বড়লেখা উপজেলা
বড়লেখা উপজেলা বাংলাদেশের মৌলভীবাজার জেলার একটি প্রশাসনিক এলাকা। ১৯৪০ খ্রিষ্টাব্দে বড়লেখাকে একটি থানা হিসেবে ঘোষণা করা হয়, পরবর্তিতে তা উপজেলা হিসেবে পরিগণিত হয়।[২]
বড়লেখা | |
---|---|
উপজেলা | |
বড়লেখা | |
ডাকনাম: বড়লেখা | |
বাংলাদেশে বড়লেখা উপজেলার অবস্থান | |
স্থানাঙ্ক: ২৪°৪২′৩০″ উত্তর ৯২°১২′০″ পূর্ব / ২৪.৭০৮৩৩° উত্তর ৯২.২০০০০° পূর্ব | |
দেশ | বাংলাদেশ |
বিভাগ | সিলেট বিভাগ |
জেলা | মৌলভীবাজার জেলা |
আয়তন[১] | |
• মোট | ৪৪৮.৮৬ বর্গকিমি (১৭৩.৩১ বর্গমাইল) |
জনসংখ্যা (২০১১)[১] | |
• মোট | ২,৫৭,৬২০ |
• জনঘনত্ব | ৫৭০/বর্গকিমি (১,৫০০/বর্গমাইল) |
সাক্ষরতার হার[১] | |
• মোট | ৫২.৪% |
সময় অঞ্চল | বিএসটি (ইউটিসি+৬) |
পোস্ট কোড | ৩২৫০ |
প্রশাসনিক বিভাগের কোড | ৬০ ৫৮ ১৪ |
ওয়েবসাইট | প্রাতিষ্ঠানিক ওয়েবসাইট ![]() |
ইতিহাস বা পটভূমিসম্পাদনা
ইংরেজ আমলসম্পাদনা
ব্রিটিশ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানীর গভর্নর লর্ড কার্জন ১৯০৫ খ্রিষ্টাব্দে তৎকালীন বঙ্গদেশকে দুভাগে ভাগ করে পূর্ববঙ্গকে আসামের সাথে রেখে দিলেন। এরপর স্বদেশী আন্দোলন হয়েছে, সপ্তম এডওয়ার্ড মারা গেলেন, পঞ্চম জর্জ সম্রাট হলেন। ১৯১১ খ্রিষ্টাব্দে পঞ্চম জর্জ দিল্লী এলে দিল্লীর দরবারে বঙ্গবিভাজন রোহিত হলো। কিন্তু তৎকালীন শ্রীহট্ট রইলো আসামের সঙ্গে। শ্রীহট্টে তখন ছিল ৪ মহকুমা: সদর শ্রীহট্ট, সুনামগঞ্জ, হবিগঞ্জ, করিমগঞ্জ। সদর মহকুমার আয়তন বেশি হওয়ায় পরবর্তিতে ১৯৮২ খ্রিষ্টাব্দে এটিকে ভেঙে দক্ষিণ শ্রীহট্ট মহকুমার সৃষ্টি করা হয়। করিমগঞ্জে ছিল পাঁচটি থানা: করিমগঞ্জ, জলঢুপ, পাথারকান্দি, রাতাবাড়ি ও বদরপুর। ১৯৪০ খ্রিষ্টাব্দের ১৮ মে তারিখে সরকারি নোটিফিকেশন নম্বর ৫৪৩৩-এর মধ্য দিয়ে জলঢুপ থানাকে দুই ভাগে ভাগ করা হয়। আর তখনই উদ্ভব হয় বিয়ানীবাজার ও বড়লেখা থানার।[৩]
অবস্থান ও আয়তনসম্পাদনা
উপজেলার আয়তন ৪৪৮.৮৬ বর্গ কিলোমিটার। অবস্থান: ২৪°২৬´ থেকে ২৪°৩৯´ উত্তর অক্ষাংশ এবং ৯১°৪৪´ থেকে ৯১°৫৮´ পূর্ব দ্রাঘিমাংশ। এই উপজেলার উত্তরে সিলেট জেলার বিয়ানীবাজার উপজেলা, দক্ষিণে মৌলভীবাজার জেলার জুড়ী উপজেলা, পূর্বে ভারতের আসাম, পশ্চিমে কুলাউড়া উপজেলা, সিলেট জেলার ফেঞ্চুগঞ্জ উপজেলা ও গোলাপগঞ্জ উপজেলা। এবং ভারতের সাথে এর আন্তর্জাতিক সীমানা ২০ কিলোমিটার। বড়লেখা, সিলেট বিভাগের অন্তর্গত মৌলভীবাজার জেলার দ্বিতীয় বৃহত্তম উপজেলা। এই উপজেলা, সিলেট শহর থেকে প্রায় ৬৪ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত[তথ্যসূত্র প্রয়োজন]।
