গাদ্দাফি স্টেডিয়াম

পাকিস্তানের ক্রিকেট স্টেডিয়াম

গাদ্দাফি স্টেডিয়াম (উর্দু: قذافی اسٹیڈیم‎‎, পাঞ্জাবি: قذافی سٹیڈیم) পাকিস্তানের লাহোরে অবস্থিত আন্তর্জাতিকমানের ক্রিকেট স্টেডিয়াম। বিশিষ্ট স্থপতি ও প্রকৌশলী নাসরেদিন মুরাত-খান এর নকশা প্রণয়ন করেন। ১৯৫৯ সালে মিয়া আব্দুল খালিক এন্ড কোম্পানি এর অবকাঠামো নির্মাণ কার্য পরিচালনা করে। ১৯৯৬ সালের ক্রিকেট বিশ্বকাপের চূড়ান্ত খেলা এখানেই অনুষ্ঠিত হয়। ৬০,৪০০ দর্শক ধারণ ক্ষমতাবিশিষ্ট এ স্টেডিয়ামটি পাকিস্তানের সর্ববৃহৎ স্টেডিয়াম।[১] এছাড়াও, বৈশ্বিক পর্যায়ে ক্রিকেট স্টেডিয়াম হিসেবে এর অবস্থান পঞ্চম। ১৯৯০ সালের হকি বিশ্বকাপ ফাইনাল খেলাও এখানেই অনুষ্ঠিত হয়েছিল।

গাদ্দাফি স্টেডিয়াম
স্টেডিয়ামের তথ্যাবলি
অবস্থানলাহোর, পাঞ্জাব, পাকিস্তান
দেশপাকিস্তান
স্থানাঙ্ক৩১°৩০′৪৮″ উত্তর ৭৪°২০′০″ পূর্ব / ৩১.৫১৩৩৩° উত্তর ৭৪.৩৩৩৩৩° পূর্ব / 31.51333; 74.33333
প্রতিষ্ঠা১৯৫৯
ধারণক্ষমতা৬০,৪০০
স্বত্ত্বাধিকারীপাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ড
পরিচালকলাহোর রিজিওন্যাল ক্রিকেট অ্যাসোসিয়েশন
ভাড়াটেলাহোর ক্রিকেট দল, লাহোর লায়ন্স, লাহোর ঈগলস পাকিস্তান ইন্টারন্যাশনাল এয়ারলাইন্স, পাকিস্তান
প্রান্তসমূহ
প্যাভিলিয়ন এন্ড
কলেজ এন্ড
আন্তর্জাতিক খেলার তথ্য
প্রথম পুরুষ টেস্ট২১-২৬ নভেম্বর ১৯৫৯:
পাকিস্তান  বনাম  অস্ট্রেলিয়া
সর্বশেষ পুরুষ টেস্ট২১-২৫ মার্চ ২০২২:
পাকিস্তান  বনাম  অস্ট্রেলিয়া
প্রথম পুরুষ ওডিআই১৩ জানুয়ারি ১৯৭৮:
পাকিস্তান  বনাম  ইংল্যান্ড
সর্বশেষ পুরুষ ওডিআই৩ সেপ্টেম্বর ২০২৩:
বাংলাদেশ  বনাম  আফগানিস্তান
৪ মার্চ ২০০৯ অনুযায়ী
উৎস: ক্রিনইনফো

আসন্ন খেলা সম্পাদনা

জিম্বাবুয়ে ক্রিকেট দল ১৯ ফেব্রুয়ারি, ২০১৫ থেকে পাকিস্তান সফর করে।[২] দলটি পাকিস্তানের বিপক্ষে দুইটি টুয়েন্টি২০ আন্তর্জাতিক, তিনটি একদিনের আন্তর্জাতিকে অংশ নেয়। সবগুলো খেলাই এখানে অনুষ্ঠিত হয়। টিকেটের সর্বনিম্ন দাম রাখা হয়েছে টি২০আইয়ের জন্য ১৫০০ রুপি থেকে ৫০০ রুপির মধ্যে। এছাড়াও একদিনের আন্তর্জাতিকের জন্য ১৫০ রুপি।

ইতিহাস সম্পাদনা

মূলতঃ লাহোর স্টেডিয়াম নামে এ স্টেডিয়ামের নামকরণ করা হয়। ১৯৭৪ সালে দ্বিতীয় ইসলামী সম্মেলনে প্রাক্তন লিবীয় নেতা মুয়াম্মর গাদ্দাফির পাকিস্তানের পারমাণবিক অস্ত্র উদ্ভাবনের অধিকার থাকার মন্তব্যের পর তাঁর সম্মানার্থে নাম পরিবর্তিত হয়ে বর্তমান নামে পরিচিতি পাচ্ছে।[৩] স্টেডিয়ামের এক প্রান্তে পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ডের সদর দফতর অবস্থিত।

১৯৯৫-৯৬ মৌসুমে ক্রিকেট বিশ্বকাপ উপলক্ষে নায়ার আলী দাদা স্টেডিয়াম সংস্কারের দায়িত্ব পায়। মুঘল ঘরনায় এর পুণঃনকশার প্রতিফলন ঘটানো হয়। সংরক্ষিত নিজস্ব বৈদ্যুতিক জেনারেটর ব্যবস্থা ও আধুনিক ফ্লাডলাইট ব্যবস্থা নিয়ে পাকিস্তানে প্রথম স্টেডিয়ামের মর্যাদা পেয়েছে এটি।[৪]

