ডোরেমন

জাপানি ম্যাঙ্গা ধারাবাহিক

ডোরা-এ-মন (জাপানি: ドラえもん, দোরাএমোন্; কিছু বহির্দেশীয় বাজারে ডোরা-এ-মন: ভবিষ্যতের যন্ত্র রোবট হিসেবেও পরিচিত[][][]) ফুজিকো এফ. ফুজিও কর্তৃক রচিত এবং চিত্রিত একটি জাপানি মাঙ্গা ধারাবাহিক। এটি পরবর্তীতে সফল আনিমে ধারাবাহিকে পরিণত হয়। ডোরেমন জাপানের সবচেয়ে জনপ্রিয় এবং সর্বোচ্চ অর্থ উপার্জনকারী অ্যানিমে ফ্রাঞ্চাইজি। ধারাবাহিকটি একটি কানহীন রোবোটীয় বিড়াল ডোরা-এ-মন-কে নিয়ে, যে নোবিতা নোবি (野比 のび太, নোবি নোবিতা) নামক এক স্কুলছাত্রকে সাহায্য করতে ২২-শ শতাব্দী থেকে বর্তমান সময়ে আসে।

ডোরা-এ-মন
ডোরা-এ-মন ১ম খণ্ডের প্রচ্ছদ
ドラえもん
(দোরাএমোন্)
ধরনঅ্যানিমে, বৈজ্ঞানিক কল্পকাহিনী, কমেডি, সমাজ, বন্ধুত্ব
মাঙ্গা
লেখকফুজিকো এফ. ফুজিও
প্রকাশকশোগাকুকান
মূল প্রকাশ১৯৬৯ ডিসেম্বর১৯৯৬
খণ্ড৪৫
অ্যানিমে
পরিচালকমিৎশুও কামিনাশি
লেখকফুজিকো এফ. ফুজিও
স্টুডিওটিএমএস এন্টারটেইনমেন্ট
মুক্তিএপ্রিল ১৯৭৩ ৩০ সেপ্টেম্বর ১৯৭৩
অ্যানিমে
পরিচালকৎসুতোমু শিবায়ামা
স্টুডিওশিন-এই অ্যানিমেশন
মুক্তিএপ্রিল ১৯৭৯ ২৫ মার্চ ২০০৫
অ্যানিমে
পরিচালককযো কুসুবা
স্টুডিওশিন-এই অ্যানিমেশন
মুক্তি ১৫ এপ্রিল ২০০৫ বর্তমান

ডোরেমন মাঙ্গা ধারাবাহিকটি সর্বপ্রথম ১৯৬৯ সালের ডিসেম্বর মাসে ছয়টি পৃথক ম্যাগাজিনে প্রকাশিত হয়েছিল। প্রথমে মোট ১৩৪৪টি গল্প লেখা হয়েছিল এবং সেগুলো শোগাকুকান তেন্‌তৌমুশি (てんとう虫) মাঙ্গা ব্যান্ডের অধীনে পঁয়তাল্লিশ সংখ্যা পর্যন্ত প্রকাশ করা হয়েছিল। সকল খণ্ড জাপানের তোয়ামায় অবস্থিত তাকাওকা কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগার থেকে সংগ্রহ করা হয়েছিল, যেখানে ফুজিকো এফ. ফুজিও জন্মেছেন। টার্নার ব্রডকাস্টিং সিস্টেম ১৯৮০-এর মাঝামাঝি সময়ে ডোরা-এ-মন এর ইংরেজি সংস্করণ প্রকাশনার স্বত্ব কিনে নেয়,[] কিন্তু কোনো পর্বের সম্প্রচারের পূর্বেই কোনো ব্যাখ্যা ব্যতীত তা বাতিল করা হয়।

বাংলাতে "ডোরেমন" বানানটি জাপানি বানান "দোরাএমোন্" (ドラえもん)-এর ইংরেজি উচ্চারণের প্রতিলেপন। তাই বাংলাতে আসল বানান "দোরাএমোন্" না লিখে "ডোরেমন" লেখা হয়।

  • "দোরা" শব্দটি নেয়া হয়েছে "দোরা নেকো" (জাপানি: どら猫) থেকে। 'নেকো' শব্দের অর্থ বিড়াল।
  • "এমোন্" (衛門、右衛門) হচ্ছে "গোইমন"-এর মতন পুরুষ প্রদত্ত নামের একটি প্রাচীন উপাদান।

