রওশন আরা বাচ্চু
রওশন আরা বাচ্চু (১৭ ডিসেম্বর ১৯৩২ – ৩ ডিসেম্বর ২০১৯) ১৯৫২ সালে বাংলা ভাষা আন্দোলনের একজন সংগ্রামী ছিলেন।[১] ২১শে ফেব্রুয়ারিতে যে সমস্ত ছাত্র নেতারা ১৪৪ ধারা ভাঙ্গতে চেয়েছিলেন তিনি তাদের অন্যতম।[২]
রওশন আরা বাচ্চু | |
---|---|
জন্ম | ১৭ ডিসেম্বর ১৯৩২ |
মৃত্যু | ৩ ডিসেম্বর ২০১৯ (বয়স ৮৬) |
জাতীয়তা | বাংলাদেশী |
নাগরিকত্ব | ব্রিটিশ ভারত (১৯৪৭ সাল পর্যন্ত) পাকিস্তান (১৯৭১ সালের পূর্বে) বাংলাদেশ |
পেশা | শিক্ষকতা |
পরিচিতির কারণ | ভাষা আন্দোলন |
জন্ম
সম্পাদনারওশন আরা ১৭ ডিসেম্বর ১৯৩২ সালে সিলেটের মৌলভীবাজারের কুলাউড়ার উছলাপাড়া গ্রামে জন্ম গ্রহণ করেন।[৩] তার বাবার নাম এ এম আরেফ আলী এবং মায়ের নাম মনিরুন্নেসা খাতুন।
শিক্ষা ও চাকরি জীবন
সম্পাদনারওশন আরা বাচ্চু ১৯৪৭ সালে পিরোজপুর গার্লস স্কুল থেকে ম্যাট্রিক পাস করেন।[৪] এরপর বরিশাল ব্রজমোহন কলেজ থেকে ১৯৪৮ সালে ইন্টারমিডিয়েট পাস করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ১৯৫৩ সালে দর্শনে অনার্স করেন।[২] এরপর ১৯৬৫ সালে বি এড এবং ১৯৭৪ সালে ইতিহাসে এম এ করেন। তিনি সলিমুল্লাহ মুসলিম হল এবং উইম্যান স্টুডেন্টস রেসিডেন্স এর সদস্য নির্বাচিত হন। তিনি গণতান্ত্রিক প্রোগ্রেসিভ ফ্রন্ট এর সাথে ছাত্র রাজনীতিতে অংশগ্রহণ করেন।[৫]
তিনি বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সাথে যুক্ত ছিলেন যেমন, ঢাকার আনন্দময়ী বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়, লিটন অ্যাঞ্জেলস, আজিমপুর গভর্নমেন্ট গার্লস স্কুল এন্ড কলেজ (খন্ডকালীন), নজরুল একাডেমি, কাকলি হাই স্কুল এন্ড কলেজ এবং পরে আলেমা একাডেমিতে। সবশেষে ২০০০ সালে বিএড কলেজে অধ্যাপক হিসেবে অবসর গ্রহণ করেন।[৪]
ভাষা আন্দোলনে ভূমিকা
সম্পাদনা১৯৫২ সালের বাংলা ভাষা আন্দোলনের সময় রওশন আরা বাচ্চু ছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রী। ২১ ফেব্রুয়ারিতে যে সকল ছাত্র নেতারা ১৪৪ ধারা ভাঙ্গার পক্ষে ছিলেন তিনি তাদের মধ্যে অন্যতম।[৬] তিনি জনমত সমর্থনের জন্যও ব্যাপক চেষ্টা করেন। তার অনুপ্রেরণায় ইডেন মহিলা কলেজ এবং বাংলাবাজার বালিকা বিদ্যালয় এর ছাত্রীদের সংগঠিত করে আমতলার সমাবেশ স্থলে নিয়ে আসেন। এখান থেকেই ছাত্রনেতারা ১৪৪ ধারা ভঙ্গের ঐতিহাসিক সিদ্ধান্ত নেন। তারা ব্যারিকেড টপকিয়ে মিছিল নিয়ে এগুনোর চেষ্টা করেন। কিন্তু পুলিশের বাধার মুখে ব্যরিকেড টপকানো বেশ কঠিন ছিলো। রওশন আরা বাচ্চু তার দলের সবাইকে নিয়ে পুলিশের তৈরি ব্যারিকেড ভেঙ্গে ফেলেন। এরপর পুলিশ লাঠিচার্জ শুরু করে দেয়। এতে নিহত ও আহত হন অনেকে। রওশন আরা বাচ্চুও ছিলেন এমন আহতদের একজন।
মৃত্যু
সম্পাদনারওশন আরা বাচ্চু ৩ ডিসেম্বর ২০১৯ সালে অ্যাপোলো হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যুবরণ করেন।[৭]
চিত্রশালা
সম্পাদনা-
রওশন আরা বাচ্চু ২০১২
-
রওশন আরা বাচ্চু ২০১২
-
রওশন আরা বাচ্চু ২০১২
তথ্যসূত্র
সম্পাদনা- ↑ "বাংলা ভাষার মান রাখতে নারীর অবদান"। jaijaidinbd.com।
- ↑ ক খ Ittefaq, The Daily। "রওশন আরা বাচ্চু :: দৈনিক ইত্তেফাক"। archive.ittefaq.com.bd।
- ↑ "ভাষা আন্দোলন নিয়ে বই লিখছেন রওশন আরা - Kaler Kantho"। www.kalerkantho.com।
- ↑ ক খ "আজও জানি না কে ছিল সেই উপকারী মানুষ"।
- ↑ দৈনিক জনকণ্ঠে ১৪৪ ধারা ভঙ্গে ছাত্রীদের ভূমিকা[স্থায়ীভাবে অকার্যকর সংযোগ]
- ↑ "নারী জাগরণে ভাষা আন্দোলন - - Samakal Online Version"। bangla.samakal.net। ২৪ ফেব্রুয়ারি ২০১৭ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২২ আগস্ট ২০১৭।
- ↑ "না-ফেরার দেশে ভাষাসৈনিক রওশন আরা বাচ্চু | কালের কণ্ঠ"। Kalerkantho। সংগ্রহের তারিখ ২০১৯-১২-০৩।