মুলাদী উপজেলা
মুলাদী বাংলাদেশের বরিশাল জেলার অন্তর্গত একটি উপজেলা।
মুলাদী | |
---|---|
উপজেলা | |
মানচিত্রে মুলাদী উপজেলা | |
স্থানাঙ্ক: ২২°৫৫′ উত্তর ৯০°২৫′ পূর্ব / ২২.৯১৭° উত্তর ৯০.৪১৭° পূর্ব | |
দেশ | বাংলাদেশ |
বিভাগ | বরিশাল বিভাগ |
জেলা | বরিশাল জেলা |
আয়তন | |
• মোট | ২৬০.৮৫ বর্গকিমি (১০০.৭১ বর্গমাইল) |
জনসংখ্যা (২০১১)[১] | |
• মোট | ১,৭৪,৭৭৫ |
• জনঘনত্ব | ৬৭০/বর্গকিমি (১,৭০০/বর্গমাইল) |
সাক্ষরতার হার | |
• মোট | ৫৬% |
সময় অঞ্চল | বিএসটি (ইউটিসি+৬) |
প্রশাসনিক বিভাগের কোড | ১০ ০৬ ৬৯ |
ওয়েবসাইট | দাপ্তরিক ওয়েবসাইট |
অবস্থান ও আয়তন
সম্পাদনামুলাদী ২২.৯১৫৩° উত্তর ৯০.৪১৫০° পূর্ব স্থানাঙ্কে অবস্থিত। উত্তরে শরীয়তপুর জেলার গোসাইরহাট উপজেলা, দক্ষিণে বরিশাল সদর উপজেলা, পূর্বে হিজলা উপজেলা ও মেহেন্দিগঞ্জ উপজেলা, পশ্চিমে মাদারীপুর জেলার কালকিনি উপজেলা, গৌরনদী উপজেলা ও বাবুগঞ্জ উপজেলা।
প্রশাসনিক এলাকা
সম্পাদনামুলাদী উপজেলায় বর্তমানে ১টি পৌরসভা ও ৭টি ইউনিয়ন রয়েছে। সম্পূর্ণ উপজেলার প্রশাসনিক কার্যক্রম মুলাদী থানার আওতাধীন।
ইতিহাস
সম্পাদনামুলাদী উপজেলার নামকরণের ক্ষেত্রে বলা হয়ে থাকে খ্রিস্টপূর্ব ১৫০০ অব্দে এখানে একটি চর জেগে উঠে এবং সেটাই মূলভূমি হিসেবে পরিচিত ছিল। এখানে মূল অর্থ প্রধান আর দ্বীপ মানে ভূমি। সেই থেকেই মুলাদীর নামকরণ হয়েছে বলে অনেকের ধারণা। এছাড়া ধর্ম প্রচার করতে মুলাই খান নামক এক দরবেশ এতদঞ্চলে এসেছিলেন। তিনি বিভিন্ন ধর্মীয় কাজের জন্য এই এলাকায় খুবই জনপ্রিয় ছিলেন, ধারণা করা হয় মুলাই খানের নামানুসারে এই জনপদের নাম হয়েছে মুলাদী।[তথ্যসূত্র প্রয়োজন] মুলাদীর ‘দী’ শব্দাংশটি এসেছে সম্ভবত দ্বীপ হতে। বর্তমান মুলাদী উপজেলা বিশাল বিশাল নদী বেষ্টিত দ্বীপসদৃশ একটি ভূখণ্ড। এই ভূখণ্ডে মুলাই খান ইসলাম প্রচারের জন্য এসে আস্তানা স্থাপন করলে তা ‘মুলাই দ্বীপ’ নামে পরিচিতি পায় এবং লোকমুখে বিবর্তিত ও সংক্ষিপ্ত হয়ে মুলাদ্বীপ এবং তা হতে বর্তমান মুলাদী রূপলাভ করেছে। এছাড়া ‘দী’ শব্দটি ডিহি শব্দের অপভ্রংশ হতে পারে। একসময় (১৯২২ সালের পূর্বে) কয়েকটি মৌজা নিয়ে একটি তৌজি এবং কয়েকটি তৌজি নিয়ে একটি ডিহি গড়ে উঠতো। আজকের মুলাদী একসময় একটি ডিহি ছিল এবং তা মুলাই খানের নামানুসারে মুলাই ডিহি নামে পরিচিত ছিল। পরে লোকমুখে পরিবর্তিত হয়ে মুলাদী নাম ধারণ করা অস্বাভাবিক নয়।[২].। ১৬১৫ সালে, বারো ভুইয়াদের পরাজয়ের পর, ভাওয়ালের জমিদার ফজলউদদ্বীন মুহাম্মাদ গাজী(ফজল গাজী)ও তার ছেলে সানওয়ারুদ্দিন মুহাম্মাদ গাজী(সোনা গাজী)কে নির্বাসিত করা হয় এই মুলাই দ্বীপ/মুলাদী র উত্তরে (যা এখন সফিপুর ইউনিয়ন)।