মাইকেল মেল
মাইকেল জর্জ মেল (ইংরেজি: Michael Melle; জন্ম: ৩ জুন, ১৯৩০ - মৃত্যু: ২৮ ডিসেম্বর, ২০০৩) ট্রান্সভাল প্রদেশের জোহেন্সবার্গ এলাকায় জন্মগ্রহণকারী দক্ষিণ আফ্রিকান আন্তর্জাতিক ক্রিকেটার ছিলেন। দক্ষিণ আফ্রিকা ক্রিকেট দলের অন্যতম সদস্য ছিলেন তিনি। ১৯৫০ থেকে ১৯৫৩ সময়কালে দক্ষিণ আফ্রিকার পক্ষে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অংশগ্রহণ করেছিলেন।
ব্যক্তিগত তথ্য | ||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|
পূর্ণ নাম | মাইকেল জর্জ মেল | |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
জন্ম | জোহেন্সবার্গ, ট্রান্সভাল | ৩ জুন ১৯৩০|||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
মৃত্যু | ২৮ ডিসেম্বর ২০০৩ বেটিজ বে, দক্ষিণ আফ্রিকা | (বয়স ৭৩)|||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
ব্যাটিংয়ের ধরন | ডানহাতি | |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
বোলিংয়ের ধরন | ডানহাতি ফাস্ট | |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
ভূমিকা | বোলার | |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
সম্পর্ক | বাসিল মেল (পিতা) | |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
আন্তর্জাতিক তথ্য | ||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
জাতীয় দল |
| |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
টেস্ট অভিষেক (ক্যাপ ১৭৬) | ১০ ফেব্রুয়ারি ১৯৫০ বনাম অস্ট্রেলিয়া | |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
শেষ টেস্ট | ২৪ জানুয়ারি ১৯৫৩ বনাম অস্ট্রেলিয়া | |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
খেলোয়াড়ী জীবনের পরিসংখ্যান | ||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
| ||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
উৎস: ইএসপিএনক্রিকইনফো.কম, ২৫ মে ২০১৯ |
ঘরোয়া প্রথম-শ্রেণীর দক্ষিণ আফ্রিকান ক্রিকেটে দলের ট্রান্সভাল ও ওয়েস্টার্ন প্রভিন্স দলের প্রতিনিধিত্ব করেছেন। দলে তিনি মূলতঃ ডানহাতি ফাস্ট বোলার হিসেবে খেলতেন। এছাড়াও, নিচেরসারিতে ডানহাতে কার্যকরী ব্যাটিংশৈলী উপস্থাপন করেছেন মাইকেল মেল।
প্রথম-শ্রেণীর ক্রিকেট
সম্পাদনাদক্ষিণ আফ্রিকার হিল্টন কলেজে পড়াশোনা করেছিলেন মাইকেল মেল। প্রকৃতমানের ডানহাতি ফাস্ট বোলার ছিলেন তিনি।[১] ১৮ বছর বয়সে ১৯৪৮-৪৯ মৌসুমে সফররত এমসিসি দলের বিপক্ষে জোহেন্সবার্গে অনুষ্ঠিত খেলায় ট্রান্সভালের সদস্যরূপে প্রথম-শ্রেণীর ক্রিকেটে অভিষেক ঘটে তার। পরের খেলা হিসেবে দক্ষিণ আফ্রিকা একাদশের সদস্যরূপে ১৯৪৯-৫০ মৌসুমে সফররত অস্ট্রেলিয়া একাদশের বিপক্ষে অংশগ্রহণের জন্য মনোনীত হন। খেলায় তিনি ৪/৮২ পান। অস্ট্রেলিয়া একাদশের বিপক্ষে ট্রান্সভালের সদস্যরূপে দুই খেলায় অংশগ্রহণের পর টেস্ট দলে অন্তর্ভুক্ত হন।
