সিউড়ী
সিউড়ি হল ভারতের পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের বীরভূম জেলার সদর শহর ও পৌরসভা এলাকা। সিউড়ী শহরটি ব্রিটিশ আমলে তৈরি। এই শহরটি ছোটনাগপুর মালভূমির সম্প্রসারিত অংশে অবস্থিত। সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে এর উচ্চতা প্রায় ২৩৩ ফুট।[১] সিউড়ি শহর মোরব্বা এবং আচার-এর জন্য বিখ্যাত। বীরভূম জেলার বক্রেশ্বরে (সিউড়ি থেকে ২০ কিমি) অবস্থিত বক্রেশ্বর শক্তিপীঠ ও উষ্ণ প্রস্রবণ এবং বীরভূম জেলার পাথরচাপড়িতে (সিউড়ি থেকে ১১ কিমি) অবস্থিত দাতাবাবার মাজার প্রভৃতি জায়গাগুলিতে রাত্রিবাসের সুবন্দোবস্ত না থাকার জন্য ভ্রমণকারী পুণ্যার্থী এবং ভ্রমণার্থীরা সিউড়িতে রাত্রিবাস করে থাকেন।
Suri সিউড়ি Siuri | |
---|---|
শহর | |
Location in West Bengal, India | |
স্থানাঙ্ক: ২৩°৫৪′৩৬″ উত্তর ৮৭°৩১′৩৭″ পূর্ব / ২৩.৯১০° উত্তর ৮৭.৫২৭° পূর্ব | |
দেশ | ভারত |
রাজ্য | পশ্চিমবঙ্গ |
জেলা | বীরভূম |
উচ্চতা | ৭১ মিটার (২৩৩ ফুট) |
জনসংখ্যা (২০১১) | |
• মোট | ৬৭,৮৬৪ |
• জনঘনত্ব | ৭,১৬৬/বর্গকিমি (১৮,৫৬০/বর্গমাইল) |
ভাষাসমূহ | |
• সরকারী | বাংলা, ইংরেজি |
সময় অঞ্চল | ভারতীয় প্রমাণ সময় (ইউটিসি+০৫:৩০) |
PIN | ৭৩১১০১ (সিউড়ি শহর)
৭৩১১০২ (হাটজন বাজার) ৭৩১১০৩ (বড়বাগান) ৭৩১১২৬ (কড়িধ্যা) |
টেলিফোন কোড | +৯১ / ০৩৪৬২ |
যানবাহন নিবন্ধন | WB ৫৪ |
লোকসভা আসন | বীরভূম |
বিধানসভা আসন | সিউড়ি |
ওয়েবসাইট | birbhum |
অবস্থান
সম্পাদনাসিউড়ির স্থানাঙ্ক হল ২৩°৫৪′৩৬″ উত্তর ৮৭°৩১′৩৭″ পূর্ব / ২৩.৯১০° উত্তর ৮৭.৫২৭° পূর্ব। এই শহর পশ্চিমবঙ্গের রাজধানী কলকাতা থেকে প্রায় ২২০ কিমি, দুর্গাপুর থেকে ৯০ কিমি, বোলপুর-শান্তিনিকেতন থেকে ৩৪ কিমি দূরে অবস্থিত। অন্ডাল-সাঁইথিয়া শাখা রেলপথের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ স্টেশন সিউড়ি রেলওয়ে স্টেশন, অণ্ডাল থেকে ৫৫ কিমি এবং সাঁইথিয়া থেকে ১৯ কিমি দূরে অবস্থিত। সিউড়ি জাতীয় সড়ক ১৪ (ভারত)-এর উপর অবস্থিত। সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে সিউড়ির উচ্চতা হল ৭১ মিটার (২৩৩ ফুট)। ছোট নাগপুর মালভূমির সম্প্রসারিত অংশে অবস্থিত সিউড়ির উত্তর দিক দিয়ে ময়ূরাক্ষী নদী বয়ে গেছে। সিউড়ি মোট ৯.৪৭ বর্গ কিমি জায়গা জুড়ে অবস্থিত।
নামকরণ
