কাওয়াসাকি (জাপানি: 川崎市 কাওয়াসাকি-শি) জাপানের হোনশু দ্বীপের পূর্ব-মধ্যভাগে কান্তোও প্রশাসনিক অঞ্চল এর কানাগাওয়া প্রশাসনিক অঞ্চল উত্তর-পূর্ব অংশে অবস্থিত একটি বন্দর নগরী। এটি টোকিও উপসাগরের পশ্চিম উপকূলে, উত্তরে টোকিও ও দক্ষিণে ইয়োকোহামা নগরী দুইটির মধ্যবর্তী অবস্থানে অবস্থিত। শহরটি টোকিও উপসাগর থেকে উত্তর-পশ্চিমে সরু একটি এলাকা ধরে বিস্তৃত হয়েছে এবং তামাগাওয়া নদীটি দ্বারা টোকিও থেকে পৃথক হয়েছে। নগরীর পশ্চিমে তামা পাহাড় অঞ্চল ও পূর্বে টোকিও উপসাগর। এখানে প্রায় ১৫ লক্ষ অধিবাসীর বাস। টোকিও-ইয়োকোহামা মহানগর এলাকাটির মধ্যে এটি তৃতীয় সর্বোচ্চ জনবহুল নগরী (টোকিও ও ইয়োকোহামার পরে) এবং সমগ্র জাপানের ৮ম সর্বোচ্চ জনবহুল নগরী।[] ১৪২ বর্গকিলোমিটার আয়তনের নগরীটির জনঘনত্ব প্রতি বর্গকিলোমিটারে ১০ হাজার জন। এটি জাপানের একমাত্র নগরী যার জনসংখ্যা ১০ লক্ষের বেশি হওয়া সত্ত্বেও যেটি জাপানের কোনও জেলার কেন্দ্রীয় শহর নয়।

কাওয়াসাকি
川崎市
Designated city
কাওয়াসাকি নগরী
কাওয়াসাকি দাইশি, তামা নদী, লাজোনা কাওয়াসাকি চত্বর, মুসাশি-কোসুগি রেলস্টেশন এলাকা, তোদোরোকি অ্যাথলেটিকস স্টেডিয়াম, কেইহিন শিল্প অঞ্চল
কাওয়াসাকি পতাকা
পতাকা
কাওয়াসাকি অফিসিয়াল সীলমোহর
সীলমোহর
মানচিত্র
কানাগাওয়া প্রশাসনিক অঞ্চল]এ কাওয়াসাকির অবস্থান
কানাগাওয়া প্রশাসনিক অঞ্চল]এ কাওয়াসাকির অবস্থান
কাওয়াসাকি জাপান-এ অবস্থিত
কাওয়াসাকি
কাওয়াসাকি
স্থানাঙ্ক: ৩৫°৩১′ উত্তর ১৩৯°৪২′ পূর্ব / ৩৫.৫১৭° উত্তর ১৩৯.৭০০° পূর্ব / 35.517; 139.700
জাপানদেশ
প্রশাসনিক অঞ্চলকান্তোও
জেলাকানাগাওয়া প্রশাসনিক অঞ্চল]
প্রথম নথিভুক্তি৪র্থ শতকের শেষভাগ
নগর প্রতিষ্ঠা১লা জুলাই, ১৯২৪
সরকার
 • নগরপ্রধাননোরিহিকো ফুকুদা
আয়তন
 • মোট১৪৩.০১ বর্গকিমি (৫৫.২২ বর্গমাইল)
জনসংখ্যা (১লা জানুয়ারি, ২০২০)
 • মোট১৫,৩১,৬৪৬
 • জনঘনত্ব১১,০০০/বর্গকিমি (২৮,০০০/বর্গমাইল)
সময় অঞ্চলজাপান মান সময় (ইউটিসি+৯:০০)
- বৃক্ষক্যামেলিয়া
- ফুলআজালেয়া
টেলিফোন নম্বর044-200-2111
ঠিকানা1 Miyamoto-chō, Kawasaki-ku, Kawasaki-shi, Kanagawa-ken 210-8577
ওয়েবসাইটhttp://www.city.kawasaki.jp/

