পাইকগাছা উপজেলা
পাইকগাছা হলো বাংলাদেশের খুলনা জেলার দক্ষিনে অবস্থিত একটি উপজেলা।দক্ষিণ খুলনার প্রাণকেন্দ্র হলো এই উপজেলা।খুলনা জেলার বৃহত্তম পৌরসভা হলো পাইকগাছা পৌরসভা।পৃথিবী বিখ্যাত ম্যানগ্রোভ বন সুন্দরবন এর কোল ঘেষে গড়ে ওঠা এই উপজেলায় রয়েছে নয়নাভিরাম প্রাকৃতিক সৌন্দর্য।এছাড়া এই উপজেলার অর্থনীতির অন্যতম ভিত্তি হলো মৎস্য শিল্প।সাদা সোনা নামে খ্যাত বিভিন্ন জাতের চিংড়ির চাষ হয়ে থাকে এই উপজেলায়।
পাইকগাছা | |
---|---|
উপজেলা | |
পাইকগাছা টাউন পাইকগাছা টেকনিক্যাল ইন্সটিটিউট পাইকগাছা আড়ৎ সংলগ্ন মসজিদ ২০২৪ ছাত্র আন্দোলন কর্মসূচী পাইকগাছা পাইকগাছা উপজেলা মডেল মসজিদ সম্ভাবনাময় পাইকগাছা | |
মানচিত্রে পাইকগাছা উপজেলা | |
স্থানাঙ্ক: ২২°৩৫′৩১″ উত্তর ৮৯°২০′১৩″ পূর্ব / ২২.৫৯১৯৪° উত্তর ৮৯.৩৩৬৯৪° পূর্ব | |
দেশ | বাংলাদেশ |
বিভাগ | খুলনা বিভাগ |
জেলা | খুলনা জেলা |
আসন | খুলনা-৬ |
সরকার | |
• সংসদ সদস্য | মোঃ রশীদুজ্জামান |
আয়তন | |
• মোট | ৩৮৩.৮৭ বর্গকিমি (১৪৮.২১ বর্গমাইল) |
জনসংখ্যা (২০১১)[১] | |
• মোট | ২,৪৭,৯৮৩ |
• জনঘনত্ব | ৬৫০/বর্গকিমি (১,৭০০/বর্গমাইল) |
সাক্ষরতার হার | |
• মোট | ৫২.৮০% |
সময় অঞ্চল | বিএসটি (ইউটিসি+৬) |
প্রশাসনিক বিভাগের কোড | ৪০ ৪৭ ৬৪ |
ওয়েবসাইট | দাপ্তরিক ওয়েবসাইট |
ইতিহাস
সম্পাদনা১৯৭১ সালের ৪ জুলাই পাইকগাছা উপজেলার প্রসিদ্ধ ব্যবসা কেন্দ্র কপিলমুনি বাজারে রায়বাহাদুর বিনোদ বিহারী সাধুর বাড়ীতে রাজাকারের ক্যাম্প স্থাপিত হয়। ১৯৭১ সালের ৬ ডিসেম্বর ঐ রাজাকার ক্যাম্পটি দখলের জন্য যুদ্ধকালীন কমান্ডার রহমত উল্যাহ দাদু ও তার সহযোগী ইউনুস আলী, স,ম, বাবর আলী, আবুলকালাম আজাদ, শাহাদৎ হোসেন বাচ্চু ও যুদ্ধাহত খোকার নেতৃত্বে ঐ রাজাকার ক্যাম্পটি দখলের সাড়াসী অভিযান শুরু করেন। তিন দিন একটানা যুদ্ধের পর রাজাকার ও শান্তি কমিটির ১৫৬ জন সদস্যকে হত্যার মাধ্যমে ৯ ডিসেম্বর কপিলমুনি যুদ্ধের অবসান হয়। ৭ নভেম্বর ১৯৮২ সালে প্রশাসনিক বিকেন্দ্রীকরনের আওতায় পাইকগাছা উপজেলায় উন্নিত হয়।
নামকরণ
