গভর্নমেন্ট কলেজ অব আর্ট অ্যান্ড ক্র্যাফট, কলকাতা
গভর্নমেন্ট কলেজ অফ আর্ট অ্যান্ড ক্রাফট, কলকাতা কলকাতায় অবস্থিত এবং ভারতের আর্ট কলেজগুলোর মধ্যে প্রাচীনতম। ১৮৫৪ খ্রিস্টাব্দের ১৬ অগস্ট চিতপুরের (বর্তমান রবীন্দ্র সরণি) গরানহাটায় এই কলেজ প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল; 'উদ্দেশ্য ছিল সকল বর্গের নবীনকে বৈজ্ঞানিক পদ্ধতির ভিত্তিতে ঔদ্যোগিক শিল্পকলা শেখানোর জন্যে একটা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের প্রতিষ্ঠা'। পরবর্তীকালে পুনর্নামকরণ করা হয় গভর্নমেন্ট স্কুল অফ আর্ট এবং ১৯৫১ খ্রিস্টাব্দে গভর্নমেন্ট কলেজ অব আর্ট অ্যান্ড ক্রাফট, কলকাতা এই নামে পরিচিত হয়।[১]
Government College of Art and craft, Calcutta সরকারি চারু ও কারুকলা মহাবিদ্যালয়, কলকাতা | |
অন্যান্য নাম | GCAC |
---|---|
প্রাক্তন নামসমূহ | ১৮৫৪ (স্কুল অব ইন্ডাস্ট্রিয়াল আর্ট) |
বাংলায় নীতিবাক্য | অনুশীলন সাফল্যর চাবিকাটি, কাজের শ্রেষ্ঠত্ব হল শিল্পকলা |
ধরন | পাবলিক, কলকাতা আর্ট কলেজ |
স্থাপিত | ১৮৫৪: স্কুল অব ইন্ডাস্ট্রিয়াল আর্ট ১৮৬৪: গভর্নমেন্ট স্কুল অব আর্ট ১৯৫১: গভর্নমেন্ট কলেজ অব আর্ট অ্যান্ড ক্র্যাফট |
অধিভুক্তি | কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় |
অধ্যক্ষ | ছত্রপতি দত্ত |
শিক্ষার্থী | ৩,৭৮০ |
অবস্থান | ২৮, জওহরলাল নেহরু রোড, কলকাতা , ২২°৩৩′২৬″ উত্তর ৮৮°২১′০০″ পূর্ব / ২২.৫৫৭১৯১৩° উত্তর ৮৮.৩৫০০৫৪২° পূর্ব |
শিক্ষাঙ্গন | শহুবে |
সংক্ষিপ্ত নাম | GCAC |
ওয়েবসাইট | gcac |
ইতিহাস
সম্পাদনা১৮৫৪ খ্রিস্টাব্দের ১ অগস্ট গরানহাটায় এক বেসরকারি আর্ট স্কুল হিসেবে এটা চালু হয়েছিল। ১৮৫৪ খ্রিস্টাব্দের নভেম্বরে মতিলাল শীলের কলুটোলার বাড়িতে এই স্কুল স্থানান্তরিত হয়। ১৮৫৯ খ্রিস্টাব্দে গ্যারিক প্রধান শিক্ষক হিসেবে যোগ দিয়েছিলেন। ১৮৬৪ খ্রিস্টাব্দে সরকার এটা গ্রহণ করে এবং ওই বছরেরই ২৯ জুন হেনরি হোভার লক এর অধ্যক্ষ হিসেবে কার্যভার গ্রহণ করেছিলেন। সত্বর এটার পুনর্নামকরণ করা হয়েছিল গভর্নমেন্ট স্কুল অব আর্ট। লক এই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের অধ্যয়নের পাঠক্রম তৈরির জন্যে এক ব্যাপক পরিকল্পনা করেছিলেন। ১৮৮০ খ্রিস্টাব্দের দশকে ১৬৬, বোবাজার স্ট্রিটে এই স্কুলের স্থান বদল করা হয়েছিল। লকের মৃত্যুর পর ১৮৮৫ খ্রিস্টাব্দের ২৫ ডিসেম্বর এম স্কামবার্গ নতুন অধ্যক্ষ হন। সহকারী অধ্যক্ষের এক নতুন পদ সৃষ্টি করা হয়েছিল এবং ১৮৮৬ খ্রিস্টাব্দের ২৯ জানুয়ারি ওই পদে ইতালীয় শিল্পী ও. গিলার্ডি যোগদান করেছিলেন। ১৮৯২ খ্রিস্টাব্দের ফেব্রুয়ারিতে এই প্রতিষ্ঠানকে স্থানান্তরিত করা হয়েছিল ভারতীয় জাদুঘর লাগোয়া এখনকার চত্বরে। অধ্যক্ষের মৃত্যুর পর ১৮৯৬ খ্রিস্টাব্দের ৬ জুলাই জোবিন্স আর্নেস্ট বিনফিল্ড হ্যাভেল এই স্কুলের অধ্যক্ষরূপে যোগদান করেছিলেন।[১]
হ্যাভেল, ব্রাউন ও অবনীন্দ্রনাথ
