ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর উপজেলা
ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর উপজেলা বাংলাদেশের ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার একটি প্রশাসনিক এলাকা।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর | |
---|---|
উপজেলা | |
![]() মানচিত্রে ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর উপজেলা | |
স্থানাঙ্ক: ২৩°৫৭′১৮″ উত্তর ৯১°৭′১৬″ পূর্ব / ২৩.৯৫৫০০° উত্তর ৯১.১২১১১° পূর্ব | |
দেশ | বাংলাদেশ |
বিভাগ | চট্টগ্রাম বিভাগ |
জেলা | ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা |
আয়তন | |
• মোট | ২৩৭.৩৪ বর্গকিমি (৯১.৬৪ বর্গমাইল) |
জনসংখ্যা (২০১১) | |
• মোট | ৫,২১,৯৯৪ |
• জনঘনত্ব | ২,২০০/বর্গকিমি (৫,৭০০/বর্গমাইল) |
সাক্ষরতার হার | |
• মোট | ৫৩.৪% |
সময় অঞ্চল | বিএসটি (ইউটিসি+৬) |
প্রশাসনিক বিভাগের কোড | ২০ ১২ ১৩ |
ওয়েবসাইট | দাপ্তরিক ওয়েবসাইট ![]() |
অবস্থান ও আয়তন
সম্পাদনাব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর উপজেলার আয়তন ২৩৭.৩৪ বর্গ কিলোমিটার (৫৮,৬৪৯ একর)।[১] এ উপজেলার উত্তরে সরাইল উপজেলা, দক্ষিণে আখাউড়া উপজেলা, কসবা উপজেলা, পূর্বে বিজয়নগর উপজেলা, পশ্চিমে নবীনগর উপজেলা ও আশুগঞ্জ উপজেলা।
ইতিহাস
সম্পাদনাসৈয়দ মাহমুদ যে এলাকায় বসবাস করতেন তার নামানুসারে কাজীপাড়া (কাদির একটি রূপ) নামকরণ করা হয় এবং তার মাজার (সমাধি) সেখানেই রয়েছে।[২]
কথিত আছে তাকেই ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার প্রতিষ্ঠাতা হিসেবে ধরা হয়।
তবে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার নাম "ব্রাহ্মণবাড়িয়া" হওয়া নিয়ে স্থানীয়দের মাঝে অনেক মতামত বা আলোচনা থাকলেও। সবচেয়ে প্রসিদ্ধ এবং গ্রহণযোগ্য আলোচনা হলো- কোনো এক সময় ব্রাহ্মণবাড়িয়াতে প্রচুর সনাতন ধর্মের মানুষ বসবাস করতো। (এখনো বিভিন্ন জায়গাতে উল্লেখযোগ্য সনাতন ধর্মালম্বী মানুষ বসবাস করেন)। তখন সনাতন ধর্মালম্বী মানুষদের পূজা বা ধর্মীয় রীতিনীতি সম্পাদনের জন্য ব্রাহ্মণের অভাব দেখা দেয়। তৎকালীন এই অঞ্চলের রাজা, সুদূর কলকাতা থেকে এখানে বেশ কয়েকটি ব্রাহ্মণ পরিবারকে পাঠান বসবাসের জন্য। সেখান থেকেই এই এলাকার নাম হয় ব্রাহ্মণবাড়িয়া।
শুরুতে কয়েকটি পরিবার শহরের কাজীপাড়া ও কান্ধীপাড়া এলাকায় বসবাস করেন। মূলত এই জায়গার নাম ই ছিলো ব্রাহ্মণবাড়িয়া। পরবর্তীতে কালের বিবতর্নে পুরো জেলার নাম হয় ব্রাহ্মণবাড়িয়া।
