১৯৯৬ ক্রিকেট বিশ্বকাপ ফাইনাল

উইলস বিশ্বকাপ ফাইনাল বা ১৯৯৬ ক্রিকেট বিশ্বকাপ ফাইনাল (ইংরেজি: 1996 Cricket World Cup Final) খেলাটি আইসিসি’র পরিচালনায় লাহোরের গাদ্দাফি স্টেডিয়ামে ১৭ মার্চ, ১৯৯৬ তারিখে অনুষ্ঠিত হয়। ব্যবসায়িক অংশীদারীত্বের কারণে এ প্রতিযোগিতাটি উইলস বিশ্বকাপ নামে পরিচিতি পায়। অর্জুনা রানাতুঙ্গা’র অধিনায়কত্বে সহ-স্বাগতিক শ্রীলঙ্কা দলউইকেটের বিশাল ব্যবধানে শীর্ষসারির দল অস্ট্রেলিয়াকে পরাভূত করে প্রথমবারের মতো বিশ্বকাপ ক্রিকেট প্রতিযোগিতায় শিরোপা লাভ করে। অরবিন্দ ডি সিলভা বোলিং ও ব্যাটিং - উভয় বিভাগেই অনন্য সাধারণ ক্রীড়াশৈলী প্রদর্শনের মাধ্যমে ম্যান অব দ্য ম্যাচের পুরস্কার লাভ করেন। ম্যান অব দ্য সিরিজ নির্বাচিত হন সনাথ জয়াসুরিয়া

১৯৯৬ আইসিসি ক্রিকেট বিশ্বকাপ ফাইনাল
প্রতিযোগিতা১৯৯৬ আইসিসি ক্রিকেট বিশ্বকাপ
অস্ট্রেলিয়া শ্রীলঙ্কা
অস্ট্রেলিয়া শ্রীলঙ্কা
২৪১/৭ ২৪৫/৩
৫০ ওভার ৪৬.২ ওভার
তারিখ১৭ মার্চ, ১৯৯৬
মাঠগাদ্দাফি স্টেডিয়াম, লাহোর, পাকিস্তান
আম্পায়ারস্টিভ বাকনরডেভিড শেফার্ড

প্রেক্ষাপট

সম্পাদনা

প্রথম সেমি-ফাইনাল খেলাটি ১,১০,০০০ দর্শকের উপস্থিতিতে কলকাতার ইডেন গার্ডেনসে অনুষ্ঠিত হয়। টসে জয়ী হয়ে অধিনায়ক মোহাম্মদ আজহারউদ্দীন শ্রীলঙ্কাকে ব্যাটিংয়ের জন্য আমন্ত্রণ জানান। শ্রীলঙ্কার ৮ উইকেটে ২৫১ রানের বিপরীতে প্রথম ২০ ওভারে শচীন তেন্ডুলকরের ৬৫ রানের ওপর ভর করে ৯৮ রানে ১ উইকেট হারায়।[] ভারতের পরবর্তী ব্যাটসম্যানরা ব্যর্থ হওয়ায় চলমান ৩৫ ওভারে ৮ উইকেটে মাত্র ১২০ রান সংগ্রহ করা অবস্থায় উত্তেজিত দর্শকেরা মাঠে ফল ও প্লাস্টিকের বোতল নিক্ষেপ করতে থাকে। দর্শকদের শান্ত রাখার চেষ্টা করা হয়। খেলোয়াড়েরা পুনরায় মাঠে নামলে আরও বোতল নিক্ষিপ্ত হতে থাকে এবং স্ট্যান্ডে আগুন জ্বালিয়ে দেয়। অবশেষে বাধ্য হয়ে ম্যাচ রেফারি ক্লাইভ লয়েড শ্রীলঙ্কাকে বিজয়ী ঘোষণা করতে বাধ্য হন।[] এ ঘটনাটি টেস্ট কিংবা একদিনের আন্তর্জাতিকে প্রথম অনাকাক্ষিত ঘটনা হিসেবে বিবেচিত হয় যা ২০১২ সাল পর্যন্ত মাত্র দু’টি ঘটনা ঘটে।

