বব এপলইয়ার্ড
রবার্ট বব এপলইয়ার্ড, এমবিই (ইংরেজি: Bob Appleyard; জন্ম: ২৭ জুন, ১৯২৪ - মৃত্যু: ১৭ মার্চ, ২০১৫) ইয়র্কশায়ারের ব্রাডফোর্ডে জন্মগ্রহণকারী বিখ্যাত ইংরেজ আন্তর্জাতিক ক্রিকেট তারকা ছিলেন। ইংল্যান্ড ক্রিকেট দলের পক্ষে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অংশগ্রহণ করেছেন। ইংল্যান্ড ক্রিকেট দলের পক্ষে টেস্ট ক্রিকেটে অংশগ্রহণ করেছেন।
![]() ১৯৫৪ সালের সংগৃহীত স্থিরচিত্রে বব এপলইয়ার্ড | ||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
ব্যক্তিগত তথ্য | ||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|
পূর্ণ নাম | রবার্ট বব এপলইয়ার্ড | |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
জন্ম | ব্রাডফোর্ড, ইয়র্কশায়ার, ইংল্যান্ড | ২৭ জুন ১৯২৪|||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
মৃত্যু | ১৭ মার্চ ২০১৫ হারোগেট, উত্তর ইয়র্কশায়ার, ইংল্যান্ড | (বয়স ৯০)|||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
ব্যাটিংয়ের ধরন | ডানহাতি | |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
বোলিংয়ের ধরন | অফ ব্রেক; ডানহাতি ফাস্ট-মিডিয়াম | |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
ভূমিকা | বোলার | |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
আন্তর্জাতিক তথ্য | ||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
জাতীয় দল |
| |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
টেস্ট অভিষেক (ক্যাপ ৩৭৩) | ১ জুলাই ১৯৫৪ বনাম পাকিস্তান | |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
শেষ টেস্ট | ৭ জুন ১৯৫৬ বনাম অস্ট্রেলিয়া | |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
খেলোয়াড়ী জীবনের পরিসংখ্যান | ||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
| ||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
উৎস: ইএসপিএনক্রিকইনফো.কম, ৫ মার্চ ২০১৭ |
একই বোলিং ভঙ্গীমা নিয়ে ফাস্ট-মিডিয়াম সুইঙ্গার বা সিমার ও অফ-স্পিন বল করতে সক্ষমতার অধিকারী ছিলেন বব এপলইয়ার্ড। কাউন্টি ক্রিকেটে ইয়র্কশায়ার ক্রিকেট দলের প্রতিনিধিত্ব করেন তিনি।[১]
প্রারম্ভিক জীবনসম্পাদনা
যক্ষ্মা রোগে আক্রান্ত হওয়ায় তরুণ ক্রিকেটার এপলইয়ার্ডকে এগারো মাস হাসপাতালে কাটাতে হয়। হাসপাতালে থাকা অবস্থায় ক্রিকেট বল বিছানার চাদরের তলায় রেখে নাড়াচড়া করে তার আঙ্গুলকে শক্তিশালী করেন। এরপর তিনি পুনরায় হাঁটতে শুরু করেন ও তার বাম ফুসফুসের ঊর্ধ্বাংশ কেটে ফেলতে হয়েছিল।
ইয়র্কশায়ারের স্থানীয় ক্রিকেট ক্লাবে সফলতা পাবার পর ২৬ বছর বয়সে ১৯৫০ সালে কাউন্টি ক্রিকেটে দলের পক্ষে তিন খেলায় অংশ নেন। সারে ও গ্লুচেস্টারশায়ারের বিপক্ষে কাউন্টি চ্যাম্পিয়নশীপের খেলায় ছয় উইকেট দখল করেন। ১৯৫১ সালে অ্যালেক্স কক্সনের লীগ ক্রিকেটে চলে যাওয়া ও ব্রায়ান ক্লোজের সামরিক বাহিনীর চাকুরীতে যোগদানের কারণে ইয়র্কশায়ার দল সাধারণমানের পর্যায়ে চলে যাবার আশঙ্কা থাকলেও এপলইয়ার্ডের বোলিং দলকে আশার বাণী শোনায়। চার বছরের মধ্যেই তিনি তার প্রথম ২০০-উইকেট পান। এরফলে দলটি পয়েন্ট তালিকার প্রায় শীর্ষে আরোহণ করে। প্রতি উইকেট দখলে তিনি মাত্র ১৪ রান দেন।[১]
২০১৩ সাল পর্যন্ত ইয়র্কশায়ারের পক্ষে এক মৌসুমে জর্জ ম্যাকাউলি, উইলফ্রেড রোডস, জর্জ হার্স্ট ও বব এপলইয়ার্ড ২০০ উইকেট লাভের মাইলফলক স্পর্শ করতে পেরেছিলেন।[২]