প্রশাসনিক এলাকা
সম্পাদনাব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর উপজেলায় বর্তমানে ১টি পৌরসভা ও ১১টি ইউনিয়ন রয়েছে। সম্পূর্ণ উপজেলার প্রশাসনিক কার্যক্রম ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর থানার আওতাধীন।
জনসংখ্যার উপাত্ত
সম্পাদনা২০১১ সালের আদমশুমারি অনুযায়ী ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর উপজেলার মোট জনসংখ্যা ৫,২১,৯৯৪ জন। এর মধ্যে পুরুষ ২,৫৮,৫০৩ জন এবং মহিলা ২,৬৩,৪৯১ জন। মোট পরিবার ৯৫,৮০২টি।[১] জনসংখ্যার ঘনত্ব প্রতি বর্গ কিলোমিটারে ২,১৯৯ জন।[৪]
শিক্ষা ব্যবস্থা
সম্পাদনা২০১১ সালের আদমশুমারি অনুযায়ী ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর উপজেলার সাক্ষরতার হার ৫৩.৪%।[১] এখানে রয়েছেঃ
- প্রাথমিক বিদ্যালয় - ১টি;
- মহাবিদ্যালয়-৮ টি;
- উচ্চ বিদ্যালয় - টি;
- মাদ্রাসা - টি।
- এতিম খানা - টি ।
স্বাস্থ্য
সম্পাদনাস্বাস্থ্য সেবাদানের জন্য রয়েছেঃ
- উপজেলা স্বাস্থ্য কেন্দ্র - ১টি;
- জন্ম নিয়ন্ত্রণ কেন্দ্র - টি;
- ক্লিনিক - টি;
- স্যাটেলাইট ক্লিনিক - টি;
- পশু চিকিৎসা কেন্দ্র - ১টি;
- দাতব্য চিকিৎসা কেন্দ্র - টি;
- কৃত্রিম প্রজনন কেন্দ্র - ১টি।
কৃষি
সম্পাদনাএখানকার প্রায় দুই-তৃতীয়াংশ মানুষ কৃষক।
- প্রধান ফসলঃ ধান, গম, বিভিন্ন ধরনের সবজি।
- লুপ্ত বা লুপ্ত প্রায় শস্যাদিঃ কাউন, আউশ ও আমন ধান, পাট ও আড়হর ডাল।
- প্রধান ফলঃ কলা, কাঁঠাল, আম, জাম।
অর্থনীতি
সম্পাদনা- কুটির শিল্প - মৃৎ শিল্প, সূচী-শিল্প।
- রপ্তানি পণ্য - শাক-সবজি।
উল্লেখযোগ্য ব্যক্তি
সম্পাদনা- মুফাসসিরে কোরআন আল্লামা সিরাজুল ইসলাম (বড় হুজুর রহ.) (১৮৭৩ - ২০০৬)
- অদ্বৈত মল্লবর্মণ –– ঔপন্যাসিক এবং সাংবাদিক।
- আবদুর রহমান খান –– প্রাক্তন সমবায় ও পাট মন্ত্রী (পাকিস্তান শাসনামল)।[৫]
- আবদুল কুদ্দুস মাখন –– রাজনীতিবিদ এবং বীর মুক্তিযোদ্ধা।
- আবু সালেহ মোহাম্মদ নাসিম –– বীর বিক্রম খেতাবপ্রাপ্ত বীর মুক্তিযোদ্ধা এবং প্রাক্তন সেনাপ্রধান।
- আল মাহমুদ –– একুশে পদক এবং বাংলা একাডেমি সাহিত্য পুরস্কার প্রাপ্ত আধুনিক বাংলা সাহিত্যের অন্যতম প্রধান কবি।
- ধীরেন্দ্রনাথ দত্ত –– আইনজীবী, ভাষা সৈনিক এবং রাজনীতিবিদ।
- লুৎফুল হাই সাচ্চু –– রাজনীতিবিদ এবং মুক্তিযুদ্ধের ২ ও ৩ নং সেক্টরের গেরিলা উপদেষ্টা।
- হারুন আল রশিদ –– রাজনীতিবিদ এবং আইনজীবী।
- হুমায়ুন কবির –– রাজনীতিবিদ এবং আইনজীবী।[৬]
