রাসেল এনডিন
উইলিয়াম রাসেল এনডিন (ইংরেজি: Russell Endean; জন্ম: ৩১ মে, ১৯২৪ - মৃত্যু: ২৮ জুন, ২০০৩) ট্রান্সভাল প্রদেশের জোহেন্সবার্গের পার্কভিউ এলাকায় জন্মগ্রহণকারী দক্ষিণ আফ্রিকান আন্তর্জাতিক ক্রিকেটার ছিলেন। দক্ষিণ আফ্রিকা ক্রিকেট দলের অন্যতম সদস্য ছিলেন তিনি। ১৯৫১ থেকে ১৯৫৮ সময়কালে দক্ষিণ আফ্রিকার পক্ষে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অংশগ্রহণ করেছেন।
ব্যক্তিগত তথ্য | ||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|
পূর্ণ নাম | উইলিয়াম রাসেল এনডিন | |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
জন্ম | জোহেন্সবার্গ, ট্রান্সভাল | ৩১ মে ১৯২৪|||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
মৃত্যু | ২৮ জুন ২০০৩ কিংস্টন আপোন টেমস, ইংল্যান্ড | (বয়স ৭৯)|||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
ব্যাটিংয়ের ধরন | ডানহাতি | |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
ভূমিকা | ব্যাটসম্যান, মাঝে-মধ্যে উইকেট-রক্ষক | |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
আন্তর্জাতিক তথ্য | ||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
জাতীয় দল |
| |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
টেস্ট অভিষেক (ক্যাপ ১৮৪) | ১৬ আগস্ট ১৯৫১ বনাম ইংল্যান্ড | |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
শেষ টেস্ট | ২৮ ফেব্রুয়ারি ১৯৫৮ বনাম অস্ট্রেলিয়া | |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
খেলোয়াড়ী জীবনের পরিসংখ্যান | ||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
| ||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
উৎস: ইএসপিএনক্রিকইনফো.কম, ৪ জুলাই ২০১৯ |
ঘরোয়া প্রথম-শ্রেণীর দক্ষিণ আফ্রিকান ক্রিকেটে ট্রান্সভাল দলের প্রতিনিধিত্ব করেন। দলে তিনি মূলতঃ ডানহাতি ব্যাটসম্যান হিসেবে খেলতেন। এছাড়াও, মাঝে-মধ্যে উইকেট-রক্ষকের দায়িত্ব পালন করতেন রাসেল এনডিন।
আন্তর্জাতিক ক্রিকেট
সম্পাদনা১৯৪৫-৪৬ মৌসুম থেকে ১৯৬০-৬১ মৌসুম পর্যন্ত রাসেল এনডিনের প্রথম-শ্রেণীর খেলোয়াড়ী জীবন চলমান ছিল। সমগ্র খেলোয়াড়ী জীবনে ২৮ টেস্টে অংশগ্রহণ করার সুযোগ পেয়েছিলেন রাসেল এনডিন। ১৬ আগস্ট, ১৯৫১ তারিখে ওভালে স্বাগতিক ইংল্যান্ডের বিপক্ষে টেস্ট ক্রিকেটে অভিষেক ঘটে তার।[১] ২৮ ফেব্রুয়ারি, ১৯৫৮ তারিখে পোর্ট এলিজাবেথে সফরকারী অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে সর্বশেষ টেস্টে অংশ নেন তিনি।
টেস্ট খেলায় দুইটি উচ্চ পর্যায়ের অপ্রত্যাশিত ডিসমিসালের সাথে স্বীয় নামকে জড়িয়ে রেখেছেন। ২১ আগস্ট, ১৯৫১ তারিখে ওভালে ইংল্যান্ড-দক্ষিণ আফ্রিকার মধ্যকার সিরিজের পঞ্চম টেস্টে অ্যাথল রোয়ানের বল ইংরেজ ক্রিকেটার লেন হাটন মোকাবেলা করছিলেন। উইকেট-রক্ষকের দায়িত্ব পালনকালে প্রতিবন্ধকতার শিকার হওয়ায় অবস্ট্রাক্টিং দ্য ফিল্ডের আবেদন আম্পায়ার সাড়া দিলে বিখ্যাত ইংরেজ ক্রিকেটার লেন হাটন আউট হন। অপরটি তিনি নিজে। পাঁচ বছর পর নিউল্যান্ডসে ব্যাটসম্যান হিসেবে খেলা চলাকালে জিম লেকারের বল হাতে নেয়ার ফলে প্রথম ক্রিকেটার হিসেবে টেস্ট ক্রিকেটের ইতিহাসে হ্যান্ডলড দ্য বলে আউট হন।[২]
