আলাউদ্দিন আলী
আলাউদ্দিন আলী (২৪ ডিসেম্বর ১৯৫২ - ৯ আগস্ট ২০২০) ছিলেন একজন বাংলাদেশী সুরকার, বেহালাবাদক, সঙ্গীতজ্ঞ, গীতিকার এবং সঙ্গীত পরিচালক।[১][২] তিনি সঙ্গীত পরিচালক হিসেবে সাতবার এবং গীতিকার হিসেবে একবার জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার লাভ করেন।[৩]
আলাউদ্দিন আলী | |
---|---|
জন্ম | |
মৃত্যু | ৯ আগস্ট ২০২০ ঢাকা, বাংলাদেশ | (বয়স ৬৭)
জাতীয়তা | বাংলাদেশী |
নাগরিকত্ব | বাংলাদেশী |
পরিচিতির কারণ | গীতিকার, সঙ্গীত পরিচালক |
প্রারম্ভিক জীবন
সম্পাদনাআলাউদ্দিন আলী ১৯৫২ সালের ২৪শে ডিসেম্বর মুন্সীগঞ্জের টংগিবাড়ী থানার বাঁশবাড়ী গ্রামের এক সাংস্কৃতিক পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। তার পিতার নাম জাবেদ আলী ও মাতা জোহরা খাতুন।[৪] আলাউদ্দিন তার পিতা ওস্তাদ জাবেদ আলী ও ছোট চাচা সাদেক আলীর কাছে প্রথম সঙ্গীতে শিক্ষা নেন। ১৯৬৮ সালে তিনি যন্ত্রশিল্পী হিসেবে চলচ্চিত্র জগতে আসেন এবং আলতাফ মাহমুদের সহযোগী হিসেবে যোগ দেন। এরপর তিনি প্রখ্যাত সুরকার আনোয়ার পারভেজ সহ বিভিন্ন সুরকারের সহযোগী হিসেবে কাজ করেন।
সঙ্গীত জীবন
সম্পাদনাআলাউদ্দিন ১৯৭৫ সালে সঙ্গীত পরিচালনা করে বেশ প্রশংসিত হন। তিনি গোলাপী এখন ট্রেনে (১৯৭৯), সুন্দরী (১৯৮০), কসাই এবং যোগাযোগ চলচ্চিত্রের জন্য ১৯৮৮ সালে শ্রেষ্ঠ সঙ্গীত পরিচালক হিসেবে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার লাভ করেন। এছাড়া ১৯৮৫ সালে তিনি শ্রেষ্ঠ গীতিকার হিসেবে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার লাভ করেন। এছাড়াও তিনি খ্যাতিমান পরিচালক গৌতম ঘোষ পরিচালিত পদ্মা নদীর মাঝি চলচ্চিত্রে সঙ্গীত পরিচালনা করেছেন।
উল্লেখযোগ্য গান
সম্পাদনাআলাউদ্দিন আলীর উল্লেখযোগ্য কিছু গান হলো:
- যে ছিল দৃষ্টির সীমানায়
- একবার যদি কেউ ভালোবাসতো
- ভালোবাসা যতো বড়ো জীবন তত বড় নয়
- প্রথম বাংলাদেশ, আমার শেষ বাংলাদেশ
- হয় যদি বদনাম হোক আরো
- দুঃখ ভালোবেসে প্রেমের খেলা খেলতে হয়
- সুখে থাকো, ও আমার নন্দিনী হয়ে কারও ঘরনি
- আছেন আমার মোক্তার আছেন আমার ব্যারিস্টার
- বন্ধু তিন দিন তোর বাড়ি গেলাম দেখা পাইলাম না
- সূর্যোদয়ে তুমি সূর্যাস্তেও তুমি
- এমনও তো প্রেম হয়, চোখের জলে কথা কয়
- যেটুকু সময় তুমি থাকো কাছে, মনে হয় এ দেহে প্রাণ আছে
- আমায় গেঁথে দাওনা মাগো, একটা পলাশ ফুলের মালা
- সবাই বলে বয়স বাড়ে, আমি বলি কমে রে
- কেউ কোনো দিন আমারে তো কথা দিল না
- শত জনমের স্বপ্ন তুমি আমার জীবনে এলে
- জন্ম থেকে জ্বলছি মাগো
- পারি না ভুলে যেতে, স্মৃতিরা মালা গেঁথে
- হায়রে কপাল মন্দ চোখ থাকিতে অন্ধ
- আমার মনের ভেতর অনেক জ্বালা আগুন হইয়া জ্বলে
- "তুমি তো আগের মতো রয়েছো মনের মতো"
ব্যক্তিগত জীবন
সম্পাদনাতিনি নজরুলসঙ্গীত শিল্পী সালমা সুলতানাকে (মৃত্য ২০১৬) বিয়ে করেন।[৫] তাদের মেয়ে আলিফ আলাউদ্দিন একজন সঙ্গীতশিল্পী। আলাউদ্দিন আলী ফুসফুসের প্রদাহ ও রক্তে সংক্রমণের সমস্যায় ভুগছিলেন দীর্ঘদিন। প্রথমে ২০১৫ সালের ৩ জুলাই তাকে ব্যাংকক নেওয়া হয়েছিল। সেখানে পরীক্ষার পর জানা যায়, তার ফুসফুসে একটি টিউমার রয়েছে। এরপর তার অন্যান্য শারীরিক সমস্যার পাশাপাশি ক্যানসারের চিকিৎসাও চলছিল। শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে ৮ আগস্ট ২০২০ শনিবার তাকে ঢাকার একটি হাসপাতালে ভর্তি করা হয় এবং লাইফ সাপোর্ট দেয়া হয়। লাইফ সাপোর্টে থাকাকালীন ৯ আগস্ট রবিবার বিকাল সাড়ে ৫টায় তিনি মৃত্যুবরণ করেন।[৬]
পুরস্কার ও সম্মাননা
সম্পাদনাতথ্যসূত্র
সম্পাদনা- ↑ "আমার মতো ভাগ্যবান সুরকার কম : আলাউদ্দিন আলী"। এনটিভি। সংগ্রহের তারিখ ২২ জানুয়ারি ২০১৯।
- ↑ "আলাউদ্দীন আলী লাইফ সাপোর্টে"। প্রথম আলো। সংগ্রহের তারিখ ২০১৯-০৮-২৫।
- ↑ "৬৫ বছরে আলাউদ্দীন আলী"। যুগান্তর। সংগ্রহের তারিখ ২২ জানুয়ারি ২০১৯।
- ↑ "সুরকার ও সংগীত পরিচালক আলাউদ্দীন আলী হাসপাতালে"। প্রথম আলো। সংগ্রহের তারিখ ২২ জানুয়ারি ২০১৯।
- ↑ "সঙ্গীতশিল্পী সালমা সুলতানা আর নেই"। সমকাল। ১ অক্টোবর ২০১৬। ১৯ ফেব্রুয়ারি ২০২০ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৯ এপ্রিল ২০১৯।
- ↑ "সুরকার আলাউদ্দিন আলী আর নেই"। প্রথম আলো।