ভূগোল ও ভূ-প্রকৃতিসম্পাদনা
২০১১ খ্রিষ্টাব্দের শুমারী অনুযায়ী উপজেলায় তাপমাত্রা সর্বোচ্চ ২৩.৭°, সর্বনিম্ন ৮.৩° সেন্টিগ্রেড (গড় তাপমাত্রা ১৬° সেন্টিগ্রেড) আর বাতাসে আর্দ্রতার মাত্রা ৭৮.৮ শতাংশ। বৃষ্টিপাতের মাত্রা ২,০৭১ মিলিমিটার।[১]
প্রশাসনিক এলাকাসম্পাদনা
বড়লেখা উপজেলায় বর্তমানে ১টি পৌরসভা ও ১০টি ইউনিয়ন রয়েছে। সম্পূর্ণ উপজেলার প্রশাসনিক কার্যক্রম বড়লেখা থানার আওতাধীন।[৪]
অর্থনীতিসম্পাদনা
এই অঞ্চলের মানুষ মূলত কৃষিজীবী। এছাড়া রয়েছেন ব্যবসায়ী ও সীমিত পর্যায়ে চাকরিজীবী। তবে স্থানীয়রা অধিকাংশই স্বাধীন পেশাজীবি। এই উপজেলার প্রধান রপ্তানীদ্রবের মধ্যে রয়েছে চা, আগর-আতর, আগরবাতি ইত্যাদি।[২] এছাড়া হাওরাঞ্চলের লোকজন মৌসুমে নিজেদের প্রয়োজন মিটিয়ে দেশের অন্যান্য অঞ্চলেও মাছ বিক্রী করে থাকেন। প্রবাসীদের পাঠানো রেমিটেন্স হচ্ছে এতদ অঞ্চলের অর্থনীতির ভিত। তাছাড়া পূর্বাঞ্চলের মানুষের প্রধান অর্থনীতির উৎস হচ্ছে পাহাড় থেকে পাথর সংরক্ষণও বিক্রয়, পশ্চিমাঞ্চলের মানুষ বিশেষ করে মাছ ধরে, নদী থেকে বালু সংগ্রহ ও বিক্রয় করে, মধ্য নিম্নাঞ্চলের মানুষও বাজার সংলগ্ন জনগোষ্ঠি কৃষি ও কৃষিজাত পণ্য উৎপাদন ও বিক্রয় করে তাদের জীবিকা নির্বাহ করে।
ভাষা, সংস্কৃতি ও খেলাধুলাসম্পাদনা
বাংলাদেশের রাষ্ট্রীয় ভাষা বাংলা এ অঞ্চলের ভাষা হলেও মূলত বড়লেখা উপজেলার ভাষা হলো সিলেটি ভাষা বা সিলেটি উপভাষা। তবে কেউ কেউ সিলেটি ভাষার মধ্যেও এই অঞ্চলের ভাষাকে বড়লেখী ভাষা বলে স্বতন্ত্র পরিচয় দিতে পছন্দ করেন। বাংলাদেশের সাধারণ ভাষার মতোও এই ভাষায় ধর্মীয় প্রভাব লক্ষ্যণীয়, যেমন: মুসলমানরা 'পানি' বললেও হিন্দুরা বলেন 'জল', মুসলমানরা 'নাস্তা' বললেও হিন্দুরা বলেন 'জলখাবার', মুসলমানরা 'গোসল' বললেও হিন্দুরা বলেন 'নিহান' ইত্যাদি।[৩] যদিও আধুনিক প্রজন্মে এর অনেকটাই বিলুপ্তির পথে।
নিচে বাংলা ভাষার সাথে সিলেটি ও অন্যান্য উপজাতীয় ভাষার পারস্পরিক তুলনা উদ্ধৃত হলো[৩]:
বাংলা ভাষা | সিলেটি ভাষা/বড়লেখী ভাষা | মণিপুরী ভাষা | খাসিয়া ভাষা | সাঁওতালদের ভাষা |
---|---|---|---|---|
আমার বাড়ি বড়লেখা থানায় | আমার বাড়ি বড়্লেখা থানাত্ | ঐগী ইুযুম বড়লেখা থানাদনি | কা দুনং জঙ্গা বড়লেখা | ইয়াঁ ওরা বড়লেখা থানারে |
