রে প্রাইস
রেমন্ড উইলিয়াম প্রাইস (ইংরেজি: Ray Price; জন্ম: ১২ জুন, ১৯৭৬) রোডেশিয়ার সলসবারিতে জন্মগ্রহণকারী প্রথিতযশা জিম্বাবুয়ীয় সাবেক আন্তর্জাতিক ক্রিকেট তারকা। জিম্বাবুয়ে ক্রিকেট দলের অন্যতম সদস্য ছিলেন তিনি। ঘরোয়া প্রথম-শ্রেণীর ক্রিকেটে মিডল্যান্ডস, ম্যাশোনাল্যান্ড, ম্যাশোনাল্যান্ড ঈগলস এবং ইংরেজ প্রথম-শ্রেণীর কাউন্টি ক্রিকেটে ওরচেস্টারশায়ার ও ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লীগে মুম্বই ইন্ডিয়ান্সের প্রতিনিধিত্ব করেছেন তিনি। দলে তিনি মূলতঃ ধীরগতিসম্পন্ন বামহাতি অর্থোডক্স বোলার হিসেবে খেলতেন। এছাড়াও, নিচেরসারিতে ডানহাতে ব্যাটিংয়ে পারদর্শীতা দেখিয়েছেন রে প্রাইস। জিম্বাবুয়ের সুপরিচিত গল্ফার নিক প্রাইস তার ভাইপো।
ব্যক্তিগত তথ্য | ||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|
পূর্ণ নাম | রেমন্ড উইলিয়াম প্রাইস | |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
জন্ম | সলসবারি, রোডেশিয়া | ১২ জুন ১৯৭৬|||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
ব্যাটিংয়ের ধরন | ডানহাতি | |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
বোলিংয়ের ধরন | স্লো লেফট আর্ম অর্থোডক্স | |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
ভূমিকা | বোলার | |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
আন্তর্জাতিক তথ্য | ||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
জাতীয় দল | ||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
টেস্ট অভিষেক (ক্যাপ ৪৩) | ৪ ডিসেম্বর ১৯৯৯ বনাম শ্রীলঙ্কা | |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
শেষ টেস্ট | ১৪ মার্চ ২০১৩ বনাম ওয়েস্ট ইন্ডিজ | |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
ওডিআই অভিষেক (ক্যাপ ৬৯) | ১৪ সেপ্টেম্বর ২০০২ বনাম ভারত | |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
শেষ ওডিআই | ৯ ফেব্রুয়ারি ২০১২ বনাম নিউজিল্যান্ড | |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
ওডিআই শার্ট নং | ৭ | |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
ঘরোয়া দলের তথ্য | ||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
বছর | দল | |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
১৯৯৯-২০০৪ | মিডল্যান্ডস | |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
২০০৫–২০০৭ | ওরচেস্টারশায়ার | |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
২০০৭-২০০৮ | ম্যাশোনাল্যান্ড | |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
২০০৯-বর্তমান | ম্যাশোনাল্যান্ড ঈগলস (জার্সি নং ১৫) | |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
২০১১ | মুম্বাই ইন্ডিয়ান্স | |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
খেলোয়াড়ী জীবনের পরিসংখ্যান | ||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
