হিরণ চট্টোপাধ্যায়
হিরণ চট্টোপাধ্যায় (জন্ম: ১৯শে ডিসেম্বর ১৯৮২) হলেন একজন ভারতীয় চলচ্চিত্র অভিনেতা, গায়ক, লেখক, প্রযোজক এবং রাজনীতিবিদ। তিনি ২০২১ সালে খড়গপুর সদর থেকে পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভার সদস্য নির্বাচিত হয়েছেন।[২][৩] এছাড়া তিনি দৃষ্টি ও শারীরিক প্রতিবন্ধী পথশিশুদের সহায়তা প্রদানকারী বেসরকারী সংস্থা ভয়েস অব ওয়ার্ল্ডের সাথে কাজ করছেন।[৪]
হিরণ চট্টোপাধ্যায় | |
---|---|
পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভার সদস্য | |
দায়িত্বাধীন | |
অধিকৃত কার্যালয় ২ মে ২০২১[১] | |
পূর্বসূরী | প্রদীপ সরকার |
সংসদীয় এলাকা | খড়গপুর সদর |
ব্যক্তিগত বিবরণ | |
জন্ম | কলকাতা, ভারত | ১৯ নভেম্বর ১৯৮৫
প্রাক্তন শিক্ষার্থী | রবীন্দ্রভারতী বিশ্ববিদ্যালয় |
পেশা | অভিনেতা |
কর্মজীবন | ২০০৭–২০২১ |
রাজনৈতিক দল | ভারতীয় জনতা পার্টি (২০২১–বর্তমান) |
ওয়েবসাইট | www |
প্রাথমিক জীবন ও শিক্ষা
সম্পাদনাহিরণ চট্টোপাধ্যায় হাওড়ার মহকুমা শহর উলুবেরিয়ার বাসিন্দা ছিলেন, যেখানে তিনি শৈশব কাটিয়েছিলেন। এরপর রবীন্দ্রভারতী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ইংরেজি বিষয়ে স্নাতক অর্জন করেন।[৫][৬] তিনি মুম্বাইতে রিলায়েন্স ইন্ডাস্ট্রিজের সিনিয়র ম্যানেজার হিসেবে তার কর্মজীবন শুরু করেন ।[৭]
হিরণের ডাকনাম পাপাই, তার পিতা সতীনাথ চট্টোপাধ্যায় ও মা সুনেত্রা ঘটক। স্ত্রী অনিন্দিতা চট্টোপাধ্যায় এবং মেয়ে নাইসা।[৮]
রাজনৈতিক জীবন
সম্পাদনা২০২১ সালের তিনি ভারতীয় জনতা পার্টিতে যোগদান করেন[৯] এবং একই বছর পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভা নির্বাচনে খড়্গপুর সদর আসনে জয়লাভের মাধ্যমে বিধায়ক নির্বাচিত হন।[১০][১১]
চলচ্চিত্র জীবন
সম্পাদনাহিরণ চট্টোপাধ্যায় হরনাথ চক্রবর্তী পরিচালিত ২০০৭ সালের নবাব নন্দিনী চলচ্চিত্রে কোয়েল মল্লিকের বিপরীতে চিত্রজগতে অভিষেক করেন। চলচ্চিত্রটি প্রচুর খ্যাতি এনে দেয়, টলিউড জগতে এক জনপ্রিয় মুখে পরিণত করে তোলে। এরপর ২০০৮ সালেভালবাসা ভালবাসা ও চিরসাথী ছবিতে সাবলীনতার সঙ্গে অভিনয় করেন। ভালোবাসা ভালোবাসা শীর্ষক ছবিটি বেশ নাম করে এবং দর্শক-শ্রোতারা ভালবেসে তাঁকে ‘চকোলেট বয়’ বলে ডাকতে শুরু করেন।[১২]
২০১০ সালের মন যে করে উড়ু উড়ু চলচ্চিত্রটি ওয়াও হোয়াট এ লাভ শিরোনামে ২০১৬ সালের মালয়লাম ভাষান্তর করে প্রেক্ষাগৃহে মুক্তি দেওয়া হয়।[১৩] এরপর তাঁর অভিনীত জ্যাকপট ও রিস্ক সমালোচকদের দ্বারা যথেষ্ট প্রশংসিত হয়। পরবর্তীতে লে হালুয়া লে ও মাচো মস্তানা অত্যন্ত জনপ্রিয় এবং বাণিজ্যিকভাবে বেশ সফল হয়।
অভিনীত চলচ্চিত্র
সম্পাদনাবছর | শিরোনাম | ভূমিকা | পরিচালক | মন্তব্য |
---|---|---|---|---|
২০০৭ | নবাব নন্দিনী | নবাব | হরনাথ চক্রবর্তী | চলচ্চিত্রে অভিষেক [১৪][১৫] |
২০০৮ | ভালবাসা ভালবাসা | সিদ্ধার্থ | রবি কিনাগী | [১৬] |
চিরসাথী | রাজু | হরনাথ চক্রবর্তী | ||
২০০৯ | জ্যাকপট | অর্ক্য | কৌশিক গঙ্গোপাধ্যায় | [১৭] |
মা আমার মা | সূর্য | হরনাথ চক্রবর্তী | ||
ওলট পালট | রোহান | স্বপন সাহা | ||
রিস্ক | রনি | রিঙ্গো বন্দ্যোপাধ্যায় | ||
