজ্জাল জিজ্ঞেস করবে, ‘আমার প্রতি ঈমান আনবে না?’ তিনি বলবেন, ‘তুমি তো মিথ্যাবাদী মসীহ দজ্জাল’। এ কথা শুনে তাঁকে কুড়াল দিয়ে খণ্ড-বিখণ্ড করে ফেলার জন্য আদেশে করা হবে। তার আদেশে তাঁকে প্রথমে দু’পা আলগা করে খণ্ড করা হবে। অতঃপর দাজ্জাল খণ্ডিত টুকরাদ্বয়ের মাঝখানে এসে তাঁকে লক্ষ্য করে বলবে, ‘উঠ!’ তৎক্ষণাৎ তিনি সোজা হয়ে দাঁড়াবেন। তারপর আবার দজ্জাল তাঁকে জিজ্ঞেস করবে, ‘এবার আমার প্রতি ঈমান আনবে কি?’ তখন তিনি বলবেন, ‘আমি তো তোমার সম্পর্কে আরও অধিক অভিজ্ঞতা লাভ করেছি’। অতঃপর তিনি উপস্থিত জনতাকে লক্ষ্য করে বলবেন, ‘হে লোক সকল! মনে রেখ, দাজ্জাল আমার পরে আর কোন মানুষের উপর কর্তৃত্ব চালাতে পারবে না’। রাবী বলেন, ‘এরপর দাজ্জাল তাঁকে জবাই করার জন্য ধরবে এবং তার গলা ও ঘাড়ে তামা জড়িয়ে দিতে চেষ্টা করবে। কিন্তু এ পর্যায়ে পৌঁছতে সক্ষম হবে না। অতঃপর তার হাত পা ধরে তাকে নিক্ষেপ করবে। মানুষ ধারণা করবে বুঝি আগুনে ফেলে দিয়েছে। প্রকৃতপক্ষে তাঁকে জান্নাতে পৌঁছিয়ে দেয়া হয়েছে’। রাসূল বলেন, “রাব্বুল আলামীনের নিকট এ ব্যক্তি সবচেয়ে বড় শাহাদাতের মর্যাদা লাভ করবেন”। (সহীহ মুসলিম- কিতাবুল ফিতান)[৪০]
দজ্জালের বের হবার স্থান
সম্পাদনানবী (স.) বলেন,
পূর্বের কোন একটি দেশ থেকে দজ্জালের আবির্ভাব ঘটবে যার বর্তমান নাম খোরাসান।
— (তিরমিজী- কিতাবুল ফিতান)[৪১]
হাদীসটি হাসান।
দজ্জালের পৃথিবীতে অবস্থান
সম্পাদনাসাহাবীগণ রাসূল কে জিজ্ঞেস করেছেন দাজ্জাল পৃথিবীতে কত দিন অবস্থান করবে। উত্তরে তিনি বলেছেন, “সে চল্লিশ দিন অবস্থান করবে। প্রথম দিনটি হবে এক বছরের মত লম্বা। দ্বিতীয় দিনটি হবে এক মাসের মত। তৃতীয় দিনটি হবে এক সপ্তাহের মত। আর বাকী দিনগুলো দুনিয়ার স্বাভাবিক দিনের মতই হবে”। আমরা বললাম, “যে দিনটি এক বছরের মত দীর্ঘ হবে সে দিন কি এক দিনের নামাযই যথেষ্ট হবে?” উত্তরে তিনি বললেন, “না, বরং তোমরা অনুমান করে সময় নির্ধারণ করে নামায পড়বে”। (সহীহ মুসলিম- কিতাবুল ফিতান)[তথ্যসূত্র প্রয়োজন]
দজ্জাল মক্কা-মদীনায় প্রবেশ করতে পারবে না
সম্পাদনাসহীহ হাদীসের বিবরণ অনুযায়ী, দাজ্জালের জন্যে মক্কা ও মদীনাতে প্রবেশ নিষিদ্ধ থাকবে। মক্কা ও মদীনা ব্যতীত পৃথিবীর সকল স্থানেই সে প্রবেশ করবে। [বিস্তারিত দেখুন দাজ্জালের বর্তমান অবস্থান শীর্ষক অনুচ্ছেদটিতে] অন্য একটি বর্ণনায় পাওয়া যায়, নবী বলেন, “দাজ্জাল আসবে। অবশেষে মদীনার এক পার্শ্বে অবতরণ করবে। (এ সময় মদীনা) তিনবার কেঁপে উঠবে। তখন সকল কাফির ও মুনাফিক বের হয়ে তার নিকট চলে আসবে”। (সহীহ বুখারী, হাদীস সংখ্যা- ৭১২৪)[৪২]
দজ্জালের অনুসারীগণ
সম্পাদনানবী (স.) বলেন, “ইসফাহানের সত্তর হাজার ইহুদী দাজ্জালের অনুসরণ করবে। তাদের সবার পরনে থাকবে সেলাই বিহীন চাদর”। (সহীহ মুসলিম- কিতাবুল ফিতান)[৪৩]
দজ্জালের শেষ পরিণতি
