সরকারি ব্রজমোহন কলেজ, বরিশাল

বাংলাদেশের বরিশাল শহরে অবস্থিত প্রাচীন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান
(ব্রজমোহন কলেজ থেকে পুনর্নির্দেশিত)

ব্রজমোহন কলেজ বা বি.এম কলেজ বাংলাদেশের অন্যতম শীর্ষস্থানীয় ও প্রাচীন ঐতিহ্যবাহী শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। এটি বাংলাদেশের দক্ষিণাংশে বরিশাল শহরে অবস্থিত। ১৮৮৯ সালে প্রখ্যাত সমাজসেবক, রাজনীতিবিদ ও শিক্ষানুরাগী অশ্বিনীকুমার দত্ত কলেজটি প্রতিষ্ঠা করেন। তখন কলেজটি কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় এর অধিভুক্ত ছিল। সেসময়ে এ কলেজের মান এতই উন্নত ছিল যে অনেকে একে দক্ষিণ বাংলার অক্সফোর্ড বলে আখ্যায়িত করেন। [] ১৯৬৫ সালে কলেজটির জাতীয়করণ করা হয় ও বর্তমানে কলেজটি জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় এর অধিভুক্ত। কলেজটিতে স্নাতক (সম্মান) শ্রেণীতে ২২টি বিষয়ে ও স্নাতকোত্তর শ্রেণীতে ২১টি বিষয়ে পাঠদান করে থাকে,সর্বশেষ ২০১৪ সালের ১০ই জানুয়ারি প্রতিষ্ঠাতা বিভাগীয় প্রধান প্রফেসর বিপ্লব কুমার ভট্টাচার্য এর একক প্রচেষ্টায় মাত্র ১১ জন ছাত্রছাত্রী নিয়ে পরিসংখ্যান বিভাগে অনার্স কোর্স চালু করা হয়। প্রফেসর বিপ্লব কুমার ভট্টাচার্য ২০১৬ সালে অধ্যক্ষ প্রফেসর স. ম. ইমানুল হাকিম এর নেতৃত্বে উচ্চমাধ্যমিক শ্রেণী বিজ্ঞান শাখা পুনরায় চালু করেন।

সরকারি ব্রজমোহন কলেজ
সরকারি বি.এম কলেজ
নীতিবাক্যসত্য, প্রেম ও পবিত্রতা
ধরনসরকারি কলেজ
স্থাপিত১৮৮৯
প্রতিষ্ঠাতামহাত্মা অশ্বিনীকুমার দত্ত
ইআইআইএন১০০৮৭৫
অধ্যক্ষপ্রফেসর ড. শেখ মো: তাজুল ইসলাম
শিক্ষায়তনিক ব্যক্তিবর্গ
২২
প্রশাসনিক ব্যক্তিবর্গ
১৯৮
শিক্ষার্থী২৭০০০ (প্রায়)
অবস্থান,
শিক্ষাঙ্গনশহরে ৬০ একর (২,৪০,০০০ বর্গমিটার)
সংক্ষিপ্ত নামবি এম কলেজ
অধিভুক্তিবাংলাদেশ জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়
ওয়েবসাইটঅফিসিয়াল ওয়েবসাইট
মানচিত্র

কলেজে ছাত্রদের জন্য ৩টি (মুসলিম হোস্টেল, মহাত্মা অশ্বিনীকুমার হোস্টেল, কবি জীবনানন্দ দাশ হিন্দু হোস্টেল) এবং মেয়েদের জন্য চারতলা ভবনের ১টি হোস্টেল (বনমালী গাঙ্গুলী মহিলা হোস্টেল) রয়েছে। কলেজের কেন্দ্রীয় লাইব্রেরিতে মোট বইয়ের সংখ্যা ৪০,০০০। এখানে প্রশাসনিক ভবন, লাইব্রেরি ভবন, মুক্তমজ্ঞ, শহীদ মিনার []১টি বাণিজ্য ভবন, ৪টি কলা ভবন, একটি অডিটোরিয়াম, ৪টি বিজ্ঞান ভবন১ টি পরীক্ষা ভবন,কেন্দ্রীয় মসজিদের পাশাপাশি ২ টি মসজিদ ও মন্দির রয়েছে ও ৩টি খেলার মাঠ রয়েছে। দুই প্রান্তে দুটি ও মাঝে ১ টি দিঘি কলেজের সৌন্দর্যকে করে তুলেছে মনোমুগ্ধকর। এছাড়াও কলেজ প্রাঙ্গনে প্রথিতযশা কবি জীবনানন্দ দাসের নামে একটি ক্যাফে রয়েছে যেটি জীবনানন্দ ক্যাফে নামে পরিচিত।এছাড়া ডিবেটিং ক্লাব, ইংলিশ ল্যাংগুয়েজ ক্লাব, বাধন,রোবার, বিএনসিসি শাখা রয়েছে।