১৯৫০-৫১ মৌসুমে প্রথমবারের মতো কারি কাপের খেলায় অংশ নেন। সলিসবারিতে রোডেশিয়ার বিপক্ষে ট্রান্সভালের সদস্যরূপে খেলেন। আট নম্বরে ব্যাটিংয়ে নেমে ৫০ রানের ইনিংস খেলেন। এটিই ঐ সময়ে তার সর্বোচ্চ সংগ্রহ ছিল। এরপর ২/১৩ ও ২/৩০ লাভ করে দলকে ইনিংস ব্যবধানে জয়ে ভূমিকা রাখেন। পরের খেলায় জোহেন্সবার্গে গ্রিকুয়াল্যান্ড ওয়েস্টের মুখোমুখি হন তিনি। ২/২২ ও ৮/৮ পান পান। ফলে গ্রিকুয়াল্যান্ড দল দ্বিতীয় ইনিংসে মাত্র ২৯ রানে তাদের ইনিংস গুটিয়ে ফেলতে বাধ্য হয়।[২] ছয় খেলায় ১৪.৪০ গড়ে ২৭ উইকেট লাভ করেন।
১৯৫১-৫২ মৌসুমে তার খেলার মান বেশ অবনতির দিকে চলে যায়।[৩] তাসত্ত্বেও, ছয় খেলায় ২৭.৩৫ গড়ে ১৭ উইকেট লাভ করেন।
আন্তর্জাতিক ক্রিকেট
সম্পাদনাসমগ্র খেলোয়াড়ী জীবনে সাতটিমাত্র টেস্টে অংশগ্রহণের সুযোগ পেয়েছিলেন মাইকেল মেল। ১০ ফেব্রুয়ারি, ১৯৫০ তারিখে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে টেস্ট ক্রিকেটে অভিষেক ঘটে তার।
জোহেন্সবার্গে সিরিজের চতুর্থ টেস্টে সফরকারী অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে কুয়ান ম্যাকার্থি’র সাথে বোলিং উদ্বোধন করতে নামেন। প্রথম-শ্রেণীর খেলায় ৩৮.৩৩ গড়ে মাত্র ছয়টি উইকেট শিকারী মাইকেল মেল তখন মাত্র ১৯ বছরের যুবক ছিলেন। ড্র হওয়া খেলাটিতে ৫/১১৩ ও ১/৫৮ পান।[৪] এরপর পোর্ট এলিজাবেথে পঞ্চম টেস্টে ২/১৩২ পান। ঐ খেলায় সফরকারী অস্ট্রেলিয়া দল ইনিংস ব্যবধানে জয় তুলে নেয়।
১৯৫১ সালে ইংল্যান্ড গমনের জন্য দক্ষিণ আফ্রিকা দলে অন্তর্ভুক্ত করা হয়। দলটিতে ক্লাইভ ফন রাইনেভেল্ড, অ্যাথল রোয়ান, জন ওয়েট, জ্যাকি ম্যাকগ্লিউ, রয় ম্যাকলিন, কুয়ান ম্যাকার্থি, রাসেল এনডিন, মাইকেল মেল, পার্সি ম্যানসেল, জিওফ্রে চাব, এরিক রোয়ান, ডাডলি নোর্স, জ্যাক চিদাম, জর্জ ফুলারটন ও নরম্যান মানের অংশগ্রহণ ছিল। হার্নিয়া অস্ত্রোপচারের কারণে এ সফরের বেশ কয়েক সপ্তাহ খেলার জগৎ থেকে দূরে সরে ছিলেন।[৫] এ সফরে ২০.২৮ গড়ে ৫০ উইকেট নিয়ে শীর্ষস্থানে ছিলেন। তিনি কেবলমাত্র ওভালে অনুষ্ঠিত সিরিজের পঞ্চম টেস্টে একবার খেলার সুযোগ পেয়েছিলেন। প্রথম ইনিংসে ১০-৬-৯-৪ বোলিং পরিসংখ্যান দাঁড় করান।[৬] দল নির্বাচকমণ্ডলী প্রথম চার টেস্টে কেবলমাত্র ম্যাকার্থি ও জিওফ চাবকে নিয়ে দুইজনে পেস আক্রমণকার্য পরিচালনা করাকে অগ্রাধিকার দিয়েছিলেন। এ সিরিজ শেষে তিনি তার সেরা ইনিংস ও খেলায় সেরা বোলিং পরিসংখ্যান গড়েন। স্কারবোরায় টি.এন. পিয়ার্স একাদশের বিপক্ষে ২/২২ ও ৬/৭১ পান।