জাপানিতে (ドラえもん) নামটি কাতাকানা (ドラ) এবং হিরাগানা (えもん)-এর শৈল্পিক মিশ্রণ।

কাহিনীসংক্ষেপ

সম্পাদনা
 
কালযানের মাধ্যমে আগত ডোরেমনের প্রথম উপস্থিতি।

ডোরেমন ২২শ শতাব্দীর কানহীন বিড়াল রোবট। নোবিতা নোবি-কে সাহায্য করার জন্য ডোরেমনকে ভবিষ্যৎ থেকে পাঠানো হয়। ডোরেমন নোবিতা নোবি-র পরিবারের অংশ। নোবিতা নোবি-র পরিবার জাপানের রাজধানী টোকিওতে বাস করে। নোবিতা নোবি অলস ছেলে কিন্তু খুবই সহজ সরল। সে অন্যদের সাহায্য করে। তাই তার বান্ধবী "শিজুকা মিনামোতো" তাকে পছন্দ করে। নোবিতা-ও তাকে পছন্দ করে। শিজুকা নোবিতা-র সাথে একই শ্রেণিতে পড়ে। শিজুকা ভদ্র মেয়ে। ভবিষ্যতে নোবিতা-র সাথে "জিয়ান"-এর ছোট বোন "জাইকো"-র বিয়ে হবার কথা থাকলেও ডোরেমন নোবিতা-র ভবিষ্যৎ পাল্টিয়ে দেয়। তাই ভবিষ্যতে নোবিতা-র সাথে শিজুকা-র বিয়ে হয়। গৌদা তাকেশি (জিয়ান) নোবিতা-র সহপাঠী। জিয়ান খুবই রাগী এবং শক্তিশালী। জিয়ান বেশির ভাগ সময় নোবিতা-কে মারতে ভালবাসে। কিন্তু মাঝে মধ্যে সে নোবিতা-কে বিপদের হাত থেকে রক্ষা করে। জিয়ান গান গাইতে ভালোবাসে। কিন্তু তাঁর গান ভয়ানক। জিয়ান তার ছোট বোনকে খুব ভালবাসে। তাই সে তার বোনকে খুশি করার জন্য সবকিছু করে। "সুনিও হোনেকাওয়া" বড় ধনী পরিবারের ছেলে হওয়ায় সে খুবই অহঙ্কার বোধ করে। সে বেশির ভাগ সময় জিয়ানকে খুশি করতে জিয়ানের প্রশংসা করে। সুনিও নোবিতা-কে অপমান করে এবং জিয়ানের সাথে নোবিতাকে মারতে ভালোবাসে।

প্রধান চরিত্রসমূহ

সম্পাদনা

গ্যাজেটসমূহ

সম্পাদনা

ডোরেমনের একটি "চতুর্মাত্রিক" পকেট আছে। যেটিকে জাপানি ভাষায় "ইয়োজিগেন্" পকেট বলে। ওখান থেকে ডোরেমন ভবিষ্যতের নানা সরঞ্জাম বের করে আর এই সরঞ্জামগুলোকে গ্যাজেট বলে। গ্যাজেট-কে জাপানি ভাষায় "দৌগু" বলে। ডোরেমনের প্রায় সাড়ে চার হাজার গ্যাজেট রয়েছে। গ্যাজেটগুলো ফুজিকো এফ. ফুজিওর কল্পনা হলেও সবগুলোই নিতান্ত কল্পনা নয়। অনেকগুলোই জাপানের নিত্য ব্যবহার্য নানা আসবাবপত্রের আদলে তৈরি করা হয়েছে। আর কিছু কিছু গ্যাজেট জাপানি রূপকথা থেকে নেওয়া হয়েছে। ডোরেমনের গ্যাজেটগুলোর মধ্যে অন্যতম

