ডেভিড হাসি

অস্ট্রেলীয় ক্রিকেটার

ডেভিড জন হাসি (জন্ম: ১৫ জুলাই, ১৯৭৭) পশ্চিম অস্ট্রেলিয়ার মাউন্ট ললে এলাকায় জন্মগ্রহণকারী অস্ট্রেলীয় ক্রিকেটার। অস্ট্রেলিয়া ক্রিকেট দলের অন্যতম খেলোয়াড় ডেভিড হাসি মূলতঃ ডানহাতি ব্যাটসম্যান। এছাড়াও তিনি ডানহাতে অফ-ব্রেক বোলিংয়ে দক্ষ। অস্ট্রেলিয়ার সাবেক ক্রিকেটার মাইকেল হাসি তার বড় ভাই।

ডেভিড হাসি
ব্যক্তিগত তথ্য
পূর্ণ নামডেভিড জন হাসি
জন্ম (1977-07-15) ১৫ জুলাই ১৯৭৭ (বয়স ৪৬)
মাউন্ট ললে, পশ্চিম অস্ট্রেলিয়া, অস্ট্রেলিয়া
ডাকনামহাস, বোম্বার, বি.ও.এম.
উচ্চতা১.৮০ মিটার (৫ ফুট ১১ ইঞ্চি)
ব্যাটিংয়ের ধরনডানহাতি
বোলিংয়ের ধরনডানহাতি অফ-ব্রেক
ভূমিকাব্যাটসম্যান
সম্পর্কমাইকেল হাসি (ভাই)
আন্তর্জাতিক তথ্য
জাতীয় দল
ওডিআই অভিষেক
(ক্যাপ ১৬৭)
৪ জুলাই ২০০৮ বনাম ওয়েস্ট ইন্ডিজ
শেষ ওডিআই২৩ জানুয়ারি ২০১৩ বনাম শ্রীলঙ্কা
ওডিআই শার্ট নং২৯
টি২০আই অভিষেক
(ক্যাপ ২৯)
১ ফেব্রুয়ারি ২০০৮ বনাম ভারত
শেষ টি২০আই৫ অক্টোবর ২০১২ বনাম ওয়েস্ট ইন্ডিজ
ঘরোয়া দলের তথ্য
বছরদল
২০০৩-বর্তমানভিক্টোরিয়া (জার্সি নং ৮)
২০০৪-২০১৩নটিংহ্যামশায়ার (জার্সি নং ২৯)
২০০৮-২০১০কলকাতা নাইট রাইডার্স
২০১১নর্দার্ন ডিস্ট্রিক্টস
২০১১-২০১৩কিংস ইলাভেন পাঞ্জাব (জার্সি নং ২৯)
২০১১-বর্তমানমেলবোর্ন স্টার্স (জার্সি নং ৮)
২০১৪-বর্তমানচেন্নাই সুপার কিংস
খেলোয়াড়ী জীবনের পরিসংখ্যান
প্রতিযোগিতা ওডিআই টি২০আই এফসি লিস্ট এ
ম্যাচ সংখ্যা ৬৯ ৩৯ ১৬৯ ২৪২
রানের সংখ্যা ১,৭৯৬ ৭৫৬ ১২,৬৯৭ ৭,৫৯৭
ব্যাটিং গড় ৩২.৬৫ ২২.৯০ ৫২.৯০ ৩৯.৫৬
১০০/৫০ ১/১৪ ০/৩ ৪২/৫৬ ১০/৫২
সর্বোচ্চ রান ১১১ ৮৮* ২৭৫ ১৪০*
বল করেছে ৮০২ ৩৬১ ২,৭৩৪ ২,২০৩
উইকেট ১৮ ১৯ ২৮ ৪৭
বোলিং গড় ৩৮.৭৭ ২০.৬৩ ৫৯.৭৮ ৪১.১৪
ইনিংসে ৫ উইকেট
ম্যাচে ১০ উইকেট n/a n/a n/a
সেরা বোলিং ৪/২১ ৩/২৫ ৪/১০৫ ৪/২১
ক্যাচ/স্ট্যাম্পিং ২৯/– ২৪/– ২২৭/– ১১৫/–
উৎস: Cricinfo, ২৭ মার্চ ২০১৩

