বক্রেশ্বর

পশ্চিমবঙ্গের বীরভূম জেলার দুবরাজপুর সমষ্টি উন্নয়ন ব্লকের একটি গ্রাম

বক্রেশ্বর পশ্চিমবঙ্গের বীরভূম জেলার সিউড়ি সদর মহকুমার একটি শহর। পশ্চিমবঙ্গ বিদ্যুৎ উন্নয়ন নিগম লিমিটেডের বক্রেশ্বর তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র এই শহরের নিকটবর্তী। বক্রেশ্বরের নিকটবর্তী রেলওয়ে স্টেশন হল সিউড়ী

বক্রেশ্বর
গ্রাম
বক্রেশ্বর পশ্চিমবঙ্গ-এ অবস্থিত
বক্রেশ্বর
বক্রেশ্বর
বক্রেশ্বর ভারত-এ অবস্থিত
বক্রেশ্বর
বক্রেশ্বর
ভারতের পশ্চিমবঙ্গে অবস্থান
স্থানাঙ্ক: ২৩°৫৩′ উত্তর ৮৭°২২′ পূর্ব / ২৩.৮৮° উত্তর ৮৭.৩৭° পূর্ব / 23.88; 87.37
দেশ ভারত
রাজ্যপশ্চিমবঙ্গ
জেলাবীরভূম জেলা
উচ্চতা৮৪ মিটার (২৭৬ ফুট)
ভাষা
 • অফিসিয়ালবাংলা, ইংরেজি
সময় অঞ্চলআইএসটি (ইউটিসি+৫:৩০)
লোকসভাবীরভূম লোকসভা কেন্দ্র
বিধানসভাদুবরাজপুর
ওয়েবসাইটbirbhum.nic.in

ব্যুৎপত্তি ও পৌরাণিক মাহাত্ম্য সম্পাদনা

বক্রেশ্বর শব্দটি এসেছে স্থানীয় বক্রেশ্বর শিবের নামানুসারে। বক্র শব্দটির অর্থ বাঁকা; ঈশ্বর অর্থে ভগবান। পৌরাণিক কাহিনি অনুসারে, সত্যযুগে লক্ষ্মীনারায়ণের বিবাহ অনুষ্ঠানে সুব্রত মুণি দেবরাজ ইন্দ্র কর্তৃক অপমানিত হন। ক্রুদ্ধ ঋষির দেহ আটটি বাঁকে বেঁকে যায়। তিনি অষ্টাবক্র ঋষি নামে পরিচিত হন। বহুবছর শিবের তপস্যা করে ঋষি সুস্থ হয়ে ওঠেন। বক্রেশ্বর ৫১টি শক্তিপীঠের অন্যতম এবং হিন্দুদের একটি গুরুত্বপূর্ণ তীর্থ। একারণে অজস্র মন্দির গড়ে উঠেছে বক্রেশ্বরে। কথিত আছে এখানের পড়েছে দেবীর ত্রিনয়ন।[১] দেবী এখানে দশভূজা রূপে পূজিতা হন। বাংলাদেশের ঢাকেশ্বরী এবং বক্রেশ্বরের দেবীর একই রূপ।

ভূগোল সম্পাদনা

বীরভূম জেলার শহর ও নগরগুলি
পু: পুরসভা শহর/নগর, জশ: জনগণনা শহর, গ: গ্রামীণ/নগর কেন্দ্র, ব: বাঁধ
ছোট মানচিত্রে স্থানের সীমাবদ্ধতার কারণে বৃহত্তর মানচিত্রে প্রকৃত অবস্থানগুলি কিছুটা ভিন্ন হতে পারে

বক্রেশ্বরের স্থানাংক ২৩°৫৩′ উত্তর ৮৭°২২′ পূর্ব / ২৩.৮৮° উত্তর ৮৭.৩৭° পূর্ব / 23.88; 87.37[২] বীরভূমের শুষ্ক পশ্চিমাঞ্চলে অবস্থিত এই অঞ্চলের গড় উচ্চতা ৮৪ মিটার। বক্রেশ্বর নদ এই শহরের ধার দিয়ে প্রবাহিত। বীরভূমের সদর শহর সিউড়ী থেকে ২০ কিমি দক্ষিণ-পশ্চিমে অবস্থিত এই বক্রেশ্বর উষ্ণপ্রশবন এবং সতীপীঠ। বক্রেশ্বরের অবস্থান ছোটোনাগপুর মালভূমি এবং রাঢ় সমভূমির সংযোগ স্থলে।