  • এনি হোয়ার ডোর,
  • ব্যম্বো কপ্টার,
  • টাইম মেশিন বা সময় যন্ত্র
  • টেলিফোন বুথ,
  • এয়ারগান,
  • রিভার্স ক্ল্যাথ,
  • । এনি হোয়ার ডোর হল একটি দরজা; যেই দরজা দিয়ে ডোরেমন এবং নোবিতা যেখানে খুশি সেখানে যেতে পারে। ব্যাম্বো কপ্টার হল ছোট হেলিকপ্টার; যেটি মাথায় দিয়ে ডোরেমন ও নোবিতা যেকোনো সময় উড়তে পারে। টাইম মেশিন বা কালযানের সাহায্যে অতীত কিংবা ভবিষ্যৎ যেকোনো সময়ে যেতে পারে।

সংস্করণ

সম্পাদনা

ইংরেজি সংস্করণ

সম্পাদনা

বিশ্বে এই পর্যন্ত ডোরেমনের ১০০টির বেশি কপি বিক্রি হয়েছে। যেটি মাঙ্গার ইতিহাসে সর্বাধিক কপি বিক্রির রেকর্ড। বিশ্বের অনেক ভাষায় ডোরেমনের সংস্করণ বের হয়েছে। কিন্তু ইংরেজিতে ছিল না। তবে ২০১৪ সালের মে মাসে ইংরেজি সংস্করণের শর্ত কিনে নেয় ডিজনি এক্স ডি। ফলে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে এখন ডোরেমন সম্প্রচার করছে ডিজনি এক্স ডি

মার্কিন সংস্করণে পরিবর্তনসমূহ

সম্পাদনা

জাপানি সংস্করণ আর আমেরিকার ইংরেজি সংস্করণে বেশ কিছু পার্থক্য রয়েছে। যেমন- নোবিতা-র নাম নোবি, তাকেশি গৌদা বা জিয়ান-র নাম "বিগ জি", শিজুকা-র নাম "সু" এবং সুনিও-র নাম "স্নিচ্" দেয়া হয়েছে। তবে ডোরেমন আর নোবিতার নামে বেশি পরিবর্তন করা হয়নি। জাপানি সংস্করণে ডোরেমন প্রচুর মিষ্টি খায়। কিন্তু ইংরেজি সংস্করণে ডোরেমন ফল খায়। জাপানি ইয়েন মুদ্রা পরিবর্তন করে মার্কিন ডলারে রূপান্তর করা হয়েছে। নোবিতার উত্তরপত্রে শূন্যের পরিবর্তে F(ফেল) গ্রেড দেখানো হয়েছে। এছাড়াও মার্কিন ইংরেজি সংস্করণে আপত্তিকর অংশগুলো বাদ দেয়া হয়েছে। আর ডোরেমনের জাপানি খন্ডগুলোর পাতার মধ্যে ১২০০টি পাতা ইংরেজিতে অনুবাদ করা হয়েছে। পাতাগুলো অনলাইনে আমাজন.কম এ ই-বুক হিসেবে প্রকাশ করা হয়েছে।[][][][][][১০]

বাংলা সংস্করণ

সম্পাদনা
 
ডোরেমন (বাংলা) এশিয়ান টিভি স্ক্রিনশট

এপ্রিল ১, ২০১৪ থেকে বাংলাদেশের স্যাটেলাইট টিভি চ্যানেল এশিয়ান টিভি আনিমে জাপানি থেকে বাংলায় ডাবিং (অনুবাদ) করে ডোরেমন ১৯৭৯ সিরিজ সম্প্রচার করছে। ডাবিং সংস্করণটিতে আপত্তিকর কিছু অংশ বাদ দেয়া হয়েছে। বাংলা অনুবাদে সহযোগিতা করেছে ধ্বনি-চিত্র লিমিটেড[১১] বর্তমানে ডোরেমন কার্টুনের সম্প্রচার বাংলাদেশে বন্ধ রয়েছে।

ইতালীয় সংস্করণ

সম্পাদনা
 
ইতালিয় প্রচ্ছদ ১

ডোরেমন পৃথিবীর অনেক দেশে প্রচার করা হচ্ছে। তাদের মধ্যে ইতালি অন্যতম। ইতালীয় ভাষায় ডোরেমন অনুবাদ করে প্রথম ইতালীয় ডাব রাই টু তে ১৯৮২ সালের নভেম্বর এ সম্প্রচার শুরু হয়। তখন ১০৯টি পর্ব অনুবাদ করা হয়েছিল। এরপরে জুনিয়র টিভি, সুপারসিক্স, ওডেইওন টিভি৭ পাদি সম্প্রচার শুরু করে।