সেখান থেকে গাজীরা এই অঞ্চলে আসে।১৭৮০ সালে মুলাদী থানায় বাঘা গোষ্ঠী জমিদার হিসেবে তাদের কর্তৃত্ব প্রতিষ্ঠা করে এবং কৃষকদের কাছ থেকে খাজনা আদায় করত। বাঘা পরিবারের,শ্রী মোহাম্মদ গোড়াই বাঘার বাবা ছিলেন একজন সদস্য, ব্রিটিশ শাসনামলের সময় জমিদারি প্রথার অধীনে একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।তিনি কৃষকদের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক বজায় রাখতেন এবং তাদের কাছ থেকে খাজনা আদায় করতেন। জমির উৎপাদন থেকে প্রাপ্ত আয় তার সম্পদ বৃদ্ধি করত।
জনসংখ্যার উপাত্ত
সম্পাদনা২০১১ সালের আদমশুমারি অনুযায়ী মুলাদী উপজেলার মোট জনসংখ্যা ১,৭৪,৭৭৫ জন। এর মধ্যে পুরুষ ৮২,৫৪৫ জন এবং মহিলা ৯২,২৩০ জন। মোট পরিবার ৩৮,৩৯৪টি।[৩]
শিক্ষা
সম্পাদনা২০১১ সালের আদমশুমারি অনুযায়ী মুলাদী উপজেলার সাক্ষরতার হার ৫৬%।[৩]
এ উপজেলায় রয়েছে: কল১৯৫২ সালের ভাষা আন্দোলনের সময় মুলাদী থানা, বিশেষ করে স্থানীয় যুবক ও ছাত্রদের মধ্যে বাংলা ভাষার গুরুত্ব ও মাতৃভাষার অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য আন্দোলনে সক্রিয় ছিল। ১৯৪৮ সালের মুলাদী উপজেলা প্রতিষ্ঠিত হয়। ২০০০ সালে মুলাদী পৌরসভা প্রতিষ্ঠিত হয়।মুক্তিযুদ্ধ চলাকালীন সময়ে মুলাদী থানার জনগণ বিভিন্ন বিপ্লবী কার্যক্রমে অংশগ্রহণ করেন, যা মুক্তিযোদ্ধাদের কার্যক্রমকে সহায়তা করে।
েজ ৭টি, উচ্চ বিদ্যালয় ৩০ টি, জুনিয়র বিদ্যালয় ৫, সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ৭৭ টি, বেসরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় ৫০ টি, মাদ্রাসা ১৭টি
প্রধান স্কুলঃ মূলাদী মাহমুদজান মাধ্যমিক বিদ্যালয়। প্রতিষ্ঠা করেন ১.জনাব নাজেম শিকদার ২.জনাব আহম্মদ আলী খান ৩.জনাব আরশেদ আলী হাওলাদার।
এছাড়াও রয়েছে কাজিরচর মাধ্যমিক বিদ্যালয় যা ১৯৩৯ সালে জনাব শফিউদ্দিন হাওলাদারের হাত ধরে স্থাপিত হয়।
ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান
সম্পাদনামসজিদ ৫৫০ টি, মন্দির ১৫ টি।
অর্থনীতি
সম্পাদনাপ্রধান পেশা
সম্পাদনাকৃষি ৫১.১৭%, কৃষি শ্রমিক ২০.৬৭%, মজুরী শ্রমিক ৩.১৮%, ব্যবসা ৭.৫২%, চাকরি ৭.১৩%, মাছ ধরা ২.৫% এবং অন্যান্য ৭.৮৩%। ২৬১৫৯,৪৫ হেক্টর জমি ব্যবহার আবাদি জমি, পতিত জমি ২৩৭,৫৬ হেক্টর, একক ফসল ৪২%, ডবল ফসল ৫০%, তিন ফসলি ৮%. সেচের আওতায় আবাদি জমি ৭৪%। কৃষকদের মধ্যে ভূমি নিয়ন্ত্রণ, ২৯%, ৩২,৮২%, ক্ষুদ্র ২৭% মাঝারি এবং ৪.০৯% সমৃদ্ধ, ৭.০৯% প্রান্তিক ভূমিহীন ; মাথা প্রতি ০.১৪ হেক্টর আবাদি জমি।
ফসল
সম্পাদনাপ্রধান ফসল ধান, গম, মিষ্টি আলু, ডাল, বেগুন, পান। বিলুপ্ত বা প্রায় বিলুপ্ত শস্য পাট, তামাক, সরিষা, চীনাবাদাম, রসুন, আখ, অড়হর, চীন, কাউন। প্রধান ফল আম, কাঁঠাল, কলা, জাম, নারিকেল, লিচু, খেজুর, সুপারি, আমড়া।
