নীলফামারী জেলা

বাংলাদেশের রংপুর বিভাগের একটি জেলা

নীলফামারী জেলা বাংলাদেশের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলের একটি জেলা (দ্বিতীয় স্তরের প্রশাসনিক ইউনিট)। এটি রংপুর বিভাগের (বাংলাদেশের আটটি বিভাগের একটি যা ২০১০ খ্রিষ্টাব্দের ২৫ জানুয়ারিতে সপ্তম বিভাগ হিসাবে গঠিত হয়) আটটি জেলার একটি অন্যতম সীমান্তঘেষা জেলা। এ জেলার সদর বা রাজধানীর নামও নীলফামারী। নীলফামারী জেলার উত্তর সীমান্তে ভারতের জলপাইগুড়ি জেলা এবং অন্য দিকে লালমনিরহাট জেলা, রংপুর জেলা, দিনাজপুর জেলাপঞ্চগড় জেলা অবস্থিত।

নীলফামারী
জেলা
বাংলাদেশে নীলফামারী জেলার অবস্থান
বাংলাদেশে নীলফামারী জেলার অবস্থান
স্থানাঙ্ক: ২৫°৫৭′ উত্তর ৮৮°৫৭′ পূর্ব / ২৫.৯৫০° উত্তর ৮৮.৯৫০° পূর্ব / 25.950; 88.950 উইকিউপাত্তে এটি সম্পাদনা করুন
দেশবাংলাদেশ
বিভাগরংপুর বিভাগ
মন্ত্রী পরিষদ
সরকার
 • জেলা প্রশাসকখন্দকার ইয়াসির আরেফীন
আয়তন
 • মোট১,৬৪৩.৪ বর্গকিমি (৬৩৪.৫ বর্গমাইল)
জনসংখ্যা (২০১১)[১]
 • মোট১৯,০৭,৪৯৭
 • জনঘনত্ব১,২০০/বর্গকিমি (৩,০০০/বর্গমাইল)
সাক্ষরতার হার
 • মোট৬৯.৬৯%
সময় অঞ্চলবিএসটি (ইউটিসি+৬)
প্রশাসনিক
বিভাগের কোড
৫৫ ৭৩
ওয়েবসাইটপ্রাতিষ্ঠানিক ওয়েবসাইট উইকিউপাত্তে এটি সম্পাদনা করুন

নীলফামারী জেলাকে নীলের দেশ বলা হয়। এই জেলার সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য ও ভূ-সংস্থান বেশ সমৃদ্ধ যা অন্যান্য জেলা থেকে এই জেলাকে কিছুটা হলেও আলাদা করেছে। জেলার উত্তর দিক উচু ও খরা পিরিত অঞ্চল, পূর্ব দিক তিস্তার বালুকাময় এলাকা, এই উচু ও বালুময় ভূমি ধীরে ধীরে দক্ষিণপশ্চিম দিকে উর্বর কৃষি জমিতে পরিণত হয়েছে। নীলফামারী অতীত ইতিহাসের অনেক সাক্ষী বহন করে। এ জেলায় সত্যপীরের গান, হাঁস খেলা, মাছ খেলাসহ অনেক উৎসব ও মেলার আয়োজন হয়।

নীলফামারী একটি কৃষি প্রধান জেলা। এ জেলার ৬৮.৫% মানুষ কৃষির উপর নির্ভরশীল। এখানকার প্রধান শিল্প বয়ন, চাল, বাশবেত প্রভৃতি। দারোয়ানী বস্ত্র কল এ জেলার সর্ববৃহৎ শিল্প প্রতিষ্ঠান। এছাড়া উত্তরা ইপিজেড ও সৈয়দপুর বিসিক শিল্প নগরীর মত শিল্প পার্ক।

নামকরণসম্পাদনা

দুই শতাধিক বছর পূর্বে এ অঞ্চলে নীল চাষের খামার স্থাপন করে ইংরেজ নীলকরেরা। এ অঞ্চলের উর্বর ভূমি নীল চাষের অনুকূল হওয়ায় দেশের অন্যান্য এলাকার তুলনায় নীলফামারীতে বেশি সংখ্যায় নীলকুঠি ও নীল খামার গড়ে ওঠে। ঊনবিংশ শতাব্দীর শুরুতেই দুরাকুটি, ডিমলা, কিশোরগঞ্জ উপজেলা, টেঙ্গনমারী প্রভৃতি স্থানে নীলকুঠি স্থাপিত হয়।