আমি বাংলাদেশের নাগরিক | আমি বাংলাদেশোর নাগরিক | ঐহাক বাংলাদেশগী লৈপাকমী অমণি | ঙাসং আপ বাংলাদেশ | ইনদো বাংলাদিশ মরেন হড় |
বাংলা আমার জন্মভূমি | বাংলা অইলো গিয়া আমার যন্মভূমি | ঐহাক্কী পোকচফম বাংলাদেশনি | বাংলা ঙামি ঙাহাপ বাংলা | ইয়াঁ বাংলাদিশমরে জন্ম |
এদেশকে আমি খুব ভালোবাসি | ই দেশরে আমি খুব ভালা 'পাই | লৈপাক অসিবু ঐহাক্ন য়াম্ন ন্মুংশীজৈ | ঙা ইচ ইয়াকা বংলাদেশ | ইনদো নয়া দিশমকে খুবই বেশাকানা |
শিল্পসম্পাদনা
কুটির শিল্পসম্পাদনা
মৃৎশিল্পসম্পাদনা
হাওড় সংলগ্ন অঞ্চলের বন্যার পলিবিধৌত এঁটেল মাটি এতদ অঞ্চলের মৃৎশিল্পকে করেছে গতিশীল। তাছাড়া সনাতন ধর্মাবলম্বীরা অধিকাংশ সময় নিজেদের আচার-অনুষ্ঠানে মাটির বাসন আঁকড়ে রাখেন বলে মৃৎশিল্প এ অঞ্চলে মূলত হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের মধ্যেই বেশি দেখা যায়।
তাঁত শিল্পসম্পাদনা
মণিপুরী তাঁত এতদ অঞ্চলের তাঁত শিল্পের মূল যোগানদাতা।[২]
আগর-আতর শিল্পসম্পাদনা
উপজেলার প্রায় সর্বত্র আগর গাছ থেকে সুগন্ধী আতর উৎপাদনের প্লান্ট থাকলেও ব্রিটিশ আমল থেকেই মূলত এই শিল্পকে পৃষ্ঠপোষকতা ও লালন করে আসছে উপজেলার সুজানগর ইউনিয়নের বাসিন্দারা। এ অঞ্চলের আগর-আতর শিল্প মধ্যপ্রাচ্যসহ বিভিন্ন দেশে রপ্তানী হয় এবং দেশ তা থেকে বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন করে। সরকারি অর্থায়ন ও পৃষ্ঠপোষকতায় তাই এতদ অঞ্চলে অনুষ্ঠিত হয় বিভিন্ন কর্মশালা এবং আগর বৃক্ষায়ন (আগর বাগান) কর্মসূচীও।
পাটি শিল্পসম্পাদনা
বাঁশ-বেত শিল্পসম্পাদনা
শীতল পাটি শিল্প সিলেট অঞ্চলের অন্যান্য স্থানের মতো এই উপজেলায়ও অন্যতম একটি কুটির শিল্প।[২] কেউ কেউ একে পেশা হিসেবেও নিয়ে থাকেন এবং উৎপাদিত পাটি বিভিন্ন হাট-বাজারে ও শহরে বিক্রীর জন্য প্রেরণ করে থাকেন। বিশেষ করে বড়লেখা তালিমপুর ইউনিয়নের গলগজা ও হরিণবদি গ্রামের হিন্দু সম্প্রদায়ের লোক এ পেশার সাথে বেশি জড়িত। দাসের বাজার এক সময় পাটির জন্য বিখ্যাত ছিল। কালের স্বাক্ষী হয়ে এখনো বাজারে পাটি বিক্রি হয়। গোবিন্দপুর,শংকরপুর,লঘাটি,পানিসাওয়া,গুলুয়া,মহারাণি,টুকা,উজিরপুর,মিহারী,কান্দিগ্রাম ছাড়াও সানেশ্বর,উলুউরী,নছিরপুরের লোকেরা পাটি ব্যবসার সাথে জড়িত ছিল।
ক্ষুদ্রশিল্পসম্পাদনা
লৌহশিল্পসম্পাদনা
চা শিল্পসম্পাদনা
উপজেলার পাহাড়ি অঞ্চলের ঢালু জমিতে চা বাগান রয়েছে, যা বাংলাদেশের চা শিল্পে অবদান রাখছে। উপজেলায় চা বাগান রয়েছে ১৮টি (২০০৮), যার সম্মিলিত আয়তন ৬৪.৩৯ বর্গ কিলোমিটার। প্রায় প্রত্যেক বাগানেই চা উৎপাদন কারখানা রয়েছে।
