হানিফ মোহাম্মদ
হানিফ মোহাম্মদ (উর্দু: حنیف محمد; জন্ম: ২১ ডিসেম্বর, ১৯৩৪- মৃত্যু: ১১ আগস্ট, ২০১৬) তৎকালীন ব্রিটিশ ভারতের জুনাগড় ও মনবদর (বর্তমান: গুজরাত, ভারত) এলাকায় জন্মগ্রহণকারী বিখ্যাত পাকিস্তানি আন্তর্জাতিক ক্রিকেট তারকা ও অধিনায়ক ছিলেন। টেস্ট ক্রিকেটের ইতিহাসে সবচেয়ে দীর্ঘ সময়ব্যাপী ইনিংস খেলে স্মরণীয় হয়ে রয়েছেন।
ব্যক্তিগত তথ্য | ||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|
পূর্ণ নাম | হানিফ মোহাম্মদ | |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
জন্ম | জুনাগড়, জুনাগড় রাজ্য (বর্তমানে গুজরাত, ভারত) | ২১ অক্টোবর ১৯৩৪|||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
মৃত্যু | ১১ আগস্ট ২০১৬ | (বয়স ৮১)|||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
ডাকনাম | লিটল মাস্টার | |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
উচ্চতা | ৫ ফুট ৬ ইঞ্চি (১.৬৮ মিটার) | |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
ব্যাটিংয়ের ধরন | ডানহাতি | |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
বোলিংয়ের ধরন | ডানহাতি অফ ব্রেক | |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
ভূমিকা | ব্যাটসম্যান, অধিনায়ক | |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
আন্তর্জাতিক তথ্য | ||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
জাতীয় দল |
| |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
টেস্ট অভিষেক (ক্যাপ ৪) | ১৬ অক্টোবর ১৯৫২ বনাম ভারত | |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
শেষ টেস্ট | ২৪ অক্টোবর ১৯৬৯ বনাম নিউজিল্যান্ড | |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
খেলোয়াড়ী জীবনের পরিসংখ্যান | ||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
| ||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
উৎস: ইএসপিএনক্রিকইনফো.কম, ১২ আগস্ট ২০১৬ | ||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
|
খেলোয়াড়ী জীবনের শীর্ষে অবস্থানকালে তিনি বিশ্বের অন্যতম সেরা ব্যাটসম্যানরূপে স্বীকৃতি পান। ঐ সময়ে পাকিস্তানে খুব কমসংখ্যক টেস্ট খেলা হতো। সুদীর্ঘ ১৭ বছরের খেলোয়াড়ী জীবনে তিনি ৫৫ টেস্টে অংশ নিয়েছেন।
প্রারম্ভিক জীবন
সম্পাদনামা ‘আমির বি’ ভারতের স্বাধীনতার পূর্বেকার জাতীয় ব্যাডমিন্টন ও টেবিল টেনিসের শিরোপাধারী ছিলেন। ভারত বিভাগের পর তাদের পরিবার করাচিতে চলে যায়। মুশতাক, সাদিক এবং ওয়াজির - ভাইত্রয় সকলেই পাকিস্তানের দলের হয়ে খেলেছেন। পাঁচ ভাইয়ের মধ্যে হানিফের অবস্থান ছিল মধ্যম। পুত্র শোয়েব মোহাম্মদ ও ভাই রইছ মোহাম্মদ একসময় পাকিস্তান দলের দ্বাদশ খেলোয়াড় ছিলেন। তার চার ভাইপো প্রথম-শ্রেণীর ক্রিকেট খেলেছেন।
খেলোয়াড়ী জীবন
সম্পাদনাপাকিস্তান দলের পক্ষে তিনি সর্বমোট ৫৫টি টেস্ট খেলেন। ১৯৫২-৫৩ মৌসুম থেকে ১৯৬৯-৭০ মৌসুম পর্যন্ত ৪৩.৯৮ রান গড়ে ১২টি শতক করেন। ১৬ অক্টোবর, ১৯৫২ তারিখে ভারতীয় দলের বিপক্ষে অনুষ্ঠিত টেস্টে তার অভিষেক ঘটে।
