যোগাযোগ (১৯৮৮-এর চলচ্চিত্র)
যোগাযোগ মইনুল হোসেন পরিচালিত ১৯৮৮ সালের বাংলাদেশী নাট্য চলচ্চিত্র। রেজাউল হাসানের গল্প ও সংলাপে ছবিটির চিত্রনাট্য লিখেছেন মইনুল হোসেন। ছবিটি প্রযোজনা করেছে মুক্তি চলচ্চিত্র এবং পরিবেশিত হয়েছে সমাজ-এর ব্যানারে। এতে প্রধান চরিত্রে অভিনয় করেছেন রাজ্জাক,[৩] শবনম,[৪] চম্পা, জাফর ইকবাল, প্রবীর মিত্র, সুনেত্রা ও রাজীব।
যোগাযোগ | |
---|---|
পরিচালক | মইনুলহাই হোসেন |
রচয়িতা | রেজাউল হাসান (সংলাপ) |
চিত্রনাট্যকার | মইনুল হোসেন |
কাহিনিকার | রেজাউল হাসান |
শ্রেষ্ঠাংশে | |
সুরকার | আলাউদ্দিন আলী |
চিত্রগ্রাহক | তাবিবুর রহমান |
সম্পাদক | মুজিবুর রহমান দুলু |
প্রযোজনা কোম্পানি | মুক্তি চলচ্চিত্র |
পরিবেশক | সমাজ[১] |
মুক্তি | ৮ এপ্রিল, ১৯৮৮[২] |
স্থিতিকাল | ১৪১ মিনিট |
দেশ | বাংলাদেশ |
ভাষা | বাংলা |
যোগাযোগ চলচ্চিত্রটি ১৯৮৮ সালের ৮ এপ্রিল বাংলাদেশে মুক্তি পায়। এই ছবিতে সাহেদ চৌধুরী চরিত্রে অভিনয়ের জন্য রাজ্জাক ১৩তম জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারে শ্রেষ্ঠ অভিনেতা বিভাগে পুরস্কৃত হন এবং আলাউদ্দিন আলী শ্রেষ্ঠ সঙ্গীত পরিচালক বিভাগে ও মফিজুল হক শ্রেষ্ঠ শব্দগ্রাহক বিভাগে পুরস্কৃত হন।[৫]
কাহিনী সংক্ষেপ
সম্পাদনাসাহেদ চৌধুরী একজন চা-বাগানের কর্মকর্তা। জুলেখাকে প্রথমবার দেখে তাকে পছন্দ করেন এবং তার বাবার কাছে তাদের বিয়ের প্রস্তাব নিয়ে যান। জুলেখার বাবা তার প্রস্তাবে সম্মত হন এবং তাদের বিয়ে দেন। সাহেদ ও জুলেখার সংসারে কেয়া নামে এক কন্যা সন্তান আসে। সাহেদ সারাদিন বাড়ি আর বাগানে একগেঁয়ে সময় কাটায় দেখে স্ত্রী জুলেখা তাকে ক্লাব-পার্টিতে যেতে বলে। একদিন সাহেদ জুলেখাকে নিয়ে ক্লাবে যায়। সেখানে ক্লাবের সদস্যদের সাথে মিশতে না পারায় সাহেদ জুলেখাকে গেঁয়ো-অশিক্ষিত বলে এবং এই ঘটনার ফলে তাদের সম্পর্কের অবনতি ঘটে। সাহেদ বাড়িতে মদ খেয়ে মাতলামি করে। এতে অতিষ্ঠ হয়ে জুলেখা তার কন্যা কেয়াকে নিয়ে তার বাবার বাড়ি চলে যায়।
কেয়া এখন যুবতি। সে তার মায়ে নিয়ে তার নতুন কর্মস্থলে আসে। সেখানে পরিচিত হয় সেখানকার চা-বাগানে নতুন যোগদানকারী জাফর চৌধুরীর সাথে। তাদের মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। বাগানের এক কর্মচারী গোলাপ সিং ওরফে টিলা বাবু অসৎ পথে যাওয়ার জন্য জাফরকে বিভিন্নভাবে প্রলোভন দেখায়। সাহেদ চৌধুরী তত্ত্বাবধানে বাগানে উন্নত প্রজাতির চা পাতার উদ্ভাবন করে। কিন্তু এতে অখুশি হয় বাগানের আরেক কর্মকর্তা রাজীব। সে টিলা বাবুকে দিয়ে তাদের সফলতাকে ব্যর্থতায় পর্যবসিত করতে চায়। টিলা বাবুর কয়েকটি চেষ্টা ব্যর্থ হয়।
