খালিদ হাসান মিলু

বাংলাদেশী কণ্ঠশিল্পী ও গীতিকার

খালিদ হাসান মিলু (৬ এপ্রিল, ১৯৬০ – ২৯ মার্চ ২০০৫)[২] ছিলেন একজন বাংলাদেশী সঙ্গীতশিল্পী। ১৯৮০ সালের প্রথমার্ধে তার সঙ্গীত জীবন শুরু হয়। মিলুর প্রকাশিত একক এ্যালবাম সংখ্যা ১২টি এবং মিশ্র ও দ্বৈত এ্যালবাম সংখ্যা প্রায় ১২০টি। তিনি প্রায় ২৫০টি চলচ্চিত্রে কণ্ঠে দিয়েছেন। তিনি সর্বমোট প্রায় ১৫০০-এর মতো গানে কণ্ঠ দিয়েছেন।[১] ১৯৯৪ সালে 'হৃদয় থেকে হৃদয়' চলচ্চিত্রের গানে কণ্ঠ দিয়ে তিনি শ্রেষ্ঠ পুরুষ কণ্ঠশিল্পী বিভাগে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার লাভ করেন।

খালিদ হাসান মিলু
খালিদ হাসান মিলু
ছবিতে শিল্পী খালিদ হাসান মিলু
প্রাথমিক তথ্য
জন্ম(১৯৬০-০৪-০৬)৬ এপ্রিল ১৯৬০
আদর্শপাড়া গ্রাম, পিরোজপুর জেলা, বরিশাল বিভাগ, বাংলাদেশ[১]
মৃত্যু২৯ মার্চ ২০০৫(2005-03-29) (বয়স ৪৪)
মনোয়ারা হাসপাতাল
ধরনএকক সঙ্গীত, চলচ্চিত্র এর গান, পল্লীগীতি, শাস্ত্রীয় সংগীত, পপ, আধুনিক বাংলা গান, দেশাত্মবোধক গান
পেশাগায়ক
বাদ্যযন্ত্রকণ্ঠ
কার্যকাল১৯৮০-২০০৪
লেবেলসাউন্ডটেক, অনুপম রেকর্ডিং মিডিয়া, বিউটি কর্ণার, ডন মিউজিক, সারগাম, সোনালী প্রোডাক্টস ও সংগীতা
দাম্পত্য সঙ্গীফাতিমা হাসান পলাশ

জীবনীসম্পাদনা

খালিদ হাসান মিলুর জন্ম ৬ এপ্রিল, ১৯৬০ সালে বরিশাল বিভাগের পিরোজপুর জেলার আদর্শপাড়া গ্রামে।[১]

