অবসর (ইংরেজি: Leisure) ব্যক্তির নির্ধারিত মুক্ত সময় অর্থাৎ যখন যা খুশী মনে চায়, করে নিয়ে যাওয়া যায়। অর্থাৎ, ব্যবসা, কর্মজীবন, গৃহস্থালী কাজ থেকে দূরে থাকার অলস সময়টুকুই অবসর সময় নামে বিবেচিত হয়। এছাড়াও, খাওয়া-দাওয়া, ঘুমের পূর্ববর্তী কিংবা পরবর্তী সময়কালও অবসর সময় নামে গণ্য করা হয়। ব্যক্তির চাকরি পরবর্তীকালের অবসরকালীন সময়ে প্রতিষ্ঠান বা কর্মক্ষেত্রে গমনে বাঁধার পরিবেশ থাকে না। এ সময়ে বিভিন্ন বিনোদনমূলক কর্মকাণ্ডে অংশগ্রহণ, পারিবারিক সান্নিধ্যলাভ অথবা অন্যান্য শখের কাজগুলোয় মনোনিবেশ ঘটানো যায়। সম্প্রতি লক্ষ্য করা যায় যে,অফিস হতে অবসর গ্রহণের পর কানাড়া ব্যাঙ্কের কলকাতা মহানগরের অবসরপ্রাপ্ত কর্মচারীর মিলে গড়ে তুলেছেন নিজেদের জন্য সাংস্কৃতিক ও ওয়েলফেয়ার সংস্থা। এমনই এক সংস্থা কলকাতায় আত্মপ্রকাশ করে ২০০১ খ্রিস্টাব্দে নাম - ভরসা। এটি প্রধানত কানাডা ব্যাঙ্ক এক্স-এমপ্লয়িজ ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশন ।

সরকারী উদ্যানগুলো সাধারণতঃ বিনোদন এবং অবসরকাল অতিক্রমণের জন্য তৈরী করা হয়।

অবসর এবং আবশ্যকীয় কর্মকাণ্ডের মধ্যেকার পার্থক্যকে হাল্কাভাবে প্রয়োগ করা হয়। সাধারণ জনগণ মাঝেমাঝে কর্মোপযোগী কাজগুলো দীর্ঘ মেয়াদের জন্যে অবসরকালীন সময়ে মনের আনন্দে করে থাকে।[]

কর্মপন্থা নির্ধারণ

সম্পাদনা

বিনোদন অথবা অবসরকালীন সময়ের সাধারণ কর্মকাণ্ডের মধ্যে রয়েছে -

ছুটি অথবা ছুটির দিনে অবসরের জন্য নির্দিষ্ট সময় ব্যক্তি কর্তৃক নির্ধারিত হয়। পূর্ব পরিকল্পনামাফিক ছুটিতে কিছু ব্যক্তি একাকী কিংবা পারিবারিক বা দলগতভাবে দেশের অভ্যন্তরে কিংবা দেশের বাইরে নির্ধারিত স্থানে ভ্রমণের উদ্দেশ্যে বেরিয়ে পড়েন। সাধারণতঃ হোটেলেই রাত্রি কাটান এবং এমন অনেক কিছু করেন যা বাড়িতে কিংবা বাড়ির কাছাকাছি করা সম্ভব নয়। আবার কিছু লোক ছুটিকালীন সময়ে বাড়িতে অবস্থান করে নিজ সম্প্রদায়ের লোকদের সাথে সময় কাটানোকেই অগ্রাধিকার দেন।

সাংস্কৃতিক ভিন্নতা

সম্পাদনা

অবসর সময়কালের ব্যবহার এক সংস্কৃতি থেকে অন্য সংস্কৃতিতে পৃথক হতে পারে। নৃ-তাত্ত্বিকগণ অধিকতর জটিল সমাজের চেয়ে সাধারণ সমাজে দলবদ্ধভাবে শিকার করার দিকে অগ্রসরতা হবার প্রবণতা লক্ষ্য করেছেন। কালাহারি মরুভূমির স্যান জনগোষ্ঠী তাঁদের নিত্য প্রয়োজনীয় খাদ্য, আশ্রয় এবং অন্যান্য বিষয়াদির প্রতুলতা সত্ত্বেও দলবদ্ধভাবে শিকার করতে পছন্দ করে। নৃ-তাত্ত্বিকগণ অন্যান্য ক্ষুদ্র সমাজে একই ধরনের সমার্থক মিলের সন্ধান পেয়েছেন। এ স্তরের জনগোষ্ঠী শহুরে, শিল্পাঞ্চলভিত্তিক সমাজের তুলনায় অধিক অবসর সময় উপভোগ করতে সক্ষম হন।

ক্রীড়াক্ষেত্র

সম্পাদনা

প্রতিযোগিতামূলক ক্রীড়ায় ব্যক্তিগত ইভেন্টে আঘাত কিংবা অসুস্থতাজনিত কোন কারণে খেলতে অসমর্থ হলে ঐ খেলোয়াড় মাঠের বাইরে চলে যান। নির্ধারিত সময়ের মধ্যে খেলায় ফিরে আসতে ব্যর্থ হলে প্রতিপক্ষীয় খেলোয়াড়কে বিজয়ী হিসেবে ঘোষণা করা হয়। ব্যাডমিন্টন, টেনিস প্রভৃতি ক্রীড়ায় টুর্ণামেন্টের নিয়ম অনুযায়ী খেলোয়াড়ের নামের পাশে বা অন্য কোথাও অবসর শব্দটি লেখা হয়। দলগত ক্রীড়া হিসেবে ক্রিকেট খেলায় একজন ক্রিকেটার প্রয়োজনে পুনরায় মাঠে ফিরে আসতে পারেন। অন্যথায় তার নামের পাশে রিটায়ার্ড হার্ট শব্দটি লেখা হয়।

অবসরবিদ্যা

সম্পাদনা

সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদের অন্যতম শাখা হিসেবে অবসরবিদ্যার প্রচলন রয়েছে। এতে অবসরকে বুঝা ও ব্যাখ্যা-বিশ্লেষণপূর্বক সংশ্লিষ্ট বিষয়াদি তুলে ধরা হয়। পর্যটন এবং বিনোদন সাধারণ বিষয়রূপে অবসর গবেষণায় স্থান পেয়েছে।

দ্য জার্নাল অব লেজার রিসার্চ[] এবং জার্নাল অব পার্ক এন্ড এডমিনিস্ট্রেশন[] আমেরিকার শিক্ষানুক্রমিক সাময়িকীরূপে অবসরবিদ্যার উপর নিয়মিতভাবে প্রকাশিত হয়।

তথ্যসূত্র

সম্পাদনা
  1. Goodin, Robert E.; Rice, James Mahmud; Bittman, Michael; & Saunders, Peter. (2005). "The time-pressure illusion: Discretionary time vs free time". Social Indicators Research 73(1), 43–70. (JamesMahmudRice.info, "Time pressure" (PDF))
  2. "সংরক্ষণাগারভুক্ত অনুলিপি"। ৩০ ডিসেম্বর ২০১১ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৮ মে ২০১২ 
  3. "সংরক্ষণাগারভুক্ত অনুলিপি"। ৫ মার্চ ২০১৯ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৬ সেপ্টেম্বর ২০১৯ 

আরও পড়ুন

সম্পাদনা

বহিঃসংযোগ

সম্পাদনা