সম্পাদনাসহীহ হাদীসের বিবরণ অনুযায়ী, ঈসা ইবনে মারইয়াম এর হাতে দাজ্জাল নিহত হবে। বিস্তারিত বিবরণ এই যে, মক্কা-মদীনা ব্যতীত পৃথিবীর সকল দেশেই সে প্রবেশ করে ব্যাপক বিপর্যয় সৃষ্টি করবে। সামান্য সংখ্যক মুমিনই তার এই বিপর্যয়ের হাত থেকে রক্ষা পাবে। ঠিক সে সময় জেরুজালেম শহরের বায়তুল মুকাদ্দাস মসজিদের সাদা মিনারের উপর ঈসা দুইজন ফেরেশতার সাহায্যে আকাশ থেকে অবতরণ করবেন। মুসলমানগণ তার পার্শ্বে একত্রিত হবে। তাদেরকে সাথে নিয়ে তিনি দাজ্জালের দিকে রওনা দিবেন। দাজ্জাল সে সময় বায়তুল মুকাদ্দিসের দিকে অগ্রসর হতে থাকবে। অতঃপর ঈসা ফিলিস্তিনের লুদ্দ শহরের দ্বারপ্রান্তে দাজ্জালকে পাকড়াও করবেন এবং তাকে হত্যা করবেন। (সহীহ মুসলিম- কিতাবুল ফিতান) [তথ্যসূত্র প্রয়োজন]
দজ্জাল সম্পর্কিত অন্যান্য হাদীস
সম্পাদনানাওয়াস বিন সামআন বলেন, “একদা রাসূল সকাল বেলা আমাদের কাছে দাজ্জালের বর্ণনা করলেন। তিনি তার ফিতনাকে খুব বড় করে তুলে ধরলেন। বর্ণনা শুনে আমরা মনে করলাম নিকটস্থ খেজুরের বাগানের পাশেই সে হয়ত অবস্থান করছে। আমরা রাসূল এর নিকট থেকে চলে গেলাম। কিছুক্ষণ পর আমরা আবার তার কাছে গেলাম। এবার তিনি আমাদের অবস্থা বুঝে জিজ্ঞেস করলেন, “তোমাদের কি হল?” আমরা বললাম, “হে আল্লাহ্র রসূল! আপনি যেভাবে দাজ্জালের আলোচনা করেছেন তা শুনে আমরা ভাবলাম হতে পারে সে খেজুরের বাগানের ভিতরেই রয়েছে”। নবী বললেন, “দাজ্জাল ছাড়া তোমাদের উপর আমার আরও ভয় রয়েছে। আমি তোমাদের মাঝে জীবিত থাকতেই যদি দাজ্জাল আগমন করে তাহলে তোমাদেরকে ছাড়া আমি একাই তার বিরুদ্ধে ঝগড়া করব। আর আমি চলে যাওয়ার পর যদি সে আগমন করে তাহলে প্রত্যেক ব্যক্তিই নিজেকে হেফাযত করবে। আর আমি চলে গেলে আল্লাহই প্রতিটি মুসলিমকে হেফাযতকারী হিসেবে যথেষ্ট”। (তিরমিজী- কিতাবুল ফিতান)[৪৪] হাদীসটি সহীহ।
আবদুল্লাহ ইবনু উমার বলেন, “নবী লোক সমাবেশে দাঁড়ালেন এবং মহান আল্লাহ্র প্রশংসা করলেন। এরপর তিনি দাজ্জাল প্রসঙ্গে বললেন, “তার সম্পর্কে আমি তোমাদেরকে সতর্ক করছি। এমন কোন নবী নেই যিনি তার কওমকে এ বিষয়ে সতর্ক করেননি। তবে তার সম্পর্কে আমি তোমাদের এমন একটি কথা বলব যা কোন নবীই তারা জাতিকে বলেননি। তা হল যে, সে কানা হবে আর আল্লাহ্ অবশ্যই কানা নন”। (সহীহ বুখারী, হাদীস সংখ্যা- ৭১২৭)[৪৫]
আয়িশাহ হতে বর্ণিত। তিনি বলেন যে, “আমি রসূলুল্লাহ কে নামাযের ভিতরে দাজ্জালের ফিত্না থেকে আশ্রয় চাইতে শুনেছি”। (সহীহ বুখারী, হাদীস সংখ্যা- ৭১২৯)[৪৬] তিনি নামাযের শেষ তাশাহুদে বলতেন, “হে আল্লাহ! আমি আপনার কাছে কবরের আযাব, জাহান্নামের আযাব, জীবন-মরণের ফিতনা এবং মিথ্যুক দাজ্জালের ফিতনা থেকে আশ্রয় চাই”। (সহীহ বুখারী, হাদীস সংখ্যা- ১৩৭৭)[৪৭]
ইয়াজুজ মাজুজ
সম্পাদনাইয়াজুজ মাজুজের পরিচয়
