হাসান মশহুদ চৌধুরী

লেফটেন্যান্ট জেনারেল হাসান মশহুদ চৌধুরী (জন্ম: ১১ সেপ্টেম্বর ১৯৪৮) এডব্লিউসি, পিএসসি ছিলেন বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর ১৩তম সেনাপ্রধান। তিনি ১৬ জুন ২০০২ থেকে ১৫ জুন ২০০৫ পর্যন্ত সেনাপ্রধান হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। তিনি জেনারেল এম হারুন-অর-রশিদের স্থলাভিষিক্ত হয়েছিলেন।[][][][][][] তিনি চাকরি থেকে অবসর গ্রহণের পর মন্ত্রী পদমর্যাদায় দুর্নীতি দমন কমিশনের চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।

লেফটেন্যান্ট জেনারেল
হাসান মশহুদ চৌধুরী
জন্ম১১ সেপ্টেম্বর ১৯৪৮
আনুগত্য বাংলাদেশ
সেবা/শাখাপাকিস্তান পাকিস্তান সেনাবাহিনী
বাংলাদেশ বাংলাদেশ সেনাবাহিনী
কার্যকাল১৯৬৯ - ২০০৫
পদমর্যাদালেফটেন্যান্ট জেনারেল
ইউনিটফ্রন্টিয়ার ফোর্স রেজিমেন্ট
নেতৃত্বসমূহবাংলাদেশ সেনাবাহিনীর সেনাপ্রধান

প্রাথমিক জীবন এবং শিক্ষা

সম্পাদনা

হাসান মশহুদ চৌধুরীর জন্ম তৎকালীন পূর্বপাকিস্তানের (বর্তমান বাংলাদেশ) সিলেট জেলার গোলাপগঞ্জ উপজেলার কানিশাইল গ্রামে ১১ সেপ্টেম্বর ১৯৪৮ সালে।

সামরিক জীবন

সম্পাদনা

মশহুদ ১৯৬৭ সালের ১৮মে পাকিস্তান সেনাবাহিনীতে ক্যাডেট হিসেবে যোগ দেন; ১৯৬৯ সালের ১৯ এপ্রিল ৪০তম পিএমএ (পাকিস্তান মিলিটারি একাডেমি) দীর্ঘমেয়াদী প্রশিক্ষণ শেষে ১৮তম ফ্রন্টিয়ার ফোর্স রেজিমেন্টে তিনি সেকেন্ড লেফটেন্যান্ট হিসেবে কমিশন পান, তিনি ১৯৬৯ সালের নভেম্বরে লেফটেন্যান্ট এবং '৭০ সালের আগস্টে ক্যাপ্টেন পদবীতে পদোন্নতি প্রাপ্ত হন। ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে এবং শেষ হওয়ার পরে তিনি পশ্চিম পাকিস্তানে ছিলেন, অন্যান্য বাঙালি কর্মকর্তাদের সঙ্গে তৎকালীন ক্যাপ্টেন মশহুদকেও অন্তরীন রাখা হয়। মশহুদ ১৯৭৩ সালে স্বাধীন বাংলাদেশে ফিরে আসেন (মুক্তি দেওয়া হয় তাকে), এবং বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর ৭২ পদাতিক ব্রিগেডের ১৭তম ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্ট (ব্যাটেলিয়ন) -এ নিয়োগ দেওয়া হয় তাকে ডি কোম্পানির কমান্ডার হিসেবে, ১৯৭৪ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে তিনি এখানে যোগ দেন, ব্যাটেলিয়নটি তখন সৈয়দপুরে ছিলো। ১৯৭৫ সালের নভেম্বরে তিনি ঢাকার ৪৬ পদাতিক ব্রিগেডে ব্রিগেড মেজর (বিএম) হিসেবে নিয়োগ পান; '৭৭ সালের মার্চে তিনি ১৭ ইস্ট বেঙ্গলের স্থানাপন্ন অধিনায়ক হিসেবে নিয়োগ পান, এই ইউনিট তখন জয়দেবপুরে; এরপর তাকে ৯ পদাতিক ডিভিশনের জেনারেল স্টাফ অফিসার - ১ (জিএসও -১) হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়; তিনি ১৯৭৯ সালে মিরপুরস্থ স্টাফ কলেজে স্টাফ কোর্স করার জন্য আসেন, স্টাফ কোর্স শেষ করার পর তিনি ঐ কলেজেই স্বল্প সময়ের জন্য ডাইরেক্টিং স্টাফ হিসেবে কাজ করেন। ১৯৮১ সালের শেষের দিকে তিনি ১৭ ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্টের (তখন আলীকদম সেনানিবাস, ৬৯ পদাতিক ব্রিগেডের অধীন, ২৪ পদাতিক ডিভিশন) অধিনায়ক হিসেবে নিয়োগ পান; এরপর '৮২ সালের জুলাই মাসে তিনি বাংলাদেশ মিলিটারি একাডেমীতে জিএসও (জেনারেল স্টাফ অফিসার) - ১ (প্রশিক্ষণ) হিসেবে নিয়োগ পান; '৮৪ সালের আগস্টে তিনি ৩৫ ইস্ট বেঙ্গলের অধিনায়ক হন। ১৯৮৬ সালের জানুয়ারীতে তিনি ঢাকার সাভারে একটি ব্রিগেডের (৮১ পদাতিক ব্রিগেড) স্থানাপন্ন কমান্ডার হিসেবে কাজ করেন। এরপর তাকে প্রেসিডেনশিয়াল সিকিউরিটি ফোর্স বা পিএসএফ (বর্তমানে স্পেশাল সিকিউরিটি ফোর্স বা এসএসএফ) এ পরিচালক হিসেবে কাজ পান এবং ১৯৮৮ সালে তিনি কুমিল্লার ৩৩ পদাতিক ডিভিশনের ৪৪ পদাতিক ব্রিগেডের কমান্ডার হিসেবে দায়িত্ব পান। ১৯৮৯ সালের মে মাসে তিনি স্কুল অব ইনফ্যান্ট্রি অ্যান্ড ট্যাকটিক্স এর কমান্ড্যান্ট নিযুক্ত হন; ১৯৯১ সালে যুক্তরাষ্ট্রে ওয়ার কোর্স করার জন্য 'ইউনাইটেড স্টেটস আর্মি ওয়ার কলেজ'-এ যান। ১৯৯২ সালের ১ সেপ্টেম্বর তিনি ২৪ পদাতিক ডিভিশনের অধীনে খাগড়াছড়িতে একটি ব্রিগেডের (২০৩ পদাতিক ব্রিগেড) কমান্ডার হন, এরপর তিনি মিরপুর স্টাফ কলেজের কমান্ড্যান্ট হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন (১৯৯৫-১৯৯৬) এবং ১৯৯৬ সালের জুন মাসে তিনি ১১ পদাতিক ডিভিশনের জেনারেল অফিসার কমান্ডিং (জিওসি) নিযুক্ত হন; এরপর তিনি সেনাসদরে সিজিএস (চীফ অব জেনারেল স্টাফ) (১৯৯৭-২০০০), ন্যাশনাল ডিফেন্স কলেজের কমান্ড্যান্ট (২০০০-২০০১) এবং ২০০১ সালে সেনাপ্রধান হওয়ার আগ পর্যন্ত সংযুক্ত আরব আমিরাতে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত হিসেবে ছিলেন। তাকে লেঃ জেনারেল এবং সেনাপ্রধান করা হয় ২০০২ সালের ১৬ই জুন, এ-দিন লেঃ জেনারেল এম হারুন-অর-রশিদ অবসর প্রস্তুতিমূলক ছুটিতে গমন করেন।[]

