শরীর
শরীর বলতে জীবিত প্রাণীকূল বিশেষত কোন ব্যক্তির শারীরিক কাঠামোকে বোঝায়। প্রায়শঃই এটি সক্ষমতা, বাহ্যিক আত্মপ্রকাশ, স্বাস্থ্য সংক্রান্ত এবং মৃত্যুর সাথে পারস্পরিক সম্পর্কযুক্ত। শরীর নিয়ে গবেষণাকর্ম শারীরবিদ্যা বা শারীরবৃত্ত নামে পরিচিত। প্রাণীদেহের একাংশ কিংবা সম্পূর্ণ অংশকেই শরীর হিসেবে চিহ্নিত করা হয়ে থাকে। এমন অনেক প্রাণী রয়েছে যেগুলো এককোষী থেকেই সম্পূর্ণ প্রাণীদেহের মর্যাদা উপভোগ করে। স্লাইম মোল্ড তেমনিই একটি এককোষী প্রাণী যা বৃষ্টিস্নাত বনাঞ্চলের স্যাঁতস্যাতে মেঝেতে বিশ্বের বিভিন্ন এলাকায় বাস করে। সে দৃষ্টিকোণে শরীর বলতে বহুকোষবিশিষ্ট প্রাণীর দেহকে বুঝায়।
মৃত ব্যক্তির শরীরকে শবদেহ বা ক্যাড্যাভার বলে। মেরুদণ্ডবিশিষ্ট প্রাণী এবং পোকামাকড়ের মৃতদেহকে কখনো কখনো গলিত পচামাংসবিশিষ্ট শরীর বা কারকেসেস নামে অভিহিত করা হয়। কর্তন বা জবাইকৃত প্রাণীর মৃত শরীরের উচ্ছিষ্ট অংশ ফেলে যা ব্যবহার করা হয় তা মাংস নামে পরিচিত।
মানবদেহসম্পাদনা
মানবদেহে মাথা, ঘাড়, বক্ষ, বাহু, পা ইত্যাদি অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ রয়েছে। এছাড়াও উরুসন্ধির অভ্যন্তরে জননক্রিয়া সংঘটিত হয়, যার মাধ্যমে নারী এবং পুরুষের মধ্যে পার্থক্য নির্দেশিত হয়। এছাড়াও, অগণিত অভ্যন্তরীণ দেহযন্ত্র - শ্বাসতন্ত্র, সংবহনতন্ত্র, কেন্দ্রীয় স্নায়ুতন্ত্র পদ্ধতি রয়েছে। বলা হয়ে থাকে যে, মানব শরীর সবচেয়ে বেশি ও জটিল যন্ত্রের অধিকারী। মানুষের শরীর নিয়ে পড়াশোনা এবং কর্মকাণ্ড পরিচালনাকে যথাক্রমে এনাটমী বা শব-ব্যবচ্ছেদবিদ্যা এবং ফিজিওলজি বা শারীরবিদ্যা বলে।
শরীরবৃত্ত বলতে মূলতঃ মানুষের শারীরিক কাঠামোকে বুঝায়। মানব শরীরের বিভিন্ন অংশকে ঘিরে শিক্ষা-প্রতিষ্ঠানে বিশেষতঃ চিকিৎসাবিজ্ঞানের বিভিন্ন শাখা, অনুষদে গবেষণা, পর্যবেক্ষণ ও অনুসন্ধান কার্যক্রম পরিচালনা করা হয়।
জড়বাদী দার্শনিকগণ মনে করেন যে, মানুষের মনের প্রবৃত্তির কোন কিছুই শরীর থেকে ভিন্ন নয়। বরং, মানুষের মস্তিষ্ক থেকে উদ্ভূত শারীরবৃত্তিক কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে মন গড়ে উঠে।[১]
ভিন্ন ব্যবহারসম্পাদনা
শরীর শব্দটি কখনোবা অন্য অর্থে ব্যবহার করা হয়। যেমনঃ জলের শরীর হিসেবে রয়েছে হ্রদ।
তথ্যসূত্রসম্পাদনা
- ↑ Kim, J. (১৯৯৫)। Honderich, Ted, সম্পাদক। Problems in the Philosophy of Mind. Oxford Companion to Philosophy। Oxford: Oxford University Press।