২০১০ | মন যে করে উড়ু উড়ু | রাহুল | সুজিত গুহ | |
বড় একা লাগে | সিদ্ধার্থ | গোবিন্দ শিল | ||
২০১২ | মাচো মাস্তানা | নবাব | রেশমী মিত্র | [১৮][১৯] |
ভুলভাল...টোটাল কনফিউশান | নিজেই | শঙ্কর ঘোষ | বিশেষ আবির্ভাব | |
লে হালুয়া লে | রাহুল | রাজা চন্দ | ||
মিষ্টি ছেলের দুষ্টুমি | নিজেই | পার্থ মান্না | বিশেষ আবির্ভাব | |
২০১৩ | মজনু | অভিক | রাজীব বিশ্বাস | [২০] |
২০১৫ | জামাই ৪২০ | রনি | রবি কিনাগী | [২১] |
২০১৭ | মেহের আলি | মেহের আলি | অরিন্দম দে | [২২][২৩] |
জিও পাগলা | আনন্দ | রবি কিনাগী | [২৪][২৫] | |
২০১৯ | জামাই বদল | রাজ | রবি কিনাগী | [২৬] |
থাই কারি | অঙ্কিত আদিত্য | [২৭] | ||
২০২০ | জিও জামাই | আদিত্য | নেহাল দত্ত | [২৮] |
পুরস্কার
সম্পাদনা- নবাব নন্দিনী (২০০৭) চলচ্চিত্রের জন্য সেরা অ্যাকশন হিরো বিভাগে আনন্দলোক পুরস্কার।[২৯]
- ভালবাসা ভালবাসা ছবির জন্য বি.এফ.জে.এ সবচেয়ে প্রতিজ্ঞাবদ্ধ নায়ক পুরস্কার।
- মাচো মুস্তানার জন্য উত্তম কলাকার পুরস্কার ২০১২।
তথ্যসূত্র
সম্পাদনা- ↑ Bhanja, Sandipta (২ মে ২০২১)। "গেরুয়া মন্ত্রে দীক্ষিত হয়েই সাফল্যের আলো দেখলেন, খড়্গপুরে 'জিতলেন' বিজেপিপ্রার্থী হিরণ"। Indian Express Bangla। The Indian Express। ২৯ সেপ্টেম্বর ২০২৩ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৬ মার্চ ২০২৪।
- ↑ "গেরুয়া মন্ত্রে দীক্ষিত হয়েই সাফল্যের আলো দেখলেন, খড়্গপুরে 'জিতলেন' বিজেপিপ্রার্থী হিরণ"। Indian Express Bangla। ২০২১-০৫-০২। ২০২৩-০৯-২৯ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০২৪-০৩-০৬।
- ↑ "ঘাটালে কি দেব বনাম হিরণ! চোর সাংসদ মুক্ত কেন্দ্রই লক্ষ্য, টিকিট পেয়ে বললেন প্রার্থী"। ইটিভি ভারত। মার্চ ২, ২০২৪। সংগ্রহের তারিখ মার্চ ৬, ২০২৪।
- ↑ Subramanian, Mahalakshmi (১৩ অক্টোবর ২০১৩)। "Seawoods was my home before I became an actor"। Daily News and Analysis। ১৬ নভেম্বর ২০১৭ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৪ নভেম্বর ২০১৫।
- ↑ প্রতিবেদন, নিজস্ব। "Hiran: আমাদের টালির ছাদ চুঁইয়ে জল, বিনা চিকিৎসায় বাবা মারা যান হাসপাতালের মেঝেতেই: হিরণ"। www.anandabazar.com। সংগ্রহের তারিখ ২০২৪-০৩-০৬।
- ↑ "মাটির বাড়িতে মানুষ হয়ে আজ বিধায়ক, অল্প বয়সে অনাথ হিরণের জীবন কাহিনি লজ্জা দেবে সিনেমাকে"। বাংলা হান্ট (ইংরেজি ভাষায়)। ২০২২-০১-০৯। সংগ্রহের তারিখ ২০২৪-০৩-০৬।
- ↑ "Seawoods was my home before I became an actor"। DNA India (ইংরেজি ভাষায়)। ২০২৩-০১-০২ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০২৪-০৩-০৬।
- ↑ "ছুটির দিনে মেয়ের সঙ্গে বাস্কেটবলে ব্যস্ত অভিনেতা হিরণ"। Zee24Ghanta.com। সংগ্রহের তারিখ ২০২৪-০৩-০৬।
- ↑ "Actor Hiran Chatterjee joins BJP"। The Indian Express (ইংরেজি ভাষায়)। ২০২১-০২-১৯। ২০২২-০৫-২৩ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০২৪-০৩-০৬।
- ↑ "কেউ হারলেন, কেউ আবির্ভাবেই করলেন বাজিমাৎ, দেখে নিন কেমন হল তারকা প্রার্থীদের ফল"। anandabazar.com। আনন্দবাজার। ৩ মে ২০২১। ৩ মে ২০২১ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৪ মে ২০২১।