সে সময় বৃহত্তর রংপুর অঞ্চলের মধ্যে নীলফামারীতেই বেশি পরিমাণে শস্য উৎপাদিত হতো এখানকার উর্বর মাটির গুণে। সে কারণেই নীলকরদের ব্যাপক আগমন ঘটে এতদঅঞ্চলে। গড়ে ওঠে অসংখ্য নীল খামার। বর্তমান নীলফামারী শহরের তিন কিলোমিটার উত্তরে পুরাতন রেল স্টেশনের কাছেই ছিল একটি বড় নীলকুঠি। তাছাড়া বর্তমানে অফিসার্স ক্লাব হিসেবে ব্যবহৃত পুরাতন বাড়িটি ছিল একটি নীলকুঠি।ধারণা করা হয়, স্থানীয় কৃষকদের মুখে ‘নীল খামার’ রূপান্তরিত হয় ‘নীল খামারী’তে। আর এই নীলখামারীর অপভ্রংশ হিসেবে উদ্ভব হয় নীলফামারী নামের।

ভৌগোলিক অবস্থানসম্পাদনা

রাজধানী ঢাকা থেকে উত্তর-পশ্চিম দিকে প্রায় ৪০০ কিঃমিঃ দুরে ১৫৮০.৮৫ বর্গ কিলোমিটার আয়তন বিশিষ্ট নীলফামারী জেলার অবস্থান, যা কর্কটক্রান্তি রেখার সামান্য উত্তরে, ২৫°৪৪´ উত্তর অক্ষাংশ থেকে ২৬°১৯´ উত্তর অক্ষাংশ এবং ৮৮°৪৪´ পূর্ব দ্রাঘিমাংশ থেকে ৮৯°১২´ পূর্ব দ্রাঘিমাংশে অবস্থিত। এ জেলার পূর্বে রংপুর জেলালালমনিরহাট জেলা, দক্ষিণে রংপুর জেলাদিনাজপুর জেলা,পশ্চিমে দিনাজপুর জেলার খানসামা উপজেলাপঞ্চগড় জেলা এবং উত্তরে ভারতের জলপাইগুড়ি জেলা

আবহাওয়াসম্পাদনা

স্থানীয় জনপ্রতিনিধিসম্পাদনা

 নীলফামারী-০১  নীলফামারী-০২  নীলফামারী-০৩  নীলফামারী-০৪
জনাব মোঃ আফতাব উদ্দিন সরকার, মাননীয় সংসদ সদস্য, ডোমার-ডিমলা, নীলফামারী জনাব মোঃ আসাদুজ্জামান নূর, মাননীয় সংসদ সদস্য,নীলফামারী সদর জনাব মেজর মোঃ সোহেল রানা, মাননীয় সংসদ সদস্য, জলঢাকা , নীলফামারী মোঃ আদেলুর রহমান, মাননীয় সংসদ সদস্য, সৈয়দপুর-কিশোরগণ্জ, নীলফামারী

স্থানীয় সরকারসম্পাদনা

১৮৭৫ সালে মহকুমা ও পরে ১৯৮৪ সালে জেলায় উন্নীত হয়।[৩] প্রথম নির্বাচিত এবং বর্তমান জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা জয়নাল আবেদীন।

পৌরসভাসম্পাদনা

এই জেলায় মোট ৪ টি পৌরসভা

উপজেলা পরিষদসম্পাদনা

মোট ৬ টি উপজেলা নিয়ে নীলফামারী জেলা।

  1. নীলফামারী সদর উপজেলা
  2. ডোমার উপজেলা
  3. ডিমলা উপজেলা
  4. জলঢাকা উপজেলা
  5. কিশোরগঞ্জ উপজেলা
  6. সৈয়দপুর উপজেলা

