টনি লক
গ্রাহাম অ্যান্থনি রিচার্ড (টনি) লক (ইংরেজি: Tony Lock; জন্ম: ৫ জুলাই, ১৯২৯ - মৃত্যু: ৩০ মার্চ, ১৯৯৫) সারের লিম্পসফিল্ড এলাকায় জন্মগ্রহণকারী বিখ্যাত ইংরেজ আন্তর্জাতিক ক্রিকেট তারকা ছিলেন। ইংল্যান্ড ক্রিকেট দলের অন্যতম সদস্য ছিলেন তিনি। ১৯৫২ থেকে ১৯৬৮ সময়কালে ইংল্যান্ডের পক্ষে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অংশগ্রহণ করেছেন।
![]() ১৯৭০ সালের সংগৃহীত স্থিরচিত্রে টনি লক | |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
ব্যক্তিগত তথ্য | |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|
পূর্ণ নাম | গ্রাহাম অ্যান্থনি রিচার্ড লক | ||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
জন্ম | লিম্পসফিল্ড, সারে, ইংল্যান্ড | ৫ জুলাই ১৯২৯||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
মৃত্যু | ৩০ মার্চ ১৯৯৫ পার্থ, অস্ট্রেলিয়া | (বয়স ৬৫)||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
ব্যাটিংয়ের ধরন | ডানহাতি | ||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
বোলিংয়ের ধরন | স্লো লেফট আর্ম অর্থোডক্স | ||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
ভূমিকা | বোলার | ||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
আন্তর্জাতিক তথ্য | |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
জাতীয় পার্শ্ব |
| ||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
টেস্ট অভিষেক (ক্যাপ ৩৭০) | ১৭ জুলাই ১৯৫২ বনাম ভারত | ||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
শেষ টেস্ট | ৩ এপ্রিল ১৯৬৮ বনাম ওয়েস্ট ইন্ডিজ | ||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
ঘরোয়া দলের তথ্য | |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
বছর | দল | ||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
১৯৪৬-১৯৬৩ | সারে | ||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
১৯৬২-১৯৭১ | ওয়েস্টার্ন অস্ট্রেলিয়া | ||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
১৯৬৫-১৯৬৭ | লিচেস্টারশায়ার | ||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
খেলোয়াড়ী জীবনের পরিসংখ্যান | |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
| |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
উৎস: ইএসপিএনক্রিকইনফো.কম, ১৯ ফেব্রুয়ারি ২০১৬ |
ঘরোয়া প্রথম-শ্রেণীর ইংরেজ কাউন্টি ক্রিকেটে সারে[১] ও লিচেস্টারশায়ার এবং অস্ট্রেলীয় ঘরোয়া প্রথম-শ্রেণীর ক্রিকেটে ওয়েস্টার্ন অস্ট্রেলিয়া ক্রিকেট দলের পক্ষে খেলেছেন টনি লক। সমগ্র খেলোয়াড়ী জীবনে ৪৯ টেস্টে ২৫.৫৮ গড়ে ১৭৪ উইকেট পেয়েছেন তিনি।[২] দলে তিনি মূলতঃ বামহাতি স্পিন বোলিং করতেন।
প্রথম-শ্রেণীর ক্রিকেটসম্পাদনা
১৯৪৬ সালে সতের বছর বয়সে সারে ক্লাবের পক্ষে প্রথম-শ্রেণীর ক্রিকেটে অভিষেক ঘটে তার। কিন্তু, ১৯৪৯ সালের পূর্ব-পর্যন্ত দলে তিনি নিয়মিতভাবে খেলতে পারেননি। ১৯৫১ সালে ১০৫ উইকেট পান। এরপর ১৯৬২ সাল পর্যন্ত নিয়মিতভাবে শত উইকেটের প্রাপ্তি ঘটতো তার। তন্মধ্যে, ১৯৫৫ ও ১৯৫৭ সালে দুই শতাধিক উইকেট পেয়েছেন।
১৯৬২-৬৩ মৌসুমের অ্যাশেজ থেকে বাদ পড়ে ওয়েস্টার্ন অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে ব্যাপক সাফল্য পান। খেলা থেকে অবসরের পূর্ব-পর্যন্ত ঐ রাজ্যদলের সাথে প্রত্যেক শীত মৌসুমেই খেলতেন তিনি। ১৯৬৫ সালে লিচেস্টারশায়ারে খেলেন ও পরবর্তী দুই মৌসুমে দলের অধিনায়ক ছিলেন। ১৯৬৭ সালে দলকে কাউন্টি চ্যাম্পিয়নশীপের দ্বিতীয় স্থানে নিয়ে যান। অস্ট্রেলীয় টেস্ট খেলোয়াড় পল শিহানের উইকেটটি তার সর্বশেষ প্রথম-শ্রেণীর উইকেট প্রাপ্তি ছিল।
টেস্ট ক্রিকেটসম্পাদনা
