ইন্দো-আর্য ভাষাসমূহ
ইন্দো-আর্য বা হিন্দ-আর্য ভাষাসমূহ (প্রায়শ ইন্ডিক ভাষা)[২][টীকা ১] হল ইন্দো-ইউরোপীয় ভাষাপরিবারের সদস্য ইন্দো-ইরানীয় ভাষাসমূহের একটি শাখা। এই ভাষাসমূহ ইন্দো-আর্য জনগোষ্ঠী দ্বারা স্থানীয়ভাবে কথ্য ভাষা হিসাবে ব্যবহার করা হয়। ভাষাসমূহের ২১তম শতকের গোড়ার দিকে ৮০ কোটিরও বেশি বক্তা ছিল, বক্তারা প্রাথমিকভাবে ভারত, পাকিস্তান, বাংলাদেশ, নেপাল, শ্রীলঙ্কা ও মালদ্বীপে কেন্দ্রীভূত রয়েছে। অধিকন্তু, ভারতীয় উপমহাদেশ ব্যতীত বৃহৎ অভিবাসী ও প্রবাসী ইন্দো-আর্য-ভাষী সম্প্রদায়সমূহ উত্তর-পশ্চিম ইউরোপ, পশ্চিম এশিয়া, উত্তর আমেরিকা, ক্যারিবীয় অঞ্চল, দক্ষিণ-পূর্ব আফ্রিকা, পলিনেশিয়া ও অস্ট্রেলিয়াতে বাস করে এবং রোমানি ভাষার কয়েক কোটি ভাষাভাষীদের সঙ্গে প্রাথমিকভাবে দক্ষিণ-পূর্ব ইউরোপে কেন্দ্রীভূত রয়েছে।
| |
---|---|
ভৌগোলিক বিস্তার | দক্ষিণ এশিয়া |
ভাষাগত শ্রেণীবিভাগ | ইন্দো-ইউরোপীয়
|
উপবিভাগ | |
আইএসও ৬৩৯-২/৫ | inc |
গ্লটোলগ | indo1321[১] |
বর্তমান ইন্দো-আর্য ভাষা গোষ্ঠীর ভৌগোলিক বিতরণ। রোমানি, ডোমারি, খোলোসী এবং লোমাভ্রেন মানচিত্রের আওতার বাইরে।
চিত্রাল (দার্দীয়)
শিনা (দার্দীয়)
কোহস্তানি (দার্দীয়)
কাশ্মীরি (দার্দীয়)
সিন্ধি (উত্তর-পশ্চিম)
গুজরাটি (পশ্চিম)
গড়ওয়ালী-কুমুনি (= সি. পাহাড়ি, উত্তরা)
নেপালি (= ই. পাহাড়ি, উত্তরা)
পূর্ব হিন্দি (কেন্দ্রীয়)
বাংলা-অসমীয়া (পূর্ব)
ওড়িয়া (পূর্ব)
হালবি (পূর্ব)
সিংহলা-মালদ্বীপ (দক্ষিণী)
(দেখানো হয়নি: কানার (দার্দীয়), চিনালি – লাহুল) |
আধুনিক ইন্দো-আর্য ভাষাসমূহ প্রাচীন ইন্দো-আর্য ভাষা থেকে এসেছে, যেমন মধ্য ইন্দো-আর্য ভাষাসমূহের (বা প্রাকৃত) মাধ্যমে আদি বৈদিক সংস্কৃত উদ্ভূত হয়েছে। প্রথম ভাষা (মাতৃভাষী) হিসাবে ব্যবহারকারী বা বক্তার সংখ্যা অনুযায়ী বৃহৎ ভাষাগুলি হল হিন্দি-উর্দু (আনু. ৩২.৯ কোটি),[৩] বাংলা (২৪.২ কোটি), পাঞ্জাবি (১০ কোটি), মারাঠি (৭ কোটি), গুজরাটি (৬ কোটি), রাজস্থানী (৫.৮ কোটি), ভোজপুরি (৫.১ কোটি), ওড়িয়া (৩.৫ কোটি), মৈথিলী (প্রায় ৩.৪ কোটি), সিন্ধি (২.৫ কোটি), নেপালি (১.৬ কোটি), ছত্তিশগড়ি (১.৮ কোটি), সিংহলি (১.৭ কোটি), অসমীয়া (১.৫ কোটি) ও রোমানি (আনু. ৩৫ লাখ)। এসআইএল ইন্টারন্যাশনালের করা ২০০৫ সালের প্রাক্কলন অনুযায়ী ২০৯ টি ইন্দো-আর্য ভাষা আছে। সব মিলিয়ে ইন্দো-আর্য ভাষাসমূহের মাতৃভাষীর সংখ্যা প্রায় ৯০ কোটি।