২০০৩ সালে দ্বিতীয় ইতালীয় অনুবাদ সম্প্রচার শুরু হয় যেটি পরিবেশনা করে মেডিয়াসেট। এটি আসলে সম্প্রচার করে ইটালিয়া ১। কিন্তু পরে এটাকে বোয়িং এবং হিরো তে স্থানান্তর করা হয়। তখন এর ৯৯৩টি পর্ব ডাব করা হয়েছিল। এই ডাবে কিছু পরিবর্তন করা হয়েছিল।

ইতালিয় সংস্করণে পরিবর্তনসমূহ

সম্পাদনা

উদ্বোধনী দৃশ্যের অনুবাদ করা হয়েছে : আই গাতো ডোরেমন যেটির বাংলা অর্থ ডোরেমন বিড়াল। এই থিমে গান করেছেন অলিভার অনিওনস। সমাপনী থিম যেটি হল দোরায়েমন নো উতা যেটির ইতালীয় ডাবে গান করেছেন ইনোস্টরি ফিলগি। দ্বিতীয় ডাবের উভয় থিম সঙ্গীত ডোরেমন গান করেছেন ক্রিস্টনিয়া ডিঅ্যাভেনা। এছাড়াও ডোরেমন ব্যতীত অন্য চরিত্রসমূহের নাম পরিবর্তন করা হয়েছে। নোবিতার নাম গুগলিয়া। শিজুকার নাম সুসি। জিয়ানের নাম জিয়ানজি। সুনিও এর নাম জিপ্পো।

হিন্দি সংস্করণ

সম্পাদনা

হিন্দি সংস্করণ প্রথম সম্প্রচার শুরু হয় ২০০৫ সালের ১৩ ফেব্রুয়ারি যেটি সম্প্রচার করে হাঙ্গামা টিভি। পরবর্তীতে হাঙ্গামার ভগিনী চ্যানেল ডিজনি চ্যানেল ইন্ডিয়া সম্প্রচার শুরু করে। ডিজনি চ্যানেল ২০১০ সালের ১৯ নভেম্বর থেকে সম্প্রচার শুরু করে। সেই পর্বগুলো ছিল পুরাতন। যা আগেই হাঙ্গামা টিভি সম্প্রচার করেছে। ২০১৮ সালের এপ্রিল থেকে হাঙ্গামা টিভি ডোরেমন সম্প্রচার বন্ধ করে। বর্তমানে, শুধুমাত্র ডিজনি ইন্ডিয়া ডোরেমন ১৯৭৯ ও ২০০৫ অ্যানিমে সম্প্রচার করছে। এই সংস্করণে কিছু আপত্তিকর ছবি বাদ দেওয়া হয়েছে ৷ যদিও দুটি চ‍্যানেলই ডোরেমনের চলচ্চিত্রগুলো প্রচার করেছে। ‌

ইন্দোনেশীয় সংস্করণ

সম্পাদনা

ইন্দোনেশীয় সংস্করণে ডোরেমন সম্প্রচার করে ইন্দোনেশীয় চ্যানেল আরসিটিআই

কোরীয় সংস্করণ

সম্পাদনা

কোরীয় সংস্করণ প্রথম সম্প্রচার করে এমবিসি। যেটির সময় ছিল ২০০১ থেকে ২০০২। এর পরে আনিওন এবং চ্যাম্প টিভি ২০০৬ সাল থেকে বর্তমান পর্যন্ত সম্প্রচার করে আসছে।

মালয় সংস্করণ

সম্পাদনা

১৯৮৭ থেকে ২৫ জানুয়ারি পর্যন্ত টিভি ১ সম্প্রচার করে। কিন্তু পরে এনটিভি ৭ সম্প্রচার শুরু করে। যেটি ২০০৮ থেকে বর্তমান পর্যন্ত সম্প্রচার করে আসছে। মালয় সংস্করণে ডোরেমন বেশ জনপ্রিয়তা লাভ করে।