সম্পাদনাসরল খাঁ যে এলাকায় বাস করতেন তার নাম হয় সরল। গরুর রাখালদের আবাসস্থল‘গোপালপুর’ গরু রাখার জন্য যেখানে গোশালা ছিল । সে গ্রামের নাম ‘ঘোষাল,’ গদাইপুরের নিকটে যেখানে সৈন্যরা গড়কেটে ডাকাতদের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তুলেছিল । সেটা ‘গড়পার’,প্রাসাদের বান্দিদের আবাসস্থল ‘বান্দিকাটি’, প্রাসাদে বাতি জ্বালানো কার্যে নিয়োজিত কর্মচারীরা যে এলাকায় থাকত ‘বাতিখালী’,গাছে চড়ে পাইক-বরকন্দাজরা পাহারা দিত বলে ‘পাইকগাছা’ রাজা কৃষ্ণ চন্দ্র এর শাসন এলাকা কৃষ্ণনগর নামে খ্যাত বর্তমান মিল কাটাখালী নামে পরিচিত এবং লোক- লস্কর দিয়ে যে দীঘি খনন করা হয়েছিল সে এলাকা ‘লস্কর’ গ্রাম হিসেবে পরিচিত। এভাবেই পাইকগাছা উপজেলার নাম করণ করা হয়।[২]
অবস্থান ও আয়তন
সম্পাদনাখুলনা জেলা সদর হতে পাইকগাছা উপজেলা ৬৫ কিঃ মিঃ দক্ষিণে অবস্থিত। পাইকগাছা উপজেলার আয়তন ৩৮৩.১৫ বর্গ কিঃ মিঃ। ইহা ২২°২৮’’ এবং ২২°৪৩’’ উত্তর-দক্ষিণ দ্রাঘিমাংশ এবং ৮৯°১৪’’এবং ৮৯°২৮’’ পূর্ব পশ্চিম দ্রাঘিমার মধ্যে পাইকগাছা উপজেলা অবস্থিত। এই উপজেলার উত্তরে সাতক্ষীরা জেলার তালা উপজেলা ও ডুমুরিয়া উপজেলা, পূর্বে বটিয়াঘাটা উপজেলা ও দাকোপ উপজেলা, পশ্চিমে সাতক্ষীরা জেলার তালা উপজেলা ও আশাশুনি উপজেলা। খুলনা জেলা শহর হতে সড়ক পথে পাইকগাছা উপজেলার দুরত্ব ৬৫ কি.মি.। [২]
প্রশাসনিক এলাকা
সম্পাদনা- ইউনিয়ন পরিষদ
নদ-নদী
সম্পাদনাপাইকগাছা উপজেলায় রয়েছে উল্লেখযোগ্য সংখ্যক নদী। এখানকার নদীগুলো হচ্ছে শিবসা নদী, কপোতাক্ষ নদ, ভদ্রা নদী, দেলুতি নদী ।[৩][৪]
জনসংখ্যার উপাত্ত
সম্পাদনাশিক্ষা
সম্পাদনা- লক্ষ্মীখোলা কলেজিয়েট স্কুল
- পাইকগাছা সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়
- পাইকগাছা ভিলেজ মাধ্যমিক বিদ্যালয়
- টাউন মাধ্যমিক বিদ্যালয়
- পাইকগাছা সরকারি কলেজ
- ই.সি.ডি কিন্ডারগার্টেন স্কুল
- ফাতেমা প্রিক্যাডেট কিন্ডারগার্টেন স্কুল
- পাইকগাছা সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়
- আবু হোসেন কলেজ
- লস্কর কড়ুলিয়া মাধ্যমিক বিদ্যালয়
- লস্কর পাইকগাছা ইসলামিয়া দাখিল মাদ্রাসা
- শহীদ গফুর সরকারী প্রাথমিক বিদ্যাযলয়
- কপোতাক্ষী মাধ্যমিক বিদ্যালয়
- আর.কে.বি.কে.হরিশ্চন্দ্র কলেজিয়েট ইনস্টিটিউশন
- রাড়ুলী ভূবন মোহিনী মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয়
- কে ডি এস মাধ্যমিক বিদ্যালয়
- শহীদ কামরুল মেমোরিয়াল মাধ্যমিক বিদ্যালয়
- কপিলমুনি কলেজ
- কপিলমুনি জাফর আউলিয়া ফাজিল ডিগ্রি মাদ্রাসা
- শহীদ জিয়া বালিকা বিদ্যালয়
- কপিলমুনি সহচরী বিদ্যা মন্দির স্কুল অ্যান্ড কলেজ
- কালিনগর কলেজ
- হরিঢালী মহিলা কলেজ
- ফসিয়ার রহমান মহিলা ডিগ্রি কলেজ
- চাঁদখালী কলেজ
