জয়নাল আবেদীন (রাজনীতিবিদ)
জয়নাল আবেদীন যিনি ভিপি জয়নাল না বেশি পরিচিত। (জন্ম: ১২ জানুয়ারি ১৯৫৬) একজন বাংলাদেশী রাজনীতিবিদ। তিনি ফেনী-২ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য। [১][২] তিনি বিএনপি চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়ার রাজনৈতিক উপদেষ্টা।
অধ্যাপক জয়নাল আবেদীন | |
---|---|
ফেনী-২ আসনের সংসদ সদস্য | |
কাজের মেয়াদ ৩ মার্চ ১৯৮৮ – ৬ ডিসেম্বর ১৯৯০ | |
পূর্বসূরী | জয়নাল হাজারী |
উত্তরসূরী | জয়নাল হাজারী |
কাজের মেয়াদ ১ অক্টোবর ২০০১ – ৫ জানুয়ারি ২০১৪ | |
পূর্বসূরী | জয়নাল হাজারী |
উত্তরসূরী | নিজাম উদ্দিন হাজারী |
ব্যক্তিগত বিবরণ | |
জন্ম | ফলেশ্বর গ্রাম, ফেনী, পূর্ব পাকিস্তান, (বর্তমান বাংলাদেশ) | ১২ জানুয়ারি ১৯৫৬
জাতীয়তা | বাংলাদেশী |
রাজনৈতিক দল | বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল |
অন্যান্য রাজনৈতিক দল | জাসদ |
দাম্পত্য সঙ্গী | শাহানা আক্তার (বি. ১৯৮০) |
সন্তান | ২ ছেলে ও ২ মেয়ে |
পিতামাতা |
|
প্রাক্তন শিক্ষার্থী | |
ডাকনাম | ভিপি জয়নাল |
প্রাথমিক জীবন
সম্পাদনাজয়নাল আবেদীন ১২ জানুয়ারি ১৯৫৬ সালে তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানের ফেনীর ফলেশ্বর গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তার পিতা চান মিয়া আসাম বেঙ্গল রেলওয়ের একজন কর্মকর্তা (১৯১১-১৯৪৫) ছিলেন। মাতা অজিবেননেছা ছিলেন গৃহিনী। পিতা-মাতার ৫ সন্তানের মধ্যে জয়নাল সর্বকনিষ্ঠ।
তিনি ১৯৫৯ সালে ফেনী জেলার কাজিরবাগ সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষা সমাপ্তির পর ১৯৬৪ সালে ফেনী সরকারী পাইলট হাই স্কুল থেকে এসএসসি এবং ১৯৬৯ সালে ফেনী সরকারী কলেজ থেকে এইচএসসি ও ১৯৭২ সালে বিএ পাশ করেন। ১৯৭৬ সালে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় থেকে রাষ্ট্রবিজ্ঞানে এমএ ডিগ্রী লাভ করেন।
কর্মজীবন
সম্পাদনাজয়নাল আবেদীন ব্যবসার মাধ্যমে কর্মজীবন শুরু করেন। তিনি প্রথম শ্রেনীর ঠিকাদার হন এবং চট্টগ্রামে তার একটি ইনডেন্টিং ফার্ম এবং ফেনীতে একটি ব্রিক ফিল্ডের ব্যবসা ছিল। পাশাপাশি ১৯৭৭ সালে তিনি নোয়াখালী সোনাইমুড়ী কলেজে রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগে অধ্যাপনা করেন।
রাজনৈতিক জীবন