জনসংখ্যার উপাত্তসম্পাদনা
১১ মার্চ ১৯৯১ | ২২ জানুয়ারি ২০০১ | ১৫ মার্চ ২০১১ |
---|---|---|
২,০০,৬৭৪ জন[২][৫] | ২,৩৩,৭২০ জন[৫] | ২,৫৭,৬২০ জন[৫] |
বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো কর্তৃক পরিচালিত ৩০ বছরের আনুপাতিক জনপরিসংখ্যান |
উপজেলার সর্বমোট জনসংখ্যা ২,৫৭,৬২০ জন (২০১১ খ্রিষ্টাব্দ); তন্মধ্যে পুরুষ ১,২৪,৩৭৭, আর নারী ১,৩৩,২৪৩ জন। এই জনসংখ্যার সিংহভাগ মুসলমান (২,১৬,৭৪২ জন), বাকিরা অন্যান্য ধর্মাবলম্বী: হিন্দু ৩৮,৬৫০ জন, খ্রিস্টান ১,৮৮৭ জন, বৌদ্ধ ৫ জন, অন্যান্য ৩৩৬ জন।[১] এই জনসংখ্যার সিংহভাগই কৃষিজীবী।[২]
উপজাতিসম্পাদনা
মণিপুরিসম্পাদনা
মণিপুরি বা মৈতেই সম্প্রদায় মঙ্গোলীয় মহাজাতি গোষ্ঠীয় তিব্বত-ব্রহ্ম শাখার অন্তর্গত কুকিচিন পরিবারভুক্ত একটি জাতি। মনিপুরিরা নিজেদের মধ্যে পরিচয় আদান-প্রদানে নিজেদেরকে মৈতেই বলে পরিচয় দেয়। মনিপুরি সম্প্রদায়ে তিনটি গোত্র রয়েছে: মৈতেই, বিষ্ণুপ্রিয়া ও মৈতেই পাঙ্গাল। এদের মধ্যে বিষ্ণুপ্রিয়া ও মৈতেই হিন্দুধর্মে বিশ্বাসী ও গৌড়িয় বৈষ্ণব সম্প্রদায়ভুক্ত। মৈতেই পাঙ্গালরা ইসলাম ধর্মে বিশ্বাসী। তিন গোত্রে ভাষাগত ও সাংস্কৃতিক পার্থক্য পরিলক্ষিত হয়। মণিপুরিদের নিজস্ব ভাষা রয়েছে, যা মণিপুরি ভাষা বলেই খ্যাত এবং এই ভাষা প্রায় ৩৪০০ বছরের পুরোনো। মণিপুরি ভাষায় লেখার জন্য রয়েছে নিজস্ব বর্ণলিপি। ভাষাতাত্ত্বিকদের অভিমত এই বর্ণলিপির উদ্ভব হয়েছে ব্রাহ্মী লিপি থেকে। এই লিপির প্রতিটা বর্ণের নামকরণ করা হয়েছে মানবদেহের প্রতিটা অঙ্গ-প্রত্যঙ্গের নামানুসারে: যেমন, বাংলা 'ক' বর্ণের মণিপুরি প্রতিবর্ণ 'কোক' (অর্থ মাথা), বাংলা ম বর্ণের মণিপুরি প্রতিবর্ণ 'মীং' (চোখ) ইত্যাদি।[৩]
খাসিয়াসম্পাদনা
বড়লেখা উপজেলার মাধব পাহাড়কে কেন্দ্র করে গড়ে ওঠা আরেকটি আদিবাসী সম্প্রদায় হলো খাসিয়া। খাসিয়ারাও মঙ্গোলীয় মহাজাতি গোষ্ঠীর। খাসিয়ারা "পুঞ্জি"ভিত্তিক বাসস্থান গড়ে তোলে। সাধারণত ১০-১৫টি বা ততোধিক পরিবার মিলে একেকটি পুঞ্জি বা গ্রাম গঠিত হয়। প্রত্যেক খাসিয়া পুঞ্জি একেকজন নির্বাহী প্রধান কর্তৃক পরিচালিত হয়, খাসিয়া সম্প্রদায়ে এরকম নির্বাহীকে মন্ত্রী বলা হয়।[৩]
সাঁওতালসম্পাদনা
বাংলাদেশের অধিকাংশ সাঁওতালরা যদিও রাজশাহী, দিনাজপুরে বাস করেন, তদুপরি বড়লেখা উপজেলাতে চা-বাগানকেন্দ্রীক আবাস গড়ে উঠেছে সাঁওতালদের। অধিকাংশ সাঁওতালই চা-বাগানের শ্রমিক হিসেবে এখানে এসেছেন।[৩]