সম্পাদনাসহীহ হাদীস থেকে জানা যায়, তারা আদম এর বংশধর। প্রমাণ স্বরূপ সহীহ বুখারীর হাদীসটি উল্লেখযোগ্য। নবী বলেন,“রোজ হাশরে আল্লাহ্ তা’আলা আদমকে বলবেন, ‘হে আদম’! আদম বলবেন, ‘আমি আপনার দরবারে উপস্থিত আছি। সমস্ত কল্যাণ আপনার হাতে’। আল্লাহ্ বলবেন, ‘জাহান্নামের বাহিনীকে আলাদা কর’। আদম বলবেন, ‘কারা জাহান্নামের অধিবাসী’? আল্লাহ্ বলবেন, ‘প্রতি হাজারের মধ্যে নয়শত নিরানব্বই জন’। ‘এ সময় শিশু সন্তান বৃদ্ধ হয়ে যাবে, গর্ভবতী মহিলাদের গর্ভের সন্তান পড়ে যাবে এবং মানুষদেরকে আপনি মাতাল অবস্থায় দেখতে পাবেন। অথচ তারা মাতাল নয়। আল্লাহ্র শাস্তির ভয়াবহতা অবলোকন করার কারণেই তাদেরকে মাতালের মত দেখা যাবে’। (সূরা হাজ্জঃ ২) সাহাবীগণ বললেন, “হে আল্লাহ্র রসূল! আমাদের মধ্যে সেই একজন কে”? তিনি বললেন,“তোমরা সুসংবাদ গ্রহণ কর। কেননা তোমাদের মধ্য হতে একজন আর এক হাজারের অবশিষ্ট ইয়াজুজ মাজুজ হবে”। অতঃপর তিনি বললেন, “যাঁর হাতে আমার প্রাণ, তার কসম। আমি আশা করি, তোমরা জান্নাতীদের চারভাগের এক ভাগ হবে”। [আবূ সা’ঈদ বলেন] আমরা এটা শুনে ‘আল্লাহু আকবার’ বলে তাকবীর পাঠ করলাম। তারপর নবী বললেন, “আমি আশা করি, তোমরা সমস্ত জান্নাতবাসীর এক তৃতীয়াংশ হবে”। আমরা এ সংবাদ শুনে আবার ‘আল্লাহু আকবার’ বলে তাকবীর দিলাম। তিনি আবার বললেন, “আমি আশা করি তোমরা সমস্ত জান্নাতীদের অর্ধেক হবে”। এ কথা শুনে আমরা আবারও ‘আল্লাহু আকবার’ বলে তাকবীর দিলাম। তিনি বললেন, “তোমরা তো অন্যান্য মানুষের তুলনায় এমন, যেমন সাদা ষাঁড়ের দেহে কয়েকটি কাল পশম অথবা কালো ষাঁড়ের শরীরে কয়েকটি সাদা পশম”। (সহীহ বুখারী, হাদীস সংখ্যা- ৩৩৪৮)[৪৮]
ইয়াজুজ মাজুজের আগমন
সম্পাদনাকুরআন ও সহীহ হাদীসের বর্ণনা থেকে যা জানা যায়, তাহলো কিয়ামতের পূর্বমুহূর্তে তারা মানব সমাজে চলে এসে ব্যাপক অশান্তি ও বিপর্যয় সৃষ্টি করবে। রাসূল বলেন, “ইয়াজুজ মাজুজ প্রাচীরের ভিতর থেকে বের হওয়ার জন্য প্রতিদিন খনন কাজে লিপ্ত রয়েছে। খনন করতে করতে যখন তারা বের হওয়ার কাছাঁকাছি এসে যায় এবং সূর্যের রশ্মি দেখতে পায় তখন তাদের নেতা বলেঃ ফিরে চলে যাও, আগামীকাল এসে খনন কাজ শেষ করে সকাল সকাল বের হয়ে যাব। আল্লাহ্ তা’আলা রাত্রিতে প্রাচীরকে আগের চেয়ে আরও শক্তভাবে বন্ধ করে দেন। প্রতিদিন এভাবেই তাদের কাজ চলতে থাকে। অতঃপর আল্লাহ্ কর্তৃক নির্ধারিত মেয়াদ যখন শেষ হবে এবং তিনি তাদেরকে বের করতে চাইবেন তখন তারা খনন করবে এবং খনন করতে করতে যখন সূর্যের রশ্মি দেখতে পাবে তখন তাদের নেতা বলবেঃ ফিরে চলে যাও। ইনশা-আল্লাহ্ (যদি আল্লাহ্ চান) আগামীকাল এসে খনন কাজ শেষ করে সকাল সকাল বের হয়ে যাব। এবার তারা ইনশা-আল্লাহ্ বলবে। অথচ এর আগে কখনও তা বলেনি। তাই পরের দিন এসে দেখবে যেভাবে রেখে গিয়েছিল সেভাবেই রয়ে গেছে। অতি সহজেই তা খনন করে মানব সমাজে বের হয়ে আসবে। তারা পৃথিবীর নদী-নালার সমস্ত পানি পান করে ফেলবে। এমনকি তাদের প্রথম দল কোন একটি নদীর পাশে গিয়ে নদীর সমস্ত পানি পান করে শুকিয়ে ফেলবে। পরবর্তী দলটি সেখানে এসে কোন