আবদুল করিম সাহিত্যবিশারদ
আবদুল করিম সাহিত্যবিশারদ (১১ অক্টোবর ১৮৭১ - ৩০ সেপ্টেম্বর ১৯৫৩) ছিলেন ব্রিটিশ ভারত ও পূর্ব পাকিস্তানের একজন বাঙালি সাহিত্যিক। তিনি প্রাচীন পুঁথি সংগ্রহ ও সাহিত্যের ঐতিহ্য অন্বেষণকারী অন্যতম ব্যক্তিত্ব।[১][২]
আবদুল করিম | |
---|---|
![]() | |
জন্ম | ১১ অক্টোবর ১৮৭১ সুচক্রদণ্ডী গ্রাম, পটিয়া, চট্টগ্রাম |
মৃত্যু | ৩০ সেপ্টেম্বর ১৯৫৩ |
নাগরিকত্ব | ব্রিটিশ ভারতীয় (১৮৭১-১৯৪৭) পাকিস্তানি (১৯৪৭-১৯৫৩) |
পেশা | শিক্ষকতা |
পরিচিতির কারণ | সাহিত্যিক |
জন্ম ও শিক্ষাজীবনসম্পাদনা
আবদুল করিম ১৮৭১ সালে বেঙ্গল প্রেসিডেন্সির চট্টগ্রাম জেলার পটিয়া উপজেলার অন্তর্গত সুচক্রদণ্ডী গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি ১৮৯৩ সালে পটিয়া আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয় থেকে এন্ট্রান্স পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন।[১]
কর্মজীবনসম্পাদনা
আবদুল করিম পেশা হিসেবে শিক্ষকতা করেছেন। তিনি ১৮৯৫ সালে চট্টগ্রাম মিউনিসিপ্যাল স্কুলে শিক্ষক হিসাবে নিযুক্ত হন।[৩] এরপর চট্টগ্রামের বিভাগীয় কমিশনারের দপ্তরে কাজ শুরু করেন। বিভাগীয় স্কুল পরিদর্শক হিসেবে তিনি পদোন্নতিও পেয়েছিলেন। ১৯৩৪ সালে অবসর নেন আবদুল করিম।[১]
সাহিত্য জীবনসম্পাদনা
আবদুল করিম আমৃত্যু নিরলসভাবে পুথি সংগ্রহ করেছেন। মধ্যযুগীয় মুসলিম সাহিত্যিকদের কর্ম তার আগ্রহের বিষয় ছিল। তার সংগৃহীত পুথির অধিকাংশই ছিল মুসলিম কবিদের রচিত। এসব পুথি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গ্রন্থাগারে সংরক্ষিত রয়েছে। পাশাপাশি হিন্দু কবিদের পুথিগুলি রাজশাহীতে অবস্থিত বরেন্দ্র গবেষণা জাদুঘরে রক্ষিত আছে। বঙ্গীয় সাহিত্য পরিষদ থেকে ১৯২০-২১ সালে দুই খণ্ডে তার লেখা বাংলা পুথির তালিকা বাঙালা প্রাচীন পুথির বিবরণ শিরোনামে প্রকাশিত হয়। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় গ্রন্থাগারে রক্ষিত পুথির তালিকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগ থেকে পুথি পরিচিতি শিরোনামে প্রকাশিত হয়েছে।
তিনি ১১টি প্রাচীন বাংলা গ্রন্থ সম্পাদনা ও প্রকাশ করেছেন। চট্টগ্রামের ইতিহাস ও সংস্কৃতির উপর ইসলামাবাদ নামে তার লেখা বই রয়েছে[৪] পূর্বে অজ্ঞাত ছিলেন এমন প্রায় ১০০ জন মুসলিম কবিকে তিনি পরিচিত করেন। এছাড়াও তিনি ও মুহম্মদ এনামুল হক যৌথভাবে আরাকান রাজসভায় বাঙ্গালা সাহিত্য শিরোনামে গ্রন্থ রচনা করেছেন। তার উল্লেখযোগ্য সম্পাদিত পুঁথিসমূহের মধ্যে জ্ঞানসাগর, গোরক্ষ বিজয়, মৃগলব্ধ, সারদা মুকুল ইত্যাদি অন্যতম।[তথ্যসূত্র প্রয়োজন] তিনি আলাওলের "পদ্মাবতী" পুথির সম্পাদনা করেন।
উপাধিসম্পাদনা
আবদুল করিম সাহিত্যে অনন্য অবদানের জন্য নদীয়া সাহিত্য সভা তাকে "সাহিত্যসাগর" খেতাব এবং চট্টল ধর্মমণ্ডলী তাকে "সাহিত্যবিশারদ" খেতাব প্রদান করে। শেষোক্ত খেতাবটি তিনি নামের সাথে ব্যবহার করতেন।
আরও দেখুনসম্পাদনা
তথ্যসূত্রসম্পাদনা
- ↑ ক খ গ "করিম, সাহিত্যবিশারদ আবদুল - বাংলাপিডিয়া"। bn.banglapedia.org। সংগ্রহের তারিখ ২০২০-১০-২০।
- ↑ "Abdul Karim's discoveries - Origins of modernity in Bengali literature"। The Daily Star (ইংরেজি ভাষায়)। ২০১৫-১০-১০। সংগ্রহের তারিখ ২০২০-০৩-১৬।
- ↑ সেলিনা হোসেন ও নুরুল ইসলাম সম্পাদিত; বাংলা একাডেমী চরিতাভিধান; ফেব্রুয়ারি, ১৯৯৭; পৃষ্ঠা- ২৪৪।
- ↑ ৫৭তম মৃত্যুবার্ষিকী স্মরণে আবদুল করিম সাহিত্যবিশারদ[স্থায়ীভাবে অকার্যকর সংযোগ]