কর্মজীবনঃসম্পাদনা

মিলুর সঙ্গীত জীবন শুরু হয় ১৯৮০ সালের প্রথমার্ধে। মিলুর প্রকাশিত একক এ্যালবাম সংখ্যা ১২ টি, মিক্সড-ডুয়েট এ্যালবাম সংখ্যা প্রায় ১২০ টি। তিনি প্রায় ২৫০ টি চলচ্চিত্রে কণ্ঠে দিয়েছেন। তিনি সর্বমোট প্রায় ১৫০০ এর মতো গানে কণ্ঠ দিয়েছেন। ১৯৮০ সালে তার প্রথম এ্যালবাম 'ওগো প্রিয় বান্ধবী' প্রকাশিত হয়। তার প্রকাশিত অন্যান্য উল্লেখযোগ্য এ্যালবাম সমূহ হলোঃ 'আহত হৃদয়', 'শেষ খেয়া', 'নীলা', 'শেষ ভালোবাসা', 'মানুষ', 'অচিন পাখী' ও 'আমি একা বড় একা'। বন্যাট্য সংগীত জীবনে মিলুর গাওয়া কিছু জনপ্রিয় গান হলো : 'প্রতিশোধ নিও অভিশাপ দিও', 'ওগো প্রিয়় বান্ধবী', সেই মেয়েটি আমাকে ভালবাসে কিনা', ‘অনেক সাধনার পরে আমি’, 'আহত হৃদয় ছুটে আসি', 'সজনী আমিতো তোমায় ভুলিনি', ‘কতদিন দেহি না মায়ের মুখ’, ‘নিশিতে যাইয়ো ফুলবনে’, 'নীলা তুমি আবার এসো ফিরে’, ‘যে প্রেম স্বর্গ থেকে এসে’, 'ও ভূবন মাঝি আমায় তুমি', 'হৃদয় থেকে হৃদয়’, তুমি আমার হৃদয়ে যদি থাকো’, ‘পৃথিবীকে ভালোবেসে সুরে সুরে কাছে এসে’, ‘শোনো শোনো ও প্রিয়া প্রিয়া গো’, ‘যে নদী মরু পথে পথটি হারাল’, ‘যতদূরে যাও মনে রেখো’, ‘যদি পারো ভালোবেসে এসো’, 'হাসলে তোমার মুখ হাসেনা', 'কে বলে সালাম নেই', প্রভৃতি। ১৯৮২ সাল থেকে তিনি চলচ্চিত্রের গানে নেপথ্যে কণ্ঠ দেওয়া শুরু করেন এবং প্রায় ২৫০টি চলচ্চিত্রের গানে কণ্ঠ দেন।[১] ১৯৯৪ সালে 'হৃদয় থেকে হৃদয়' চলচ্চিত্রের "ভালবাসা ভালবাসা মানে না কোন পরাজয়" গানে কণ্ঠ দিয়ে তিনি জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারে শ্রেষ্ঠ পুরুষ কণ্ঠশিল্পী বিভাগে পুরস্কার লাভ করেন।

ব্যক্তিগত জীবনঃসম্পাদনা

তার দুই ছেলের নাম প্রতীক হাসান ও প্রীতম হাসান[৩]। দুজনেই সঙ্গীতের সঙ্গে সম্পৃক্ত।[৪][৫]

স্ত্রী ফাতিমা হাসান পলাশ।

মৃত্যুসম্পাদনা

মিলু ২০০৫ সালের ২৯ মার্চ রাত ১২ টা ১০ মিনিটে ঢাকার মনোয়ারা হাসপাতালে মৃত্যুবরণ করেন। এর পূর্বে ২০০১ সালে তিনি মস্তিষ্কে রক্তক্ষরণের কারণে হাসপাতালে ভর্তি হন। ২০০৪ সালে উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে ব্যাংককেে ও নেওয়া হয়। এছাড়া তিনি লিভার সিরোসিস রোগে ভুগছিলেন।[১] তাকে মিরপুর কবরস্থানে সমাহিত করা হয়।