ব্যক্তিগত জীবন

সম্পাদনা

মশহুদের স্ত্রীর নাম জরনীগার যাকে তিনি ১৯৭৭ সালের ৪ আগস্ট বিয়ে করেন, তাদের দুই পুত্র সন্তান আছে।

আরও দেখুন

সম্পাদনা

তথ্যসূত্র

সম্পাদনা
  1. "Up close with Hasan Mashhud Chowdhury"bdnews24.com। ২০১৯-০৮-০৫ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০১৯-০৮-০৫ 
  2. "১/১১ এর খলনায়করা কে কোথায়"বাংলাদেশ প্রতিদিন। সংগ্রহের তারিখ ২০১৯-০৮-০৫ 
  3. "New army chief appointed | GulfNews.com"web.archive.org। ২০১৫-০৬-২০। Archived from the original on ২০১৫-০৬-২০। সংগ্রহের তারিখ ২০১৯-০৮-০৫ 
  4. "March 2005 Banner Archives"web.archive.org। ২০১২-১২-১৫। Archived from the original on ২০১২-১২-১৫। সংগ্রহের তারিখ ২০১৯-০৮-০৫ 
  5. "National Defence CollegeHall of Fame (Ex Commandant) | Categories(Profile)"web.archive.org। ২০১৫-০১-০৯। Archived from the original on ২০১৫-০১-০৯। সংগ্রহের তারিখ ২০১৯-০৮-০৫ 
  6. "The Daily Star Web Edition Vol. 5 Num 972"archive.thedailystar.net। ২০১৯-০৮-০৫ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০১৯-০৮-০৫ 
  7. "Hall of Fame (Ex Commandant)"National Defence College। ৯ জানুয়ারি ২০১৫ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৯ জুন ২০১৫ 
পূর্বসূরী
জেনারেল এম হারুন-অর-রশিদ
সেনাবাহিনী প্রধান
১৬ জুন ২০০২ - ১৫ জুন ২০০৫
উত্তরসূরী
জেনারেল মঈন উদ্দিন আহমেদ