শিক্ষাসম্পাদনা
বড়লেখা উপজেলার অধীনে রয়েছে স্কুল, কলেজ, স্কুল এন্ড কলেজ, মাদ্রাসা এবং কারিগরী শিক্ষাকেন্দ্র। বড়লেখায় অবস্থিত 'নারী শিক্ষা একাডেমী' এই অঞ্চলের নারী শিক্ষার অন্যতম পথিকৃৎ। এছাড়া বড়লেখা ডিগ্রী কলেজ এই অঞ্চলের ডিগ্রী শিক্ষার্থীদের অন্যতম বিদ্যাপিঠ। ১৯৪৮ সালে প্রতিষ্ঠিত সীমান্তবর্তী শিক্ষা প্রতিষ্ঠান শাহবাজপুর উচ্চ বিদ্যালয় ও কলেজ উপজেলায় শিক্ষা ক্ষেত্রে অনন্য ভূমিকা রেখে আসছে।
বড়লেখা উপজেলার শিক্ষালয়ের উপাত্ত[৩](উপাত্তসমূহ ১৯৯৮ খ্রিষ্টাব্দের হিসাব অনুযায়ী):
- সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়: ১০৮টি
- বেসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়: ৪৮টি
- উচ্চ বিদ্যালয়: ১৭টি
- নিম্ন মাধ্যমিক বিদ্যালয়: ৩টি
- কলেজ: ৫টি
- মাদ্রাসা (সরকারি স্বীকৃতিপ্রাপ্ত): ১৪টি
- স্কুল এন্ড কলেজ: ১টি
শাহবাজপুর উচ্চ বিদ্যালয় ও কলেজ।
স্বাস্থ্যসম্পাদনা
উপজেলার পাখিয়ালাতে রয়েছে ৫০ শয্যাবিশিষ্ট উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স।[৬]
খনিজ সম্পদসম্পাদনা
১৯৫১ খ্রিষ্টাব্দে কাঁঠালতলীর বিওসি তেল কূপ ড্রিলিং-এর সময় অতিরিক্ত চাপের কারণে নিয়ন্ত্রণহীনভাবে বেশি মাত্রায় তেল বেরিয়ে আসতে থাকে। ফলে পরিস্থিতি মোকাবেলায় সিমেন্ট প্লাগ দিয়ে কূপটি বন্ধ করে দেয়া হয়েছিল। এছাড়া কুলাউড়া সংলগ্ন জুরির হারাগাছা পাহাড়ে ইউরেনিয়াম খনির সন্ধান পাওয়া যায়, এবং ১৯৯৬ খ্রিষ্টাব্দে একদল বিশেষজ্ঞ এই মজুত সম্বন্ধে নিশ্চিত করেন।[২]
দর্শনীয় স্থানসম্পাদনা
প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শনসম্পাদনা
উপজেলার দাসের বাজার ইউনিয়নে লঘাটি গ্রামে অবস্থিত "খোজা মসজিদ"/"খাজা মসজিদ" ষোড়শ শতকের প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শন।[১][২]
ভ্রমণ আকর্ষণসম্পাদনা
বড়লেখা উপজেলার দর্শনীয় স্থানগুলোর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো:
উল্লেখযোগ্য ব্যক্তিসম্পাদনা
- ড. মোহাম্মদ আতাউল করিম, শিক্ষক ও বিজ্ঞানী
- দ্বিজেন শর্মা, শিক্ষক, লেখক ও প্রকৃতিবিদ
- এবাদুর রহমান চৌধুরী, রাজনীতিবিদ
- শাহাব উদ্দিন, রাজনীতিবিদ
- জুম্মন লুসাই, হকি খেলোয়াড়
- হাসিবুল হোসেন, ক্রিকেটার।
- ইবাদত হোসেন, ক্রিকেটার।
- মৃনাল কান্তি দাস, কবি ও সাহিত্যিক।
গণমাধ্যমে উপস্থাপনসম্পাদনা
