পরোটা

রুটিজাতীয় খাবার

পরোটা একটি চ্যাপ্টা রুটিজাতীয় খাবার যা ভারতীয় উপমহাদেশে উদ্ভাবিত এবং বাংলাদেশ, ভারত, পাকিস্তান, শ্রীলঙ্কা এবং নেপালে ব্যাপক জনপ্রিয়। পরোটা শব্দটি এসেছে পরত এবং আটা থেকে যার আক্ষরিক অর্থ হচ্ছে রান্না করা স্তরায়িত আটার খামির।[১] অঞ্চলভেদে পরোটার বিভিন্ন উচ্চারণ এবং নাম প্রচলিত আছে। যেমন, পারান্থা, পারাউন্থা, প্রন্থা, পারোন্তে (পাঞ্জাবী), পরোটা (বাংলায়), পালাতা (উচ্চারিত: [pəlàtà]; বার্মায়), পরোঠা (অসমিয়ায়), ফরোটা (সিলেটী ভাষায়) এবং ফারাটা ( মরিশাস, শ্রীলঙ্কামালদ্বীপ)।

পরোটা
আলু পরোটা
অন্যান্য নামপরাটা, পরটা, ফরোটা, ফারাটা, পারোন্তে, পারন্থা
উৎপত্তিস্থলভারতীয় উপমহাদেশ
অঞ্চল বা রাজ্যবাংলাদেশ, ভারত, পাকিস্তান
সংশ্লিষ্ট জাতীয় রন্ধনশৈলীবাংলাদেশ, ভারত, পাকিস্তান, নেপাল
প্রধান উপকরণআটা, ময়দা, ঘি/মাখন/রান্নার তেল এবং বিভিন্ন সহযোগী উপাদান

পটভূমি সম্পাদনা

সংস্কৃত শব্দ (স. पर, বা परा+स्थः, কিংবা स्थितः) থেকে হিন্দুস্তানি শব্দ "পারাটা"-র উদ্ভব[২]। বর্তমান কর্ণাটকের দ্বাদশ শতকের শাসক তৃতীয় সোমেশ্বর কর্তৃক সংকলিত দ্বাদশ শতকের সংস্কৃত বিশ্বকোষ মনসোল্লাস- এ বিভিন্ন শুষ্ক গমের পুরানপলির উল্লেখ রয়েছে, যাকে ২০০৩ সালে আচায়া পরোটা হিসেবে বর্ণনা করেন।[৩] তবে পুরান পলি ভিন্ন ধরনের রুটি। নিজ্জার (১৯৬৮) কর্তৃক তাঁর বই "পাঞ্জাব আন্ডার দ্য সুলতানস ১০০০-১৫২৬ এডি"- এ সর্বপ্রথম পরোটার উল্লেখ পাওয়া যায়। তিনি বলেন, "পরোটা তৎকালীন পঞ্জাবে সভ্য এবং অভিজাতদের নিত্যকার খাবার ছিল।"[৪]

ব্যানার্জি (২০১০) বলেন পাঞ্জাবিউত্তর ভারতীয় রন্ধনশৈলীতে পরোটা ছিল। পাঞ্জাবি রন্ধনশৈলীতে বিভিন্ন ধরনের মসলা দিয়ে পরোটায় পুর দেওয়া হতো। তবে ব্যানার্জি বলেন মুঘলরা পরোটার ভক্ত ছিলেন; যা বাংলাদেশের ঢাকার একাধিক স্তর বিশিষ্ট ও ফাঁপা ঢাকাই পরোটা কে পরিচিত করে তুলেছিল।[৫] ও'ব্রায়েন ২০০৩ সালে বলেন যে, দিল্লিতে পাঞ্জাবি পরোটা ১৯৪৭ সালের দেশভাগের পরে জনপ্রিয় হয়েছিল এমনটা বলা উচিত নয়; কেননা দিল্লিতে পূর্ব থেকেই বিভিন্ন পাঞ্জাবি খাদ্য জনপ্রিয় ছিল।[৬]