সম্পাদনাবীরভূম জেলা সদর তথা শতাব্দী প্রাচীন শহর হল সিউড়ি। এই শহরের নামের দু’ধরনের বানান চোখে পড়ে। জেলা প্রশাসনিক ভবন, পুরভবন, শতাব্দী প্রাচীন জেলা স্কুল, গ্রন্থাগার থেকে শুরু করে বহু জায়গায় রয়েছে ‘সিউড়ী’ বানান। টেলি যোগাযোগ সংস্থার অফিস, পত্রপত্রিকা, বিভিন্ন দোকানপাটে শহরের বানান লেখা ‘সিউড়ি’। অনেক গবেষকের মতে সিউড়ি নামের উৎপত্তির ইতিহাসে আছে এর রহস্য। গৌরীহর মিত্র ‘বীরভূমের ইতিহাস’ গ্রন্থে লিখছেন ‘‘বীরভূমের রাজধানী সিউড়ী, শূরী (বা শৌর্য্যশালী) শব্দের অপভ্রংশ। তাই ইংরেজিতে সিউড়ি-র বানান শূরী (suri) লেখা হয়।’’ বীরভূমে এক সময় বৌদ্ধদের প্রভাব ছিল বলেই শিবাড়ী থেকে সিউড়ী হয়েছে। বীরভূমের ইতিহাসবিদ অর্ণব মজুমদারের মতে সিউড়ি নয়, শতাব্দী প্রচীন জনপদ হিসাবে বিখ্যাত ছিল সিউড়ির সন্নিকটস্থ কড়িধ্যা। প্রচুর সংখ্যক তন্তুবায়ী বা তাঁতি, শাঁখারি পরিবারের বাস ছিল কড়িধ্যায়। থাকতেন জমিদারেরাও। তার শিয়রে অর্থাৎ ঠিক উত্তর দিকে থাকা জনপদ সিউড়ির নাম ‘শিয়র’ থেকেই হয়েছে।[২]
জনসংখ্যার উপাত্ত
সম্পাদনাভারতের ২০০১ সালের আদমশুমারি অনুসারে সিউড়ি শহরের জনসংখ্যা হল ৬১,৮১৮ জন।[৩] এর মধ্যে পুরুষ ৫১% এবং নারী ৪৯%।
এখানে সাক্ষরতার হার ৭৪%। পুরুষদের মধ্যে সাক্ষরতার হার ৭৯% এবং নারীদের মধ্যে এই হার ৬৮%। সারা ভারতের সাক্ষরতার হার ৫৯.৫%, তার চাইতে সিউড়ি এর সাক্ষরতার হার বেশি।
এই শহরের জনসংখ্যার ১১% হল ৬ বছর বা তার কম বয়সী।
যোগাযোগ ব্যবস্থা
সম্পাদনাসিউড়ি শহরে পর্যাপ্ত পরিমাণে সরকারী বাস (দক্ষিণবঙ্গ রাষ্ট্রীয় পরিবহণ সংস্থা, উত্তরবঙ্গ রাষ্ট্রীয় পরিবহণ সংস্থা এবং পশ্চিমবঙ্গ পরিবহন নিগম) এবং বেসরকারি বাস চলাচল করে। সিউড়ি থেকে কলকাতা, দুর্গাপুর, আসানসোল, পুরুলিয়া, বোলপুর, রাজনগর, কানমোড়া, ঝাড়গ্রাম ,বাঁকুড়া, মেদিনীপুর, মসানজোর, দুমকা, জামতাড়া, দীঘা, বর্ধমান, ইংরেজ বাজার, জলপাইগুড়ি, শিলিগুড়ি, কাটোয়া, বালুরঘাট, রায়গঞ্জ ইত্যাদি শহরে বাস চলাচল করে।
সিউড়ী হল একটি আদর্শ রেলওয়ে স্টেশন। এটি সিউড়ি শহরের দক্ষিণ প্রান্তে হাটজন বাজারে অবস্থিত। এই স্টেশনটি সিউড়ি শহরকে হাওড়া, কলকাতা, বর্ধমান, দুর্গাপুর, গুয়াহাটি, ডিব্রুগড়, মালদা, শিলিগুড়ি, পুরী, চেন্নাই, সুরাট, ঝাঝা আসানসোল, রাঁচি, নাগপুর, বিলাসপুর, ভুবনেশ্বর, বিশাখাপত্তনম, ডিমাপুর, জামশেদপুর, পুরুলিয়া, কটক, বিজয়ওয়াড়া, রায়পুর, দুর্গ ইত্যাদি শহরের সঙ্গে রেলযোগে সরাসরি যুক্ত করে।
তথ্যসূত্র
সম্পাদনা- ↑ সিউড়ী শহরের ইতিহাস - সুকুমার সিংহ, আশাদীপ
- ↑ দয়াল সেনগুপ্ত (২২ ২ আগস্ট ০১৬)। "ই না ঈ? বানান বিতর্কে সিউড়ি" (ইংরেজি ভাষায়)। আনন্দবাজার পত্রিকা। সংগ্রহের তারিখ ৭ এপ্রিল ২০১৭। এখানে তারিখের মান পরীক্ষা করুন:
|তারিখ=
(সাহায্য) - ↑ "ভারতের ২০০১ সালের আদমশুমারি" (ইংরেজি ভাষায়)। Archived from the original on ১৬ জুন ২০০৪। সংগ্রহের তারিখ অক্টোবর ১৫, ২০০৬।
পশ্চিমবঙ্গের অবস্থান বিষয়ক এই নিবন্ধটি অসম্পূর্ণ। আপনি চাইলে এটিকে সম্প্রসারিত করে উইকিপিডিয়াকে সাহায্য করতে পারেন। |