প্রথম-শ্রেণীর ক্রিকেট সম্পাদনা

২০০৩-০৪ মৌসুমে ডেভিড হাসি’র ক্রিকেট প্রতিভা প্রথমবারের মতো বৈশ্বিক ক্রিকেট অঙ্গনে ছড়িয়ে পড়ে। তার প্রথম পূর্ণাঙ্গ প্রথম-শ্রেণীর ক্রিকেটে ভিক্টোরিয়ান বুশর‌্যাঞ্জার্স দলের পক্ষে নিউক্যাসলে চমকপ্রদ অপরাজিত ২১২ রান করেন।[১] এরফলে তার দল চতুর্থ ইনিংসে রেকর্ডসংখ্যক ৪৫৫/৭ করে ও নিউ সাউথ ওয়েলস দলকে পরাজিত করতে সমর্থ হয়। ঐ মৌসুমে তিনি ৬১.০০ গড়ে ৮৫৭ রান করেন। কিন্তু, ২০০৪-০৫ মৌসুমে চারদিনের ক্রিকেটে তার ব্যাটিং কিছুটা স্তিমিত হয়ে পড়লে পুরা কাপে ভিক্টোরিয়ান দল থেকে বাদ পড়েন। এরফলে হাসি ক্রিকেট ভিক্টোরিয়ার কাছে ওয়েস্টার্ন অস্ট্রেলিয়ায় যোগ দেবার কথা বললে তার এ আবেদন ব্যর্থ হয়।[১] ২০০৫-০৬ মৌসুমেও এ ধারা অব্যাহত থাকে ও মাত্র ৩০.০০ গড়ে ৫০০ রান করেন। কিন্তু একদিনের খেলায় তিনি ৭৬.৪২ গড়ে ৫৩৫ রান করেন। তন্মধ্যে কুইন্সল্যান্ডের বিপক্ষে ১৩০ রান করেন। এ সাফল্যে তিনি রাজ্যের সীমিত ওভারের খেলায় বর্ষসেরা খেলোয়াড়ের পুরস্কারে ভূষিত হন।

সাসেক্সে হরশ্যাম ক্রিকেট ক্লাবের মাধ্যমে ইংরেজ ক্রিকেটে খেলোয়াড়ী জীবন শুরু করেন হাসি। কাউন্টি ক্রিকেটে নটিংহ্যামশায়ার দলে ২০০৪ সাল থেকে খেলেছেন। ২০০৪ ইংরেজ গ্রীষ্মকালীন মৌসুমে ১২০৮ রান করেন। ২০০৫ সালেও চমৎকার ১২৩১ রান করেছিলেন। তন্মধ্যে দুইটি সেঞ্চুরি ও একটি ডাবল সেঞ্চুরি ছিল। ওয়ারউইকশায়ারের বিপক্ষে তার অপরাজিত ২৩২ রান সংগ্রহের ফলে নটিংহ্যামশায়ার চ্যাম্পিয়নশীপ জয় করে। পরবর্তীতে তিনি নিজস্ব সেরা ২৭৫ রান করেন মাত্র ২২৭ বলে ১৪টি ছক্কার সাহায্যে।[২] ঐ বছর ৯৩.৭৬ গড়ে ১,২১৯ রান করেন।[১] ২০০৮ ও ২০০৯ মৌসুমেও নটিংহ্যামশায়ার দলের সাথে চুক্তিতে আবদ্ধ ছিলেন। কিন্তু অস্ট্রেলিয়া জাতীয় দলের সাথে প্রতিজ্ঞাবদ্ধ হওয়ায় ২০০৮ মৌসুম শেষেই দল থেকে নিজেকে প্রত্যাহার করেন নেন।[৩]

আন্তর্জাতিক ক্রিকেট সম্পাদনা

২০০৪ সালে অস্ট্রেলিয়া এ ক্রিকেট দলের পক্ষে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে চারটি একদিনের আন্তর্জাতিকে অংশ নেন।[১] সেপ্টেম্বর, ২০০৭ সালে অস্ট্রেলিয়া এ দলের হয়ে পাকিস্তান সফরে যান। সেখানে তিনি দুইটি শতক হাঁকান। ১ ফেব্রুয়ারি, ২০০৮ তারিখে মেলবোর্ন ক্রিকেট গ্রাউন্ডে সফরকারী ভারতের বিপক্ষে তার টুয়েন্টি২০ আন্তর্জাতিকে অভিষেক ঘটে। কিন্তু ব্যাটিংয়ের প্রয়োজন না পড়লেও খেলায় তিনি একটি উইকেট ও একটি ক্যাচ নেন।

