আলফ্রেড হার্টলি

ইংরেজ ক্রিকেটার

লেফট্যানেন্ট আলফ্রেড হার্টলি (ইংরেজি: Alfred Hartley; জন্ম: ১১ এপ্রিল, ১৮৭৯ - মৃত্যু: ৯ অক্টোবর, ১৯১৮) মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নিউ অরলিন্স এলাকায় জন্মগ্রহণকারী বিখ্যাত প্রথম-শ্রেণীর ইংরেজ ক্রিকেট তারকা ছিলেন। ১৯০৭ থেকে ১৯১৪ সময়কালে ল্যাঙ্কাশায়ার দলের পক্ষে প্রথম-শ্রেণীর ইংরেজ কাউন্টি ক্রিকেটে অংশগ্রহণ করেছিলেন।[১] দলে তিনি মূলতঃ ডানহাতি উদ্বোধনী ব্যাটসম্যান হিসেবে খেলতেন।

আলফ্রেড হার্টলি
ব্যক্তিগত তথ্য
জন্ম(১৮৭৯-০৪-১১)১১ এপ্রিল ১৮৭৯
নিউ অরলিন্স, লুইজিয়ানা, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র
মৃত্যু৯ অক্টোবর ১৯১৮(1918-10-09) (বয়স ৩৯)
মাইসেমি, ফ্রান্স
ব্যাটিংয়ের ধরনডানহাতি
ভূমিকাব্যাটসম্যান
আন্তর্জাতিক তথ্য
জাতীয় দল
ঘরোয়া দলের তথ্য
বছরদল
১৯০৭ - ১৯১৪ল্যাঙ্কাশায়ার
খেলোয়াড়ী জীবনের পরিসংখ্যান
প্রতিযোগিতা টেস্ট এফসি
ম্যাচ সংখ্যা ১১৬
রানের সংখ্যা ৫০৪৯
ব্যাটিং গড় ২৭.৭৪
১০০/৫০ -/- ৬/৩৯
সর্বোচ্চ রান ২৩৪
বল করেছে - ৭৫
উইকেট -
বোলিং গড় - ৬১.০০
ইনিংসে ৫ উইকেট - -
ম্যাচে ১০ উইকেট - -
সেরা বোলিং - ১/৩৯
ক্যাচ/স্ট্যাম্পিং -/- ৩৯/-
উৎস: ইএসপিএনক্রিকইনফো.কম, ২৯ মে ২০১৯

প্রথম-শ্রেণীর ক্রিকেট সম্পাদনা

১৯০৭ সালের গ্রীষ্মে ল্যাঙ্কাশায়ারের পক্ষে তিনটি যাচাই-বাছাইয়ের খেলায় অংশ নিয়ে দ্বিতীয় একাদশ থেকে উত্তরণ ঘটান। দ্বিতীয় একাদশের পক্ষে ৩৫ গড়ে ৫৬৬ রান তুলেন। তিনি ল্যাঙ্কাশায়ার কর্তৃপক্ষের নির্বাচনকে যথার্থরূপ ধারনে অগ্রসর হন। ছয় ইনিংসে ১২৬ রান করেন। বছরের পর বছর প্রথম-শ্রেণীর খেলায় আরও উত্তরণ ঘটান ও দলে স্থান নিশ্চিত করে নেন।

১৯০৭ থেকে ১৯১৪ সময়কাল পর্যন্ত আলফ্রেড হার্টলির খেলোয়াড়ী জীবন চলমান ছিল। ১১৬টি খেলায় অংশ নিয়ে ২৭.৭৪ গড়ে ৫০৪৯ রান তুলেন। নয়টি শতরানের ইনিংস খেলেন। বল হাতে নিয়ে একটিমাত্র উইকেট লাভ করেছিলেন। ঘরোয়া ক্রিকেটে চমৎকার ক্রীড়াশৈলী প্রদর্শন করলেও কোন টেস্ট খেলায় অংশগ্রহণের সৌভাগ্য হয়নি তার। ১৯০৭ সালে প্রথম-শ্রেণীর ক্রিকেটে অভিষেক ঘটে আলফ্রেড হার্টলির।

পরপর তিন মৌসুমে সহস্রাধিক রান সংগ্রহ করেছিলেন। ১৯০৮ ও ১৯০৯ সালে মানানসই গড়ে সহস্র রানের মাইলফলক স্পর্শ করেছিলেন। ১৯০৮ সালে ১,০৫৩ ও ১৯০৯ সালে ৩৬ গড়ে ১,১২৯ রান করেন। কেবলমাত্র জন শার্প তার তুলনায় এগিয়েছিলেন। আর. এইচ. স্পুনার নামেমাত্র গড়ে চব্বিশ খেলার মধ্যে ছয়টিতে অংশ নিয়ে এগিয়েছিলেন। কিন্তু, ১৯১০ সালে পূর্বের সাফল্যকে ব্যাপকভাবে ছাঁপিয়ে যান। ইনিংস প্রতি ৩৭ গড়ে ১,৫৮৫ রান তুলেছিলেন।

