আশাশুনি উপজেলা

সাতক্ষীরা জেলার একটি উপজেলা

আশাশুনি বাংলাদেশের সাতক্ষীরা জেলার অন্তর্গত একটি উপজেলা

আশাশুনি
উপজেলা
মানচিত্রে আশাশুনি উপজেলা
মানচিত্রে আশাশুনি উপজেলা
স্থানাঙ্ক: ২২°৩৩′০.০০″ উত্তর ৮৯°১০′৫.১৬″ পূর্ব / ২২.৫৫০০০০০° উত্তর ৮৯.১৬৮১০০০° পূর্ব / 22.5500000; 89.1681000 উইকিউপাত্তে এটি সম্পাদনা করুন
দেশবাংলাদেশ
বিভাগখুলনা বিভাগ
জেলাসাতক্ষীরা জেলা
সরকার
 • উপজেলা চেয়ারম্যানজনাব এ বি এম মোস্তাকিম (বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ)
আয়তন
 • মোট৩৬৭ বর্গকিমি (১৪২ বর্গমাইল)
জনসংখ্যা (২০০১)[]
 • মোট২,৯২,২৯২
 • জনঘনত্ব৮০০/বর্গকিমি (২,১০০/বর্গমাইল)
সাক্ষরতার হার
 • মোট৬৫%
সময় অঞ্চলবিএসটি (ইউটিসি+৬)
প্রশাসনিক
বিভাগের কোড
৪০ ৮৭ ০৪
ওয়েবসাইটদাপ্তরিক ওয়েবসাইট উইকিউপাত্তে এটি সম্পাদনা করুন

অবস্থান ও আয়তন

সম্পাদনা

আশাশুনি উপজেলার উত্তরে তালা উপজেলা, সাতক্ষীরা সদর উপজেলা, দক্ষিণে শ্যামনগর উপজেলা, পূর্বে খুলনা জেলার পাইকগাছা উপজেলাকয়রা উপজেলা, পশ্চিমে সাতক্ষীরা জেলার কালীগঞ্জ উপজেলাদেবহাটা উপজেলা

প্রশাসনিক এলাকা

সম্পাদনা

আশাশুনি উপজেলার নামকরণ

সম্পাদনা

আশাশুনি [] বাংলাদেশের খুলনা বিভাগের সাতক্ষীরা [] জেলার একটি উপজেলা। এ উপজেলার নামকরণ নিয়ে চমৎকার একটি লোকগাথা প্রচলিত রয়েছে। ব্রিটিশ শাসনামলে বর্তমান আশাশুনি এলাকা ছিল প্রেসিডেন্ট বিভাগের ২৪ পরগনা জেলার ভালুকা পরগনার অন্তর্গত। সে সময় এই অঞ্চলটি ছিল মূলত পৃথিবীর সবচেয়ে বড় ম্যানগ্রোভ বন সুন্দরবনের[] অংশ। গভীর জঙ্গলে বেস্টিত এ অঞ্চলে বন্যপ্রাণী ও হিংস্র জন্তু-জানোয়ার ছাড়া মানুষের বসতি ছিল না। পরবর্তীতে এসব জঙ্গল কেটে মানুষের বসতী গড়ে উঠে। সৃষ্টি হয় আশাশুনি উপজেলার।

এ অঞ্চলের নামকরণজনবসতি গড়ে ওঠার প্রাথমিক ইতিহাসে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রেখেছেন একজন কামেল ফকির, যার নাম ছিল আব্দুস সোবহান। কথিত আছে, তিনি তাঁর কিছু শিষ্য নিয়ে আশাশুনি মৌজার (তৎকালীন সুন্দববন) এই জঙ্গলে প্রবেশ করেন। শিষ্যদের নিয়ে ঘুরতে ঘুরতে দুটি বড় গাছ দেখতে পান। পরে গাছদুটির মধ্যে একটির নিচে তিনি তাঁর হাতের লাঠি, যেটিকে ‘‘আশা’’ বলা হতো, সেটি মাটিতে পুঁতে আস্তানা স্থাপন করেন।

