বাংলাদেশের উত্তরাঞ্চলের গাইবান্ধা, রংপুর, কুড়িগ্রাম, লালমনিরহাট, নীলফামারী, দিনাজপুর, ঠাকুরগাঁও, পঞ্চগড় জেলার জনপ্রিয় মুখরোচক খাবার সিদল ভর্তা। সাধারনত মলা,পুঁটি, টাকি মাছের শুটকি সাথে কচু বা মানকচুর ডাটা দিয়ে প্রথমে সিদল তৈরি করতে হয়, তারপরে উক্ত সিদলকে বিশেষ প্রক্রিয়ার মাধ্যমে ভর্তার উপযোগী করা হয় ।

সিদল
উৎপত্তিস্থল বাংলাদেশ
পরিবেশনভাতের সাথে পরিবেশিত হয়
প্রধান উপকরণমাছ, মানকচু
সাধারণত ব্যবহৃত উপকরণতেল, পেঁয়াজ, মরিচ, রসুন, আদা, লবণ

সিদল তৈরির সময় সম্পাদনা

বছরের যে কোন সময় সিদল তৈরি করা যায়, তবে ফেব্রুয়ারি ও মার্চ বাতাসে আর্দ্রতা কম থাকায় সিদল তৈরির জন্য ভাল ।

উপকরণসমূহ সম্পাদনা

সিদল তৈরির পদ্ধতি সম্পাদনা

মলা, বা পুঁটি, অথবা টাকি মাছ প্রথমে ভালো করে ধুয়ে কড়া রোদে শুকিয়ে নিতে হয়। মাছের শুঁটকিগুলো ঢেঁকি বা সামগাইন (বড় আকারের কাঠের হামানদিস্তা) বা শিল-পাটা অথবা ব্লেন্ডারে গুঁড়া করে নিতে হয়। এরপর মানকচুর ডাঁটা ছিলে ধুয়ে নিয়ে কাঁচা অবস্থাতেই ঢেঁকি বা সামগাইন (বড় আকারের কাঠের হামানদিস্তা)অথবা শিল-পাটায় পিষে মানকচুর ডাটার মণ্ড হয়।

মানকচুর ডাটার মণ্ডের সঙ্গে মলা, পুঁটি, টাকি মাছের গুঁড়া, প্রয়োজনমতো খাওয়ার সোডা ধীরে ধীরে সবকিছুর সঙ্গে মিশিয়ে সমন্বিত মণ্ড তৈরি করতে হয়। সব মেশানো হয়ে গেলে মণ্ডগুলো হলুদসরিষার তেল দিয়ে মেখে হাত দিয়ে গোল বা চ্যাপটা করে নিতে হয়। পাখি অথবা মাছি থেকে রক্ষা করতে ডালা বা কুলায় জাল দিয়ে ঢেকে ৮-১০ দিন রোদে শুকিয়ে নিলেই তৈরি হয়ে যায় সিদল

সংরক্ষণ পদ্ধতি সম্পাদনা

সিদল রোদ থেকে এনে ঠাণ্ডা করে প্লাস্টিক/টিন/কাঁচের মুখবন্ধ পাত্রে অথবা পলিথিন ব্যাগে মুড়িয়ে রেফ্রিজারেটরেও সংরক্ষণ করা যায়। উভয় ক্ষেত্রে কিছু দিন পর পর রোদে শুকিয়ে নিলে সিদল দেড়-দুই বছর ভালো থাকে ।

সিদল ভর্তার পদ্ধতি সম্পাদনা

সিদল পুড়ে অথবা ঝরঝরে করে তাওয়ায় ভেজে নিতে হবে। মরিচ, পিঁয়াজ, রসুন, আদা লবণ, সরিষার তেল দিয়ে ভালো করে হাত দিয়ে বা শিল-পাটা অথবা ব্লেন্ডারে পিষে ভর্তা তৈরি করতে হবে । এরপরে গরম ভাতের সঙ্গে সিদল ভর্তা পরিবেশন করতে হয়।

তথ্যসূত্র সম্পাদনা