অস্ট্রেলিয়া গমন, ১৯৫২-৫৩
সম্পাদনাম্যাকার্থির অনুপস্থিতি ও চাবের অবসর গ্রহণের কারণে ১৯৫২-৫৩ মৌসুমে অস্ট্রালেশিয়া গমনকল্পে দলের চারজনের পেস বোলারের মধ্যে সর্বাপেক্ষা অভিজ্ঞতাসম্পন্ন ছিলেন মাইকেল মেল। অন্যান্যদের মধ্যে এডি ফুলার ও অ্যান্টন মারে পূর্বে কোন টেস্টে অংশ নেননি। জন ওয়াটকিন্স তিন টেস্ট খেলে তিন উইকেট পেয়েছেন। পাঁচ টেস্ট নিয়ে গড়া সিরিজের প্রথম টেস্টে সাতটি মূল্যবান উইকেট নিয়ে দলকে এগিয়ে নিয়ে যান। তবে, ব্রিসবেনে আট বল নিয়ে গড়া ৪৬.৫ ওভার বোলিং করে ৬/৭১ ও ৩/৯৫ লাভ করেন। উদ্বোধনী বোলার ওয়াটকিন্সের কাছ থেকে পর্যাপ্ত সহযোগিতা লাভ করেন।[৭] তাস্বত্ত্বেও অস্ট্রেলিয়া স্বল্প ব্যবধানে জয় পেয়েছিল।[৮] তবে, পরবর্তী তিন টেস্টে ৩৬৫ রান খরচ করে তিনি মাত্র পাঁচ উইকেট দখল করেন। ফলশ্রুতিতে দলের বাইরে অবস্থান করতে হয়। তাসত্ত্বেও, লঞ্চেস্টনে তাসমানিয়ার বিপক্ষে স্মরণীয় ক্রীড়াশৈলী উপহার দেন। প্রথম ইনিংসে ৩/৩৪ লাভের পর দ্বিতীয় ইনিংসে বোলিং অপরিবর্তিত থাকা অবস্থায় ৯/২২ পান। [৯] ১৯৫২-৫৩ মৌসুমে অস্ট্রেলিয়া ও নিউজিল্যান্ড গমন করে আরও চৌদ্দ উইকেট পান।
অবসর
সম্পাদনা১৯৫৩-৫৪ মৌসুমে দুই খেলায় অংশ নেয়ার পর তিনি আর কোন প্রথম-শ্রেণীর খেলায় অংশগ্রহণ করেননি। সর্বশেষ খেলায় অংশগ্রহণকালীন তার বয়স ছিল মাত্র ২৩ বছর। প্রথম-শ্রেণীর ক্রিকেটে সর্বোচ্চ ব্যক্তিগত সংগ্রহ ৫৯ রানের পাশাপাশি ২/৫৬ ও ৩/২৮ বোলিং পরিসংখ্যান গড়ে ডিসেম্বর, ১৯৫৩ সালে নাটালের বিপক্ষে ওয়েস্টার্ন প্রভিন্সকে জয়লাভে প্রভূতঃ সহায়তা করেন।[১০]
তার পিতা বাসিল মেল ১৯০৯ থেকে ১৯২৩ সময়কালে ওয়েস্টার্ন প্রভিন্স, অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়, হ্যাম্পশায়ার ও ট্রান্সভালের প্রতিনিধিত্ব করেছিলেন। ২৮ ডিসেম্বর, ২০০৩ তারিখে ৭৩ বছর বয়সে বেটিজ বে এলাকায় মাইকেল মেলের দেহাবসান ঘটে।
তথ্যসূত্র
সম্পাদনা- ↑ Christopher Martin-Jenkins, The Complete Who's Who of Test Cricketers, Rigby, Adelaide, 1983, p. 298.
- ↑ Transvaal v Griqualand West 1950–51
- ↑ ABC Cricket Book, South Africans Tour 1952–53, ABC, Sydney, 1952, p. 14.
- ↑ South Africa v Australia, Johannesburg 1949–50
- ↑ Wisden 2005, p. 1651.
- ↑ England v South Africa, The Oval 1951
- ↑ Wisden 1954, p. 800.
- ↑ Australia v South Africa, Brisbane 1952–53
- ↑ Tasmania v South Africans 1952–53
- ↑ Western Province v Natal 1953–54
আরও দেখুন
সম্পাদনাবহিঃসংযোগ
সম্পাদনা- ইএসপিএনক্রিকইনফোতে মাইকেল মেল (ইংরেজি)
- ক্রিকেটআর্কাইভে মাইকেল মেল (সদস্যতা প্রয়োজনীয়) (ইংরেজি)