শারীরতত্ত্ব

(শারীরবিদ্যা থেকে পুনর্নির্দেশিত)

শারীরতত্ত্ব বা শারীরবৃত্ত (ইংরেজি: Physiology) বিশুদ্ধ প্রাণিবিজ্ঞানের একটি প্রধান শাখা। এ শাখায় প্রাণীদেহের পুষ্টি, শ্বসন, ক্ষরণ, রেচন, জনন প্রভৃতি শারীরবৃত্তীয় কার্যাবলী আলোচনা করা হয়।[১] প্রত্যেক জীবের তার নিজস্ব চারিত্রিক বৈশিষ্ট্য আছে। জীবের শরীরের কার্যপ্রণালী নিয়ে শারীরবৃত্তবিদ্যায় আলোচনা করা হয়। রাজকীয় সুয়েডীয় বিজ্ঞান একাডেমি কর্তৃক ১৯০১ সাল থেকে শারীরবৃত্ত বিদ্যায় ভূষিত সর্বোচ্চ সম্মান চিকিৎসাবিজ্ঞানে নোবেল পুরস্কার প্রদান করা হয়ে থাকে।

লিওনার্দো দা ভিঞ্চির বিখ্যাত চিত্র ভিত্রুভীয় মানব, c. ১৪৮৭। এটিকে প্রায়ই শারীরবৃত্ত বিজ্ঞানকে প্রতিনিধিত্ব করতে ব্যবহার করা হয়

ইতিহাসসম্পাদনা

৪২০ খ্রিস্টপূর্বাব্দে হিপোক্রেটিসের সময়কালে মানব শারীরবৃত্ত, গবেষণা ছাড়াও ঔষধের জনক হিসেবে পরিচিত ছিলো।[২] প্রাচীন গ্রীসে এরিস্টটলের সমালোচনা এবং কাঠামোর মধ্যে সম্পর্ক এবং চিহ্নিত কার্যকারিতার উপরে জোর দেওয়ার মধ্য দিয়েই শারীরবৃত্ত ধারনার শুরু হয়। যখন ক্লডিয়াস গ্যালেনাসের (১২৬-১৯৯ খ্রিষ্টাব্দ), গ্যালেন নামে পরিচিত, শরীরের কার্যকারিতা অনুসন্ধানের পরীক্ষার ব্যবহারই ছিলো প্রথম। গ্যালেন পরীক্ষামূলক শারীরবৃত্ত বিদ্যার প্রতিষ্ঠাতা ছিলেন।[৩]

জাঁ ফার্নেল (Jean Fernel), একজন ফরাসি চিকিৎসক, ১৫২৫ সালে "শারীরবৃত্ত" ("physiology") শব্দটির পরিচয় দেন।

উনিশ শতকে, শারীরবৃত্তীয় জ্ঞান দ্রুত হারে বৃদ্ধি পেতে থাকে। বিশেষ করে ১৮৩৮ সালে জার্মান জীববিজ্ঞানী থিওডোর সোয়ান এবং মাথিয়াস শ্লেইডেনের কোষ তত্ত্বের আবিষ্কারের মধ্য দিয়ে যে সকল জীবিত বস্তুই এক বা একাধিক কোষ দ্বারা গঠিত এবং সকল কোষই পূর্বে অস্তিত্বশীল অন্য কোন কোষ থেকে উৎপত্তি লাভ করে।

বিংশ শতকে জীববিজ্ঞানীরা আগ্রহী হয়ে ওঠেন এ বিষয়ে যে, তুলনামূলক শারীরবৃত্ত এবং পরিবেশ শারীরবৃত্তের ক্ষেত্রে কীভাবে জীব কার্যাবলী মানব কার্যাবলী থেকে ভিন্ন।[৪] এই ক্ষেত্রের মধ্যে প্রধান ব্যক্তি হলেন, Knut Schmidt-Nielsen এবং George Bartholomew। অতি সম্প্রতি, বিবর্তনমূলক শারীরবৃত্ত একটি স্বতন্ত্র উপবিষয়ে পরিণত হয়েছে।

প্রকারসম্পাদনা

সাধারণত শারীরবৃত্ত ২ প্রকারের; একটি হচ্ছে প্রাণী শারীরবৃত্ত অপরটি হচ্ছে উদ্ভিদ শারীরবৃত্ত। প্রাণী শারীরবৃত্ত বিদ্যায় মানবদেহের শারীরবৃত্তের বিশদ বর্ণনা আছে। এছাড়াও অনেক রকম শারীরবৃত্ত বিদ্যা রয়েছে যেমন- ভাইরাস শারীরবৃত্ত, ব্যাকটেরিয়া শারীরবৃত্ত, কোষ শারীরবৃত্ত এবং আরো অনেক বিভাগ।[৫]

মানবদেহের শারীরবৃত্তসম্পাদনা

মানবদেহের শারীরবৃত্ততে মানবদেহের নির্দিষ্ট চারিত্রিক বৈশিষ্ট্য এবং দেহের বিভিন্ন কার্যপ্রণালীর কৌশল নিয়ে আলোচনা করা হয়। এটা এমন এক ধরনের বিজ্ঞান যা মানুষের, যান্ত্রিক, শারীরিক এবং জৈবরাসায়নিক কর্ম, তাদের অঙ্গ, এবং তারা যে কোষের মধ্যে গঠিত সে বিষয়ে আলোচনা করে। শারীরবৃত্তের কেন্দ্রবিন্দুর প্রধান স্তর হলো, অঙ্গ স্তর এবং ব্যবস্থার মধ্যে ব্যবস্থা। অন্তঃস্রাবী এবং স্নায়বিক ব্যবস্থা প্রাণীদের মধ্যে কার্যকর শ্বসন এবং সংক্রমণ সংকেত এক্ষেত্রে প্রধান ভূমিকা পালন করে। হোমিওস্টয়াটিক উদ্ভিদের ক্ষেত্রে পারস্পরিক ক্রিয়ার বিষয় প্রাণীদের সঙ্গে একটি প্রধান দিক।

আরও দেখুনসম্পাদনা

তথ্যসূত্রসম্পাদনা

  1. উচ্চ মাধ্যমিক জীববিজ্ঞান প্রাণিবিজ্ঞান, লেখক: গাজী আজমল, গাজী আসমত
  2. "Physiology"Science Clarified। Advameg, Inc.। সংগ্রহের তারিখ ২০১০-০৮-২৯ 
  3. Fell, C.; Pearson, F. (২০০৭)। "Historical Perspectives of Thoracic Anatomy"Thoracic Surgery Clinics17 (4): 443–8। ডিওআই:10.1016/j.thorsurg.2006.12.001  অজানা প্যারামিটার |month= উপেক্ষা করা হয়েছে (সাহায্য)
  4. Feder, ME; Bennett, AF; WW, Burggren; Huey, RB (১৯৮৭)। New directions in ecological physiology। New York: Cambridge University Press। আইএসবিএন 978-0-521-34938-3 
  5. অনুবাদকৃত হয়েছে Text Book of Medical Physiology, Guyton & Hallথেকে

বহি:সংযোগসম্পাদনা