অ্যাশলে মলেট
অ্যাশলে আলেকজান্ডার মলেট (ইংরেজি: Ashley Mallett; জন্ম: ১৩ জুলাই, ১৯৪৫) নিউ সাউথ ওয়েলসের চ্যাটসউড এলাকায় জন্মগ্রহণকারী সাবেক অস্ট্রেলীয় আন্তর্জাতিক ক্রিকেটার।[১] অস্ট্রেলিয়া ক্রিকেট দলের অন্যতম সদস্য ছিলেন তিনি। ১৯৬৮ থেকে ১৯৮০ মেয়াদে অস্ট্রেলিয়া ক্রিকেট দলের পক্ষে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অংশগ্রহণ করেছেন।
ব্যক্তিগত তথ্য | ||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|
পূর্ণ নাম | অ্যাশলে আলেকজান্ডার মলেট | |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
জন্ম | সিডনি, অস্ট্রেলিয়া | ১৩ জুলাই ১৯৪৫|||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
ব্যাটিংয়ের ধরন | ডানহাতি | |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
বোলিংয়ের ধরন | ডানহাতি অফ ব্রেক | |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
ভূমিকা | বোলার | |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
আন্তর্জাতিক তথ্য | ||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
জাতীয় দল |
| |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
টেস্ট অভিষেক (ক্যাপ ২৪৭) | ২২ আগস্ট ১৯৬৮ বনাম ইংল্যান্ড | |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
শেষ টেস্ট | ২৮ আগস্ট ১৯৮০ বনাম ইংল্যান্ড | |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
ওডিআই অভিষেক (ক্যাপ ৬) | ৫ জানুয়ারি ১৯৭১ বনাম ইংল্যান্ড | |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
শেষ ওডিআই | ২০ ডিসেম্বর ১৯৭৫ বনাম ওয়েস্ট ইন্ডিজ | |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
ঘরোয়া দলের তথ্য | ||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
বছর | দল | |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
১৯৬৭-১৯৮১ | সাউদার্ন রেডব্যাকস | |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
খেলোয়াড়ী জীবনের পরিসংখ্যান | ||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
| ||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
উৎস: ইএসপিএনক্রিকইনফো.কম, ২৬ ফেব্রুয়ারি ২০১৭ |
ঘরোয়া প্রথম-শ্রেণীর ক্রিকেটে সাউথ অস্ট্রেলিয়া দলের প্রতিনিধিত্ব করেন। দলে তিনি মূলতঃ ডানহাতি অফ ব্রেক বোলার ছিলেন। নাথান লায়নের আবির্ভাবের পূর্বে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর অস্ট্রেলিয়ার সর্বাপেক্ষা সফল অফ স্পিন বোলারের মর্যাদা পেয়েছেন। এছাড়াও, অস্ট্রেলীয় ক্রিকেটের ইতিহাসে ব্রুস ইয়ার্ডলি’র সাথে তাকেও সর্বকালের সেরা স্পিনারের মর্যাদা দেয়া হয়। নিজস্ব উচ্চতাকে কাজে লাগিয়ে বলে বেশ বাউন্স প্রদানে সক্ষমতা দেখান অ্যাশলে মলেট।[২]
ঘরোয়া ক্রিকেট