| ||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
উৎস: ইএসপিএনক্রিকইনফো, ২৯ নভেম্বর ২০১৭ |
প্রারম্ভিক জীবনসম্পাদনা
স্বাভাবিক জন্মের দুই মাস পূর্বেই প্রাইস ভূমিষ্ঠ হন ও কয়েক মাস বয়সের প্রাইস মেনিনজাইটিস রোগে আক্রান্ত হন। তার বেঁচে থাকার সম্ভাবনা ছিল এক-চতুর্থাংশ। তবে এ রোগে তিনি পুরোপুরি বধির হয়ে যান। চার বছর বয়সে শ্রবণশক্তির চিকিৎসা করা হলেও গুরুতর সমস্যার সৃষ্টি হয় তার। ফলে তার বয়সীদের তুলনায় বেশ সময় নিয়ে বিদ্যালয়ে ভর্তি হতে হয় তাকে।
বাগানের পিছনে বন্ধুদের নিয়ে প্রথমবারের মতো ক্রিকেট খেলায় অংশগ্রহণ করেন তিনি। প্রাথমিক বিদ্যালয়ে থাকাকালে পেস বোলার হিসেবে অবতীর্ণ হতেন। তবে, মারোন্দেরার কাছে বোর্ডিং স্কুল ওয়াটারশেড কলেজে অধ্যয়নকালে স্পিনের দিকে জোর দেন। ক্রিকেটে তার উত্তরোত্তর দক্ষতা বাড়তে থাকে ও এক পর্যায়ে বিদ্যালয় দলের প্রধান খেলোয়াড়ে পরিণত হন।
ম্যাশোনাল্যান্ড কাউন্টি ডিস্ট্রিক্টস ক্রিকেট দলের নজর কাড়েন তিনি। ১৯৯৫-৯৬ মৌসুমে শৌখিন খেলোয়াড় হিসেবে প্রথম-শ্রেণীর ক্রিকেটে অভিষেক ঘটে তার। এ সময়ে নিজস্ব কর্মজীবন অতিবাহিত করার লক্ষ্যে রেফ্রিজারেটর ও এয়ারকন্ডিশন বিষয়ে প্রশিক্ষণ গ্রহণ করতে থাকেন।
খেলোয়াড়ী জীবনসম্পাদনা
জিম্বাবুয়ে দল নির্বাচকমণ্ডলীকেও প্রাইস চমক দেখান। জিম্বাবুয়ের প্রধান পছন্দের স্পিনার পল স্ট্র্যাং, অ্যাডাম হাকল ও অ্যান্ডি হুইটলের আঘাত ও দূর্বল ক্রীড়াশৈলীর কারণে দল নির্বাচকমণ্ডলী কর্তৃক দলে আহুত হন তিনি। ১৯৯৯-২০০০ মৌসুমে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে অনুষ্ঠিত সিরিজের তৃতীয় টেস্টে তাকে দলে নেয়া হয়। ৪ ডিসেম্বর, ১৯৯৯ তারিখে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে তার টেস্ট অভিষেক ঘটে তার। তবে দলে গড়পড়তা খেলোয়াড়ে পরিণত হন। কখনো তিনি বেশ ভালো খেলেন আবার কখনোবা নয়। তবে, ২০০১-০২ মৌসুমে কিছু সুন্দর ক্রীড়াশৈলী উপহারে সচেষ্ট হন। তন্মধ্যে, বুলাওয়েতে সফরকারী দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে ৫/১৮১ লাভ করেন যা তার প্রথম পাঁচ উইকেট লাভ ছিল। এরপর একই মাঠে সফরকারী পাকিস্তানের বিপক্ষে ৪/১১৬ পান।
২০০৩ সালে ইংল্যান্ড সফরে যান। তার বোলিং দেখে প্রত্যেকেই বেশ চমকপ্রদ হন। ইংরেজ স্পিনার অ্যাশলে জাইলসের কাছ থেকে তিনি সেরা স্পিনার হিসেবে স্বীকৃতি পান।[১] ঐ মৌসুমের শীতে অস্ট্রেলিয়া সফরে যান। সিডনিতে সিরিজের দ্বিতীয় টেস্টে ৬/১২১ নিয়ে বিশ্বমানের বোলারের দিকে ধাবিত হন রে প্রাইস। এরপর ঐ শীতে সফরকারী ওয়েস্ট ইন্ডিজের শক্তিধর ব্যাটিংয়ের বিপক্ষে রুখে দাঁড়ান তিনি। হারারের প্রথম টেস্টে ৬/৭৩ ও ৪/৮ এবং বুলাওয়েতে ৫/১১৯ ও ৪/৩৬ পান। এছাড়াও বাংলাদেশের বিপক্ষে দুই টেস্টে ৮ উইকেট লাভ করে জিম্বাবুয়ের সিরিজ জয়ে ভূমিকা রাখেন।
কাউন্টি ক্রিকেটে অংশগ্রহণসম্পাদনা
জিম্বাবুয়ের ক্রিকেটে রাজনীতির প্রভাবে তিনিও আক্রান্ত হন। তাস্বত্ত্বেও হিথ স্ট্রিকের নেতৃত্বাধীন দলে যোগ দিতে সমর্থ হন। এর কিছুদিন পরই তিনি ওরচেস্টারশায়ার দলের পক্ষে চুক্তিবদ্ধ হন ও ইংল্যান্ডের পক্ষে খেলার ইচ্ছার কথা ঘোষণা করেন।