পানি দেখতে না পেয়ে বলবেঃ এখানে তো এক সময় পানি ছিল। তাদের ভয়ে লোকেরা নিজ নিজ সহায়-সম্পদ নিয়ে অবরুদ্ধ শহর অথবা দুর্গের মধ্যে প্রবেশ করবে। ইয়াজুজ মাজুজের দল যখন পৃথিবীতে কোন মানুষ দেখতে পাবেনা তখন তাদের একজন বলবে যমিনের সকল অধিবাসীকে খতম করেছি। আকাশের অধিবাসীরা বাকী রয়েছে। এই বলে তারা আকাশের দিকে তীর নিক্ষেপ করবে। রক্ত মিশ্রিত হয়ে তীর ফেরত আসবে। তখন তারা বলবে যমিনের অধিবাসীকে পরাজিত করেছি এবং আকাশের অধিবাসী পর্যন্ত পৌঁছে গেছি। অতঃপর আল্লাহ্ তাদের ঘাড়ে ‘নাগাফ’ নামক এক শ্রেণীর পোঁকা প্রেরণ করবেন। এতে এক সময়ে একটি প্রাণী মৃত্যু বরণ করার মতই তারা সকলেই হালাক হয়ে যাবে”। নবী বলেন, “আল্লাহ্র শপথ! তাদের মরা দেহ এবং চর্বি ভক্ষণ করে যমিনের জীব-জন্তু ও কীটপতঙ্গ মোটা হয়ে যাবে এবং আল্লাহ্র শুকরিয়া আদায় করবে”। (ইবনে মাজাহ্, হাদীস সংখ্যা- ৪০৮০)[৪৯]
তবে নির্দিষ্টভাবে তাদের আগমন হবে ঈসা এর আগমন এবং দাজ্জালকে পরাজিত করার পর। নবী বলেন, “অতঃপর ঈসা এর নিকট এমন কিছু লোক আসবেন, যাদেরকে আল্লাহ্ তা’আলা দাজ্জালের ফিতনা হতে হেফাযত করেছেন। তিনি তাদের চেহারায় হাত বুলাবেন এবং জান্নাতের মধ্যে তাদের উচ্চ মর্যাদা সম্পর্কে সংবাদ দিবেন। ঈসা যখন এ অবস্থায় থাকবেন তখন আল্লাহ্ তা’আলা তাকে জানাবেন যে, আমি এমন একটি জাতি বের করেছি, যাদের সাথে মোকাবেলা করার ক্ষমতা কারো নেই। কাজেই আপনি আমার বান্দাদেরকে নিয়ে তুর পাহাড়ে উঠে যান। এ সময় আল্লাহ্ তা’আলা ইয়াজুজ মাজুজের বাহিনী প্রেরণ করবেন। তারা প্রত্যেক উঁচু ভূমি থেকে বের হয়ে আসবে। তাদের প্রথম দলটি ফিলিস্তিনের তাবারীয়া জলাশয়ের সমস্ত পানি পান করে ফেলবে। তাদের শেষ দলটি সেখানে এসে কোন পানি না পেয়ে বলবেঃ এক সময় এখানে পানি ছিল। তারা আল্লাহ্র নবী ও তার সাথীদেরকে অবরোধ করে রাখবে। ঈসা ও তার সাথীগণ প্রচণ্ড খাদ্যাভাবে পড়বেন। এমনকি বর্তমানে তোমাদের কাছে একশত স্বর্ণ মুদ্রার চেয়ে তাদের কাছে একটি গরুর মাথা তখন বেশি প্রিয় হবে। আল্লাহ্র নবী ঈসা ও তার সাথীগণ এই ফিতনা থেকে মুক্তি পাওয়ার জন্য আল্লাহ্র কাছে দু’আ করবেন। আল্লাহ্ তাদের দু’আ কবুল করে ইয়াজুজ মাজুজের ঘাড়ে ‘নাগাফ’ নামক একশ্রেণীর পোঁকা প্রেরণ করবেন। এতে এক সময়ে একটি প্রাণী মৃত্যু বরণ করার মতই তারা সকলেই হালাক হয়ে যাবে। অতঃপর আল্লাহ্র নবী ঈসা ও তার সাহাবীগণ যমিনে নেমে এসে দেখবেন ইয়াজুজ মাজুজের মরা-পচা লাশ ও তাদের শরীরের চর্বিতে সমগ্র যমিন ভরপুর হয়ে গেছে। কোথাও অর্ধহাত জায়গাও খালি নেই। আল্লাহ্র নবী ঈসা তার সাথীগণ আল্লাহ্র কাছে আবার দু’আ করবেন। আল্লাহ্ তাদের দু’আ কবুল করে উটের গর্দানের মত লম্বা লম্বা একদল পাখি পাঠাবেন। আল্লাহ্র আদেশে পাখিগুলো তাদেরকে অন্যত্র নিক্ষেপ করে পৃথিবীকে পরিষ্কার করবে। অতঃপর আল্লাহ্ তা’আলা প্রচুর বৃষ্টি বর্ষণ করবেন। এতে পৃথিবী একেবারে আয়নার মত পরিষ্কার হয়ে যাবে”। (সহীহ মুসলিম)[৫০] [বিশেষ দ্রষ্টব্যঃ মূল হাদীসের যে অংশে ইয়াজুজ মাজুজ প্রসঙ্গ এসেছে শুধুমাত্র ততটুকুই উল্লেখিত হয়েছে।]