২৩ অক্টোবর, ২০১১ তারিখে পিসিবি লিবিয়ায় নতুন সরকারের সমর্থনে স্টেডিয়ামের পুণঃনামকরণের বিষয়ে আলোচনা করে। অক্টোবর, ২০১১-এর শেষার্ধ্বে পাঞ্জাব অলিম্পিক অ্যাসোসিয়েশনের পক্ষ থেকেও একই ধরনের অনুরোধ উপস্থাপন করা হয়। এ প্রসঙ্গে প্রাদেশিক মূখ্যমন্ত্রী বলেন যে, আমি মনে করি না যে, তাঁর ব্যক্তিগত জীবন আমাদের ক্রিকেট স্টেডিয়ামকে পরিচিতির জন্য উদ্দীপনা যোগাবে। এপ্রিল, ২০১২ সাল পর্যন্ত স্টেডিয়ামের নাম পরিবর্তন হয়নি।[৫]

রাতে তোলা গাদ্দাফি স্টেডিয়ামের একটি বিস্তৃত দৃশ্য

উল্লেখযোগ্য ঘটনা সম্পাদনা

স্টেডিয়ামে এ পর্যন্ত তিনটি হ্যাট্রিক হয়েছে। তন্মধ্যে, ৯ অক্টোবর, ১৯৭৬ তারিখে নিউজিল্যান্ডের পিটার পেথেরিক তাঁর অভিষেক টেস্টে পাকিস্তানের বিপক্ষে,[৬] ৬ মার্চ, ১৯৯৯ তারিখে ওয়াসিম আকরাম শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে এবং মোহাম্মদ সামি শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে এ কীর্তিগাথা রচনা করেন।

১৯৭৬ সালে জাভেদ মিয়াঁদাদ-আসিফ ইকবাল পঞ্চম উইকেট জুটিতে ২৮১ রান তুলেছিলেন।[৬] খেলায় পাকিস্তান নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে ইনিংস ও ৩২৪ রানের বিশাল জয় পায়।

১৯৯৬ সালের ক্রিকেট বিশ্বকাপের চূড়ান্ত খেলায় ষাট সহস্রাধিক দর্শক খেলা উপভোগ করেন।

৩ মার্চ, ২০০৯ তারিখে অনুষ্ঠিত দ্বিতীয় টেস্টের তৃতীয় দিনে সফরকারী শ্রীলঙ্কার খেলোয়াড়দের বহনকারী বাসে স্টেডিয়ামের কাছে সশস্ত্র বন্দুকধারীরা আক্রমণ করে। অধিনায়ক মাহেলা জয়াবর্ধনেসহ আটজন খেলোয়াড় আহত হন। পরবর্তীতে কাছাকাছি থাকা বিমানঘাঁটি থেকে বিমানে চড়ে শ্রীলঙ্কায় ফিরে যায় শ্রীলঙ্কা দল। এরফলে পাকিস্তানে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট খেলা বন্ধ হয়ে যায়। অনানুষ্ঠানিকভাবে কেবলমাত্র প্রতিবেশী আফগানিস্তান থেকে ২০১১ সালে একদিনের সিরিজ খেলতে আসে। এছাড়াও ১৫ নভেম্বর, ২০১৪ তারিখে টুয়েন্টি২০ খেলায় অংশগ্রহণের জন্য দ্বিতীয় সারির পাকিস্তান এ দলের বিরুদ্ধে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে।

১০ ডিসেম্বর, ২০১৪ তারিখে কঠোর নিরাপত্তায় কেনিয়া ক্রিকেট দল লাহোরে আসে ও অনানুষ্ঠানিকভাবে পাঁচটি একদিনের খেলায় অংশগ্রহণ করে। এরফলে, এশিয়ার বাইরে থেকে প্রথম দল হিসেবে গত পাঁচ বছরের মধ্যে সামরিক বাহিনীর পরিচালনায় পাকিস্তানে আসে।

২০০৮ এশিয়া কাপ সম্পাদনা

২০০৮ এশিয়া কাপের গ্রুপ এ অন্তর্গত সবকটি ম্যাচ এখানে অনুষ্ঠিত হয়। ২০২৩ সালের এশিয়া কাপের ম্যাচও এখানে অনুষ্ঠিত হচ্ছে অন্যান্য স্টেডিয়ামের পাশাপাশি ।

তথ্যসূত্র সম্পাদনা

  1. "Stadiums in Pakistan"World Stadiums। ২০১১-০৯-২৫ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০১১-০৯-০৫ 
  2. "Zimbabwe Cricket confirms Pakistan tour"ESPNCricinfo। সংগ্রহের তারিখ ৩০ এপ্রিল ২০১৫ 
  3. Murtaza Razvi (২৫ ফেব্রুয়ারি ২০১১)। "A stadium called Gaddafi"Indian Express। সংগ্রহের তারিখ ২০১১-০৩-২৪ 
  4. McGlashan, Andrew। "Gaddafi Stadium"ESPNCricinfo। সংগ্রহের তারিখ ২০১১-০৯-০৫ 
  5. "Gaddafi prepares to end long hiatus"Dawn.com। ১৭ এপ্রিল ২০১২। সংগ্রহের তারিখ ২০ এপ্রিল ২০১২ 
  6. "Former New Zealand spinner Peter Petherick dies at 72"। yahoo। ৮ জুন ২০১৫। ২০১৫-০৭-০৮ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১২ জুলাই ২০১৫ 

বহিঃসংযোগ সম্পাদনা

পূর্বসূরী:
মেলবোর্ন ক্রিকেট গ্রাউন্ড
ক্রিকেট বিশ্বকাপ
চূড়ান্ত মাঠ

১৯৯৬
উত্তরসূরী:
লর্ড’স ক্রিকেট গ্রাউন্ড