১৯১০ সালে ওল্ড ট্রাফোর্ডে অত্যন্ত দূর্বলমানের দল সমারসেটের বিপক্ষে ২৩৪ রানের বড় ধরনের ইনিংস খেলেন। এ পর্যায়ে দ্বিতীয় উইকেট জুটিতে জনি টিল্ডসলের সাথে ম্যানচেস্টারে অনুষ্ঠিত খেলায় ২৯৫ রান ও তৃতীয় উইকেটে জ্যাক শার্পের সাথে ১৭৫ রান যুক্ত করেছিলেন।[২] এরপর ফিরতি খেলায় সমারসেটের বাথে আবারও অপরাজিত ১২৬ রানের সেঞ্চুরি করেছিলেন। লিচেস্টারে লিচেস্টারশায়ারের বিপক্ষে ১৬৮ রান তুলেন। অন্যান্য খেলার তুলনায় এ খেলাটি তার সেরা খেলারূপে বিবেচিত হয়। শেষের খেলাটিতে বিল শিপম্যানের বোলিং জনি টিল্ডসলে ও রেজি স্পুনারের তুলনায় ভালোমানের ছিল। সাড়ে চার ঘণ্টা হার্টলি একাগ্রতার সাথে রক্ষণাত্মকভাবে মোকাবেলা করেন।

ফলশ্রুতিতে, ওভাললর্ডসে অনুষ্ঠিত জেন্টলম্যান বনাম প্লেয়ার্সের খেলার জন্যে তাকে মনোনীত করা হয়। প্রথম খেলায় খুব কমই ভূমিকা রাখেন। কিন্তু, দ্বিতীয় খেলায় ২৪ ও ৩৫ রানের মূল্যবান ইনিংস উপহার দিয়েছিলেন। ঐ খেলাটি নিম্নমূখী রানের খেলা ছিল। কোন খেলোয়াড়ই অর্ধ-শতকের কোটা স্পর্শ করতে পারেননি। এ ঊনষাট রান তুলতে প্রায় সাড়ে তিন ঘণ্টাকাল ক্রিজে অবস্থান করেছিলেন। উইজডেন সম্পাদক তার এ সফলতাকে স্বীকৃতি দেন ও ১৯১১ সালের উইজডেন সংস্করণে অন্যতম বর্ষসেরা ক্রিকেটার হিসেবে তাকে মনোনীত করেন।

মূল্যায়ন সম্পাদনা

১৯০৭ সালের পূর্ব-পর্যন্ত ক্রিকেটামোদীদের কাছে বেশ অপরিচিত ছিলেন। ল্যাঙ্কাশায়ারের সর্বশ্রেষ্ঠ ব্যাটসম্যানদের কেউ না হলেও কাউন্টি দলটিতে সংক্ষিপ্তকাল অবস্থান করে প্রথম একাদশের অমূল্য খেলোয়াড়ে পরিণত হয়েছিলেন। শক্তিশালী রক্ষণব্যূহ গড়ে তোলার কারণে আলবার্ট ওয়ার্ডের যোগ্য উত্তরসূরী হিসেবে পরিগণিত হয়েছিলেন। খাঁটিমানের রক্ষণাত্মক ভঙ্গীমায় ডানহাতি উদ্বোধনী ব্যাটসম্যান হিসেবে ওয়েস্ট ইন্ডিজ থেকে সংক্ষিপ্ত সময়ের জন্যে ইংরেজ কাউন্টি ক্রিকেটে অংশগ্রহণ করেছিলেন। সাত বছর ল্যাঙ্কাশায়ারের পক্ষে ব্যাটিং উদ্বোধন করতেন। তিনি অনেক ধরনের স্ট্রোক খেলায় পারদর্শী ছিলেন না। অধিকাংশ রানই অন-সাইড অঞ্চল দিয়ে সংগ্রহ করতেন। বেশ ধৈর্য্যশীল ছিলেন তিনি। তার ব্যাটিংয়ের ধরন বেশ ভালো ছিল ও ব্যাট সোজাভাবে ধরতেন।

অবসর সম্পাদনা

১৯১১ সালে আলফ্রেড হার্টলির খেলার মান বেশ নিচেরদিকে চলে যেতে থাকে। এ মৌসুমে সহস্র রান সংগ্রহ করতে পারেননি ও কোন সেঞ্চুরিরও সন্ধান পাননি। ১৯১২ সালে কয়েকটি খেলায় ভালো করেন। পরের বছর কোন খেলাতেই এ ধারা অব্যাহত ছিল না ও ১৯১৪ সালে মাত্র একটি খেলায় ভালো করেছিলেন।

৯ অক্টোবর, ১৯১৮ তারিখে প্রথম বিশ্বযুদ্ধ চলাকালে ফ্রান্সের মাইসেমি এলাকায় ৩৯ বছর বয়সে আলফ্রেড হার্টলির জীবনাবসান ঘটে। ফ্রান্সে ব্রিটিশ প্রথম বিশ্বযুদ্ধ সমাধিক্ষেত্রে তাকে সমাহিত করা হয়।

তথ্যসূত্র সম্পাদনা

  1. "Alfred Hartley"। www.cricketarchive.com। সংগ্রহের তারিখ ১৫ জুন ২০১৩ 
  2. "Cricketers who died in World War 1 — Part 2 of 5"Cricket Country। সংগ্রহের তারিখ ২৮ নভেম্বর ২০১৮ 

আরও দেখুন সম্পাদনা

বহিঃসংযোগ সম্পাদনা