হিরণ চট্টোপাধ্যায়

ভারতীয় বাঙালি অভিনেতা

হিরণ চট্টোপাধ্যায় (জন্ম: ১৯শে ডিসেম্বর, ১৯৮২) হলেন একজন ভারতীয় চলচ্চিত্র অভিনেতা, গায়ক, লেখক, প্রযোজক এবং রাজনীতিক। তিনি একজন সুদক্ষ, জনপ্রিয় ও খ্যাতিমান ভারতীয় চলচ্চিত্রাভিনেতা হিসেবে পরিচিত। হিরণ রোম্যান্টিক, কমেডি এবং অ্যাকশন— সকল ধারার চলচ্চিত্রে অত্যন্ত দক্ষতার সাথে অভিনয় করেছেন।

হিরণ চট্টোপাধ্যায়
জন্ম
হিরণ চট্টোপাধ্যায়

(1982-12-19) ১৯ ডিসেম্বর ১৯৮২ (বয়স ৪০)
পেশাঅভিনেতা, গায়ক, প্রযোজক, রাজনীতিক
কর্মজীবন২০০৭-২০১৮
উচ্চতা১৭৮ সেন্টিমিটার (৫ ফুট ১০ ইঞ্চি)
রাজনৈতিক দলভারতীয় জনতা পার্টি (২০২১–বর্তমান)
দাম্পত্য সঙ্গীঅনিন্দিতা চট্টোপাধ্যায়
সন্তাননিয়াশা চট্টোপাধ্যায়
ওয়েবসাইটহিরণ চট্টোপাধ্যায়

হিরণের ডাকনাম পাপাই। হিরণের স্ত্রী-র নাম অনিন্দিতা চট্টোপাধ্যায়, মেয়ের নাম নিয়াসা, এবং তাঁর একজন বোন রয়েছেন। হিরণ চট্টোপাধ্যায়ের জন্ম হাওড়ার উলুবেড়িয়ায়; যেখানে তিনি অতীব অসচ্ছলতার মধ্যে দিয়ে বেড়ে উঠেছেন। শৈশবেই তিনি তাঁর পিতা-মাতাকে হারান। উলুবেড়িয়ায় তিনি ১৪ বছর পড়াশোনা করেন। ছোট থেকেই তিনি লেখাপড়ায় যথেষ্ট ভাল ছিলেন। পরবর্তীকালে তিনি মানিকটোলা আশ্রম-এ বসবাস করতে শুরু করেন। রবীন্দ্রভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ে তিনি সন্ধ্যার ক্লাস করতেন এবং সে সময় দিনের বেলায় একটি জাহাজ কোম্পানিতে কর্মরত ছিলেন। এরপর তিনি রিলায়েন্স কোম্পানিতে যোগদান করে মুম্বই চলে যান। সেখানে লজিস্টিক্স, সাপ্লাই চেইন অ্যান্ড ল’ ইন কাস্টমস বিষয়ে ম্যানেজমেন্ট পাশ করেন। এরপর অভিনয়ের জন্য সেই চাকরি ছেড়ে হিরণ কলকাতায় ফিরে আসেন।[তথ্যসূত্র প্রয়োজন]

চলচ্চিত্র জীবন সম্পাদনা

অভিনেতা হিসেবে তাঁর প্রথম চলচ্চিত্র অভিনেত্রী কোয়েল মল্লিকের বিপরীতে নবাব নন্দিনী হরনাথ চক্রবর্তী পরিচালিত এই ছবি তাঁকে রাতারাতি প্রচুর খ্যাতি এনে দেয়; টলিউড জগতে তাঁকে এক জনপ্রিয় মুখে পরিণত করে তোলে এই ছবি। এরপর তিনি ভালবাসা ভালবাসাচিরসাথী ছবিতে সাবলীনতার সঙ্গে অভিনয় করেন। ভালবাসা ভালবাসা শীর্ষক ছবিটি বেশ নাম করে এবং দর্শক-শ্রোতারা ভালবেসে তাঁকে ‘চকোলেট বয়’ বলে ডাকতে শুরু করেন। এরপর তাঁর অভিনীত জ্যাকপটরিস্ক সমালোচকদের দ্বারা যথেষ্ট প্রশংসিত হয়। পরবর্তীতে তাঁর অভিনীত ছবি লে হালুয়া লে, মাচো মস্তানা অত্যন্ত জনপ্রিয় এবং বাণিজ্যিকভাবে বেশ সফল হয়।