মোহালিতে অনুষ্ঠিত দ্বিতীয় সেমি-ফাইনালে অস্ট্রেলিয়া বিজয়ী হয়। একপর্যায়ে মাত্র ১৫ রানে ৪ উইকেটের পতন ঘটলেও তারা নির্ধারিত ৫০ ওভারে ৮ উইকেটে ২০৭ রান করে। ৪২ ওভারে ২ উইকেটে ১৬৫ রান সংগ্রহ করেও শেষ ৫০ বলে ওয়েস্ট ইন্ডিজ ৩৭ রানের ব্যবধানে শেষ ৮ উইকেট হারায়।

চূড়ান্ত খেলায় শ্রীলঙ্কার অধিনায়ক অর্জুনা রানাতুঙ্গা টসে জয়ী হয়ে ফিল্ডিং নেন ও ১৯৮৭ সালের বিশ্বকাপ বিজয়ী ও তৃতীয়বারের মতো ফাইনালে অংশগ্রহণকারী অস্ট্রেলিয়াকে ব্যাটিংয়ের আমন্ত্রণ জানান। উল্লেখ্য যে, পূর্ববর্তী পাঁচটি বিশ্বকাপে প্রথমে ব্যাটিংকারী দল বিজয়ী হয়েছিল। ২য় উইকেট জুটিতে মার্ক টেলর-রিকি পন্টিং ১০১ রান তোলেন। পন্টিং ও টেলর আউট হলে দলের রান ৫ উইকেটে ১৭০ হয়। অধিনায়ক মার্ক টেলর দলের পক্ষে সর্বোচ্চ ৭৪ রান করেন ৮৩ বলে, ৮টি চার ও ১টি ছক্কার মার মেরে। অস্ট্রেলিয়া নির্ধারিত ৫০ ওভারে ৭ উইকেটে ২৪১ রান করে।

জবাবে ৪৭তম ওভারেই শ্রীলঙ্কা জয়ের বন্দরে পৌঁছে যায়। শুরুতেই উদ্বোধনী ব্যাটসম্যানদ্বয়কে ৩০ রানের মধ্যে হারায়। অরবিন্দ ডি সিলভা ৪২ রানে ৩ উইকেট সংগ্রহের পাশাপাশি অপরাজিত ১০৭* রান করেন ও ম্যান অব দ্য ম্যাচের পুরস্কার লাভ করেন।[] তাকে যোগ্য সঙ্গ দেন অশঙ্কা গুরুসিনহা (৬৫) ও অধিনায়ক রানাতুঙ্গা (৪৭*)। ক্রিকেট বিশ্বকাপের ইতিহাসে স্বাগতিক কিংবা সহ-স্বাগতিক দেশের বিশ্বকাপ জয়ের প্রথম ঘটনার সূচনা করে শ্রীলঙ্কা।

১৭ মার্চ
স্কোরকার্ড
অস্ট্রেলিয়া  
২৪১/৭ (৫০ ওভার)
  শ্রীলঙ্কা
২৪৫/৩ (৪৬.২ ওভার)

তথ্যসূত্র

সম্পাদনা
  1. "Wills World Cup - 1st Semi Final. India v Sri Lanka"Cricinfo। সংগ্রহের তারিখ ২০০৭-১০-২৭ 
  2. Siddhartha Vaidyanathan। "Tears in vain as India crash out"Cricinfo। সংগ্রহের তারিখ ২০০৭-১০-২৭ 
  3. "FINAL: Australia v Sri Lanka at Lahore, 17 Mar 1996"Cricinfo। ২০০৭-০৮-১৬ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০০৭-০৮-০৫ 

আরও দেখুন

সম্পাদনা

বহিঃসংযোগ

সম্পাদনা