এ এলাকায় তখন কাঠুরিয়া, মৌয়ালী, এবং বাওয়ালীরা বনের কাঠ, গোলপাতা, মধু ইত্যাদি সংগ্রহ করতে আসত। তারা বন্যপ্রাণীর আক্রমণ থেকে রক্ষা পেতে ফকির আব্দুস সোবহানের কাছস থেকে দোয়া নিতেন। দোয়া নিতে আসা মানুষরা তাঁকে ‘‘আশাগাড়া ফকির’’ নামে ডাকত। পাবর্তীতে ফকিরের আস্তানার কথা স্থানীয় মানুষের মধ্যে ছড়িয়ে পড়তে থাকে। ধীরে ধীরে আশাশুনি নামকরণে রূপান্তরিত হয়। কথিত আছে- প্রথমে ‘‘আশা’’ থেকে ‘‘শুনি’’ এবং পরে ‘‘আশাশুনি’’ নামটি প্রচলিত হয়।

এভাবে উল্লিখিত ফকিরের আস্তানার চারপাশে ধীরে ধীরে জনবসতি গড়ে উঠে। বন কাটার মাধ্যমে কৃষিজমি তৈরি হয়। বিভিন্ন ফসলের আবাদ শুরু হয়। স্থায়ীভাবে বসবাস শুরু করে মানুষ। পরবর্তীতে ব্রিটিশ শাসনামলে এ অঞ্চলে পরিচালিত জরিপে এটিকে ‘‘আশাশুনি’’ নামে পরিচিত করা হয়। তৎকালীন অফিস ও প্রশাসনিক কাগজপত্রেও এই নামটি রেকর্ডভুক্ত করা হয়। তখন থেকে অদ্যাবধি অফিস আদালতের কাগজপত্রে ‘‘আশাশুনি” নামের রেকর্ড দেখতে পাওয়া যায়। আশাশুনির ইতিহাস শুধু নামকরণেই সীমাবদ্ধ নয়, এটি একটি প্রাকৃতিক ও সামাজিক ঐতিহ্যবাহী এলাকা।

উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স

সম্পাদনা

আশাশুনি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স [] ৫০ শয্যাবিশিষ্ট সরকারি হাসপাতাল। এটি সাতক্ষীরা জেলার একটি গুরুত্বপূর্ণ স্বাস্থ্যসেবা কেন্দ্র, যা আশপাশের ইউনিয়ন এবং গ্রামাঞ্চলের জনগণকে সাশ্রয়ী ও মানসম্মত স্বাস্থ্যসেবা প্রদান করে। প্রতিদিন গড়ে শতাধিক রোগী এখানে চিকিৎসা নিতে আসেন। সকাল ৮টা থেকে দুপুর ২টা পর্যন্ত বহির্বিভাগ খোলা থাকে। এ ছাড়া ২৪/৭ জরুরি বিভাগ খোলা থাকে।যেকোনো ধরনের দুর্ঘটনা বা জরুরি অবস্থামোকাবিলায় প্রশিক্ষিত চিকিৎসক ও নার্সদের দল কাজ করে।

তথ্যসূত্র

সম্পাদনা
  1. বাংলাদেশ জাতীয় তথ্য বাতায়ন (জুন ২০১৪)। "এক নজরে আশাশুনি"। গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার। ৯ মার্চ ২০১৪ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৫ ফেব্রুয়ারি ২০১৫ 
  2. "আশাশুনির ইতিহাস" 
  3. "সাতক্ষীরা জেলা" 
  4. "সুন্দরবন" 
  5. "আশাশুনি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স"। ৯ মার্চ ২০১৪ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৫ ফেব্রুয়ারি ২০১৫ 

বহিঃসংযোগ

সম্পাদনা