জ্যাক ইকিন

ইংরেজ ক্রিকেটার

জন টমাস ইকিন (ইংরেজি: Jack Ikin; জন্ম: ৭ মার্চ, ১৯১৮ - মৃত্যু: ১৫ সেপ্টেম্বর, ১৯৮৪) স্টাফোর্ডশায়ারের বিগনল এন্ড এলাকার নিউক্যাসল-আন্ডার-লাইমে জন্মগ্রহণকারী ইংরেজ আন্তর্জাতিক ক্রিকেটার ও কোচ ছিলেন। ইংল্যান্ড ক্রিকেট দলের অন্যতম সদস্য ছিলেন তিনি। ১৯৪৬ থেকে ১৯৫৫ সময়কালে ইংল্যান্ডের পক্ষে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অংশগ্রহণ করেছেন।[]

জ্যাক ইকিন
১৯৪৬ সালের সংগৃহীত স্থিরচিত্রে জ্যাক ইকিন
ব্যক্তিগত তথ্য
পূর্ণ নাম
জন টমাস ইকিন
জন্ম(১৯১৮-০৩-০৭)৭ মার্চ ১৯১৮
বিগনল এন্ড, নিউক্যাসল-আন্ডার-লাইম, স্টাফোর্ডশায়ার, ইংল্যান্ড
মৃত্যু১৫ সেপ্টেম্বর ১৯৮৪(1984-09-15) (বয়স ৬৬)
বিগনল এন্ড, নিউক্যাসল-আন্ডার-লাইম, স্টাফোর্ডশায়ার, ইংল্যান্ড
ব্যাটিংয়ের ধরনবামহাতি
বোলিংয়ের ধরনডানহাতি লেগ ব্রেক ও গুগলি
ভূমিকাঅল-রাউন্ডার, কোচ
সম্পর্কমাইকেল ইকিন (পুত্র)
আন্তর্জাতিক তথ্য
জাতীয় দল
টেস্ট অভিষেক
(ক্যাপ ৩১২)
২২ জুন ১৯৪৬ বনাম ভারত
শেষ টেস্ট১৭ আগস্ট ১৯৫৫ বনাম দক্ষিণ আফ্রিকা
ঘরোয়া দলের তথ্য
বছরদল
১৯৩৪ - ১৯৬৮স্টাফোর্ডশায়ার
১৯৩৯ - ১৯৫৭ল্যাঙ্কাশায়ার
খেলোয়াড়ী জীবনের পরিসংখ্যান
প্রতিযোগিতা টেস্ট এফসি
ম্যাচ সংখ্যা ১৮ ৩৬৫
রানের সংখ্যা ৬০৬ ১৭,৯৬৮
ব্যাটিং গড় ২০.৮৯ ৩৬.৮১
১০০/৫০ ০/৩ ২৭/১০৮
সর্বোচ্চ রান ৬০ ১৯২
বল করেছে ৫৭২ ২২,৬১৮
উইকেট ৩৩৯
বোলিং গড় ১১৮.০০ ৩০.২৭
ইনিংসে ৫ উইকেট ১১
ম্যাচে ১০ উইকেট
সেরা বোলিং ১/৩৮ ৬/২১
ক্যাচ/স্ট্যাম্পিং ৩১/– ৪১৯/–
উৎস: ইএসপিএনক্রিকইনফো.কম, ৩ আগস্ট ২০১৯

ঘরোয়া প্রথম-শ্রেণীর ইংরেজ কাউন্টি ক্রিকেটে ল্যাঙ্কাশায়ার দলের প্রতিনিধিত্ব করেন। দলে তিনি মূলতঃ অল-রাউন্ডার হিসেবে খেলতেন। বামহাতে ব্যাটিংয়ের পাশাপাশি ডানহাতি লেগ ব্রেক ও গুগলি বোলিংয়ে পারদর্শী ছিলেন জ্যাক ইকিন

প্রথম-শ্রেণীর ক্রিকেট

সম্পাদনা

১৯৩৮ সাল থেকে ১৯৬৪ সাল পর্যন্ত জ্যাক ইকিনের প্রথম-শ্রেণীর খেলোয়াড়ী জীবন চলমান ছিল। শান্ত-শিষ্ট, জনপ্রিয় বামহাতি খেলোয়াড় ছিলেন তিনি। লেগ স্পিন বোলিংয়ে দক্ষ ছিলেন। জীবনের অধিকাংশ সময়ই ল্যাঙ্কাশায়ারের পক্ষে প্রথম-শ্রেণীর ক্রিকেট খেলেছেন।[] খাঁটিমানের বামহাতি ব্যাটসম্যান ছিলেন তিনি। দলে অংশগ্রহণকারী বিল এডরিচ, লেন হাটনডেনিস কম্পটনের ন্যায় খেলোয়াড়ের তুলনায় তার টেস্ট রেকর্ড মাঝারিমানের ছিল।[]

ষোলো বছর বয়সে মাইনর কাউন্টি ক্রিকেটে স্টাফোর্ডশায়ারের পক্ষে খেলতে শুরু করেন। ১৯৩৯ সালে ল্যাঙ্কাশায়ারের পক্ষে চারটি খেলায় অংশ নেন। সমগ্র খেলোয়াড়ী জীবনে সংগৃহীত ৩৩৯টি প্রথম-শ্রেণীর উইকেটের প্রথমটি পান বিখ্যাত ওয়েস্ট ইন্ডিয়ান ক্রিকেট তারকা জর্জ হ্যাডলির উইকেট লাভের মধ্য দিয়ে।[] দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময়কালে নিজের স্বর্ণালী সময় নষ্ট হয়ে যায়। এ সময়ে তিনি তব্রুকে অবস্থান করেছিলেন।