১৯৫২ সালে ভারতের বিপক্ষে অনুষ্ঠিত সিরিজের তৃতীয় টেস্টে তার অভিষেক ঘটে।[২] পরের গ্রীষ্মে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে চতুর্থ ও পঞ্চম টেস্টে অংশ নেন। ইংল্যান্ড অ্যাশেজ পুণরুদ্ধার করে। ১৯৫৬ সালে ওল্ড ট্রাফোর্ডে সফরকারী অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে জিম লেকারের ১৯/৯০ বিশ্বরেকর্ডের বিপরীতে জিম বার্কের বাকী একটি উইকেট নিয়ে জনপ্রিয়তা পান তিনি। দুই বছর পর অসাধারণ গ্রীষ্মকাল অতিবাহিত করেন। দূর্বল নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে ৭.৪৭ গড়ে ৩৪ উইকেট পান। কিন্তু, ১৯৫৮-৫৯ মৌসুমে অস্ট্রেলিয়া সফরে পুরোপুরি ব্যর্থতায় পর্যবসিত হয়ে পড়ে তার বোলিং। কিন্তু একই মৌসুমের শীতে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে পুনরায় বিধ্বংসী বোলিং করেন। নয় রানেরও কম গড়ে ১৩ উইকেট নেন ও নিউজিল্যান্ডেই পুণরাবৃত্তি ঘটান। ১৯৬১ সালে পুনরায় দলে ফিরে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে টেস্টে নামেন। ১৯৬২-৬৩ মৌসুমের অ্যাশেজ সিরিজ থেকে বাদ পড়ে ঘরোয়া ক্রিকেটে ফিরে যান। ১৯৬৭-৬৮ মৌসুমে ফ্রেড টিটমাসের আঘাতপ্রাপ্তিতে আকস্মিকভাবে ইংল্যান্ড দলে খেলার সুযোগ পান। ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে সিরিজের শেষ দুই টেস্ট খেলেন। সর্বশেষ খেলোয়াড় হিসেবে প্রথম-শ্রেণীর কাউন্টিতে না খেলেও ইংল্যান্ড দলের সদস্য ছিলেন। বল হাতে তেমন সফলতা না পেলেও গায়ানার জর্জটাউনে চূড়ান্ত টেস্টের প্রথম ইনিংসে প্রথম-শ্রেণীর নিজস্ব সর্বোচ্চ ৮৯ করেন। ছয়দিনের ঐ টেস্টে নবম উইকেট পতনের পর তিনি মাঠে নামেন।[২] এরফলে দল ১-০ ব্যবধানে সিরিজ জয় করে।
অর্জনসমূহসম্পাদনা
অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে সিরিজে তার অসাধারণ কৃতিত্বের ফলে উইজডেন কর্তৃপক্ষ তাকে ১৯৫৪ সালের অন্যতম বর্ষসেরা ক্রিকেটার ঘোষণা করে।[৩]
প্রথম-শ্রেণীর ক্রিকেটে ২,৮৪৪ উইকেট লাভ করেছেন। এরফলে সর্বকালের সেরাদের তালিকায় তিনি নবম স্থান অধিকার করে আছেন। একমাত্র খেলোয়াড় হিসেবে তিনি দশ সহস্রাধিক রান করা স্বত্ত্বেও কোন সেঞ্চুরির সন্ধান পাননি। তবে, ২৭বার অর্ধ-শতক করেন ও গায়ানার বিপক্ষে সর্বোচ্চ ৮৯ রান তোলেন। ডব্লিউ.জি. গ্রেস ও ফ্রাঙ্ক ওলি'র পর প্রথম-শ্রেণীর ক্রিকেটে তৃতীয় সর্বাধিক ৮৩১ ক্যাচ নেন, যার অধিকাংশই ছিল শর্ট লেগ অঞ্চলে।
অবসরসম্পাদনা
ক্রিকেট থেকে অবসর নেয়ার পর পার্থ ও লন্ডনে কোচিংয়ের সাথে নিজেকে সম্পৃক্ত করেন। কিন্তু শেষ জীবনে দুইটি পৃথক যৌন নির্যাতনের অভিযোগ আসে তার নামে। ১৯৮৭ সালে পনের বছর বয়সী কিশোরীকে বোলিং শিক্ষা প্রদানকল্পে বাড়ীতে আমন্ত্রণ জানান।[৪] পরদিনই তেরো বছর বয়সী কিশোরী তার বিরুদ্ধে আরও একটি অভিযোগ করে।[৫] ডিসেম্বর, ১৯৯৩ সালে ১০-২ ভোটে তাকে নির্দোষ প্রমাণ করা হয়। এ ঘটনায় তার মানসিক অবস্থায় ব্যাপক প্রভাব ফেলে। গৃহীত নিজ শহর পার্থে ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়ে ৩০ মার্চ, ১৯৯৫ তারিখে ৬৫ বছর বয়সে টনি লকের দেহাবসান ঘটে।
তথ্যসূত্রসম্পাদনা
- ↑ "Surrey players". CricketArchive. Retrieved 10 August, 2017.
- ↑ ক খ গ Bateman, Colin (১৯৯৩)। If The Cap Fits (ইংরেজি ভাষায়)। Tony Williams Publications। পৃষ্ঠা 112। আইএসবিএন 1-869833-21-X। সংগ্রহের তারিখ ২৫ এপ্রিল ২০১১।
- ↑ "Wisden Cricketers of the Year" (ইংরেজি ভাষায়)। CricketArchive। সংগ্রহের তারিখ ২০০৯-০২-২১।
- ↑ Cricket Sport in brief, The Guardian, 1 December 1993
- ↑ Tony Lock faces new sex assault charges, The Times, 2 December 1993
আরও দেখুনসম্পাদনা
বহিঃসংযোগসম্পাদনা
- ইএসপিএনক্রিকইনফোতে টনি লক (ইংরেজি)
- ক্রিকেটআর্কাইভে টনি লক (সদস্যতা প্রয়োজনীয়) (ইংরেজি)