জাপানের ইতিহাসের এদো বা তোকুগাওয়া পর্বে (১৭শ থেকে ১৯শ শতকের মধ্যভাগ) কাওয়াসাকি শহরটি এদো (বর্তমান টোকিও) এবং কিয়োতো নগরীর মধ্যে অবস্থিত ঐতিহাসিক সড়কপথটির (যার নাম ছিল তৌকাইদৌ অর্থাৎ পূর্ব সাগর পথ) এদোতে শেষ হবার আগের শেষ কয়েকটি বিরতিস্থলের একটি ছিল। ২০শ শতকের শুরুতে এখানে শিল্পখাতের বিকাশ ঘটে ও ১৯২৪ সালে এটিকে নগরীর মর্যাদা দেওয়া হয়। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় (১৯৩৯-১৯৪৫ খ্রিস্টাব্দ) মিত্রশক্তিদের বিমান থেকে করা বোমাবর্ষণে শহরটি প্রায় সম্পূর্ণ ধ্বংস করে ফেলা হয়। তার পরে আবার এটিকে নতুন করে নির্মাণ করা হয়। ১৯৭৬ সালে শহরটি একটি ভয়াবহ বিধ্বংসী অগ্নিকাণ্ডের শিকার হয়, যার পরে শহরটিকে তিলে তিলে আধুনিক নবপ্রবর্তিত অগ্নি-নিরোধক কৌশল ব্যবহার করে পুনর্নির্মাণ করা হয়। ধারাবাহিক কতগুলি প্রকল্পের দ্বারা সমুদ্র থেকে পুনরুদ্ধারকৃত একটি বৃহৎ ভূখণ্ড শহরের সাথে সংযুক্ত করার ফলে শহরের আয়তন তাৎপর্যপূর্ণভাবে বৃদ্ধি পায়।

কাওয়াসাকি জাপানের কেইহিন শিল্প অঞ্চলের কেন্দ্রে অবস্থিত। কাওয়াসাকি নগরীর শিল্প অঞ্চলটিকে তিনটি অংশে ভাগ করা যায়। উপকূলের পুনরুদ্ধারকৃত জমিতে ভারী শিল্পকারখানাগুলি অবস্থিত, যার মধ্যে জাহাজনির্মাণের বৃহৎ কারখানাগুলি উল্লেখ্য। নগরকেন্দ্রে মোটরযান, যন্ত্রপাতি ও সরঞ্জামের কারখানাগুলি অবস্থিত। উত্তর-পশ্চিম অংশে রাসায়নিক দ্রব্য উৎপাদনকারী হালকা শিল্পগুলি অবস্থিত। কাওয়াসাকি জাপানের ব্যস্ততম সমুদ্রবন্দরগুলির একটি। এছাড়া এটি জাপানের অন্যতম প্রধান উচ্চ-প্রযুক্তি (ইলেকট্রনীয় ও পরিগণক বা কম্পিউটার প্রযুক্তি) কেন্দ্র।

কাওয়াসাকিতে ১২শ শতকে (১১২৮ খ্রিস্টাব্দ) নির্মিত একটি বৌদ্ধমন্দির আছে, যার নাম কাওয়াসাকি দাইশি (বা হেইগেনজি) মন্দির, এবং যেখানে শিংগোন মতবাদের বৌদ্ধদের চিসান গোত্রের সদর দফতরটি অবস্থিত। অন্যান্য দর্শনীয় স্থানের মধ্যে আছে কাওয়াসাকি নগর জাদুঘর, কাওয়াসাকি শান্তি জাদুঘর, একটি শিল্পকলা বাগান ও কাওয়াসাকি জাপানি গৃহ জাদুঘর, যেখানে ঐতিহ্যবাহী জাপানি স্থাপত্যশৈলীর বিভিন্ন নিদর্শন সংরক্ষিত আছে। নগরীটিতে একটি আধুনিক পাতালরেল ব্যবস্থা রয়েছে, যার সাহায্যে নগরের বেশিরভাগ এলাকাতে খুব সহজেই যাতায়াত করা সম্ভব।

তথ্যসূত্র

সম্পাদনা
  1. "Archived copy"। ২০১৬-০১-১৩ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০১৭-১১-১০