- হাবিবুর রহমান বীরউত্তম |খেতাবপ্রাপ্ত বীর মুক্তিযোদ্ধা
- অধ্যাপক ড. দেলোয়ার হোসেন- অধ্যাপক, গবেষক, এবং আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিশেষজ্ঞ
উল্লেখযোগ্য স্থান ও স্থাপনা
সম্পাদনা- জামিয়া সালেহা নাদিয়াতুল কুরআন কেন্দ্রীয় মহিলা মাদরাসা, ভাদুঘর (১৯৯৩)
- ভোলাচং খেলার মাঠ, রামরাইল, ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর।
- ধীরেন্দ্রনাথ দত্তের বাড়ি
- সোহাতা বড় জামে মসজিদ (১৯৪০/১৯৪২)
- ভাদুঘর শাহী মসজিদ (১৬৬৩)
- আবি রিভার পার্ক
- উলচাপাড়া (উত্তরপাড়া শাহী) জামে মসজিদ (১৭২৭-২৮)
- সৌধ হিরন্ময় (ব্রাহ্মণবাড়িয়া বুদ্ধিজীবী স্মৃতিসৌধ)
- শহীদ মুক্তিযোদ্ধাদের নাম ফলক সংবলিত স্মৃতিস্তম্ভ
- ব্রাহ্মণবাড়িয়া শহীদ স্মৃতিসৌধ (অবকাশ পার্ক)
- ব্রাহ্মণবাড়িয়া পাবলিক লাইব্রেরি (১৯৬৫) ও আর্কাইভ মিউজিয়াম
- গাঁওগেরাম রেস্তোরাঁ ও বিনোদন পার্ক
- ব্রাহ্মণবাড়িয়া কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার
- ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা পরিষদ ভাস্কর্য
- ব্রাহ্মণবাড়িয়া (পুরাতন) সিটি কলেজ ভবন ও গেট (সাবেক পাটমন্ত্রীর বাড়ি)
- পুরনো বাড়ি (গোকর্ণ রোড)
- দক্ষিণ পৈরতলা খান বাড়ি জামে মসজিদ
- দক্ষিণ পৈরতলা বধ্যভূমি
- মনুমেন্ট অব অদ্বৈত মল্লবর্মন, গোকর্ণ লঞ্চ ঘাট ও তিতাস নদী
- সৈয়দ বাড়ি জামে মসজিদ
- শাহ সূফি হযরত মাওলানা সৈয়দ কাজী মাহমুদ শাহ মাজার কমপ্লেক্স
- সৈয়দ মঞ্জিল
- আল-জামিয়া ইসলামিয়া ইউনূছিয়া মাদ্রাসা (১৯১৪)
- তোফায়েল আজম মনুমেন্ট
- হযরত শাহসুফী আলহাজ্ব মোঃ কালা মিয়া চিশতী ,হযরত মোছাম্মত আনোয়ারা চিশতী মাজার কমপ্লেক্স ও চিশতীয়া জামে মসজিদ এবং সংলগ্ন মাজার
- বঙ্গবন্ধু স্কয়ার (জাতীয় বীর আবদুল কুদ্দুস মাখন পৌর মুক্তমঞ্চ,কাচারি পুকুর এলাকা)
- ১২ ছাত্র নেতার স্মৃতিসৌধ
- শ্রীশ্রী মহাদেব মন্দির
- জাগরণ (দেয়াল ভাস্কর্য)
- পুরাতন আদালত (কাচারী) ভবন (১৮৮১)
- শহীদ ধীরেন্দ্রনাথ দত্ত ভাষা মঞ্চ ও স্মৃতি পাঠাগার
- সুরসম্রাট দি আলাউদ্দিন খাঁ সঙ্গীতাঙ্গন ও জাদুঘর (১৯৫৬)
- অন্নদা সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় প্রশাসনিক ভবন (১৮৭৫)
- দানবীর লোকনাথ রায় চৌধুরী ময়দান কমপ্লেক্স
- কাঙাল নাথ জমিদার বাড়ি
- রহমান মঞ্জিল
- পুরনো ভবন (আনসার মোক্তার বাড়ি) ও আনসার মোক্তার বাড়ি জামে মসজিদ (খৈয়াসার)
- শ্রী শ্রী কালভৈরব মন্দির
- মেড্ডা মহাশ্মশান
- মিয়া বাড়ি (অষ্টগ্রাম)