মাধ্যম

সম্পাদনা

মাঙ্গা

সম্পাদনা

১৯৬৯ সালের ডিসেম্বরে ডোরেমন জাপানের ৬টি আলাদা আলাদা শিশুদের ম্যাগাজিনে প্রকাশিত হয়। ম্যাগাজিনগুলো শিশুদের শ্রেণি অনুযায়ী বিভক্ত ছিল। যথাঃ "ইয়োইকো" (ভদ্র শিশুদের জন্য), "ইচিন্" (নার্সারী বিদ্যালয়ের শিশুদের জন্য) "সোগাকু ইচিনেচি" (১ম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের জন্য), "সোগাকু ইয়োনেনসেই" (চতুর্থ শ্রেণির শিক্ষার্থীদের জন্য)। ১৯৭৩ সালে ধারাবাহিক আরো ২টি ম্যাগাজিনে প্রকাশিত হয়। যেগুলো হলঃ সোগাকু গোনেনসেই (৫ম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের জন্য), সোগাকু রোকুনেনসেই (৬ষ্ঠ শ্রেণির শিক্ষার্থীদের জন্য)। ১৯৭৭ সালে কোরোকোরো কমিক ডোরেমনের ম্যাগাজিন প্রকাশিত করে। আসল মাঙ্গা ভিত্তি করে ডোরেমনের চলচ্চিত্রসমূহ কোরোকোরো কমিক এ প্রকাশিত হয়। আর এই গল্পগুলো টেন্ট মুসহি সংরক্ষণ করেছে। ১৯৬৯ সাল থেকে ডোরেমনের ৪৫টি খন্ড প্রকাশিত হয়েছিল ১৯৭৪ থেকে ১৯৯৬ সালের মধ্যে। এবং এর প্রচলন হয়েছিল ৮০ মিলিয়নের বেশি।ডোরেমন নানা প্রকার মাঙ্গায় প্রকাশিত হয়েছিল। যেটি পরিবেশনা করেছিল সোগাকুকান। ২০০৫ সালে সোগাকুকান ডোরেমনের আরো ৫টি খণ্ড প্রকাশিত করে। যেটির নাম দেওয়া হয়ে ছিল ডোরেমন প্লাস। এটা টেন্ট মুসির সংরক্ষণগারে সংরক্ষণ হয়নি।

টেলিভিশন ধারাবাহিক

সম্পাদনা

১৯৭৩ সালে ডোরেমন অ্যানিমেটেড সিরিজ তেমন জনপ্রিয় ছিল না। কিন্তু ১৯৭৯ সালে ডোরেমন প্রচুর জনপ্রিয়তা লাভ করে। এর নতুন স্টুডিও ছিল শিন-এই অ্যানিমেশন; যা বর্তমানে টিভি আশাহির মালিকানায়। এই জনপ্রিয় সিরিজটি ২০০৫ সালের মার্চ মাসে ১৭৮৭টি পর্ব নিয়ে যাত্রা শেষ করে। ২০০৫ সালের ১৫ এপ্রিল টিভি আশাহিতে ডোরেমনের নতুন সিরিজ যাত্রা শুরু করে। যেটিতে নতুন কণ্ঠ অভিনেতারা কণ্ঠ দিয়েছেন এবং সকল চরিত্রের শারীরিক গঠনে পরিবর্তন আনা হয়েছে। শিজুকার চুল বাদামির পরিবর্তে কালো করা হয়।

২০১৪ সালে ডোরেমনকে ইংরেজিতে ডাব করা হয়েছে এবং এটি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে ডিজনি এক্স ডি সম্প্রচার করছে। এটি সপ্তাহে পাঁচদিন সম্প্রচার করা হয়। এটির পরিবেশনায় ব্যাং জুম এ্যান্টারটেইনমন্ট

কাহিনী চলচ্চিত্র

সম্পাদনা

১৯৮০ সালে, তোহো সর্বপ্রথম ডোরেমনের বার্ষিক পূর্ণদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র মুক্তি দেয় যেটি মাঙ্গার বিশেষ খন্ডের উপর ভিত্তি করে লেখা হয়েছে।২০১৯ সালের মার্চ পর্যন্ত ৪০ টি ডোরেমন পূর্ণদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র এবং ১টি বিশেষ চলচ্চিত্র ( স্ট্যান্ড বাই মি ডোরেমন) প্রকাশিত হয়েছে। এছাড়াও বেশ কয়েকটি স্বল্পদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র রয়েছে। সর্বশেষ প্রকাশিত পূর্ণদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র হল "ডোরেমন : নবিতা'স নিউ ডাইনোসর" (প্রকাশকাল: ৭ আগস্ট, ২০২০)।ভারতে ২৯টি চলচ্চিত্রসহ বিশেষ চলচ্চিত্রটি মুক্তি পায়।