সম্পাদনাছাত্রবস্থায় জয়নাল রাজনীতিতে জড়িয়ে পড়েন। ১৯৬২ সালে ফেনী সরকারী পাইলট হাই স্কুলের ছাত্র থাকাকালীন হামিদুর রহমান শিক্ষা কমিশন বাতিলের দাবীতে সারাদেশের ন্যায় ফেনীতে বিক্ষোভ ও রাজপথে আন্দোলন করতে গিয়ে প্রথম পুলিশের হাতে গ্রেফতার হন। তিনি ১৯৬৪-১৯৬৫ সাল পর্যন্ত বৃহত্তর নোয়াখালী জেলার ছাত্রদলের সহ-সম্পাদক ছিলেন। ১৯৬৬ সালে ঐতিহাসিক ছয়দফা আন্দোলন করতে গিয়ে তিনি পুলিশি হামলার শিকার হন এবং গ্রেফতার হয়ে নোয়াখালী কারাগারে কারাবন্দী ছিলেন। ১৯৭০ সালে জেলে থাকা অবস্থায় ফেনী কলেজ ছাত্র সংসদের ভিপি হিসেবে জয়লাভ করে "ভিপি জয়নাল" নামে পরিচিতি লাভ করেন।
১৯৭২ সালে জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল (জাসদ) গঠিত হলে তিনি কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য এবং ফেনী জেলার প্রতিষ্ঠাতা সাধারণ সম্পাদক হিসেবে ১৯৯৬ সালের মাঝামাঝি পর্যন্ত ২৪ বছর দায়িত্ব পালন করেন।
১৯৯৬ সাল থেকে ২০০৯ সাল পর্যন্ত ১৪ বছর জেলা বিএনপির সাধারন সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। তিনি বিএনপি চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়ার উপদেষ্টা মন্ডলীর সদস্য।
মুক্তিযুদ্ধে ভূমিকা
সম্পাদনা১৯৭১ সালে ফেনী সরকারী কলেজের ভিপি থাকার কারণে তিনি সর্বদলীয় স্বাধীন বাংলা ছাত্র সংগ্রাম পরিষদের সভাপতি নির্বাচিত হন। তিনি ২ রা মার্চ ১৯৭১ সালে ফেনী সরকারী কলেজ থেকে পাকিস্তানের পতাকা নামিয়ে বাংলাদেশের পতাকা উত্তোলন করেন।
ভারতের উত্তর প্রদেশে দেরাধুন ক্যান্টনমেন্ট এ সামরিক প্রশিক্ষণ নিয়ে আগরতলা হয়ে উদয়পুর বেইস কেম্পে অবস্তান আসেন। দেশে এসে তিনি জেলা জোনাল কমান্ডার (বিএলএফ) নিযুক্ত হন। তার নেতৃত্বে ৬ ডিসেম্বর ১৯৭১ সালে ফেনী শত্রু মুক্ত হয়।
সংসদ সদস্য
সম্পাদনাতিনি ১৯৮৮ সালে চতুর্থ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ফেনী-২ আসনে জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল (জাসদ) থেকে প্রথম সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। ১৯৯৭ সালে ভিপি জয়নাল জাসদ ছেড়ে বিএনপিতে যোগ দেন। পরবর্তী ২০০১ সালে অষ্টম জাতীয় সংসদ এবং ২০০৮ সালে নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনেও সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছিলেন। [৩][৪][৫] তিনি অর্থ, বস্ত্র, পূর্ত ও মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রনালয়ের সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।
১৯৯১ সালের পঞ্চম ও ১২ জুন ১৯৯৬ সালের সপ্তম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ফেনী-২ আসন থেকে বাংলাদেশ সমাজতান্ত্রিক দল (খালেকুজ্জামান) থেকে প্রার্থী হয়ে তিনি পরাজিত হয়েছিলেন।
হয়রানী