শ্রেণিবিন্যাস
সম্পাদনাউত্তরাঞ্চল আর্য
সম্পাদনানেপালি ভাষা এই শ্রেণীর প্রধান ভাষা। এছাড়াও গাড়োয়ালি, কুমায়োনি এই শ্রেণীর অন্তর্গত।
উত্তরপশ্চিমী আর্য
সম্পাদনাপাঞ্জাবি, সিন্ধি এবং ডোগরি এই পরিবারের অন্তর্গত। এদের সম্পর্কিত ভাষাসমূহও এই শ্রেণীর অংশ।
কেন্দ্রীয় আর্য
সম্পাদনাহিন্দুস্তানি ভাষা সমূহ এই শ্রেণীর অন্তর্গত। হিন্দি ও উর্দু এবং তৎসংলগ্ন ভাষাসমূহ কেন্দ্রীয় শ্রেণীর অন্তর্গত।
পূর্বী আর্য
সম্পাদনাবাংলা, রাজবংশী ভাষা, অসমীয়া, ওড়িয়া, এবং ভোজপুরি এই শ্রেণীর অন্তর্গত। ভারতবর্ষের পূর্বাঞ্চলে এই শ্রেণীর ভাষাসমূহ কথিত হয়।
দ্বৈপ্য ইন্দো আর্য
সম্পাদনাভারত ও পাকিস্তানের কাশ্মীর অঞ্চলে এই ভাষাগোষ্ঠীর ভাষাসমূহ প্রচলিত। এদের মধ্যে কাশ্মীরি অন্যতম।
দক্ষিণী আর্য
সম্পাদনামারাঠি, সিংহলি, ধিবেহী, এবং কোঙ্কণি এই শ্রেণীর অন্তর্গত।
পশ্চিমী আর্য
সম্পাদনাগুজরাটি, রাজস্থানী, মারোয়াড়ী, এবং রোমানি এই শ্রেণীর অন্তর্গত।
আরও দেখুন
সম্পাদনাটীকা
সম্পাদনা- ↑ In modern and colloquial context, the term "Indic" also refers more generally to the languages of the Indian subcontinent, thus also including non-Indo-Aryan languages. See e.g. Reynolds, Mike; Verma, Mahendra (২০০৭)। "Indic languages"। Britain, David। Language in the British Isles। Cambridge: Cambridge University Press। পৃষ্ঠা 293–307। আইএসবিএন 978-0-521-79488-6। সংগ্রহের তারিখ ১৫ নভেম্বর ২০২২।
তথ্যসূত্র
সম্পাদনা- ↑ হ্যামারস্ট্রোম, হারাল্ড; ফোরকেল, রবার্ট; হাস্পেলম্যাথ, মার্টিন, সম্পাদকগণ (২০১৭)। "Indo-Aryan"। গ্লোটোলগ ৩.০ (ইংরেজি ভাষায়)। জেনা, জার্মানি: মানব ইতিহাস বিজ্ঞানের জন্য ম্যাক্স প্লাংক ইনস্টিটিউট।
- ↑ Munshi, S (২০০৯)। "Indo-Aryan languages"। Keith Brown; Sarah Ogilvie। Concise Encyclopedia of Language of the World। Amsterdam: Elsevier। পৃষ্ঠা 522-528।
- ↑ প্রমিত হিন্দি প্রথম ভাষা: ২৬.০৩ কোটি (২০০১), দ্বিতীয় ভাষা হিসাবে: ১২ কোটি (১৯৯৯)। উর্দু প্রথম ভাষা: ৬.৮৯ কোটি (২০০১–২০১৪), দ্বিতীয় ভাষা: ৯.৪ কোটি (১৯৯৯): এথনোলগ ১৯