২০০৮ মৌসুমে ওয়েস্ট ইন্ডিজ সফরে যায় অস্ট্রেলিয়া দল। ৪ জুলাই, ২০০৮ তারিখে বাসেতেরে এলাকায় অবস্থিত ওয়ার্নার পার্ক স্পোর্টিং কমপ্লেক্সে অনুষ্ঠিত চতুর্থ একদিনের আন্তর্জাতিকে তার অভিষেক ঘটে। খেলায় তিনি ৫২ রান করেন ও ছোট ভাই মাইকেল হাসি’র সাথে ৫০ রানের জুটি গড়েন। ৫ম একদিনের আন্তজাতিকে মাত্র ১৯ বলে অর্ধ-শতক করে নতুন জাতীয় রেকর্ড স্থাপন করেন। ঘটনাক্রমে একই খেলার শুরুতে উইকেট-কিপার লুক রঙ্কি মাত্র ২১ বলে অর্ধ-শতক করলেও কয়েক মিনিটের ব্যবধানে হাসি তা ভেঙ্গে ফেলেন।

২৮ আগস্ট, ২০০৯ তারিখে স্কটল্যান্ড দলের বিপক্ষে তার প্রথম ওডিআই সেঞ্চুরি করেন। তার ১১১ রানের এ ইনিংসটি ৮৭ বলে আসে। ২০১০ সালে অনেকগুলো টুয়েন্টি২০ আন্তজাতিকে অংশ নিলেও পরবর্তী ওডিআইয়ে অংশ নিতে দীর্ঘ সময় অপেক্ষা করতে হয়।[৪] ১৬ জানুয়ারি, ২০১১ তারিখে মেলবোর্ন ক্রিকেট গ্রাউন্ডে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে ১ম ওডিআইয়ের জন্য মনোনীত হন।[৫] ইংল্যান্ডের ইনিংসে তিনি ছয় ওভারে ৪২ রান দিয়ে ২ উইকেট নেন।[৬] কিন্তু অস্ট্রেলিয়া দল জয়ের জন্য প্রয়োজনীয় রান সংগ্রহ করায় তাকে ব্যাটিং করতে হয়নি।

২০১০-১১ মৌসুম শেষে প্রথম-শ্রেণীর ক্রিকেটে তার ব্যাটিং গড় ছিল ৫৫.২৭ যা সবিশেষ উল্লেখযোগ্য। তা স্বত্ত্বেও অস্ট্রেলিয়া টেস্ট দলে খেলার সৌভাগ্য অর্জন করেননি। ভারতের বাইরে একমাত্র ব্যাটসময় হিসেবে প্রথম-শ্রেণীর ক্রিকেটে একমাত্র ব্যাটসম্যান হিসেবে ৫৪-এর অধিক গড়ে রান সংগ্রহ করেন। কিন্তু তিনি কখনো টেস্ট দলে ঠাঁই পাননি।

২০১১-১২ মৌসুমে অস্ট্রেলিয়ায় অনুষ্ঠিত ত্রি-দেশীয় সিরিজে ভারত ও শ্রীলঙ্কা দল অংশ নেয়। সেখানেও তিনি ৫৪.৮৮ গড়ে ৪৩৯ রান করে তৃতীয় সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহক হন।[৭]

তথ্যসূত্র সম্পাদনা

  1. Cricinfo: David Hussey
  2. Cricinfo: Match scorecard Nottinghamshire vs. Essex, Trent Bridge 2007
  3. "Hussey to play no part"। ৭ অক্টোবর ২০০৮ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৪ অক্টোবর ২০১৪ 
  4. "International Twenty20 Matches played by David Hussey"। Cricket Archive। সংগ্রহের তারিখ ১৬ জানুয়ারি ২০১০ 
  5. "One-Day International Matches played by David Hussey"। Cricket Archive। ২২ ডিসেম্বর ২০১০ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৬ জানুয়ারি ২০১১ 
  6. "Scorecard: 1st ODI: Australia v England at Melbourne, 16 January 2011"। Cricinfo। সংগ্রহের তারিখ ১৬ জানুয়ারি ২০১১ 
  7. "সংরক্ষণাগারভুক্ত অনুলিপি"। ১০ মার্চ ২০১২ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৪ অক্টোবর ২০১৪ 

বহিঃসংযোগ সম্পাদনা