অভিনীত চলচ্চিত্র সম্পাদনা

বছর চলচ্চিত্র ভূমিকা পরিচালক সহশিল্পী ভাষা প্রযোজক
২০০৭ নবাব নন্দিনী নবাব হরনাথ চক্রবর্তী কোয়েল মল্লিক বাংলা জগদীশ পান্ডে
২০০৮ ভালবাসা ভালবাসা সিদ্ধার্থ রবি কিনাগী শ্রাবন্তী চট্টোপাধ্যায় বাংলা এসকে মুভিজ
২০০৮ চিরসাথী রাজু হরনাথ চক্রবর্তী কোয়েল মল্লিক বাংলা জি ফিল্মস্‌
২০০৯ জ্যাকপট অর্ক্য কৌশিক গাঙ্গুলী কোয়েল মল্লিক বাংলা শ্রী ভেঙ্কটেশ ফিল্মস
২০০৯ মা আমার মা সূর্য হরনাথ চক্রবর্তী দীপান্বিতা পাত্র বাংলা ব্রান্ড ভ্যালু কমিউনিকেশন্স লিমিটেড
২০০৯ ওলট পালট রোহান স্বপন সাহা শ্রেয়া সরণ বাংলা জি ফিল্মস্‌
২০০৯ রিস্ক রনি রিঙ্গো বন্দ্যোপাধ্যায় প্রিয়াঙ্কা সরকার বাংলা ইনক্স ও আর.কে.কে মোশন পিকচারস্
২০১০ মন যে করে উড়ু উড়ু রাহুল সুজিত গুহ কোয়েল মল্লিক বাংলা সুরিন্দর ফিল্মস
২০১০ বড় একা লাগে সিদ্ধার্থ গোবিন্দ শিল টুয়া বাংলা ড্রিম ওয়েজ মুভিজ এন্টারটেইনমেন্ট (প্রাঃ) লিমিটেড
২০১২ মাচো মাস্তানা [১] নবাব রেশমী মিত্র পূজা বোস বাংলা রেম্যাক ফিল্মজ
২০১২ লে হালুয়া লে রাহুল রাজা চন্দ পায়েল সরকার, সোহম চক্রবর্তী বাংলা শ্রী ভেঙ্কটেশ ফিল্মস
২০১২ ভুলভাল...টোটাল কনফিউশান বিশেষ আবির্ভাব শঙ্কর ঘোষ বাংলা এনকেশ এন্টারটেইনমেন্ট লিমিটেড
২০১২ মিষ্টি ছেলের দুষ্টুমি বিশেষ আবির্ভাব পার্থ মান্না বাংলা নুপুর ক্রিয়েশন্স
নভেম্বর ২০১৩ মজনু অভিক রাজীব বিশ্বাস শ্রাবন্তী চট্টোপাধ্যায় বাংলা শ্রী ভেঙ্কটেশ ফিল্মসসুরিন্দর ফিল্মস
২০১৭ মেহের আলি মেহের আলি অরিন্দম দে অমৃতা চট্টোপাধ্যায়, শতরূপা পাইন বাংলা নিয়াসা ফিল্ম পিভিটি এলটিডি ও আনুস্কা আর্ট
২০১৭ জিও পাগলা আনন্দ রবি কিনাগী পায়েল সরকার বাংলা সুরিন্দর ফিল্মস
২০১৯ জামাই বদল রাজ রবি কিনাগী পায়েল সরকার বাংলা সুরিন্দর ফিল্মস

গায়ক হিরণ সম্পাদনা

তিনি বিন্দাস নামে একটি ভিডিও গানের সিডি বের করেছেন। এখানে তিনি এবং তার স্ত্রী অভিনয় করেছেন এবং গান গেয়েছেন। ভিডিওটি ইতিমধ্যে ইউটিউবে মুক্তি পেয়েছে।[তথ্যসূত্র প্রয়োজন]

পুরস্কার সম্পাদনা

  • নবাব নন্দিনী চলচ্চিত্রের জন্য আনন্দলোক সেরা অ্যাকশন হিরো পুরস্কার।
  • ভালবাসা ভালবাসা ছবির জন্য বি.এফ.জে.এ সবচেয়ে প্রতিজ্ঞাবদ্ধ নায়ক পুরস্কার।
  • মাচো মুস্তানার জন্য উত্তম কলাকার পুরস্কার ২০১২

সামাজিক কার্যকলাপ সম্পাদনা

তিনি ভয়েস অফ ওয়ার্ল্ড নামক একটি এন.জি.ও'র সাথে যুক্ত। তিনি এখানের একজন নিয়মিত দাতা।[তথ্যসূত্র প্রয়োজন]

রাজনৈতিক জীবন সম্পাদনা

২০২১ সালের পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভা নির্বাচনে ভারতীয় জনতা পার্টি (বিজেপি)-র প্রার্থী হিসেবে তিনি ৪ হাজার ভোটের ব্যবধানে ‘খড়্গপুর সদর’ আসনে জয়লাভের মাধ্যমে বিধায়ক নির্বাচিত হয়েছেন।[২]

তথ্যসূত্র সম্পাদনা

  1. "হিরণের 'দাদা'"আনন্দবাজার পত্রিকা। সংগ্রহের তারিখ ৩ মার্চ ২০১২ 
  2. "কেউ হারলেন, কেউ আবির্ভাবেই করলেন বাজিমাৎ, দেখে নিন কেমন হল তারকা প্রার্থীদের ফল"anandabazar.com। আনন্দবাজার। ৩ মে ২০২১। সংগ্রহের তারিখ ৪ মে ২০২১ 

বহিঃসংযোগ সম্পাদনা