খেলোয়াড়ী জীবনসম্পাদনা
১৯৫০-এর দশকে অন্যতম সেরা ইংরেজ বোলার ছিলেন তিনি। বিংশ শতকে ইংল্যান্ডের ইতিহাসে তাদের সেরা বোলিং আক্রমণ সূচীত হয়। কিন্তু ১৯৫১ মৌসুমে আঘাতপ্রাপ্তি ও অসুস্থতার কারণে তার খেলোয়াড়ী জীবনের অকাল সমাপ্তি ঘটে। সীমিত টেস্ট খেলোয়াড়ী জীবনে প্রতি একান্ন বলে একটি উইকেট পেয়েছিলেন। এছাড়াও প্রথম-শ্রেণীর ক্রিকেটে মাত্র ১৫.৪৮ রান গড়ে ৭০৮ উইকেট দখল করেন।
১৯৫২ সালে একটিমাত্র খেলায় অংশগ্রহণের পর শারীরিক অসুস্থতার কারণে পুরো বছরসহ ১৯৫৩ সালে মাঠের বাইরে অবস্থান করেন। কিন্তু ১৯৫৪ সালের শুরুতে তাকে পুনরায় খেলার মতো যোগ্য মনে না করা হলেও আকস্মিক উন্নতিতে ট্রেন্ট ব্রিজে অনুষ্ঠিত পাকিস্তানের বিপক্ষে তার টেস্ট অভিষেক ঘটে। ঐ টেস্টে ব্রায়ান স্ট্যাদামের পর বোলিং গড়ে তিনি দ্বিতীয় স্থানে ছিলেন। প্রথম ইনিংসে তিনি ৫ উইকেট পেয়েছিলেন।[৩]
এ প্রসঙ্গে উইজডেন লিখেছে: ‘ইন-সুইঙ্গার, অফ-স্পিনার ও লেগ-কাটারে ভরপুর ছিল তাঁর বোলিং। এরফলে তিনি বলকে প্রয়োজনমাফিক ফ্লাইট ও পেস প্রদানে সক্ষমতার পরিচয় বহন করেছেন।’ এরই ধারাবাহিকতায় হাটনের অধিনায়কত্বে জিম লেকারকে পাশ কাটিয়ে ১৯৫৪-৫৫ মৌসুমে অ্যাশেজ সফরের জন্য মনোনীত হন তিনি। অ্যাডিলেডে অনুষ্ঠিত অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে অনুষ্ঠিত চতুর্থ টেস্টে প্রচণ্ড গরমে তিনি দারুণভাবে তার দর্শনীয় বোলিং উপহার দেন। ইংল্যান্ডের আবহাওয়ার তুলনায় নিউজিল্যান্ড সফরেও সফলকাম ছিলেন। মার্চে ওয়েলিংটনে নিউজিল্যান্ড দলকে তাদের টেস্ট ক্রিকেটের ইতিহাসে সর্বনিম্ন রান তুলতে বোলিং আক্রমণে নেতৃত্ব দেন। বৃষ্টিবিঘ্নিত খেলায় তিনি মাত্র ৭ রানে ৪ উইকেট দখল করেন। ঐ খেলায় নিউজিল্যান্ড মাত্র ২৬ রানে অল-আউট হয়।
সম্মাননাসম্পাদনা
১৯৫২ সালে উইজডেন কর্তৃক বর্ষসেরা ক্রিকেটার মনোনীত হলেও সম্মাননা অনুষ্ঠানে তিনি উপস্থিত থাকতে পারেননি। ১৯৯৭ সালে ব্রাডফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সম্মানসূচক ডক্টরেট ডিগ্রী লাভ করেন। আশি বছর বয়স পর্যন্ত ইয়র্কশায়ারের সভাপতির দায়িত্ব পালন করেন ও পরবর্তীকালে ক্লাবের আজীবন সদস্যরূপে মনোনীত হন।
অবসরসম্পাদনা
ক্রিকেট খেলা থেকে অবসর নেয়ার পর ব্যবসায়ে সফলতা লাভ করেন তিনি। এছাড়াও ব্রাডফোর্ডে একটি ক্রিকেট স্কুল প্রতিষ্ঠা করেন। তরুণ ক্রিকেটারদের মানোন্নয়নে স্যার লিওনার্ড হাটন ফাউন্ডেশন স্কিমের আওতায় এক মিলিয়নেরও অধিক পাউন্ড-স্টার্লিং সংগ্রহ করেন। নিজ আত্মজীবনী থেকে সংগৃহীত অর্থও এতে তিনি দান করেন। উত্তর ইয়র্কশায়ারের হারোগেট এলাকয় নিজ গৃহে ৯০ বছর বয়সে তার দেহাবসান ঘটে।[৪]
তথ্যসূত্রসম্পাদনা
- ↑ ক খ Bateman, Colin (1993)। If The Cap Fits। Tony Williams Publications। পৃষ্ঠা 14। আইএসবিএন 1-869833-21-X। সংগ্রহের তারিখ 20 April 2011-->। এখানে তারিখের মান পরীক্ষা করুন:
|সংগ্রহের-তারিখ=
(সাহায্য) - ↑ Pope, p. 166.
- ↑ "2nd Test: England v Pakistan at Nottingham, Jul 1-5, 1954"। espncricinfo। সংগ্রহের তারিখ ১৩ ডিসেম্বর ২০১১।
- ↑ Waters, Chris। "Death of Yorkshire cricket legend Bob Appleyard"। Yorkshire Post। সংগ্রহের তারিখ ১৭ মার্চ ২০১৫।
আরও দেখুনসম্পাদনা
বহিঃসংযোগসম্পাদনা
- ইএসপিএনক্রিকইনফোতে বব এপলইয়ার্ড (ইংরেজি)
- ক্রিকেটআর্কাইভে বব এপলইয়ার্ড (সদস্যতা প্রয়োজনীয়) (ইংরেজি)