ভিডিও গেম

সম্পাদনা

সঙ্গীত

সম্পাদনা

ডোরেমন দ্য মিউজিক্যাল: নোবিতা এ্যন্ড দ্য আনিমেল প্লানেট (舞台版ドラえもん のび太とアニマル惑星(プラネット)」。, বুতাইবান্ দোরাএমোন্: নোবিতা তো আনিমারু পুরানেৎতো) ২০০৮ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত একটি সঙ্গীতধর্মী চলচ্চিত্র যা ১৯৯০ সালের একই নামের আনিমে চলচ্চিত্র অবলম্বনে নির্মিত।[১২] এটি সেপ্টেম্বর ১৪ থেকে সেপ্টেম্বর ৪, ২০০৮ পর্যন্ত টোকিও মেট্রোপলিটন আর্ট স্পেসে প্রদর্শনী হয়েছিলো।[১৩] ওয়াসাবি মিজুতা এ চলচ্চিত্রে ডোরেমনের কণ্ঠ প্রদান করেছিলেন।

অভ্যর্থনা

সম্পাদনা
  • ডোরেমনের ১০০ মিলিয়ন কপির বেশি মাঙ্গা কপি বিক্রয় হয়েছে।
  • ১৯৮২ সালে ডোরেমন সেরা শিশুতোষ মাঙ্গা হিসেবে শোগাকুকান মাঙ্গা অ্যাওয়ার্ড লাভ করে।
  • ১৯৯৭ সালে প্রথম ওসামু তেজুকা কালচার অ্যাওয়ার্ড লাভ করে।
  • ২০০৮ সালে জাপানের প্রবাসী মন্ত্রণালয় ডোরেমনকে আনিমে সভ্যতার রাষ্ট্রদূত হিসেবে নির্বাচিত করে।
  • ২০০২ সালের ২২এপ্রিল ডোরেমন টাইম ম্যাগাজিনে মনোয়ন লাভ করে। ডোরেমন এশিয়ার ২২হিরোর এক হিরো হিসেবে মনোয়ন লাভ করে। এতে ডোরেমন এশিয়ার সেরা হিরো হিসেবে নির্বাচিত হয়।
  • ২০১২ সালের ৩রা সেপ্টেম্বর ডোরেমনের প্রাতিষ্ঠানিক শহর হিসেবে কাওয়াসাকি নির্বাচিত হয়।

উত্তরাধিকারী

সম্পাদনা
 
কাওয়াসাকিতে ফুজিও এফ. ফুজিও জাদুঘরে শাটল বাসে ডোরেমন ও নবিতা

২০১১ সালের ৩রা সেপ্টেম্বর কাওয়াসাকি শহরে ফুজিকো এফ. ফুজিও জাদুঘর শুরু হয়েছিল। কাহিনী চিত্রে ডোরেমন জাদুঘরের তারা। এটা স্বীকার করার যোগ্য যে ডোরেমন সবচেয়ে পুরাতন এবং চলমান প্রতিমূর্তি। ডোরেমন এই প্রজম্মের সমসাময়িক চরিত্র।

নোবিতা বিশ্বের কিছু কিছু দেশে বিশেষ করে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে সবচেয়ে অদ্ভুত নায়ক হিসেবে পরিচিত।[১৪]

ইএসপি গিটার ডোরেমন কয়েকটি গিটার তৈরী করেছিল যেটি শুধুমাত্র শিশুদের জন্য।[১৫][১৬]