- খড়িয়া নবারুন মাধ্যমিক বিদ্যালয়, খড়িয়া
- বাসাখালী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়
- গড়ইখালী আলমশাহী ইনস্টিটিউট
অর্থনীতি
সম্পাদনাপাইকগাছার অর্থনীতি মূলত কৃষিনির্ভর। এখানকার অধিকাংশ জমি এক ফসলি। শুধু মাত্র বর্ষা মৌসুমে চাষ হয়। তাছাড়াও চিংড়ি মাছ চাষ বাগদা চিংড়ির চাষ হয়। প্রধান কৃষি ফসল ধান, আলু, শাকসবজি। বিলুপ্ত বা বিলুপ্তপ্রায় ফসলাদি তিল, তিসি, কাউন, আখ। প্রধান ফল-ফলাদি: আম, জাম, কলা, কাঁঠাল, নারিকেল, পেঁপে, সুপারি, তরমুজ, লিচু, পেয়ারা, জামরুল, লেবু ইত্যাদি।
উল্লেখযোগ্য ব্যক্তিত্ব
সম্পাদনা- এ্যাড.শেখ মোহাম্মদ নুরুল হক সাবেক জাতীয় সংসদ সদস্য ও রাজনীতিবিদ।
- শহীদ এম এ গফুর- সাবেক এমএনএ, ভাষা সৈনিক ও মুক্তিযুদ্ধের সংগঠক।
- রায় সাহেব বিনোদ বিহারী সাধু- আধুনিক কপিলমুনির রূপকার ও সহচরী বিদ্যামন্দিরের প্রতিষ্ঠতা।
- মেহের মুসুল্লী-দানবীর।
- শামসুর রহমান - সাবেক এমপি ও শিক্ষাবিদ।
- সতীশ চক্রবর্তী - ব্রিটিশ বিরোধী বিপ্লবী।
- আক্তারুজ্জামান বাবু: বাংলাদেশী রাজনীতিবিদ ও সংসদ সদস্য।
- শাহ মুহাম্মদ রুহুল কুদ্দুস - সাবেক এমপি ও শিক্ষাবিদ।
- তপন কান্তি ঘোষ: আমলা।
- প্রফুল্ল চন্দ্র রায় - বিজ্ঞানী, শিক্ষাবিদ ও রসায়নবিদ।
- কাজী ইমদাদুল হক - ঔপন্যাসিক।
- শেখ রাজ্জাক আলী: সাবেক আইন প্রতিমন্ত্রী ও ডিপুটি প্সীকার এবং স্পীকার।
- এ্যাড. সোহরাব আলী সানা- সাবেক জাতীয় সংসদ সদ্যস ও রাজনীতিবিদ।
- স ম বাবর আলী - মুক্তিযোদ্ধা, জাতীয় সংসদের সাবেক কনিষ্ঠ এমপি, সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান।
বিবিধ
সম্পাদনাআরও দেখুন
সম্পাদনাতথ্যসূত্র
সম্পাদনা- ↑ বাংলাদেশ জাতীয় তথ্য বাতায়ন (জুন ২০১৪)। "এক নজরে পাইকগাছা"। গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার। সংগ্রহের তারিখ ২৭ জানুয়ারী ২০১৫।[স্থায়ীভাবে অকার্যকর সংযোগ]
- ↑ ক খ "পাইকগাছা উপজেলা"
|ইউআরএল=
এর মান পরীক্ষা করুন (সাহায্য)। http (ইংরেজি ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ২০১৯-০১-২৫।[স্থায়ীভাবে অকার্যকর সংযোগ] - ↑ ড. অশোক বিশ্বাস, বাংলাদেশের নদীকোষ, গতিধারা, ঢাকা, ফেব্রুয়ারি ২০১১, পৃষ্ঠা ৩৮৯, আইএসবিএন ৯৭৮-৯৮৪-৮৯৪৫-১৭-৯।
- ↑ মানিক মোহাম্মদ রাজ্জাক (ফেব্রুয়ারি ২০১৫)। বাংলাদেশের নদনদী: বর্তমান গতিপ্রকৃতি। ঢাকা: কথাপ্রকাশ। পৃষ্ঠা ৬০৯। আইএসবিএন 984-70120-0436-4।