জর্জ ফুলারটন

দক্ষিণ আফ্রিকান ক্রিকেটার

জর্জ মারে ফুলারটন (ইংরেজি: George Fullerton; জন্ম: ৮ ডিসেম্বর, ১৯২২ - মৃত্যু: ১৯ নভেম্বর, ২০০২) কেনসিংটন এলাকায় জন্মগ্রহণকারী দক্ষিণ আফ্রিকান আন্তর্জাতিক ক্রিকেটার ছিলেন। দক্ষিণ আফ্রিকা ক্রিকেট দলের অন্যতম সদস্য ছিলেন তিনি। ১৯৪০-এর দশকের শেষদিক থেকে ১৯৫০-এর দশকের সূচনাকাল পর্যন্ত সংক্ষিপ্ত সময়ের জন্যে দক্ষিণ আফ্রিকার পক্ষে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অংশগ্রহণ করেছেন।

জর্জ ফুলারটন
১৯৪৭ সালের সংগৃহীত স্থিরচিত্রে জর্জ ফুলারটন
ব্যক্তিগত তথ্য
পূর্ণ নামজর্জ মারে ফুলারটন
জন্ম(১৯২২-১২-০৮)৮ ডিসেম্বর ১৯২২
কেনসিংটন, জোহেন্সবার্গ, দক্ষিণ আফ্রিকা
মৃত্যু১৯ নভেম্বর ২০০২(2002-11-19) (বয়স ৭৯)
রন্দেবশ, কেপ টাউন, কেপ প্রদেশ
ব্যাটিংয়ের ধরনডানহাতি
বোলিংয়ের ধরনডানহাতি মিডিয়াম
ভূমিকাউইকেট-রক্ষক
সম্পর্কআইআর ফুলারটন (ভ্রাতা)
আন্তর্জাতিক তথ্য
জাতীয় দল
টেস্ট অভিষেক
(ক্যাপ ১৬৫)
২৬ জুলাই ১৯৪৭ বনাম ইংল্যান্ড
শেষ টেস্ট৫ জুলাই ১৯৫১ বনাম ইংল্যান্ড
খেলোয়াড়ী জীবনের পরিসংখ্যান
প্রতিযোগিতা টেস্ট এফসি
ম্যাচ সংখ্যা ৬৩
রানের সংখ্যা ৩২৫ ২৭৬৮
ব্যাটিং গড় ২৫.০০ ৩১.১০
১০০/৫০ ০/৩ ৩/২০
সর্বোচ্চ রান ৮৮ ১৬৭
বল করেছে ৩০৬
উইকেট
বোলিং গড় ৩৫.৬৬
ইনিংসে ৫ উইকেট
ম্যাচে ১০ উইকেট
সেরা বোলিং ২/৪১
ক্যাচ/স্ট্যাম্পিং ১০/২ ৬৪/১৮
উৎস: ইএসপিএনক্রিকইনফো.কম, ১০ জুলাই ২০২০

ঘরোয়া প্রথম-শ্রেণীর দক্ষিণ আফ্রিকান ক্রিকেটে ট্রান্সভাল দলের প্রতিনিধিত্ব করেন। দলে তিনি মূলতঃ উইকেট-রক্ষক হিসেবে খেলতেন। এছাড়াও, ডানহাতে ব্যাটিংয়ের পাশাপাশি ডানহাতে মিডিয়াম বোলিংয়ে পারদর্শী ছিলেন জর্জ ফুলারটন

প্রথম-শ্রেণীর ক্রিকেট সম্পাদনা

১৯৪২-৪৩ মৌসুম থেকে ১৯৫০-৫১ মৌসুম পর্যন্ত জর্জ ফুলারটনের প্রথম-শ্রেণীর খেলোয়াড়ী জীবন চলমান ছিল।

ডিসেম্বর, ১৯৪২ সালে জোহেন্সবার্গে বাদ-বাকী দক্ষিণ আফ্রিকা একাদশের সদস্যরূপে বিমানবাহিনী একাদশের বিপক্ষে প্রথম-শ্রেণীর ক্রিকেটে অভিষেক পর্ব সম্পন্ন হয় তার। এ পর্যায়ে তার বয়স ছিল ২০ বছর। তিন বছর নৌবাহিনীতে চাকরি করেন। এরপর, ট্রান্সভালের সদস্য হন এবং গ্লাভস হাতে দক্ষতা প্রদর্শনসহ ঐ গ্রীষ্মে নিজস্ব প্রথম শতরানের ইনিংস খেলেন।

আন্তর্জাতিক ক্রিকেট সম্পাদনা

সমগ্র খেলোয়াড়ী জীবনে সাতটিমাত্র টেস্টে অংশগ্রহণ করেছেন জর্জ ফুলারটন। ২৬ জুলাই, ১৯৪৭ তারিখে লিডসে স্বাগতিক ইংল্যান্ড দলের বিপক্ষে টেস্ট ক্রিকেটে অভিষেক ঘটে তার। ৫ জুলাই, ১৯৫১ তারিখে ম্যানচেস্টারে একই দলের বিপক্ষে সর্বশেষ টেস্টে অংশ নেন তিনি।