২০১১ সালের শেষদিকে শোগাকুকান এবং টয়োটা নিজের ক্ষমতায় যোগদান করে একটি লাইফ অ্যাকশন বাণিজ্যিক সিরিজ তৈরী করতে। এই বাণিজ্যিক কথায় ফুটিয়ে তোলা চরিত্র ২০ বছরের মতো পুরাতন। এটিতে হলিউড অভিনেতা জেন রেনো ডোরেমনের অভিনয় করেছে।[১৭] ডোরেমনের এই সাফল্যের জন্য ডোরেমন এখন জাপানের সংস্কৃতির অংশ। জাপানের খবরের কাগজ ডোরেমন এবং তার পকেট নিয়ে যোগ্যতা মূলক সন্তুষ্টিজনক উদাহরণ দিয়ে থাকে। টিভি আশাহি ডোরেমন তহবিল প্রতিষ্ঠা করে।সেই তহবিলে টাকার পরিমাণ বাড়তে থাকে। এই টাকা কোন প্রাকৃতিক দুর্যোগ হলে সেই অঞ্চলে সাহায্য করে। [১৮] ডোরেমন সিরিজের চরিত্রগুলো কিছু শিক্ষামূলক মাঙ্গা সিরিজে ব্যবহৃত হয়।[১৯][২০]

আরও দেখুন

সম্পাদনা

তথ্যসূত্র

সম্পাদনা
  1. "ডোরা-এ-মন বন্ধ"বিডিনিউজ২৪.কম। ২৭ মে ২০২০ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৪ ফেব্রুয়ারি ২০১৩ 
  2. "হিন্দি নহি চলেগা"আনন্দবাজার পত্রিকা। সংগ্রহের তারিখ ১৭ ফেব্রুয়ারি ২০১৩ 
  3. "ইন্ডিয়া ফয়েল্সের তারাতলা কারখানা খোলার উদ্যোগ"আনন্দবাজার পত্রিকা। সংগ্রহের তারিখ ৬ অক্টোবর ২০১১ 
  4. "Fujiko F. Fujio Museum"। Japan Reference। সংগ্রহের তারিখ সেপ্টেম্বর ১১, ২০১২ 
  5. 「ヤメサセロボット」(『小学二年生』1982年12月号掲載、単行本未収録)の全体
  6. 「空中つりセット」(『小学一年生』1982年12月号掲載、単行本未収録)
  7. 「さかさカメラ」(『小学四年生』1981年12月号掲載、単行本未収録)の扉以外全て
  8. 第26巻収録「空気中継衛星」
  9. 「しずちゃんとスイートホーム」第35巻収録
  10. 「サカユメンでいい夢見よう」第36巻収録
  11. "আজ থেকে বাংলায় "ডোরেমন""দৈনিক সমকাল। এপ্রিল ০১, ২০১৪। ১০ আগস্ট ২০১৭ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ সেপ্টেম্বর ১৯, ২০১৪  এখানে তারিখের মান পরীক্ষা করুন: |তারিখ= (সাহায্য)
  12. Event information ওয়েব্যাক মেশিনে আর্কাইভকৃত ২৬ মার্চ ২০১০ তারিখে, News about the musical ওয়েব্যাক মেশিনে আর্কাইভকৃত ১৬ জানুয়ারি ২০০৯ তারিখে
  13. "Events Calendar"। Tokyo Metropolitan Art Space। সংগ্রহের তারিখ আগস্ট ১৩, ২০০৮ [স্থায়ীভাবে অকার্যকর সংযোগ]
  14. TETSUO IWAMOTO, Asahi Staff Writer (২০১২-০৯-০৩)। "Happy birthday! Doraemon will be born 100 years from today"আশাহি সিম্বুন। ২০১৪-০১-১৬ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০১৪-০১-১৫ 
  15. "ESP X Doraemon"ESP Guitars। সেপ্টেম্বর ৩, ২০১৩ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। 
  16. "ESP X Doraemon"ESP Guitars। সংগ্রহের তারিখ ডিসেম্বর ২৬, ২০১৪ 
  17. "Jean Reno Goes to Olympics as Doraemon in New Live-Action Ad – News"Anime News Network। ২০১৩-০১-২৭। সংগ্রহের তারিখ ২০১৩-০১-৩১ 
  18. "Doraemon Fund"টিভি আশাহি। জানুয়ারি ১১, ২০০৪ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। 
  19. Gravett, Paul (২০০৪)। Manga:Sixty years of Japanese Comics। Laurence King Publishing। আইএসবিএন 1-85669-391-0 
  20. "Shogakukan Publishes Doraemon Earthquake Survival Guide"অ্যানিমে নিউজ নেটওয়ার্ক। জুন ২২, ২০১১। সংগ্রহের তারিখ জানুয়ারি ৫, ২০১৪ 

বহিঃসংযোগ

সম্পাদনা