কুরআন ও সহীহ হাদীসে ইয়াজুজ মাজুজ
সম্পাদনাকুরআন মাজীদের সূরা আল-কাহফে ইয়াজুজ মাজুজের বিবরণ এসেছে। আল্লাহ তা’আলা বলেন,
“ | এরপর সে আরেক পথ ধরল। চলতে চলতে সে দু’ পাহাড়ের মাঝে এসে পৌঁছল। সেখানে সে এক সম্প্রদায়কে দেখতে পেল। যারা কথাবার্তা কমই বুঝতে পারে। তারা বলল, ‘হে যুলক্বারনায়ন! ইয়াজুজ মাজুজ পৃথিবীতে অশান্তি সৃষ্টি করছে, অতএব আমরা কি আপনাকে কর দেব যে, আপনি আমাদের ও তাদের মাঝে একটা বাঁধ নির্মাণ করে দেবেন?’ সে বলল, ‘আমাকে আমার প্রতিপালক যা দিয়েছেন তা-ই যথেষ্ট, কাজেই তোমরা আমাকে শক্তি-শ্রম দিয়ে সাহায্য কর, আমি তোমাদের ও তাদের মাঝে এক সুদৃঢ় প্রাচীর গড়ে দেব। আমার কাছে লোহার পাত এনে দাও’। শেষ পর্যন্ত যখন সে দু’পাহাড়ের মাঝের ফাঁকা জায়গা পুরোপুরি ভরাট করে দিল সে বলল, ‘তোমরা হাপরে দম দিতে থাক’। শেষ পর্যন্ত যখন তা আগুনের মত লাল হয়ে গেল তখন সে বলল, ‘আনো, আমি এর উপর গলিত তামা ঢেলে দেব’। এরপর তারা (অর্থাৎ ইয়াজুজ মাজুজ) তা অতিক্রম করতে পারবে না, আর তা ভেদ করতেও পারবে না। সে বলল, ‘এ আমার প্রতিপালকের করুণা, যখন আমার প্রতিপালকের ওয়া’দার নির্দিষ্ট সময় আসবে, তখন তিনি তাকে ধূলিসাৎ করে দেবেন আর আমার প্রতিপালকের ওয়া’দা সত্য’। আমি তাদেরকে সেদিন এমন অবস্থায় ছেড়ে দেব যে, তারা একদল আরেক দলের উপর তরঙ্গমালার মত পড়বে। আর শিঙ্গায় ফুঁক দেয়া হবে। অতঃপর আমরা সব মানুষকে একসঙ্গে একত্রিত করব। (সূরাহ আল-কাহ্ফঃ ৯২-৯৯) | ” |
কিয়ামতের পূর্বে পাহাড় ভেদ করে ইয়াজুজ মাজুজের আগমন সম্পর্কে আল্লাহ্ তা’আলা অন্যত্র বলেন,
“ | এমনকি (তখনও তারা ফিরে আসবে না) যখন ইয়াজুজ ও মাজুজের জন্য (প্রাচীর) খুলে দেয়া হবে আর তারা প্রতিটি পাহাড় কেটে ছুটে আসবে। সত্য ওয়া’দার (পূর্ণতার) সময় ঘনিয়ে আসবে, তখন আতঙ্কে কাফিরদের চক্ষু স্থির হয়ে যাবে। (তখন তারা বলবে) হায়! আমরা তো এ ব্যাপারে উদাসীন ছিলাম, না, আমরা ছিলাম অন্যায়কারী। (সূরা আল-আম্বিয়াঃ ৯৬-৯৭) | ” |
যায়নাব বিনতে জাহাশ (রা.) হতে বর্ণিত।
একবার নবী (স.) ভীত সন্ত্রস্ত অবস্থায় তার নিকট আসলেন এবং বলতে লাগলেন, “লা-ইলাহা ইল্লাল্লাহ্। আরবের লোকদের জন্য সেই অনিষ্টের কারণে ধ্বংস অনিবার্য যা নিকটবর্তী হয়েছে। আজ ইয়াজুজ মাজুজের প্রাচীর এ পরিমাণ খুলে গেছে”। এ কথা বলার সময় তিনি তার বৃদ্ধাঙ্গুলির অগ্রভাগকে তার সঙ্গের শাহাদাত আঙ্গুলের অগ্রভাগের সঙ্গে মিলিয়ে গোলাকার করে ছিদ্রের পরিমাণ দেখান। যায়নাব বিনতে জাহাশ (রা) বলেন, তখন আমি বললাম, “হে আল্লাহ্র রসূল! আমাদের মধ্যে পুণ্যবান লোকজন থাকা সত্ত্বেও কি আমরা ধ্বংস হয়ে যাব?” তিনি বললেন, “হ্যাঁ, যখন পাপকাজ অতি মাত্রায় বেড়ে যাবে”। (সহীহ বুখারী, হাদীস সংখ্যা- ৩৩৪৬)[৫১]