- ব্রাহ্মণবাড়িয়া মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতাল
- তিতাস গ্যাসক্ষেত্র (১৯৬২)
- তেলিনগর বড় জামে মসজিদ
বিবিধ
সম্পাদনা- এনজিও
ব্রাক, আশা, গ্রামীণ ব্যাংক সক্রিয় এনজিওদের মধ্যে অন্যতম।
- হাট-বাজার ও মেলা
জনপ্রতিনিধি
সম্পাদনাসংসদীয় আসন | জাতীয় নির্বাচনী এলাকা[৭] | সংসদ সদস্য[৮][৯][১০][১১][১২] | রাজনৈতিক দল |
---|---|---|---|
২৪৫ ব্রাহ্মণবাড়িয়া-৩ | ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর উপজেলা এবং বিজয়নগর উপজেলা | উবায়দুল মোকতাদির চৌধুরী | বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ |
আরও দেখুন
সম্পাদনাতথ্যসূত্র
সম্পাদনা- ↑ ক খ গ "ইউনিয়ন পরিসংখ্যান সংক্রান্ত জাতীয় তথ্য" (পিডিএফ)। web.archive.org। Wayback Machine। ৮ ডিসেম্বর ২০১৫ তারিখে আসল থেকে আর্কাইভকৃত। সংগ্রহের তারিখ ৩০ নভেম্বর ২০১৯।
- ↑ "Brahmanbaria Sadar Upazila"। Wikipedia (ইংরেজি ভাষায়)। ২০২২-০৪-২৭।
- ↑ "মাছিহাতা ইউনিয়ন"। machihata.brahmanbaria.gov.bd। সংগ্রহের তারিখ ২০২২-০৮-০৬।
- ↑ "ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার তথ্য উপাত্ত" (পিডিএফ)। web.archive.org। Wayback Machine। ১৩ নভেম্বর ২০১৪ তারিখে আসল থেকে আর্কাইভকৃত। সংগ্রহের তারিখ ৩০ নভেম্বর ২০১৯।
- ↑ "আইনমন্ত্রী হিসেবে শপথ নিতে পারেন আনিসুল হক"। risingbd.com। ২০১৪-০১-১২। সংগ্রহের তারিখ ২০২০-০১-২২।
- ↑ "এবার মন্ত্রিত্ব"। www.m.mzamin.com। সংগ্রহের তারিখ ২০২০-০১-২২।
- ↑ "Election Commission Bangladesh - Home page"। www.ecs.org.bd।
- ↑ "বাংলাদেশ গেজেট, অতিরিক্ত, জানুয়ারি ১, ২০১৯" (পিডিএফ)। ecs.gov.bd। বাংলাদেশ নির্বাচন কমিশন। ১ জানুয়ারি ২০১৯। ২ জানুয়ারি ২০১৯ তারিখে মূল (পিডিএফ) থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২ জানুয়ারি ২০১৯।
- ↑ "সংসদ নির্বাচন ২০১৮ ফলাফল"। বিবিসি বাংলা। ২৭ ডিসেম্বর ২০১৮। সংগ্রহের তারিখ ৩১ ডিসেম্বর ২০১৮।
- ↑ "একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ফলাফল"। প্রথম আলো। ৩১ ডিসেম্বর ২০১৮ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৩১ ডিসেম্বর ২০১৮।
- ↑ "জয় পেলেন যারা"। দৈনিক আমাদের সময়। ৩১ ডিসেম্বর ২০১৮ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৩১ ডিসেম্বর ২০১৮।
- ↑ "আওয়ামী লীগের হ্যাটট্রিক জয়"। সমকাল। ২৭ ডিসেম্বর ২০২০ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৩১ ডিসেম্বর ২০১৮।