সঙ্গীত জীবনসম্পাদনা

প্রকাশিত এ্যালবামসম্পাদনা

একক
ওগো প্রিয় বান্ধবী (১৯৮১) আহত হৃদয় প্রতিশোধ নিও
ভালবাসা খালিদ হাসান মিলু ভলিউম-১ অচিন পাখী
শেষ খেয়া নীলা[৬] আমি একা বড় একা
শেষ ভালোবাসা মানুষ মিষ্টি জোৎছনা
খালিদ হাসান মিলু শ্রেষ্ঠ গান
মিশ্র-দ্বৈত
আয়োজন আকাশের তাঁরা আমার একটাই তুমি
আনন্দ উল্লাস আসবে তুমি আশা আমার আশা
আসর আয়না অভিযোগ
বাগানে গোলাপ নেই ব্যবধান বেদনার বালুচরে
ভালবেসে সুখ নেই বড় একা একা আছি আমি বড় সুখে আছো
বুকের ভিতর বুকের জমানো বেদনা চেনা চেনা লাগে
চোখের পলক ঢাকার মেয়ে দু'চোখে ব্যথার শ্রাবণ
দুঃখের সানাই দুঃখিনী অন্তর এতটুকু চাওয়া
এই হৃদয়ে তুমি এক জীবনের ভালবাসা এক মন এক প্রাণ
একই বৃন্তে একটি মনের দাম একটু ছোঁয়া
এরই নাম ভালবাসা এত ঝড় এ বুকে ইতিহাস হয়ে রবে
ইত্যাদি তরঙ্গ জীবনের এপারে জন্ম আমার ধন্য হলো
জন্ম আমার ধন্য হলো জয়-পরাজয় কারে দেখাবো মনের দুঃখ
কেমন করে ভুলি কেউ সুখী নয় কি ভেবে কাঁদালে আমায়
কি দোষে দোষী কষ্ট আমার মানুষের জীবন
মন কার লাগিয়া কান্দো মন পবনের নাও মনে হয় ভালবাসে
মৌসুমী নিঃসঙ্গতায় আছি নিঃসঙ্গ
অধিকার অনামিকা তুমি অন্তর কান্দে
অন্তরে তুমি অর্কিড পাপী মন
পিঞ্জিরা প্রেম বৈরাগী প্রেমের নদী
প্রেমের তরী রাতের তাঁরা রসিয়া
সাজিয়ে গুজিয়ে দে স্বপ্ন তুমি সারিন্দা
শুধু তুমি আমার শুধুই ভালবাসবো সুখে থেকো বন্ধ
শূন্য প্রহর সুজানা বলোনা সেই কথা তোমাকে জানাই অভিনন্দন
তোমার আমার ভালবাসা তুমি আমার তেমনই একজন তুমি আমার আমি তোমার
তুমি আমার প্রথম সকাল তুমি যদি সুখে থাক তুমি পাশে নেই
তুমি স্বপ্ন আমার ভাঙ্গা মন

চলচ্চিত্রে গানসম্পাদনা

চলচ্চিত্রে নেপথ্য কন্ঠ দেওয়া সঙ্গীতের তালিকা

সাল চলচ্চিত্র গান শিল্পী
১৯৮৩ কালো গোলাপ ভালোবাসা বিনা বাঁচা যায়না উমা খান ও খালিদ হাসান মিলু
১৯৮৪ প্রিন্সেস টিনা খান বিয়া শাদীর চাবি থাকে আল্লাহর হাতে খালিদ হাসান মিলু, আব্দুল মান্নান রানা ও নার্গিস পারভীন

পুরস্কারসম্পাদনা

তথ্যসূত্রসম্পাদনা

  1. "Khalid Hassan Milu is no more"দ্য ডেইলি স্টার। ৩০ মার্চ ২০০৫। সংগ্রহের তারিখ ১২ মার্চ ২০১৭ 
  2. "আজ স্বর্ণকণ্ঠ শিল্পী 'খালিদ হাসান মিলু'র ১১তম মৃত্যুবার্ষিকী"সঙ্গীতাঙ্গন। ২৯ মার্চ ২০১৬। সংগ্রহের তারিখ ১২ মার্চ ২০১৭ [স্থায়ীভাবে অকার্যকর সংযোগ]
  3. jugantor.com। "প্রীতম হাসান : যেন বাবার কণ্ঠের ধারক-বাহক | তারাঝিলমিল | Jugantor"jugantor.com। সংগ্রহের তারিখ ২০১৮-১১-২৬ [স্থায়ীভাবে অকার্যকর সংযোগ]
  4. "'ইত্যাদি'তে খালিদ হাসান মিলুর দুই ছেলের গান"দৈনিক সমকাল। ২৮ নভেম্বর ২০১২। সংগ্রহের তারিখ ১২ মার্চ ২০১৭ [স্থায়ীভাবে অকার্যকর সংযোগ]
  5. "বিবিসির সাথে গান-গল্প: তরুণ গায়ক প্রতীক হাসান"বিবিসি বাংলা। ১৪ নভেম্বর ২০১৪। সংগ্রহের তারিখ ১২ মার্চ ২০১৭ 
  6. "নীলা - খালিদ হাসান মিলু"রকমারি.কম। সংগ্রহের তারিখ ১২ মার্চ ২০১৭ [স্থায়ীভাবে অকার্যকর সংযোগ]

বহিঃসংযোগসম্পাদনা