- ↑ "হিরণেই আস্থা বঙ্গ বিজেপির, বড় পদ পেলেন তারকা বিধায়ক"। sangbadpratidin (ইংরেজি ভাষায়)। ২০২৪-০১-০৬ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০২৪-০৩-০৬।
- ↑ "'আমার ভালোবাসা ভালোবাসা সুপারহিট হয়েছিল', দেবের জন্য ইন্ডাস্ট্রি ছাড়েন হিরণ?"। Eisamay। ২০২৩-০৬-০৮ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০২৪-০৩-০৬।
- ↑ "Wow! What A Love"। bookmyshow। ৪ মার্চ ২০১৬। সংগ্রহের তারিখ ৭ মার্চ ২০২৪।
- ↑ "With a Haranath project, people are bound to take notice"। www.telegraphindia.com (ইংরেজি ভাষায়)। ৩ ফেব্রুয়ারি ২০১৩ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০২৪-০৩-০৬।
- ↑ "Nabab Nandini (নবাব নন্দিনী ) | Official Trailer | Koel Mallick | Hiraan | Eskay Movies | Full HD"। ৩১ মার্চ ২০২৩ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৬ মার্চ ২০২৪।
- ↑ "'আমার ভালোবাসা ভালোবাসা সুপারহিট হয়েছিল', দেবের জন্য ইন্ডাস্ট্রি ছাড়েন হিরণ?"। Eisamay। ২০২৩-০৬-০৮ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০২৪-০৩-০৬।
- ↑ "Script is the hero of any film: Hiran Chatterjee"। Tellychakkar.com (ইংরেজি ভাষায়)। ২০১৬-০৮-২২ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০২৪-০৩-০৬।
- ↑ "হিরণের 'দাদা'"। আনন্দবাজার পত্রিকা। ৪ মার্চ ২০১৬ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৩ মার্চ ২০১২।
- ↑ "হিরণ অমৃতার কেমিস্ট্রি"। www.anandabazar.com। সংগ্রহের তারিখ ২০২৪-০৩-০৬।
- ↑ "Prime Video: Majnu"। www.primevideo.com (ইংরেজি ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ২০২৪-০৩-০৬।
- ↑ Dhakatimes24.com। "হিরণ এবার 'জিও জামাই'"। Dhakatimes News। ২০২০-০৯-২৬ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০২৪-০৩-০৬।
- ↑ "হিরণ-ময়"। Anandabazar Patrika। ২৭ জুলাই ২০২০ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৭ জুলাই ২০২০।
- ↑ "Meher AaliA"। The Times of India। আইএসএসএন 0971-8257। সংগ্রহের তারিখ ২০২৪-০৩-০৬।
- ↑ "Jio PaglaUA"। The Times of India। আইএসএসএন 0971-8257। ২০২২-০৮-০৬ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০২৪-০৩-০৬।
- ↑ "বাংলাদেশে দেশের সিনেমা নেই, ৪৩ হলে কলকাতার জিও পাগলা"। জাগোনিউস২৪.কম। ১৯ জানুয়ারি ২০১৮। ৯ জুন ২০২১ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৬ মার্চ ২০২৪।
- ↑ "'Jamai Badal' first look poster promises a laugh riot"। The Times of India। ২০১৮-১০-২৯। আইএসএসএন 0971-8257। ২০২৩-০৯-২৯ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০২৪-০৩-০৬।
- ↑ "Thai Curry Movie Review"। The Times of India। আইএসএসএন 0971-8257। সংগ্রহের তারিখ ২০২৪-০৩-০৬।
- ↑ "জামাই রূপেই ফের বড়পর্দায় হিরণ"। Eisamay। ২০২৩-০৯-৩০ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০২৪-০৩-০৬।
- ↑ "Anandalok Purashkar highlights"। The Telegraph। ৩ জানুয়ারি ২০১৮ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২ জানুয়ারি ২০১৮।