২০০৬ সালে প্রাইস প্রেস অ্যাসোসিয়েশনে জানান যে, তিনি যোগ্যতা নির্ধারণী সময় পেরুবার পর ইংল্যান্ডের পক্ষে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে খেলতে ইচ্ছুক।[২]
২০০৭ সালে বিস্ময়করভাবে জিম্বাবুয়ে প্রত্যাবর্তন করেন রে প্রাইস। ওল্ড হারারিয়ান্সের পক্ষে জাতীয় লীগের বেশ কিছু খেলায় অংশ নেন। কেউকেউ বিশ্বাস করেন যে, ২০০৭ সালের ক্রিকেট বিশ্বকাপকে ঘিরে জাতীয় দল নির্বাচকমণ্ডলীকে দেখানোর জন্যই তার এ অংশগ্রহণ ছিল। তবে, জিম্বাবুয়ে দলের সদস্য হতে পারেননি তিনি।
২০০৭ মৌসুম শেষে ওরচেস্টারশায়ারের সাথে পুনরায় এক বছর চুক্তি নবায়ণের বিষয়টি প্রত্যাখ্যান করেন তিনি। এরফলে ঐ ক্লাবে সাড়ে তিন বছরের খেলোয়াড়ী জীবনের সমাপণ ঘটে।[৩]
জিম্বাবুয়ে প্রত্যাবর্তনসম্পাদনা
২০০৭ সালের শেষদিকে আনুষ্ঠানিকভাবে জিম্বাবুয়ে দলের সদস্যরূপে প্রত্যাবর্তন ঘটে তার। ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে খেলার জন্য মনোনীত হন। এরপর থেকে তিনি দলের নিয়মিত ও প্রভাববিস্তারকারী খেলোয়াড়ে রূপান্তরিত হন। জিম্বাবুয়ের পরিবেশ পরিস্থিতির উত্তরণ ঘটায় বেশ কয়েকজন বিদ্রোহী খেলোয়াড়ের অন্যতম ছিলেন তিনি। ২৭ খেলায় ৪৫ উইকেট পেয়ে আইসিসি ক্রিকেট র্যাঙ্কিংয়ে তৃতীয় স্থানে উপনীত হন। পাশাপাশি বোলিংয়েও মিতব্যয়ীতা প্রদর্শন করেন।
২০০৯ সালে দক্ষিণ আফ্রিকা, বাংলাদেশ, শ্রীলঙ্কা ও কেনিয়ার বিপক্ষে জিম্বাবুয়ের অংশগ্রহণকৃত সবগুলো ওডিআইয়ে তার অংশগ্রহণ ছিল। তবে, জানুয়ারি মাসে অনুষ্ঠিত ২০১১ সালের মূল আইপিএল নিলামে তিনি অবিক্রিত থাকেন। মুম্বই ইন্ডিয়ান্স কর্তৃপক্ষ তার জন্য সংরক্ষিত ৫০,০০০ ডলারের বিনিময়ে কিনে নেয়। তিনি আঘাতপ্রাপ্ত মইসেস হেনরিক্সের স্থলাভিষিক্ত হন। এরফলে আইপিএলে দ্বিতীয় জিম্বাবুয়ীয় হিসেবে তার অংশগ্রহণ ঘটে।[৪]
২০১১ সালের শেষদিকে দীর্ঘ পাঁচ বছর টেস্ট ক্রিকেট থেকে ফিরে আসার পর বাংলাদেশ, পাকিস্তান ও নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে একমাত্র টেস্টগুলোর তিনটিতেই তার অংশগ্রহণ নিশ্চিত করা হয়। ঐ তিন খেলায় তিনি সর্বমোট দশ উইকেট পেয়েছিলেন।[৫]
তথ্যসূত্রসম্পাদনা
- ↑ The Zimbabweans Lost To Politics XI[স্থায়ীভাবে অকার্যকর সংযোগ]
- ↑ "Price sets sights on England"। Content-uk.cricinfo.com। সংগ্রহের তারিখ ২০১৩-০৮-০৭।
- ↑ "Price rejects new Worcestershire contract"। Content-uk.cricinfo.com। সংগ্রহের তারিখ ২০১৩-০৮-০৭।
- ↑ Staff, ESPNCricinfo (২৩ এপ্রিল ২০১১)। "Ray Price to play for Mumbai Indians at $50,000"। ESPNCricinfo। সংগ্রহের তারিখ ২৩ এপ্রিল ২০১১।
- ↑ "Statistics / Statsguru / RW Price / Test matches"। ESPNcricinfo। সংগ্রহের তারিখ ১৪ জানুয়ারি ২০১২।
আরও দেখুনসম্পাদনা
বহিঃসংযোগসম্পাদনা
- ইএসপিএনক্রিকইনফোতে রে প্রাইস (ইংরেজি)
- ক্রিকেটআর্কাইভে রে প্রাইস (সদস্যতা প্রয়োজনীয়) (ইংরেজি)