সম্পাদনা১৮৯৬ থেকে ১৯০৫ খ্রিস্টাব্দ পর্যন্ত এই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের অধ্যক্ষ ছিলেন আর্নেস্ট বিনফিল্ড হ্যাভেল। তার চেষ্টা ছিল ভারতীয় ঐতিহ্যের ওপর গুরুত্ব আরোপ করে শিক্ষাদানে সংস্কার আনা যাতে এটা নতুন ধারায় পরিচালিত হয়ে বঙ্গীয় শিল্প বিদ্যালয় হিসেবে পরিচিতি লাভ করে। কার্যনির্বাহী অধ্যক্ষ অবনীন্দ্রনাথ ঠাকুরের কাছ থেকে দায়িত্ব গ্রহণ করে পার্সি ব্রাউন পরবর্তী অধ্যক্ষ হয়েছিলেন। ১৯২৭ খ্রিস্টাব্দ পর্যন্ত ব্রাউন অধ্যক্ষের দায়িত্ব পালন করেছিলেন।[১] অবনীন্দ্রনাথ ঠাকুর ১৯০৫ খ্রিস্টাব্দের ১৫ অগস্ট থেকে ১৯১৫ খ্রিস্টাব্দ পর্যন্ত কলেজের উপাধ্যক্ষ ছিলেন এবং তিনি একভারতীয় শিল্প ধারার উন্নয়নের লক্ষ্যে কাজ করেছিলেন, যে ধারা বঙ্গীয় শিল্প বিদ্যালয়ের জন্ম দিয়েছিল,[২] এটা এমন বিষয় যেটা শান্তিনিকেতনের কলা ভবনে অনুসরণ করার ছিল।
অধ্যক্ষরূপে মুকুল দে
সম্পাদনা১৯২৮ খ্রিস্টাব্দের ১১ জুলাই মুকুল চন্দ্র দে কলেজের অধ্যক্ষ হয়েছিলেন। ১৯৩১ খ্রিস্টাব্দের অক্টোবর মাসে 'আওয়ার ম্যাগাজিন' নামে কলেজ নিজস্ব ত্রৈমাসিক পত্রিকা আরম্ভ করেছিল, যাতে কলেজের ছাত্র এবং অনুষদের কাজের প্রতিলিপি প্রকাশিত হয়েছিল। মুকুল দে ১৯৪৩ খ্রিস্টাব্দ পর্যন্ত এই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের অধ্যক্ষ ছিলেন।[১]
অধ্যক্ষরূপে চিন্তামণি কর
সম্পাদনাচিন্তামণি কর ১৯৬০ এবং ১৯৭০ খ্রিস্টাব্দের দশকে দীর্ঘ সময়কালের জন্যে এই কলেজের প্রধান হিসেবে ছিলেন, যিনি ১৯৫৬ খ্রিস্টাব্দের ১ অগস্ট অধ্যক্ষ নিযুক্ত হয়েছিলেন।[১]
প্রাক্তনী
সম্পাদনাগভর্নমেন্ট কলেজ অব আর্ট অ্যান্ড ক্র্যাফট, কলকাতার বিশিষ্ট প্রাক্তনীদের মধ্যে রয়েছেন: নন্দলাল বোস, যামিনী রায়, ছত্রপতি দত্ত, শশী কুমার হেশ, লাইন সিং বঙ্গদেল, অতুল বোস, দেবীপ্রসাদ রায়চৌধুরী,সুভো ঠাকুর, অন্নদা মুন্সী, গোপাল ঘোষ,নীরদ মজুমদার, প্রাণকৃষ্ণ পাল, মুকুল দে, চিন্তামণি কর, মৃণাল কান্তি দাস, সত্যেন ঘোষাল, উপেন্দ্র মহারথী, মনু মুন্সী, সোমনাথ হোড়, রাজেন তরফদার, জয়নুল আবেদিন, রণেন আয়ন দত্ত, কুমকুম মুন্সী, হেমেন মজুমদার, হরেন দাস, শানু লাহিড়ী,[৩] শ্যামল দত্ত রায়, গণেশ পাইন, গণেশ হালুই, সুনীল দাস, বাঁধন দাস, সমীর মণ্ডল,[৪] অশোক ভৌমিক, যোগেন চৌধুরী, সুদীপ রায়,[৫] পুলক বিশ্বাস, নিরঞ্জন প্রধান, অনন্ত মণ্ডল,[৬] পরেশ মাইতি, অখিল চন্দ্র দাস, মৃণাল কান্তি রায়, শুদ্ধসত্ত্ব বসু, সনাতন দিন্দা, সুমন্ত্র সেনগুপ্ত ও বিমান বিহারী দাস।[৭]
আরো দেখুন
সম্পাদনাতথ্যসূত্র
সম্পাদনা- ↑ ক খ গ ঘ ঙ Bagal, Jogesh Chandra (1966). History of the Govt. College of Art and Craft in the Centenary: Government College of Art & Craft, Calcutta, Calcutta: Government College of Art & Craft, pp. 1–58
- ↑ Govt. College of Art and Craft. indiaeducation.ernet.in
- ↑ "Shanu Lahiri dead"। The Telegraph (Calcutta)। Calcutta, India। ফেব্রুয়ারি ২, ২০১৩। ফেব্রুয়ারি ৭, ২০১৩ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ মার্চ ১৫, ২০১৩।
- ↑ "Painting memories"। Calcutta, India: The Telegraph। ফেব্রুয়ারি ৫, ২০০৫। মার্চ ৪, ২০১৬ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ফেব্রু ২১, ২০১৩।
- ↑ "Capturing different moods through art"। The New Indian Express। ২০১২-০২-০৬।
- ↑ "Multifarious impressions of Ananta Mandal"। The Times of India। ডিসে ১০, ২০১৩।
- ↑ "India Mart bio"। India Mart। ২০১৪। ২০১৪-০৯-২৫ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ সেপ্টেম্বর ২৫, ২০১৪।