যামিনী রায়
যামিনী রায় (১১ এপ্রিল ১৮৮৭ - ২৪ এপ্রিল ১৯৭২) ছিলেন একজন বাঙালি চিত্রশিল্পী। তিনি বাংলার বিখ্যাত লোকচিত্র কালীঘাট পটচিত্র শিল্পকে বিশ্বনন্দিত করে তোলেন। তিনি নিজে পটুয়া না হলেও নিজেকে পটুয়া হিসেবে পরিচয় দিতেই তিনি পছন্দ করতেন।১৯১৮-১৯ থেকে তার ছবি ইন্ডিয়ান অ্যাকাডেমি অব ফাইন আর্টের পত্রিকায় প্রকাশিত হতে থাকে।
যামিনী রায় | |
---|---|
![]() | |
জন্ম | [১] বেলিয়াতোড়, বাঁকুড়া, পশ্চিমবঙ্গ, ব্রিটিশ ভারত | ১১ এপ্রিল ১৮৮৭
মৃত্যু | ২৪ এপ্রিল ১৯৭২ | (বয়স ৮৫)
জাতীয়তা | ভারতীয় |
পরিচিতির কারণ | চিত্রকলা |
পুরস্কার | পদ্মভূষণ ১৯৫৪ |
জন্মসম্পাদনা
বাঙালি চিত্রশিল্পী যামিনী রায় ১৮৮৭ সালের ১১ এপ্রিল ভারতের পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের বাঁকুড়া জেলার বেলিয়াতোড় গ্রামের এক মধ্যবিত্ত জমিদার পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। তার পিতার নাম রামতরণ রায়।[১] মাতার নাম নগেন্দ্রবালা দেবী।[২]
শিক্ষাজীবনসম্পাদনা
১৯০৬ থেকে ১৯১৪ সাল পর্যন্ত তিনি কলকাতা গভর্নমেন্ট আর্ট স্কুলে ইউরোপীয় অ্যাকাডেমিক রীতিতে পড়াশোনা করেন। আর্ট স্কুলে ইতালীয় শিল্পী গিলার্দি ও পরে অধ্যক্ষ পার্সি ব্রাউনের সংস্পর্শে এসে তিনি প্রাচ্য-প্রতীচ্যের উভয় শিল্পের কলা-কৌশলের সাথে পরিচিত হন। ইউরোপীয় অ্যাকাডেমিক রীতি শিখলেও শেষ পর্যন্ত দেশজ সরল রীতিতে চিত্র নির্মাণ করেন।[৩] এছাড়া কিছুদিন তিনি ফার্সি শিল্পীদের মতো চিত্র চর্চা করেন। এইসময় তিনি তার চিত্র চর্চার বেগ আরও বৃদ্ধি করেন। তিনি 16 বছর বয়সে কলকাতা আর্ট কলেজে চিত্র চর্চার জন্য ভর্তি হন।
লোকশিল্পে উৎসাহসম্পাদনা
বিদেশি ভাবধারায় প্রথম দিকে ছবি আঁকলেও পরবর্তীতে সম্পূর্ণ দেশীয় তথা গ্রামবাংলার প্রতিরূপ তার ছবিতে ফুটে উঠেছে। নিজস্ব বৈশিষ্ট্য ও স্বকীয়তার লক্ষ্যে তিনি লোক ও নৃগোষ্ঠীদের সংস্কৃতি বেছে নেন। নিজস্ব বাঙালি সংস্কৃতি ও ভাবধারার জন্য তিনি গর্বিত ছিলেন। তিনি বহুবার বিদেশ থেকে আমন্ত্রণ পেলেও কখনও বিদেশে যাননি।-
“ | আমরা গরিব দেশের মানুষ, এত পয়সা খরচ করে ওদের দেশে যাব কেন? ওদের অনেক পয়সা, ওরা এসে আমাদেরটা দেখে যাক। | ” |
দেশীয় উপকরণ ব্যবহারসম্পাদনা
বাংলার লোকজ পুতুল, শিশু, গ্রাম বাংলার সরল মানুষের দৈনন্দিন জীবনের সুখ-দুঃখর চিত্র ইত্যাদি তিনি তার ছবির ‘ফর্ম’ হিসেবে গ্রহণ করেন।
চিত্ররূপসম্পাদনা
- সাঁওতাল জননী ও শিশু,
- মাদলবাদনরত সাঁওতাল,
- নৃত্যরত সাঁওতাল,
- মা ও শিশু,
- রাঁধা-কৃষ্ণ,
- যীশু[৩]
খ্যাতি ও সম্মাননাসম্পাদনা
- পদ্মভূষণ: ১৯৫৪ - এটি ভারতের তৃতীয় সর্বোচ্চ অসামরিক সম্মাননা।
- ললিতকলা একাডেমি পুরস্কার: ১৯৫৫ - যামিনী রায় সর্বপ্রথম এই পুরস্কারটি পান। এটি চারু শিল্পের সর্বশ্রেষ্ঠ সম্মান।
- ডি-লিট: ১৯৫৬
চিত্রশিল্পসম্পাদনা
আরও দেখুনসম্পাদনা
তথ্যসূত্রসম্পাদনা
- ↑ ক খ Eibela.Com। "চিত্রকর ও পটুয়া শিল্পী যামিনী রায়ের জন্মদিন আজ"। এইবেলা। সংগ্রহের তারিখ ২০১৮-০৪-০৭।[স্থায়ীভাবে অকার্যকর সংযোগ]
- ↑ {{সংবাদ উদ্ধৃতি|পত্রিকা=আনন্দবাজার পত্রিকা|শিরোনাম=গান্ধীজি যদি ছবিই দেখতে চান,তা হলে আমার স্টুডিয়োতে আসবেন|সংবাদপত্র=আনন্দবাজার পত্রিকা|সংগ্রহের-তারিখ=2020-06-06 |
- ↑ ক খ সেলিনা হোসেন ও নুরুল ইসলাম সম্পাদিত; বাংলা একাডেমী চরিতাভিধান; দ্বিতীয় সংস্করণ: ফেব্রুয়ারি, ১৯৯৭; পৃষ্ঠা: ৩৩৪৩-৩৩৫, আইএসবিএন ৯৮৪-০৭-৪৩৫৪-৬