সম্পাদনাভিপি জয়নাল ২০১৮ সালের ৩০শে ডিসেম্বর জাতীয় সংসদ নির্বচনে প্রার্থী ছিলেন। ভোট গ্রহণের দিন বাংলাদের দুটি জাতীয় পত্রিকায় নামীদামী কোম্পানির মোবাইল ফোন সেটের ওপর 'ডিসকাউন্ট' অফার দিয়ে বিজ্ঞাপন ছাপানো হয়। যাতে ভিপি জয়নাল আবেদিনের ব্যক্তিগত নাম্বার ব্যবহার করা হয়। ‘পত্রিকায় যে বিজ্ঞাপন ছাপা হয় তাতে বলা হয়, ১৭,৯৯৯ টাকার শাওমি রেডমি নোট-৬ ডিসকাউন্ট দিয়ে বিক্রি হবে ৭,০০০ টাকায়।যে আইফোন-৮ এর দাম ৯২,০০০ টাকা সেটি বিক্রি হবে মাত্র ৩২,০০০ টাকায়’ এতে অনেক গ্রাহক ভিপি জয়নালকে ফোন দিতে থাকেন। আর তার নাম্বারগুলো ব্যস্ত হয়ে পড়ে এবং তিনি নির্বাচনে কর্মরত নেতাকর্মীদের সাথে যোগাযোগ করতে ব্যর্থ হন। গণমাধ্যম বলেছে নির্বাচনের সময় প্রার্থীকে এভাবে ফোন করে হয়রানীর নজির আগে কখনো দেখা যায়নি। জয়নালের দুটি মোবাইল নাম্বার ছাড়াও আরও একটি ফোন নাম্বার দেয়া হয়েছে যেটি এক সময় ব্যবহার করতেন ফেনী-৩ আসনের সাবেক সাংসদ মুহাম্মদ মোশাররফ হোসেন। [৬][৭]
পারিবারিক জীবন
সম্পাদনাভিপি জয়নাল ৮ জানুয়ারী ১৯৮০ সালে ফেনীর ফলেশ্বর গ্রামের কৃষি কর্মকর্তা মমতাজ উদ্দীন আহম্মেদ মজুমদারের কন্যা শাহানা আক্তারকে বিয়ে করেন। এই দম্পতীর ২ ছেলে ও ২ মেয়ে। বড় ছেলে জাবেদ ইকবাল, ছোট ছেলে রাশেদ ইকবাল ও বড় মেয়ে শামিমা আক্তার ও ছোট মেয়ে রোকসানা আক্তার। চারজনই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এম.এ ডিগ্রী লাভ করেন।
তথ্যসূত্র
সম্পাদনা- ↑ "Police implicate BNP men in attacks on Khaleda"। Prothom Alo। সংগ্রহের তারিখ ২৫ ডিসেম্বর ২০১৮।
- ↑ "Dozens of BNP aspirants submit nomination papers in Feni"। Dhaka Tribune। ২০ নভেম্বর ২০১৮। সংগ্রহের তারিখ ২৫ ডিসেম্বর ২০১৮।
- ↑ "৪র্থ জাতীয় সংসদে নির্বাচিত মাননীয় সংসদ-সদস্যদের নামের তালিকা" (পিডিএফ)। জাতীয় সংসদ। বাংলাদেশ সরকার। ৮ জুলাই ২০১৯ তারিখে মূল (পিডিএফ) থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৫ অক্টোবর ২০১৯।
- ↑ "৮ম জাতীয় সংসদে নির্বাচিত মাননীয় সংসদ-সদস্যদের নামের তালিকা" (পিডিএফ)। জাতীয় সংসদ। বাংলাদেশ সরকার। ১৮ সেপ্টেম্বর ২০১৮ তারিখে মূল (পিডিএফ) থেকে আর্কাইভ করা।
- ↑ "৯ম জাতীয় সংসদে নির্বাচিত মাননীয় সংসদ-সদস্যদের নামের তালিকা"। জাতীয় সংসদ। বাংলাদেশ সরকার। ২০১৬-১১-২৭ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০১৯-১০-১৫।
- ↑ "ভোটের দিনে যেভাবে হেনস্থা হলেন ভিপি জয়নাল"। বিবিসি বাংলা (ইংরেজি ভাষায়)। ২০১৯-০১-০৩। সংগ্রহের তারিখ ২০১৯-১০-১৫।
- ↑ "পত্রিকায় বিজ্ঞাপন দিয়ে বিএনপির প্রার্থীকে হেনস্তা!"। দৈনিক যুগান্তর। সংগ্রহের তারিখ ২০১৯-১০-১৫।
এই নিবন্ধটি অসম্পূর্ণ। আপনি চাইলে এটিকে সম্প্রসারিত করে উইকিপিডিয়াকে সাহায্য করতে পারেন। |