ইউনিয়ন পরিষদসম্পাদনা

নীলফামারী জেলায় মোট ৬০ টি ইউনিয়ন পরিষদ রয়েছে।

শিক্ষাসম্পাদনা

শিক্ষা প্রতিষ্ঠানসম্পাদনা

  • টেংগনমারী ডিগ্রী কলেজ, জলঢাকা, নীলফামারী
  • সোনারায় সংগলশী উচ্চ বিদ্যালয়।
  • ডিমলা রাণী বৃন্দারাণী সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়
  • কিশোরীগঞ্জ সরকারি কলেজ, কিশোরগঞ্জ, নীলফামারী
  • বড়ভিটা মেধা বিকাশ কিন্ডারগার্টেন স্কুল, কিশোরগঞ্জ, নীলফামারী
  • কিশোরীগঞ্জ বহুমুখী মডেল উচ্চ বিদ্যালয়
  • কালেক্টরেট পাবলিক স্কুল এন্ড কলেজ, নীলফামারী
  • চড়াইখোলা স্কুল এন্ড কলেজ, নীলফামারী
  • চড়াইখোলা সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়, নীলফামারী
  • কাঞ্চনপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, নীলফামারী সদর
  • বাবরীঝাড় দ্বিমূখী উচ্চ বিদ্যালয়, নীলফামারী সদর
  • বাবরীঝাড় সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, নীলফামারী সদর
  • হাছ্না আইডিয়াল পাবলিক স্কুল এন্ড কলেজ, বাবরীঝাড়, নীলফামারী সদর
  • যাদুরহাট উচ্চ বিদ্যালয়, নীলফামারী সদর
  • যাদুরহাট সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়
  • লায়ন্স স্কুল এন্ড কলেজ, সৈয়দপুর
  • বালাগ্রাম কৃষি কলেজ, জলঢাকা, নীলফামারী।
  • বালাগ্রাম উচ্চ বিদ্যালয়, জলঢাকা, নীলফামারী।
  • জলঢাকা মডেল পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়, জলঢাকা, নীলফামারী।
  • ছমির উদ্দিন স্কুল এন্ড কলেজ, নীলফামারী
  • নগর দারোয়ানী স্কুল এন্ড কলেজ ,নীলফামারী ।
  • বেড়াডাঙ্গা সরকারী প্রাথ‌মিক বিদ‌‌‌্যালয়, নীলফামারী ।
  • শৌলমারী বহুমুখী উচ্চ বিদ্যালয়, জলঢাকা, নীলফামারী।
  • শৌলমারী গার্লস স্কুল এন্ড কলেজ,জলঢাকা, নীলফামারী।
  • কৈমারী স্কুল এন্ড কলেজ,জলঢাকা, নীলফামারী।
  • নিতাই হাই স্কুল, কিশোরগঞ্জ, নীলফামারী।
  • মুশুরুত পানিয়াল পুকুর হাই স্কুল, কিশোরগঞ্জ, নীলফামারী

অর্থনীতিসম্পাদনা

নীলফামারী মূলত একটি কৃষি নির্ভর জেলা। জেলার অন্যতম প্রধান অর্থকরী ফসল ভুট্টা, ও মরিচ। জেলার ডিমলা ও জলঢাকা উপজেলার তিস্তা নদীর অববাহিকায় প্রচুর ভুট্টার চাষ হয়। ডোমার, ডিমলায় মরিচের চাষ হয়। এছাড়া আলু, ধান, গম, সরিষা, পাট, তামাক প্রচুর পরিমাণে উৎপাদিত হয়।[৪]

চিত্তাকর্ষক ও প্রত্নতাত্ত্বিক স্থানসম্পাদনা

 
তিস্তা ব্যারেজ

উল্লেখযোগ্য ব্যক্তিত্বসম্পাদনা

আরোও দেখুনসম্পাদনা

তথ্যসূত্রসম্পাদনা

  1. বাংলাদেশ জাতীয় তথ্য বাতায়ন (জুন ২০১৪)। "এক নজরে নীলফামারী"। গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার। ১৮ নভেম্বর ২০১৩ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২২ জুন ২০১৪ 
  2. "Average Conditions – Bangladesh – Nilphamari" (ইংরেজি ভাষায়)। Best travel months। সংগ্রহের তারিখ ১৬ এপ্রিল ২০২০ 
  3. "নীলফামারী জেলা - বাংলাপিডিয়া"bn.banglapedia.org। সংগ্রহের তারিখ ২০২২-১২-২৬ 
  4. Soft, Emperor। "উত্তর বাংলা | Multimedia News Portal"www.uttorbangla.com (ইংরেজি ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ২০২২-০৫-২৯ 
  5. "নীলফামারী ১ আসনে আ. লীগের প্রার্থী হতে চান ব্যারিস্টার ইমরান"Bangla Tribune। সংগ্রহের তারিখ ২০২২-১২-২৬ 

বহিঃসংযোগসম্পাদনা