বর্ণনা সম্পাদনা

পরোটা ভারতীয় উপমহাদেশের সমগ্র ভারতে অত্যন্ত জনপ্রিয় খামিরবিহীন সমতল রুটিগুলোর একটি এবং এটি তাওয়াতে গমের আটা ভেজে বা রান্না করে তৈরি করা হয় এবং অগভীর ভাজ দিয়ে তা তুলে নেয়া হয়।[৭]

শক্তিমান সম্পাদনা

পরোটা, সম্পূর্ণ গম, বাণিজ্যিকভাবে প্রস্তুত, হিমায়িত
প্রতি ১০০ গ্রাম (৩.৫ আউন্স)-এ পুষ্টিমান
৪৫.৩৬ g
চিনি৪.১৫
খাদ্য আঁশ৯.৬ g
১৩.২০ g
৬.৩৬ g
ভিটামিনপরিমাণ দৈপ%
থায়ামিন (বি)
১০%
০.১১ মিগ্রা
রিবোফ্লাভিন (বি)
৬%
০.০৭৬ মিগ্রা
নায়াসিন (বি)
১২%
১.৮৩০ মিগ্রা
প্যানটোথেনিক
অ্যাসিড (বি)
০%
০ মিগ্রা
ভিটামিন বি
৬%
০.০৮ মিগ্রা
ফোলেট (বি)
০%
০ μg
ভিটামিন ই
৯%
১.৩৫ মিগ্রা
ভিটামিন কে
৩%
৩.৪ μg
খনিজপরিমাণ দৈপ%
ক্যালসিয়াম
৩%
২৫ মিগ্রা
লৌহ
১২%
১.৬১ মিগ্রা
ম্যাগনেসিয়াম
১০%
৩৭ মিগ্রা
ফসফরাস
১৭%
১২০ মিগ্রা
পটাশিয়াম
৩%
১৩৯ মিগ্রা
সোডিয়াম
৩০%
৪৫২ মিগ্রা
জিংক
৯%
০.৮২ মিগ্রা
অন্যান্য উপাদানপরিমাণ
পানি৩৩.৫ g

প্রাপ্তবয়স্কদের জন্য মার্কিন সুপারিশ ব্যবহার করে শতাংশ অনুমান করা হয়েছে।
উৎস: ইউএসডিএ ফুডডাটা সেন্ট্রাল

অপকারীতা সম্পাদনা

তথ্যসূত্র সম্পাদনা

  1. Verma, Neera। "Mughlai Cook Book"। Diamond Pocket Books (P) Ltd. – Google Books-এর মাধ্যমে। 
  2. Platts, John (১৮৮৪)। "A dictionary of Urdu, classical Hindi, and English"A dictionary of Urdu, classical Hindi, and English। W. H. Allen & Co.। ২০২০-০৬-০৯ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০১৭-০৩-১৯parāṭhā [S. पर, or परा+स्थः, or स्थितः], s.m. A cake made with butter or ghī, and of several layers, like pie-crust. 
  3. K.T. Achaya (২০০৩)। The Story of Our Food। Universities Press। পৃষ্ঠা 85। আইএসবিএন 978-81-7371-293-7 
  4. Nijjer, Bakhshish Singh (1968) Panjāb under the sultāns, 1000-1526 A.D. Sterling Publishers [১]
  5. Banerji, Chitrita (2010) Eating India: Exploring the Food and Culture of the Land of Spices, Bloomsbury Publishing [২]
  6. O'Brien, Charmaine (2003) Penguin UK Of Delhi: A Food Lover's Guide
  7. Jaffrey, Madhur (১৮ ডিসেম্বর ২০০৮)। Climbing the Mango Trees: A Memoir of a Childhood in India। Knopf Doubleday Publishing Group। আইএসবিএন 9780307517692 – Google Books-এর মাধ্যমে। 

আরও দেখুন সম্পাদনা

বহিঃসংযোগ সম্পাদনা