১৯৪৬ সালে ল্যাঙ্কাশায়ারের পক্ষে পুনরায় খেলতে শুরু করেন। এ পর্যায়ে দলের প্রধান চালিকাশক্তিতে পরিণত হন। এগারোবার মৌসুমে সহস্রাধিক রান সংগ্রহের ন্যায় রেকর্ড গড়েন।

আন্তর্জাতিক ক্রিকেট

সম্পাদনা

সমগ্র খেলোয়াড়ী জীবনে আঠারোটি টেস্টে অংশগ্রহণ করেছেন জ্যাক ইকিন। ২২ জুন, ১৯৪৬ তারিখে লর্ডসে সফরকারী ভারতের বিপক্ষে টেস্ট ক্রিকেটে অভিষেক ঘটে তার। ১৩ আগস্ট, ১৯৫৫ তারিখে ওভালে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে সর্বশেষ টেস্টে অংশ নেন তিনি।

১৯৪৬-৪৭ মৌসুমে অ্যাশেজ সিরিজ খেলার উদ্দেশ্যে ইংরেজ দলের সাথে অস্ট্রেলিয়া গমন করেন। সিডনিতে ৬০ রান করেন তিনি। মেলবোর্নে নরম্যান ইয়ার্ডলি’র সাথে ১১৮ রানের জুটি গড়েন। ব্রিসবেনে অনুষ্ঠিত সিরিজের প্রথম টেস্টে বিল ভোসের বলে ডন ব্র্যাডম্যানের ক্যাচ নেয়ার পর সংগঠিত অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনার প্রধান কেন্দ্রবিন্দুতে অবস্থান করেন। কেবলমাত্র আম্পায়ারই তার সিদ্ধান্তে অনড় ছিলেন। এরপর ডন ব্র্যাডম্যান ১৮৭ রান তুলে আউট হন। ১৯৪৭-৪৮ মৌসুমে গাবি অ্যালেনের নেতৃত্বে ওয়েস্ট ইন্ডিজে বিপর্যস্ত সফরে এমসিসি দলের সদস্যরূপে অংশ নেন। তুলনামূলকভাবে কম সফল ছিলেন। তবে, ১৯৫০-৫১ মৌসুমে কমনওয়েলথ একাদশের সদস্যরূপে ভারত ও সিলনে বেশ সফলতা পান। ৮৯.২৮ গড়ে ৬২৫ রান তুলেন তিনি।

১৯৪৮ সালে সফররত অস্ট্রেলিয়া একাদশের বিপক্ষে আর্থিক সুবিধা গ্রহণের খেলার জন্য তাকে মনোনীত করা হয়। ৯০ রানে থাকা অবস্থায় ডোনাল্ড ব্র্যাডম্যান কিথ মিলারকে বোলিংয়ে আমন্ত্রণ জানালেও প্রত্যাখ্যান করেন।

১৯৪৯ সালে সমারসেটের বিপক্ষে জ্যাক ইকিন হ্যাট্রিক করেছিলেন। ১৯৫১ সালে অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের বিপক্ষে ব্যক্তিগত সর্বোচ্চ ১৯২ রানের ইনিংস খেলেছিলেন। আঘাতপ্রাপ্তি ও দূর্বল স্বাস্থ্যের কারণে ১৯৫৭ সাল শেষে ক্রিকেট খেলা থেকে বিদায় নেন। তখন তিনি ১৭,৯৬৮টি প্রথম-শ্রেণীর রান তুলেছিলেন। তবে, মাইনর কাউন্টিতে খেলোয়াড়ী জীবন চালিয়ে যেতে থাকেন। স্টাফোর্ডশায়ারের পক্ষে ১৯৬৮ সাল পর্যন্ত খেলেন ও ১৯৬৫-৬৬ মৌসুমে এমসিসি দলের সহকারী ব্যবস্থাপক হিসেবে অস্ট্রেলিয়া গমন করেন।

ব্যক্তিগত জীবন

সম্পাদনা

১৫ সেপ্টেম্বর, ১৯৮৪ তারিখে ৬৬ বছর বয়সে স্টাফোর্ডশায়ারের বিগনল এন্ড এলাকার নিউক্যাসল-আন্ডার-লাইম এলাকায় জ্যাক ইকিনের দেহাবসান ঘটে। তার সন্তান মাইকেল ইকিন ১৯৭২ থেকে ১৯৭৯ সময়কালে স্টাফোর্ডশায়ারের পক্ষে খেলেছেন।

তথ্যসূত্র

সম্পাদনা
  1. Bateman, Colin (১৯৯৩)। If The Cap Fits। Tony Williams Publications। পৃষ্ঠা 98আইএসবিএন 1-869833-21-X 
  2. Dave Liverman (২০০৩)। "A profile of Jack Ikin"CricketArchive। সংগ্রহের তারিখ ২৭ নভেম্বর ২০১০ 

আরও দেখুন

সম্পাদনা

বহিঃসংযোগ

সম্পাদনা