কলকারখানা
সম্পাদনাএখানে ময়দা কল ১ টি, রাইস মিল ২৫টি, বরফকল ৫টি, কল ৪০, নাড়ি কল ২টি এবং চিড়াকল ১টি রয়েছে।
হাট-বাজারঃ- মুলাদী বন্দর হাট, খাশেরহাট, নাজিরপুর বন্দর, নন্দীরবাজার, নাতিরহাট, বানিমর্দ্দন, সোনামদ্দিন, রামারপোল, কুতুবপুর, কাজিরহাট, প্যাদারহাট, বাহাদুরপুর নতুন বাজার, শের-ই-বাংলা বন্দর নোমরহাট, মাদ্রাসা বাজার, মোন্তাজপুর বাজার,চরকালেখান মাদ্রাসা বাজার,খেজুরতলা বাজার, গলইভাঙ্গা বাজার, মেয়ার হাট , মৃধার হাট, ইত্যাদি।
মেলাঃ- পাতারচর (পাইতিখলা) মীর কুতুব শাহ-র মেলা, কাজিরচর আদম আলী ফকির মেলা, মুন্সি বারী মেলা যার মধ্যে সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য মেলা।
যোগাযোগ ব্যবস্থা
সম্পাদনাযোগাযোগ বিশেষত্ব পাকা রাস্তা ২২ কিমি, আধাপাকা রাস্তা ১৫ কিমি, কাঁচা রাস্তা ২৫০ কিমি; ৬৫ নটিক্যাল মাইল।
দর্শনীয় স্থান
সম্পাদনা- মুলাদী বন্দর [৪]
- শহীদ আলতাফ মাহমুদের বাড়ি, পাতারচর
- চলচ্চিত্র প্রজোযক আরিফ মাহমুদের বাড়ি ও শ্যূটিং স্পট
- আলহাজ্ব হাতেম আলি খান বাড়ি,বালিয়াতলী সফিপুর।
- হিজল তলার বিল, সফিপুর ইউনিয়ন
- গাছুয়া জমিদার বাড়ী
- শিহিপাশা গ্রামের সতীদাহ মঠ
- মুলাদী বন্দর ব্রিজ
- মূলাদী মৃধা বাড়ি (আহম্মদ আলী খান মঞ্জিল)
- হাওলাদার প্যালেস (নমর হাটের পাশে)
উল্লেখযোগ্য ব্যক্তিত্ব
সম্পাদনা- আলতাফ মাহমুদ -সুরকার, সাংস্কৃতিক কর্মী ও স্বাধীনতা যুদ্ধের শহীদ মুক্তিযোদ্ধা।
- সিরাজুল হক মন্টু - প্রাক্তন বস্ত্র প্রতিমন্ত্রী
- মাহবুব হোসেন -সচিব, শিক্ষা মন্ত্রণালয় (মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগ)
- অধ্যাপক আক্তার হোসেন আকন - হৃদরোগ বিশেষজ্ঞ, আজগর আলী হাসপাতাল, ঢাকা।
তথ্যসূত্র
সম্পাদনা- ↑ বাংলাদেশ জাতীয় তথ্য বাতায়ন (জুন ২০১৪)। "এক নজরে মুলাদী"। গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার। ১৮ জানুয়ারি ২০১৪ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১২ মার্চ ২০১৫।
- ↑ মোহাম্মদ, নূরুজ্জামান (২০০৭)। বাংলাদেশের জেলা উপজেলার নামকরণ ও ঐতিহ্য। মাওলা ব্রাদার্স, ঢাকা।
- ↑ ক খ "ইউনিয়ন পরিসংখ্যান সংক্রান্ত জাতীয় তথ্য" (পিডিএফ)। web.archive.org। Wayback Machine। Archived from the original on ৮ ডিসেম্বর ২০১৫। সংগ্রহের তারিখ ৪ নভেম্বর ২০১৯।
- ↑ "মুলাদী হতে পারে বিখ্যাত পর্যটন কেন্দ্র"। ২১ জুলাই ২০২০ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা।
বহিঃসংযোগ
সম্পাদনা
বরিশাল বিভাগের স্থান বিষয়ক এই নিবন্ধটি অসম্পূর্ণ। আপনি চাইলে এটিকে সম্প্রসারিত করে উইকিপিডিয়াকে সাহায্য করতে পারেন। |