বড়লেখা উপজেলা এককভাবে বিভিন্ন সময়, আর নানা শিল্পকেন্দ্রিক উপস্থাপনায় অসংখ্যবার গণমাধ্যমে উপস্থাপিত হয়েছে। ১৯৯৮ খ্রিষ্টাব্দের ফেব্রুয়ারি মাসে বাংলাদেশ টেলিভিশনে, এ. মাসুদ চৌধুরী পিটুর পরিচালনায় প্রচারিত হয় মাধবকুণ্ডের কলধ্বনি নামক ৩০ মিনিটের প্রামাণ্যচিত্র।[৩] এছাড়া দেশের দর্শনীয় স্থান ও জলপ্রপাতের আলোচনায় বারংবার উপজেলার মাধবকুণ্ড জলপ্রপাত উঠে আসে।
বিবিধসম্পাদনা
আরও দেখুনসম্পাদনা
তথ্যসূত্রসম্পাদনা
- ↑ ক খ গ ঘ ঙ চ জেলা পরিসংখ্যান: মৌলভীবাজার (২০১১), বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো। প্রকাশকাল: ডিসেম্বর ২০১৩।
- ↑ ক খ গ ঘ ঙ চ ছ জ বড়লেখা উপজেলা, মাহফুজুর রহমান,গ্রাম সালদিগা, বাংলাপিডিয়া, সিডি সংস্করণ 2.0.1; প্রকাশকাল: ফেব্রুয়ারি ২০০৮। বাংলাদেশ এশিয়াটিক সোসাইটি, ঢাকা থেকে প্রকাশিত।
- ↑ ক খ গ ঘ ঙ চ ছ জ শ্রীপ্রমথ রঞ্জন চক্রবর্তী (২০০০)। "ইতিহাস ও ঐতিহ্য: ইতিহাসের আলোকে বড়লেখা"। কালী প্রসন্ন দাস, মোস্তফা সেলিম। বড়লেখা: অতীত ও বর্তমান (প্রিন্ট) (ফেব্রুয়ারি ২১, ২০০০ খ্রিস্টাব্দ সংস্করণ)। ঢাকা: বাংলাদেশ রাইটার্স গিল্ড। পৃষ্ঠা ৪৮৪। আইএসবিএন 984-31-0841-8।
- ↑ "ইউনিয়নসমূহ - বড়লেখা উপজেলা"। barlekha.moulvibazar.gov.bd। জাতীয় তথ্য বাতায়ন। ৭ আগস্ট ২০২০ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৭ আগস্ট ২০২০।
- ↑ ক খ গ Bangladesh ওয়েব্যাক মেশিনে আর্কাইভকৃত ২৬ ফেব্রুয়ারি ২০১৪ তারিখে (Statistics of Population), GeoHive.com। পরিদর্শনের তারিখ: ২৫ জানুয়ারি ২০১৩ খ্রিস্টাব্দ।
- ↑ বড়লেখা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স, ফ্যাসিলিটি রেজিস্ট্রি, স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ। সংগ্রহের তারিখ: এপ্রিল ২০২০।
বহিঃসংযোগসম্পাদনা
- বাংলাপিডিয়ায় বড়লেখা উপজেলা
- বড়লেখা - উপজেলা তথ্য বাতায়ন, গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার
- জেলা পরিসংখ্যান: মৌলভীবাজার - ২০১১, বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো। প্রকাশকাল: ডিসেম্বর ২০১৩।
- অর্থনৈতিক শুমারি: মৌলভীবাজার - ২০১৩, বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো। প্রকাশকাল: সেপ্টেম্বর ২০১৬।
- বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো কর্তৃক প্রকাশিত ২০০১ খ্রিষ্টাব্দের আদমশুমারী প্রতিবেদন
- বাংলাদেশের পরিসংখ্যানে বড়লেখার তুলনামূলক অবস্থা, GeoHive.com
- বাংলাপিডিয়ার ইংরেজি নিবন্ধ, বাংলাদেশ এশিয়াটিক সোসাইটি