সাহিত্যে ইসলামি পরকালবিদ্যা
সম্পাদনাইবনে আন নাফীস পরকালবিদ্যা সম্পর্কে তার Theologus Autodidactus গ্রন্থে (১২৭০ সালে) বিজ্ঞান এবং ইসলামিক দর্শন থেকে ব্যাখ্যা করেন কীভাবে কিয়ামতে বিশ্বাস করতে হয়।[৫২]
আরও দেখুন
সম্পাদনাতথ্যসূত্র
সম্পাদনা- ↑ L.), Wescoat, Jr (James; Wescoat, James L.; Wolschke-Bulmahn, Joachim (১৯৯৬)। Mughal Gardens: Sources, Places, Representations, and Prospects (ইংরেজি ভাষায়)। Dumbarton Oaks। আইএসবিএন 978-0-88402-235-0। ২৯ জুলাই ২০২০ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৬ আগস্ট ২০২০।
- ↑ "Eschatology"। Oxford Islamic Studies Online। ২০১৭-০৭-৩০ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০২০-০৮-০৬।
- ↑ Smith, Jane I. (২০০৬)। "Eschatology"। McAuliffe, Jane Dammen। Encyclopaedia of the Qurʾān। II। Leiden: Brill Publishers। আইএসবিএন 978-90-04-14743-0। ডিওআই:10.1163/1875-3922_q3_EQCOM_00055।
- ↑ Hasson, Isaac (২০০৬)। "Last Judgment"। McAuliffe, Jane Dammen। Encyclopaedia of the Qurʾān। III। Leiden: Brill Publishers। আইএসবিএন 978-90-04-14743-0। ডিওআই:10.1163/1875-3922_q3_EQCOM_00105।
- ↑ Gardet, L.। Qiyama। Encyclopaedia of the Qurʾān।
- ↑ কুরআন ৭৪:৩৮
- ↑ কুরআন ৭১:১৮
- ↑ কুরআন ৩১:৩৪
- ↑ কুরআন ৭৪:৪৭
- ↑ কুরআন ২:৮
- ↑ কুরআন ৩৩:৬৩
- ↑ কুরআন ৬:৫৭
- ↑ কুরআন ১০:৪৫
- ↑ কুরআন ২৮:৮৮
- ↑ কুরআন ১৭:৪৯
- ↑ Quran 11:17, ২৯ মে ২০১৬ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা, সংগ্রহের তারিখ ২৬ জুন ২০১৪
- ↑ Hooper, Rev. Richard (২০ এপ্রিল ২০১১)। End of Days: Predictions of the End From Ancient Sources। Sedona, AZ। পৃষ্ঠা 156। ২৩ জানুয়ারি ২০২১ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৪ জুন ২০১৬।
- ↑ Yahya, Harun (১ জানুয়ারি ২০০৮)। Clarity Amidst Confusion: Imam Mahdi and the End of Time। Global Publishing. Kindle Edition.। পৃষ্ঠা 64।
- ↑ Dodge, Christine Huda. (২০০৯)। The everything understanding Islam book : a complete guide to Muslim beliefs, practices, and culture (২য় সংস্করণ)। Avon, MA: Adams Media Corp। আইএসবিএন 978-1-4405-2144-7। ওসিএলসি 777401314।
- ↑ Jon R. Stone। Expecting Armageddon: Essential Readings in Failed Prophecy। ৩০ ডিসেম্বর ২০১৯ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৯ জানুয়ারি ২০১৮।
- ↑ "Hadith – Book of Tribulations – Sunan Ibn Majah – Sunnah.com – Sayings and Teachings of Prophet Muhammad (صلى الله عليه و سلم)"। sunnah.com। ২০১৭-০৫-১২ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০১৭-০৩-০৩।