ইতিহাস

সম্পাদনা
 
ব্রজমোহন কলেজ, প্রধান ভবন

১৮৫৩ সালে বরিশাল জিলা স্কুল প্রতিষ্ঠার পর থেকে এ অঞ্চলে আধুনিক শিক্ষার ক্ষেত্রে যে নবজাগরণ শুরু হয় তারই ধারাবাহিকতায় বরিশালের তৎকালীন জেলা ম্যাজিস্ট্রেট বাবু রমেশচন্দ্র দত্তের অনুরোধে ১৮৮৯ সালের ১৪ জুন অশ্বিনী কুমার দত্ত তাঁর বাবা ব্রজমোহন দত্তের নামে সত্য, প্রেম, পবিত্রতার মহান আদর্শে ১৮৮৪ সালে প্রতিষ্ঠিত বি এম স্কুল ক্যাম্পাসে ব্রজমোহন কলেজ স্থাপন করেন।

ব্রজমোহন কলেজ ১৮৮৯ খ্রিস্টাব্দে অশ্বিনী ভবনে শুরু হয়। ১৮৯৮ খ্রিস্টাব্দে বিএম কলেজ ও বিএম স্কুল বর্তমান বিএম স্কুল ভবনে স্থানান্তরিত হয়।

১৯৬৪ সালে ব্রজমোহন কলেজে পুনরায় অর্থনীতিতে অনার্স কোর্স খোলা হয়। ১৯৬৫ সালের ১ জুলাই কলেজটি প্রাদেশিকীকরণ অর্থাৎ সরকারিকরণ করা হয়। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নির্দেশে ১৯৭২ সালের ১৮ আগস্ট বিএম কলেজকে বিশ্ববিদ্যালয় কলেজ ঘোষণা করা হয়। এ ব্যাপারে মন্ত্রী আবদুর রব সেরনিয়াবাত মুখ্য ভূমিকা পালন করেন। ১৯৭২ সালে (১৯৭১-৭২ শিক্ষাবর্ষে) সরকারি ব্রজমোহন কলেজে বাংলা, রাষ্ট্রবিজ্ঞান, ইসলামের ইতিহাস, হিসাব বিজ্ঞান, ব্যবস্থাপনা, রসায়ন ও পদার্থবিদ্যা এই সাতটি বিষয়ে অনার্স এবং বাংলা, অর্থনীতি, ইতিহাস ও রসায়ন এই চারটি বিষয়ে মাস্টার্স কোর্স খোলা হয়। ১৯৭৫ সালে ইতিহাসে অনার্স কোর্স চালু করা হয়। ১৯৮৯ সালে ইংরেজি ও মৃত্তিকাবিজ্ঞানে মাস্ট্রার্স ১ম পর্ব এবং ১৯০০ সালে ইংরেজি, দর্শন, সমাজবিজ্ঞান, উদ্ভিদ বিজ্ঞান, গণিত, মৃত্তিকা বিজ্ঞান ও প্রাণিবিজ্ঞান-এই সাতটি বিষয়ে অনার্স আর গণিতের মাস্টার্স ১ম পর্ব এবং ১৯৯০ সালে ইংরেজি, দর্শন, সমাজবিজ্ঞান, উদ্ভিদ বিজ্ঞান, গণিত, মৃত্তিকা বিজ্ঞান ও প্রাণিবিজ্ঞান-এই সাতটি বিষয়ে অনার্স আর গণিতের মাস্টার্স ১ম পর্ব পাঠ্যক্রম চালু করা হয। ১৯৮৯ সালের ১৪ জুন ব্রজমোহন কলেজের শতবর্ষ পূর্ণ হয় এবং ১৯৯২ সালের ২৫, ২৬ ও ২৭ অক্টোবর কলেজের শতবর্ষপূর্তি উৎসব উদযাপিত হয়। ১৯৯৩ সালে সমাজকল্যাণে এবং ১৯৯৪ সালে ইসলামি শিক্ষা, সংস্কৃতি, দর্শন, সমাজ বিজ্ঞান প্রাণিবিজ্ঞান ও উদ্ভিদ বিজ্ঞানে মাস্টার্স পাঠ্যক্রম চালু করা হয়। ১৯৯৫ সালে সমাজকল্যাণে এবং দীর্ঘ ১০ বছর পর ২০০৫-২০০৬ শিক্ষাবর্ষে ইসলামি শিক্ষায় মাস্টার্স কোর্সে খোলা হয়। ২০১৪ সালে সর্বশেষ পরিসংখ্যান বিভাগ তৈরি করে অনার্স কোর্স খোলা হয়।

শিক্ষা-সহায়ক কার্যক্রম

সম্পাদনা
  • বাংলাদেশ রোভার স্কাউট
  • বাংলাদেশ জাতীয় ক্যাডেট কোর (সুন্দরবন রেজিমেন্ট)
  • উত্তরণ সাংস্কৃতিক সংগঠন
  • সংস্কৃতি পরিষদ
  • ব্রজমোহন থিয়েটার
  • বাঁধন (ব্লাড ডোনেশন)
  • সন্ধানী (ব্লাড ডোনেশন)
  • ব্রজমোহন কলেজ চলচ্চিত্র সংসদ
  • ব্রজমোহন কলেজ বিতর্ক ক্লাব (বিএমসিডিসি)

ছাত্র সংগঠন

সম্পাদনা

উল্লেখযোগ্য প্রাক্তন শিক্ষার্থী

সম্পাদনা

চিত্রশালা

সম্পাদনা

আরও দেখুন

সম্পাদনা

তথ্যসূত্র

সম্পাদনা
  1. "বিএম কলেজ - আমাদের বরিশাল"। ১৬ জুন ২০১৭ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৮ এপ্রিল ২০১৫