সম্পাদনা১৯৬৬-৬৭ মৌসুমে ওয়েস্টার্ন অস্ট্রেলিয়ার সদস্য হিসেবে মনোনীত হন; কিন্তু কোন খেলায় অংশগ্রহণের সুযোগ ঘটেনি তার। কেবলমাত্র শেফিল্ড শিল্ডের দুই খেলায় দ্বাদশ খেলোয়াড় হিসেবে মাঠে প্রবেশের সুযোগ পেয়েছিলেন। দলের নিজস্ব মাঠ হিসেবে ব্যবহৃত ওয়াকা গ্রাউন্ডের পেস উপযোগী পীচে কেবলমাত্র একজন স্পিনার ব্যবহার করা হতো। কিন্তু সাবেক ইংরেজ টেস্ট ক্রিকেটার ও বামহাতি অর্থোডক্স স্পিনার টনি লকের অংশগ্রহণে তার প্রবেশপথ রুদ্ধ হয়ে পড়ে। লেগ স্পিনার টেরি জেনারকে নিয়ে ১৯৬৭ সালের শীত মৌসুমে দক্ষিণ অস্ট্রেলিয়ার পক্ষে খেলার জন্য চুক্তিবদ্ধ হন। রাজ্য দলটির নিয়মিত সদস্য হন ও অ্যাডিলেড ওভালের পীচে দলটি দুইজন স্পিনারকে মাঠে নামাতো।[১] এক দশককাল উভয়ে কার্যকর ও আক্রমণাত্মক স্পিন সমন্বয়ে দলে ভূমিকা রেখেছেন।[২]
প্রথম-শ্রেণীর ক্রিকেট
সম্পাদনা১৯৬৭-৬৮ মৌসুমের নভেম্বরে সফরকারী নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে অভিষেক ঘটে তার। ১২ ওভার বোলিং করে উইকেট পাননি এবং উভয় ইনিংসে যথাক্রমে অপরাজিত ৮* ও শূন্য রান করা স্বত্ত্বেও সফরকারীরা ২৪ রানে হেরে যায়।[৩] পরের খেলায় ভারতের বিপক্ষে প্রথম উইকেট লাভসহ ২/৫৫ বোলিং পরিসংখ্যান গড়েন ও দলকে ইনিংসের ব্যবধানে জয়ে সহায়তা করেন। রমাকান্ত দেশাইকে আউট করে প্রথম উইকেট পান। এরপর ভাগবত চন্দ্রশেখরকে আউট করেন স্পিন বোলিংয়ের অংশীদার জেনারের হাতে কট দিয়ে।[৩][৪]
টেস্ট ক্রিকেট
সম্পাদনাঘরোয়া ক্রিকেটে ব্যাপক সফলতা পাওয়ায় বিল লরি’র নেতৃত্বাধীন অস্ট্রেলিয়া দলের সদস্যরূপে ১৯৬৮ সালে ইংল্যান্ড সফরে যান।[২] কাউন্টি দলগুলোর বিপক্ষে ভাল করলেও প্রথম টেস্টে খেলার জন্য প্রথম একাদশে রাখা হয়নি।[২][৩] পরবর্তী আড়াই মাস টেস্ট দলের সদস্যরূপে মাঠের বাইরে অবস্থান করেন। সিরিজে ১-০ ব্যবধানে সিরিজে এগিয়ে থাকা অবস্থায় অ্যাশেজ নিজেদের দখলে রাখে। পঞ্চম ও চূড়ান্ত টেস্টে মলেটের অভিষেক ঘটে। নিজের পঞ্চম বলে কলিন কাউড্রে’র উইকেট দখল করেন।[২] তাকে রক্ষণাত্মকভাবে খেলতে উদ্বুদ্ধ করে লেগ বিফোর উইকেট পান।[৪] এরপর ১৫৮ রান সংগ্রাহক ব্যাসিল ডি’অলিভেইরাকে ও উইকেট-রক্ষক অ্যালান নটকে আউট করে খেলায় ৩/৮৭ লাভ করেন। স্বাগতিক দল ৪৯৪ রানে গুটিয়ে যায়।[৩][৪] এরপর নিচের সারির ব্যাটসম্যানরূপে অপরাজিত ৪৩* করে অস্ট্রেলিয়াকে ৩২৪ রানে নিয়ে যান। এ সংগ্রহটি প্রথম-শ্রেণীর ক্রিকেটে তার দ্বিতীয়বার সর্বোচ্চ রানের ও টেস্টে সর্বোচ্চ রান হিসেবে বহাল থাকে।[৩] দ্বিতীয় ইনিংসে কাউড্রে ও জন এডরিচের উইকেট নিলে তার বোলিং পরিসংখ্যান দাঁড়ায় ২/৭৭।[৩][৪] বৃষ্টি আতঙ্কে অস্ট্রেলিয়া খেলা ড্র করতে সক্ষম হবার সুযোগ ছিল ও চূড়ান্ত দিনে তারা ৩৫২ রানে অল-আউট হয়। নবম উইকেটে মলেট শূন্য রানে আউট হবার পাঁচ মিনিট পর শেষ উইকেট তুলে নিয়ে ইংল্যান্ড দল ২২৬ রানে জয়লাভ করে। ১৯৭২, ১৯৭৫ ও ১৯৮০ সালে আরও তিনবার ইংল্যান্ড সফরে গেলেও পূর্বেকার সেরা নৈপুণ্য তিনি আর প্রকাশ করতে পারেননি।[২]
১৯৬৮-৬৯ মৌসুমে সফরকারী ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে অনুষ্ঠিত প্রথম টেস্টে ব্রিসবেনে মুখোমুখি হন। কিন্তু খেলায় তিনি কেবলমাত্র রোহন কানহাইকে আউট করেন।[৪] ১/৮৮ বোলিং পরিসংখ্যানে ওভারপ্রতি প্রায় পাঁচ রান দেন ও অস্ট্রেলিয়া ১২৫ রানে পরাজিত হয়। পরাজয়ের পর মলেট দল থেকে বাদ পড়েন।[৩]