- ↑ "Hadith – Book of Tribulations – Sunan Ibn Majah – Sunnah.com – Sayings and Teachings of Prophet Muhammad (صلى الله عليه و سلم)"। sunnah.com। ২০১৭-০৩-০৩ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০১৭-০৩-০৩।
- ↑ Richardson, Joel (২০০৬)। Antichrist: Islam's Awaited Messiah (ইংরেজি ভাষায়)। Pleasant Word। আইএসবিএন 978-1-4141-0440-9। ১ জানুয়ারি ২০২০ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৬ আগস্ট ২০২০।
- ↑ Esposito, John L. (২০১১-০৭-১৩)। What Everyone Needs to Know about Islam: Second Edition (ইংরেজি ভাষায়)। Oxford University Press, USA। পৃষ্ঠা ২৮। আইএসবিএন 978-0-19-979413-3। ২০১৬-১১-২৪ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০২০-০৮-০৬।
- ↑ Robinson, Neal (১৯৯৯)। Islam: A Concise Introduction (ইংরেজি ভাষায়)। Curzon। আইএসবিএন 978-0-7007-1100-0। ২১ অক্টোবর ২০২০ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৬ আগস্ট ২০২০।
- ↑ সহীহ মুসলিম, ৪১:৬৯৫১ (ইংরেজি)
- ↑ কুরআন ২৭:৮২
- ↑ কুরআন ৪৪:১০
- ↑ "ar:طلوع الشمس من مغربها" [Rising of the sun from the west] (Arabic ভাষায়)। ৬ নভেম্বর ২০১৮ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৯ জানুয়ারি ২০১৮।
- ↑ Alwi Shihab। Examining Islam in the West। পৃষ্ঠা 16। ২৭ এপ্রিল ২০১৭ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৯ জানুয়ারি ২০১৮।
- ↑ NW, 1615 L. St; Washington, Suite 800; Inquiries, DC 20036 USA202-419-4300 | Main202-419-4349 | Fax202-419-4372 | Media (২০১২-০৮-০৯)। "Muslim Adherence to Articles of Faith"। Pew Research Center's Religion & Public Life Project (ইংরেজি ভাষায়)। ২০২০-১০-১৬ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০২০-০৮-০৬।
- ↑ Akyol, Mustafa (২০১৬-১০-০৩)। "Opinion | The Problem With the Islamic Apocalypse"। The New York Times (ইংরেজি ভাষায়)। আইএসএসএন 0362-4331। ২০২০-১১-০৮ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০২০-০৮-০৬।
- ↑ "সহীহ বুখারী, হাদীস সংখ্যা- ৭১২৮"। ২৭ আগস্ট ২০১৪ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৩০ জানুয়ারি ২০১৫।
- ↑ "দাজ্জালের পরিচয়"। ১ সেপ্টেম্বর ২০১৪ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৩০ জানুয়ারি ২০১৫।
- ↑ "সহীহ বুখারী, হাদীস সংখ্যা- ৭১৩১"। ২ সেপ্টেম্বর ২০১৪ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৩০ জানুয়ারি ২০১৫।
- ↑ "দাজ্জালের কপালের চিহ্ন ১"। ২৯ আগস্ট ২০১৪ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৩০ জানুয়ারি ২০১৫।
- ↑ "দাজ্জালের কপালের চিহ্ন ২"। ১৮ অক্টোবর ২০১৪ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৩০ জানুয়ারি ২০১৫।