১৯৫৭-৫৮ মৌসুমে ব্রিজটাউনে অনুষ্ঠিত ছয়-দিনব্যাপী টেস্টে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে ব্যক্তিগত সর্বোচ্চ ৩৩৭ রান করে সংশ্লিষ্ট সকলকে তাক লাগিয়ে দেন। এরফলে পাকিস্তান ৪৭৩ রানের বিশাল শূন্যতা পূরণে সক্ষম হয় ও তৃতীয় দিন বিকেলে খেলা ছাড়ে। এ রান করতে হানিফ ষোল ঘণ্টা ঊনচল্লিশ মিনিট সময় ব্যয় করেন। টেস্টটি ড্র হয়েছিল। অদ্যাবধি টেস্ট ক্রিকেটের ইতিহাসে সবচেয়ে দীর্ঘ সময়ব্যাপী ইনিংস। চল্লিশ বছরের অধিককাল এ ইনিংসটি প্রথম-শ্রেণীর ক্রিকেটে দীর্ঘস্থায়ী ছিল। এছাড়াও, একমাত্র টেস্ট হিসেবে দ্বিতীয় ইনিংসে ত্রি-শতক হয়ে রয়েছে। এরফলে তিনি লিটল মাস্টার উপাধিপ্রাপ্ত হন।[২]
১৯৫৮-৫৯ মৌসুমে তিনি তৎকালীন সময়ে প্রথম-শ্রেণীর ক্রিকেটে গড়া ডন ব্রাডম্যানের সর্বোচ্চ রানের ব্যক্তিগত রানের ইনিংসটি অতিক্রমণ করেন। পাঁচশত রান স্পর্শের পূর্ব মুহুর্তে অর্থাৎ ৪৯৯ রান করে তিনি রান আউটের শিকার হন। এ রেকর্ডটি পঁয়ত্রিশ বছর টিকেছিল। পরবর্তীতে ১৯৯৪ সালে ব্রায়ান লারা পাঁচশত রান করে নতুন বিশ্বরেকর্ড গড়েন। প্রথম-শ্রেণীর ক্রিকেটে ৫৫টি শতক হাঁকান যার গড় ৫২.৩২। বোলিংসহ উইকেট-রক্ষকের ভূমিকায়ও অবতীর্ণ হয়েছেন হানিফ।
সম্মাননা
সম্পাদনা১৯৬৮ সালে উইজডেন কর্তৃক বর্ষসেরা ক্রিকেটার হিসেবে মনোনীত হন। ইমরান খান ও জাভেদ মিয়াঁদাদের সাথে তিনিও আইসিসি’র হল অব ফেমের উদ্বোধনী ৫৫জন খেলোয়াড়ের পাশে অন্তর্ভুক্ত হন।
তাকে স্মরণ করে ইএসপিএনক্রিকইনফো মন্তব্য করে যে, প্রকৃত 'লিটল মাস্টার' হিসেবেই তিনি সম্মানিত হয়েছেন যা পরবর্তীকালে সুনীল গাভাস্কার ও শচীন তেন্ডুলকর উপাধিপ্রাপ্ত হয়েছেন।[৩]
১৯৭০-এর দশকে রিভার্স সুইপ ব্যবহারে অন্যতম প্রথম ক্রিকেটার ছিলেন মুশতাক মোহাম্মদ। তবে কখনো কখনো জ্যেষ্ঠ ভ্রাতা হিসেবে হানিফ মোহাম্মদকে এর কৃতিত্ব দেয়া হয়ে থাকে। পরবর্তীকালে বিখ্যাত ক্রিকেট কোচ বব উলমার স্ট্রোকটিকে বিশ্বব্যাপী জনপ্রিয় করে তোলেন।[৪][৫]
২১ ডিসেম্বর, ২০১৮ তারিখে তার ৮৪তম জন্মদিনে গুগল ডুডল তৈরি করে সম্মননা প্রদান করে।[৬]
তথ্যসূত্র
সম্পাদনা- ↑ Hanif Mohammad gets Pride of Performance award
- ↑ http://www.cricinfo.com/wisdenalmanack/content/story/154543.html
- ↑ "The original 'Little Master', Pakistan's Hanif Mohammad dies aged 81"। Cricinfo.com। সংগ্রহের তারিখ ২০১৬-০৮-১১।
- ↑ Weaver, Paul (১৯ মার্চ ২০০৭)। "Bob Woolmer"। সংগ্রহের তারিখ ২৭ আগস্ট ২০১৬ – The Guardian-এর মাধ্যমে।
- ↑ "Latest Cricket News » Bob Woolmer, the `computer coach`"। ১০ জানুয়ারি ২০১৬ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৩১ জুলাই ২০১৮।
- ↑ "Hanif Mohammad's 84th Birthday"। www.google.com। গুগল। সংগ্রহের তারিখ ২৩ সেপ্টেম্বর ২০১৯।
আরও দেখুন
সম্পাদনাবহিঃসংযোগ
সম্পাদনা- ইএসপিএনক্রিকইনফোতে হানিফ মোহাম্মদ (ইংরেজি)
- ক্রিকেটআর্কাইভে হানিফ মোহাম্মদ (সদস্যতা প্রয়োজনীয়) (ইংরেজি)
- রামচন্দ্র গুহ: দি অরিজিন্যাল লিটিল মাস্টার ওয়েব্যাক মেশিনে আর্কাইভকৃত ১৭ জানুয়ারি ২০০৪ তারিখে (ইংরেজি)
পূর্বসূরী জাভেদ বার্কি |
পাকিস্তানি ক্রিকেট অধিনায়ক ১৯৬৪-১৯৬৭ |
উত্তরসূরী সাঈদ আহমেদ |
রেকর্ড | ||
---|---|---|
পূর্বসূরী ডন ব্র্যাডম্যান |
প্রথম-শ্রেণীর ক্রিকেটে ব্যক্তিগত সর্বোচ্চ রান ৪৯৯, করাচি ব বাহাওয়ালপুর, করাচি, ১৯৫৮-৫৯ |
উত্তরসূরী ব্রায়ান লারা |