দীঘা
দীঘা বা দিঘা ভারতের পশ্চিমবঙ্গের পূর্ব মেদিনীপুর জেলার অন্যতম জনপ্রিয় সমুদ্রসৈকত। দীঘাতে একটি অগভীর বেলাভূমি আছে যেখানে প্রায় ৭ মিটার উচ্চতাবিশিষ্ট ঢেউ বালুকাভূমিতে আছড়ে পড়তে দেখা যায়। এখানে ঝাউ গাছের সৌন্দর্যায়ন চোখে পড়ে; যা ভূমিক্ষয়রোধেও সমান সাহায্য করে।[১]
দীঘা | |
---|---|
শহর ও সমুদ্র সৈকত | |
ডাকনাম: বাংলার গোয়া | |
স্থানাঙ্ক: ২১°৪১′ উত্তর ৮৭°৩৩′ পূর্ব / ২১.৬৮° উত্তর ৮৭.৫৫° পূর্ব | |
দেশ | ভারত |
রাজ্য | পশ্চিমবঙ্গ |
জেলা | পূর্ব মেদিনীপুর |
সরকার | |
• শাসক | দীঘা–শঙ্করপুর উন্নয়ন পর্ষদ |
উচ্চতা | ৬ মিটার (২০ ফুট) |
ভাষা | |
• সরকারি | বাংলা, ইংরেজি |
সময় অঞ্চল | ভারতীয় প্রমাণ সময় (ইউটিসি+৫:৩০) |
ইতিহাস
সম্পাদনাদীঘার প্রকৃত নাম বীরকুল যা অষ্টাদশ শতকের শেষভাগে আবিষ্কৃত হয়। ভাইসরয় ওয়ারেন হেস্টিংসের লেখা একটি চিঠিতে এটিকে 'প্রাচ্যের ব্রাইটন' বলে উল্লিখিত দেখা যায়। ১৯২৩ সালে জন ফ্র্যাঙ্ক স্নেইথ নামে এক ব্রিটিশ ভ্রমণকারী এখানকার সৌন্দর্যে মুগ্ধ হয়ে দীঘায় বসবাস শুরু করেন। তার লেখালেখির ফলে দীঘা সম্পর্কে মানুষের আগ্রহ বৃদ্ধি পায়। ভারতের স্বাধীনতার পর এখানে পর্যটন সুবিধা বৃদ্ধি করতে তিনি পশ্চিমবঙ্গের তৎকালীন মুখ্যমন্ত্রী বিধানচন্দ্র রায়কে উৎসাহ দেন।[২]
ভৌগোলিক পরিবেশ
সম্পাদনাদীঘার অক্ষাংশ ২১°৪১′উত্তর ও দ্রাঘিমা ৮৭°৩৩′পূর্ব। সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে এর উচ্চতা ৬ মি (২০ ফুট)।
কলকাতা থেকে মেচেদা হয়ে দীঘা যেতে দূরত্ব ১৮৩ কিমি খড়গপুর হয়ে যেতে দূরত্ব ২৩৪ কিমি। কলকাতার সঙ্গে দীঘা তমলুকের মাধ্যমে সড়কপথ ও রেলপথ দ্বারা যুক্ত আছে।
দর্শনীয় স্থান
সম্পাদনাদীঘার প্রধান আকর্ষণ এখানকার সমতল দৃঢ় বেলাভূমি যা পৃথিবীর অন্যতম প্রশস্ত বালুতট।
- নিউ দীঘা: এটি এই শহরের একটি নতুন মনোরম অংশ। এখানে জাতীয় বিজ্ঞান প্রত্নশালার উদ্যোগে একটি অভিনব বিজ্ঞানকেন্দ্র ও সামুদ্রিক সংগ্রহশালা প্রতিষ্ঠিত হয়েছে।
- অমরাবতী লেক: এখানে লেকের সাথে ছোট একটি পার্ক ও একটি সর্প-উদ্যান আছে। নৌকা ভ্রমণের সুবিধাও বিদ্যমান।
- জুনপুট: এখানে পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য সরকারের পরিচালিত মৎস্য দপ্তরের মৎস্যচাষ ও মৎস্য গবেষণাকেন্দ্র আছে।
- মন্দারমণি: কাঁথি থেকে ১২ কিমি দূরে অবস্থিত বালুকাভূমিটির নাম স্থানীয় মন্দার ফুলের নামানুসারে রাখা হয়েছে। লাল কাকড়া অধ্যুষিত জায়গাটি এখন অন্যতম জনপ্রিয় অবকাশ যাপন কেন্দ্র।
- তাজপুর: মন্দারমণি ও দীঘার নিকটে অপর একটি পর্যটন কেন্দ্র তৈরী হয়েছে। এখানে একটি সমুদ্রবন্দরের কাজ চলছে।
- উদয়পুর: নিউ দীঘার পাশে উড়িষ্যার বালেশ্বর জেলা ও বাংলার সীমানায় উদয়পুর সমুদ্রতট।
- শিবমন্দির, চন্দনেশ্বর: দীঘার ৬ কিমি পশ্চিমে এটি অবস্থিত।
- শঙ্করপুর: দীঘা থেকে ১৪ কিমি দূরে দীঘা-কাঁথি রোডের পাশে এটি একটি নব্য আবিষ্কৃত সমুদ্র সৈকত।
- জগন্নাথ মন্দির (নির্মাণাধীন)
পরিবহন ব্যবস্থা
সম্পাদনাদীঘা রেলওয়ে স্টেশন কলকাতা থেকে ১৮৭ কিমি দূরে অবস্থিত এই সমুদ্র সৈকতটি ট্রেন ও সড়কপথে সরাসরিভাবে যুক্ত। হাওড়া থেকে দীঘা প্রতিদিন ট্রেনে যাতায়াতের সুবিধা আছে। সড়কপথ: কলকাতা থেকে প্রতি আধঘণ্টা অন্তর দীঘাগামী বাস লভ্য।কলকাতা ময়দান ও হাওড়া বাস টার্মিনাস থেকে বাস ছাড়ে। বাসে কলকাতা-দীঘা পাঁচ ঘণ্টার পথ।[৩]
চিত্রশালা
সম্পাদনা-
দীঘা সমুদ্র সৈকতে সূর্যোদয়
-
দীঘা সমুদ্র সৈকতে সূর্যাস্ত
-
দীঘা সমুদ্র সৈকতে মাছ ধরা
-
উদয়পুর সমুদ্র সৈকত
-
চন্দনেশ্বর মন্দির
আরও দেখুন
সম্পাদনাতথ্যসূত্র
সম্পাদনা- ↑ ক খ "About the Place, Digha Sankarpur development Authority"। মার্চ ১৫, ২০১৩ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ডিসেম্বর ২০, ২০১২।
- ↑ "সমুদ্র সুন্দরী দীঘায় কয়েকদিন"। banglanews24.com। ২৪ মে ২০১৮ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৭ আগস্ট ২০১৭।
- ↑ পর্যটন দপ্তর, পশ্চিমবঙ্গ সরকার।