১৯৬৯-৭০ মৌসুমে ভারত সফরে ২৮ উইকেট পান। ৩৫ বছর পর অস্ট্রেলিয়ার টেস্ট সিরিজ বিজয়ে প্রভূতঃ ভূমিকা রাখেন তিনি।[৩][৫] বোম্বেতে অনুষ্ঠিত প্রথম টেস্টের প্রথম ইনিংসে ০/৪৩ পান। দ্বিতীয় ইনিংসে উইকেট-রক্ষক ফারুক ইঞ্জিনিয়ার ও নিচেরসারির ব্যাটসম্যান ইরাপল্লী প্রসন্নের উইকেট নিলে ২/২২ লাভ করেন ও দল ৮ উইকেটে বিজয়ী হয়।[৩][৪]
ব্যক্তিগত জীবন
সম্পাদনামৃদুভাষী ও মুখচোরা প্রকৃতির মলেটকে তার দলীয় সঙ্গীরা তাকে ‘রোডি’ ডাকনামে ডাকতেন।[১] খেলোয়াড়ী জীবন শেষে সাংবাদিকতার দিকে ঝুঁকে পড়েন।[১] এছাড়াও, ধারাভাষ্যকার, স্পিন বোলিং কোচ ও লেখক হিসেবে কাজ করেন তিনি। বর্তমানে তিনি শ্রীলঙ্কা ক্রিকেট বোর্ডে কর্মরত ও বছরে তিনবার স্পিন পরামর্শক কোচ হিসেবে ভ্রমণ করে থাকেন।[৬] ভিক্টর ট্রাম্পার ও ক্ল্যারি গ্রিমেটকে ঘিরে জীবনীগ্রন্থ প্রকাশ করেন।[১][২] এছাড়াও, ১৮৬৮ সালে অস্ট্রেলীয় আদিবাসী ক্রিকেট দলের ইংল্যান্ড সফরকে ঘিরে বই প্রকাশ করেন।[৭]
রচনাসমগ্র
সম্পাদনা- ২০০২: Lord's Dreaming: The Story of the 1868 Aboriginal Tour of England and Beyond, a scholarly account of the Australian Aboriginal cricket team in England in 1868[৮] আইএসবিএন ৯৭৮-০-২৮৫-৬৩৬৪০-৮
- ২০০৫: Thommo Speaks Out, a biography of Australian bowler Jeff Thomson আইএসবিএন ৯৭৮-১-৭৪১৭৫-৪৩৫-৩
- ২০০৭: Chappelli Speaks Out, a biography of Australian batsman Ian Chappell আইএসবিএন ৯৭৮-১-৭৪১৭৫-০৩৬-২
- ২০০৮: One of a Kind: the Doug Walters story, a biography of Australian batsman Doug Walters আইএসবিএন ৯৭৮-১-৭৪১৭৫-০২৯-৪
তথ্যসূত্র
সম্পাদনা- ↑ ক খ গ ঘ ঙ Haigh, Gideon। "Ashley Mallett Australia"। cricinfo www.cricinfo.com। সংগ্রহের তারিখ ১৬ জুলাই ২০০৯।
- ↑ ক খ গ ঘ ঙ চ ছ Cashman, Franks, Maxwell, Sainsbury, Stoddart, Weaver, Webster (১৯৯৭)। The A-Z of Australian cricketers। পৃষ্ঠা 184–185।
- ↑ ক খ গ ঘ ঙ চ ছ জ ঝ "Player Oracle AA Mallett"। CricketArchive। সংগ্রহের তারিখ ১৪ মে ২০০৯।
- ↑ ক খ গ ঘ ঙ চ "Player Oracle AA Mallett"। CricketArchive। সংগ্রহের তারিখ ১৪ এপ্রিল ২০১০।
- ↑ "List of match results (by year) Australia - Test matches"। Cricinfo। ২৪ ডিসেম্বর ২০০৭ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৪ ডিসেম্বর ২০০৭।
- ↑ "Mallett joins Sri Lankan set-up"। Australian Broadcasting Corporation www.abc.net.au। ১৫ এপ্রিল ২০০৬। সংগ্রহের তারিখ ১৭ জুলাই ২০০৯।
- ↑ *Mallett, A (২০০২)। Lords' Dreaming: Cricket on the Run - The 1868 Aboriginal Tour of England। আইএসবিএন 0-285-63640-5।
- ↑ "Flags recognise 1868 Aboriginal tour of England"। Cricinfo www.cricinfo.com। ১১ মে ২০০৪। ২০ জুন ২০০৯ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৮ জুলাই ২০০৯।
আরও দেখুন
সম্পাদনাবহিঃসংযোগ
সম্পাদনা- ইএসপিএনক্রিকইনফোতে অ্যাশলে মলেট (ইংরেজি)
- ক্রিকেটআর্কাইভে অ্যাশলে মলেট (সদস্যতা প্রয়োজনীয়) (ইংরেজি)