উষ্ণ প্রস্রবণ সম্পাদনা

 
উষ্ণ প্রস্রবণ স্নান ঘাট

বক্রেশ্বরের অন্যতম প্রধান আকর্ষণ এর উষ্ণ প্রস্রবণগুলি[৩] এই শহরে দশটি উষ্ণ প্রস্রবণ আছে; এগুলি হল – পাপহরা গঙ্গা, বৈতরণী গঙ্গা, খরকুণ্ড, ভৈরবকুণ্ড, অগ্নিকুণ্ড, দুধকুণ্ড, সূর্যকুণ্ড, শ্বেতগঙ্গা, ব্রহ্মাকুণ্ড, অমৃতকুণ্ড। খর, ভৈরব ও সূর্যকুণ্ডের জলের তাপমাত্রা যথাক্রমে ৬৬, ৬৫ ও ৬১ ডিগ্রি সেলসিয়াস। অগ্নিকুণ্ডের তাপমাত্রা ৮০ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এই কুণ্ডের জলে সোডিয়াম, পটাশিয়াম, ক্যালসিয়াম, সিলিকেট, ক্লোরাইড, বাইকার্বোনেট ও সালফেট পাওয়া যায়, যা ঔষধিগুণসম্পন্ন। এছাড়াও এই কুণ্ডের জলে রেডিওঅ্যাকটিভ উপাদানও পাওয়া যায়। দুধকুণ্ডের তাপমাত্রা ৬৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস। সকালের দিকে এই কুণ্ডের জলে ওজোন ঘনীভূত হয়ে সাদা সরের মতো পদার্থ সৃষ্টি করে।

অর্থনীতি সম্পাদনা

পশ্চিমবঙ্গ বিদ্যুৎ উন্নয়ন নিগম লিমিটেড (ডব্লিউবিপিডিসিএল)-এর ৩ X ২১০ মেগাওয়াট বক্রেশ্বর তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র ও ডব্লিউবিপিডিসিএল ও ডিসিএল-এর যৌথ উদ্যোগে নির্মীয়মান আরেকটি ২ X ২১০ মেগাওয়াট ইউনিট এখানে সক্রিয়।[৪] এগুলি চিনপাইতে পানাগড়-মোরগ্রাম সড়কের ধারে অবস্থিত।

পরিবহন সম্পাদনা

রেলপথে সম্পাদনা

নিকটবর্তী রেলওয়ে স্টেশন হল সিউড়ী ও চিনপাই

স্বাস্থ্যসেবা সম্পাদনা

বক্রেশ্বরে ছয়টি শয্যা বিশিষ্ট একটি প্রাথমিক স্বাস্থ্য কেন্দ্র রয়েছে।[৫]

মন্দির সম্পাদনা

পাদটীকা সম্পাদনা

  1. "সতীপীঠের টানেই আসেন দেশবিদেশের পর্যটক"। আনন্দবাজার পত্রিকা। সংগ্রহের তারিখ ৩ অক্টোবর ২০১৭ 
  2. Falling Rain Genomics, Inc - Bakreshwar
  3. "শীতের আমেজ, সাজছে বক্রেশ্বর"। আনন্দবাজার পত্রিকা। সংগ্রহের তারিখ ৩ অক্টোবর ২০১৭ 
  4. "West Bengal Power Development Corporation Ltd."। Official website of Department of Power, Government of West Bengal। ২০০৯-০৩-০৯ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০০৯-০৩-১১ 
  5. "Health & Family Welfare Department" (পিডিএফ)Health Statistics – Primary Health Centres। Government of West Bengal। ২১ এপ্রিল ২০১৮ তারিখে মূল (পিডিএফ) থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১০ ফেব্রুয়ারি ২০১৮ 

বহিঃসংযোগ সম্পাদনা