দক্ষিণ আফ্রিকার সদস্যরূপে দুইবার ইংল্যান্ড গমনের সুযোগ লাভ করেছিলেন। তন্মধ্যে, ১৯৪৭ সালে উইকেট-রক্ষক হিসেবে দুই টেস্ট খেলেন। ১৯৪৭ সালে তিনজন উইকেট-রক্ষককে ইংল্যান্ড গমনার্থে দলে রাখা হয়। ডগ ওভেনস্টোনের আঙ্গুল ভেঙ্গে গেলে হেডিংলি টেস্টে জনি লিন্ডসেকে দলের বাইরে রাখা হয়। এ সফর সম্পর্কেে উইজডেনে উল্লেখ করা হয় যে, তার ড্রাইভিং, কাটিং ও দ্রুতলয়ে পায়ের কারুকাজ বেশ দর্শনীয় ছিল।

তবে, পরবর্তী দুই মৌসুমে ট্রান্সভালের পক্ষে মাত্র তিনটি খেলায় অংশ নিয়েছিলেন। নাটালের বিলি ওয়েডের কারণে ১৯৪৭ সালে বিদেশ গমন করতে পারেননি। ১৯৪৯-৫০ মৌসুমের পূর্ব-পর্যন্ত দক্ষিণ আফ্রিকার উইকেট-রক্ষকের দায়িত্বে যেতে পারেননি।

১৯৫০-৫১ মৌসুমে রাসেল এনডিনকে ট্রান্সভালের উইকেট-রক্ষকের দায়িত্ব দেয়া হয়। ফলে, ফুলারটনকে শুধুই ব্যাটসম্যানের ভূমিকায় অবতীর্ণ হতে হয়েছিল। ৬৬.২০ গড়ে রান তুলেন। ওয়েস্টার্ন প্রভিন্সের বিপক্ষে ১১২ ও ৯৪ রান তুলে কারি কাপের শিরোপা বিজয়ে প্রভূতঃ ভূমিকা রাখেন। ইংল্যান্ড সফরেও তার এ খেলার ধারা অব্যাহত রাখেন। ইলফোর্ডে এসেক্সের বিপক্ষে অনুষ্ঠিত খেলায় ব্যক্তিগত সেরা ১৬৭ রান তুলেন।

১৯৫১ সালে শুধুই ব্যাটসম্যান হিসেবে তিন টেস্ট খেলেন তিনি। এ সফরে ২০টি প্রথম-শ্রেণীর খেলায় অংশ নেন ও ৩১.৩৬ গড়ে ১১২৯ রান তুলেন। এর মাঝামাঝি সময়কালে বাদ-বাকী দুই টেস্ট ১৯৪৯-৫০ মৌসুমে সফরকারী অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে খেলেছিলেন। তন্মধ্যে, নিজ শহরের জোহেন্সবার্গ টেস্টে ব্যক্তিগত সেরা ৮৮ রান তুলতে সক্ষম হয়েছিলেন। ফলশ্রুতিতে, তার দল ফলো-অন এড়াতে সক্ষম হয়।

অবসর সম্পাদনা

ইংল্যান্ড সফরের পর ব্যবসায়িক দায়বদ্ধতার কারণে তিনি আর প্রথম-শ্রেণীর খেলায় অংশ নেননি। ৬৩টি খেলায় ৩১.১০ গড়ে ২,৭৬৮ রান, ৩৪ ক্যাচ, ১৮ স্ট্যাম্পিং ও ৩৫.৬৬ গড়ে তিন উইকেট পান। অংশগ্রহণকৃত সাত টেস্টে ২৫.০০ গড়ে ৩২৫ রান তুলন। এছাড়াও, দশ ক্যাচ ও দুইটি স্ট্যাম্পিংয়ের সাথে স্বীয় নামকে জড়িয়ে রাখেন।

ইয়ান ফুলারটন ও গ্লেডিস ফুলারটন নামীয় তার আরও দুই ভাই রয়েছে।[১] তন্মধ্যে, কনিষ্ঠ ভ্রাতা ইয়ান ফুলারটন ট্রান্সভালের পক্ষে খেলেছেন। ১৯ নভেম্বর, ২০০২ তারিখে ৭৯ বছর বয়সে কেপ টাউনের রন্দেবশ এলাকায় জর্জ ফুলারটনের দেহাবসান ঘটে।

তথ্যসূত্র সম্পাদনা

  1. "George Fullerton"। cricketarchive.com। সংগ্রহের তারিখ ২৯ মার্চ ২০১২ 

আরও দেখুন সম্পাদনা

বহিঃসংযোগ সম্পাদনা