একদিন কেয়া চা বাগানের মধ্য দিয়ে যাওয়ার সময় সাহেদ চৌধুরীর ছুড়ে মারা বিয়ারের ক্যান এসে তার মাথায় লাগে। সাহেদ তার কাছে ক্ষমা চায় এবং রক্ত বন্ধের জন্য তার রুমাল দেয়। কেয়ার মা এতে কেয়ার মাথায় আঘাত দেখে উদ্বিগ্ন হয়। কেয়া পরদিন সাহেদের বাংলোতে তার রুমাল ফিরিয়ে দিতে আসে এবং তাদের মধ্যে আলাপচারিতা হয়। এ থেকে কেয়া তার মায়ের কাছে তার বাবার সম্পর্কে জানতে চায়। জুলেখা বাংলোতে এসে সাহেদের সাথে দেখা হয়। জাফর সেখানে উপস্থিত ছিল এবং কেয়ার বাবার আসল পরিচয় পায়। ইতিমধ্যে রাজীবের আদেশে গোলাপ সিং বাগানের মাল লুট করার কালে সাহেদ তাকে ধমকায় ও তার কাজে বাধা দেয়। রাজীব এতে ক্ষুব্ধ হয়ে কেয়াকে তুলে নিয়ে যায়। কিন্তু জাফর তাকে উদ্ধার করে ও তার বাবার পরিচয় জানায়। সাহেদ সেখানে উপস্থিত হয়ে রাজীবকে পুলিশে দেয় এবং সাহেদের পারিবারিক পুনর্মিলন ঘটে।
কুশীলব
সম্পাদনা- রাজ্জাক - সাহেদ চৌধুরী
- শবনম - জুলেখা চৌধুরী
- চম্পা - কেয়া চৌধুরী
- জাফর ইকবাল - জাফর চৌধুরী
- প্রবীর মিত্র - ডঃ রফিক
- সুনেত্রা - বীণা
- রাজীব - রাজীব
- শওকত আকবর - লস্কর
- এটিএম শামসুজ্জামান - টিলা বাবু
- নারায়ণ চক্রবর্তী - কেয়ার বাবা
- শামসুদ্দিন কায়েস
- মায়া হাজারিকা
- জিন্নাহ আমির - জিন্নাহ
- সুরুজ বাঙ্গালি - সুরুজ
- আব্দুল আজিজ
- ববি
- ইদ্রিস
- সত্য নারায়ণ
সঙ্গীত
সম্পাদনাযোগাযোগ চলচ্চিত্রের গানের সুর ও সঙ্গীত পরিচলালচনা করেছেন আলাউদ্দিন আলী। সহকারী হিসেবে ছিলেন রবীন ঘোষ। গানের কথা লিখেছেন গাজী মাঝারুল আনোয়ার। গানে কণ্ঠ দিয়েছেন সাবিনা ইয়াসমিন, এন্ড্রু কিশোর, রুনা লায়লা, সৈয়দ আব্দুল হাদী, কুমার বিশ্বজিৎ ও শামীমা ইয়াসমিন দিবা।
গানের তালিকা
সম্পাদনানং. | শিরোনাম | কণ্ঠশিল্পী(রা) | দৈর্ঘ্য |
---|---|---|---|
১. | "দুটি কুঁড়ি একটি পাতা" | সৈয়দ আব্দুল হাদী, সাবিনা ইয়াসমিন ও শামীমা ইয়াসমিন দিবা | |
২. | "ঝিলিক রোদে" | রুনা লায়লা, কুমার বিশ্বজিৎ ও শামীমা ইয়াসমিন দিবা | |
৩. | "ভালবাসা ছিল" | রুনা লায়লা | |
৪. | "রঙ্গিলা কই গেলা" | রুনা লায়লা ও এন্ড্রু কিশোর | |
৫. | "প্রেম জীবনের এক গান" | এন্ড্রু কিশোর ও সাবিনা ইয়াসমিন |
পুরস্কার
সম্পাদনা- বিজয়ী: শ্রেষ্ঠ অভিনেতা - রাজ্জাক
- বিজয়ী: শ্রেষ্ঠ সঙ্গীত পরিচালক - আলাউদ্দিন আলী
- বিজয়ী: শ্রেষ্ঠ শব্দগ্রাহক - মফিজুল হক
তথ্যসূত্র
সম্পাদনা- ↑ "JOGAJOG"। বাংলাদেশ ফিল্ম আর্কাইভ। সংগ্রহের তারিখ ১৩ জুলাই ২০১৭।[স্থায়ীভাবে অকার্যকর সংযোগ]
- ↑ "Movie List 1988"। বাংলাদেশ চলচ্চিত্র প্রযোজক পরিবেশক সমিতি। সংগ্রহের তারিখ ১৩ জুলাই ২০১৭।[স্থায়ীভাবে অকার্যকর সংযোগ]
- ↑ "রাজ্জাকের স্মরণীয় ১০ ছবি"। বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম। ২০ জানুয়ারি ২০১৬। সংগ্রহের তারিখ ১৩ জুলাই ২০১৭।
- ↑ "চার দশক পর একই চলচ্চিত্রে শবনম"। দৈনিক মানবজমিন। ২৭ এপ্রিল ২০১৭। সংগ্রহের তারিখ ১৩ জুলাই ২০১৭।
- ↑ "জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার প্রাপ্তদের নামের তালিকা (১৯৭৫-২০১২)"। বাংলাদেশ চলচ্চিত্র উন্নয়ন কর্পোরেশন। ২৩ ডিসেম্বর ২০১৮ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৩ জুলাই ২০১৭।
বহিঃসংযোগ
সম্পাদনা- ইন্টারনেট মুভি ডেটাবেজে যোগাযোগ (ইংরেজি)