অস্ট্রেলিয়া গমন, ১৯৫২-৫৩
সম্পাদনা১৯৫২-৫৩ মৌসুমে অস্ট্রেলিয়া সফরে রাসেল এনডিনের স্বর্ণালী সময় অতিবাহিত হয়। জ্যাক চিদামের নেতৃত্বাধীন দক্ষিণ আফ্রিকা দল নব উদ্যমে ফিল্ডিংশৈলী প্রদর্শনে তৎপর হয়। হিউ টেফিল্ডের বলে কিথ মিলার বড় ধরনের রান সংগ্রহকালে বাউন্ডারি সীমানায় এক হাতে ক্যাচ নেয়ার বিষয়টি সর্বকালের সেরাদের তালিকায় রয়েছে। মেলবোর্ন টেস্টে অপরাজিত ১৬২ রান সংগ্রহ সমগ্র সিরিজে দক্ষিণ আফ্রিকার একমাত্র সেঞ্চুরি ছিল। দ্বিতীয় ইনিংসে ৭০ রান সংগ্রহের ফলে দক্ষিণ আফ্রিকা দল জয় পায় ও সিরিজে সমতা নিয়ে আসে।
এছাড়াও রাসেল এনডিন আরও দুইটি শতরানের ইনিংস হাঁকান। অকল্যান্ডে ড্র হওয়া টেস্টে ১১৬ রান তুলেন। ১৯৫৫ সালে লিডসে অপরাজিত ১১৬ রান তুলে দক্ষিণ আফ্রিকাকে ২-২ ব্যবধানে সিরিজে সমতায় আনেন। তবে, চূড়ান্ত টেস্টে জিম লেকার ও টনি লকের বদান্যতায় সিরিজ খোয়ায় দক্ষিণ আফ্রিকা দল।
অস্ট্রেলিয়ায় ‘এন্ডলেস এনডিন’ নামে পরিচিতি পান। কিন্তু, ঘরোয়া ক্রিকেটে তিনি দ্রুতগতিতে রান তোলার জন্যে অধিক পরিচিত ছিলেন। ১৯৫৪ সালে ট্রান্সভাল বনাম ফ্রি স্টেটের মধ্যকার খেলায় মধ্যাহ্নভোজনের পূর্বেই শতরানের ইনিংস খেলেন। এরফলে প্রথম দক্ষিণ আফ্রিকান হিসেবে এ স্বীকৃতি পান।
খেলার ধরন
সম্পাদনাযুদ্ধ পরবর্তীকালে দক্ষিণ আফ্রিকার পুণরুত্থানে অন্যতম সেরা ফিল্ডারের ভূমিকায় অবতীর্ণ হয়েছিলেন। উইকেট-রক্ষক হিসেবে টেস্ট ক্রিকেটে অভিষেক পর্ব সম্পন্ন হলেও আউটফিল্ডে ৪১ ক্যাচ তালুবন্দী করেছিলেন। হিউ টেফিল্ডের ন্যায় অসাধারণ অফ-স্পিনারের নিত্য অনুষঙ্গ ছিলেন।
বিখ্যাত ক্রিকেটার ব্রুস মিচেলের ব্যাটিংয়ের অনুকরণ করে ভূমি থেকে পাঁচ ইঞ্চি উপরে ব্যাট উঁচিয়ে রাখতেন। তেমনি রাসেল এনডিনের ন্যায় জন্টি রোডস ও থামি সোলকিল দক্ষিণ আফ্রিকার পক্ষে হকি খেলায় অংশ নিয়েছেন। গড়পড়তা ক্রিকেটারের তুলনায় মাঠের বাইরের বেশ ভদ্রোচিত আচরণের অধিকারী ছিলেন। কোন এক সফরে ব্যালে অনুষ্ঠানে উপস্থিত থেকে দলীয় সঙ্গীদের বিস্মিত করার কথা ধারাভাষ্যকার চার্লস ফরচুন স্মরণ করে দেন।
ব্যক্তিগত জীবন
সম্পাদনাদ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ চলাকালীন দক্ষিণ আফ্রিকা ৬ষ্ঠ সাঁজোয়া বিভাগের সদস্যরূপে মিশর ও ইতালিতে কাজ করেন। চার্টার্ড একাউন্টেন্ট হিসেবে স্বীকৃতি পান।
ব্যক্তিগত জীবনে বিবাহিত ছিলেন তিনি। ১৯৫৫ সালে ভবিষ্যতের জীবনসঙ্গিনী মারিয়েলের সাথে ইংল্যান্ডে পরিচয় ঘটে। দুই বছর পূর্বে তার দেহাবসান ঘটে। মৃত্যু পূর্ব-পর্যন্ত সারের ওরচেস্টারে পার্কে বসবাস করতেন ও বিপিতে চার্টার্ড একাউন্টেন্ট হিসেবে কাজ করতেন। ২৮ জুন, ২০০৩ তারিখে ৭৯ বছর বয়সে ইংল্যান্ডের সারের কিংস্টন আপোন টেমস এলাকায় রাসেল এনডিনের দেহাবসান ঘটে।
তথ্যসূত্র
সম্পাদনা- ↑ "South Africa in England (1951): Scorecard of fifth Test"। Cricinfo। সংগ্রহের তারিখ জুলাই ৪, ২০১৯।
- ↑ "The greatest one-day knock of all"। ESPN Cricinfo। সংগ্রহের তারিখ ৫ জুন ২০১৯।
আরও দেখুন
সম্পাদনাবহিঃসংযোগ
সম্পাদনা- ইএসপিএনক্রিকইনফোতে রাসেল এনডিন (ইংরেজি)
- ক্রিকেটআর্কাইভে রাসেল এনডিন (সদস্যতা প্রয়োজনীয়) (ইংরেজি)