- ↑ "দাজ্জালের জান্নাত-জাহান্নাম"। ১ সেপ্টেম্বর ২০১৪ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৩০ জানুয়ারি ২০১৫।
- ↑ "সহীহ বুখারী, হাদীস সংখ্যা-৭১৩০"। ২ সেপ্টেম্বর ২০১৪ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৩০ জানুয়ারি ২০১৫।
- ↑ "মু'মিন যুবককে হত্যা করে পুনরায় জীবিত করা"। ২৭ ডিসেম্বর ২০১৪ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৩০ জানুয়ারি ২০১৫।
- ↑ "দাজ্জালের বের হবার স্থান"। ২৩ জানুয়ারি ২০২১ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৩০ জানুয়ারি ২০১৫।
- ↑ "সহীহ বুখারী, হাদীস সংখ্যা- ৭১২৪"। ২ সেপ্টেম্বর ২০১৪ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৩০ জানুয়ারি ২০১৫।
- ↑ "দাজ্জালের অনুসারীগণ"। ১ সেপ্টেম্বর ২০১৪ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৩০ জানুয়ারি ২০১৫।
- ↑ "দাজ্জালের হাদীস"। ১৫ নভেম্বর ২০১৪ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৩০ জানুয়ারি ২০১৫।
- ↑ "সহীহ বুখারী, হাদীস সংখ্যা- ৭১২৭"। ১৭ অক্টোবর ২০১৪ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৩০ জানুয়ারি ২০১৫।
- ↑ "সহীহ বুখারী, হাদীস সংখ্যা- ৭১২৯"। ১১ জানুয়ারি ২০১৫ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৩০ জানুয়ারি ২০১৫।
- ↑ "সহীহ বুখারী, হাদীস সংখ্যা- ১৩৭৭"। ২ সেপ্টেম্বর ২০১৪ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৩০ জানুয়ারি ২০১৫।
- ↑ "সহীহ বুখারী, হাদীস সংখ্যা- ৩৩৪৮"। ১৭ নভেম্বর ২০১৪ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৭ জানুয়ারি ২০১৫।
- ↑ ""ইবনে মাজাহ্, হাদীস সংখ্যা- ৪০৮০""। ১২ সেপ্টেম্বর ২০১৫ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৬ জানুয়ারি ২০১৫।
- ↑ ""ইয়াজুজ মাজুজের আগমন""। ১৯ ডিসেম্বর ২০১৪ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৬ জানুয়ারি ২০১৫।
- ↑ "সহীহ বুখারী, হাদীস সংখ্যা- ৩৩৪৬"। ৩ আগস্ট ২০১৪ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৭ জানুয়ারি ২০১৫।
- ↑ Dr. Abu Shadi Al-Roubi (1982), "Ibn Al-Nafis as a philosopher", Symposium on Ibn al-Nafis, Second International Conference on Islamic Medicine: Islamic Medical Organization, Kuwait (cf. Ibn al-Nafis As a Philosopher, Encyclopedia of Islamic World)
উৎস
সম্পাদনা- "Fath al-bârî fî sharh sahîh al-bukhârî" (from Sahih al-Bukhari by Ibn Hajr al-Asqalani).
- Esposito, John, The Oxford Dictionary of Islam, Oxford University Press, 2003, আইএসবিএন ০-১৯-৫১২৫৫৮-৪.
- Richard C. Martin, Said Amir Arjomand, Marcia Hermansen, Abdulkader Tayob, Rochelle Davis, John Obert Voll, Encyclopedia of Islam and the Muslim World, MacMillan Reference Books, 2003, আইএসবিএন ৯৭৮-০০২৮৬৫৬০৩৮.