সেন্ট গ্রেগরিজ হাই স্কুল অ্যান্ড কলেজ

বাংলাদেশের একটি উচ্চ বিদ্যালয়

সেন্ট গ্রেগরিজ হাই স্কুল এন্ড কলেজ, বাংলাদেশ, একটি ক্যাথলিক উচ্চ বিদ্যালয় যা ব্রিটিশ ভারতের ঢাকার লক্ষ্মীবাজারে ১৮৮২ সালে বেলজিয়ামের বেনেডিক্টাইন ধর্মযাজক [১][২][৩] গ্রেগরি ডি গ্রুট দ্বারা প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল। এ বিদ্যালয়ের রয়েছে এক বিশাল ঐতিহ্যবাহী ইতিহাস।

সেন্ট গ্রেগরিজ হাই স্কুল অ্যান্ড কলেজ
সেন্ট গ্রেগরী হাই স্কুল এন্ড কলেজ
অবস্থান
মানচিত্র
৮২, মিউনিসিপ্যাল অফিস স্ট্রিট, লক্ষ্মীবাজার, ঢাকা-১১০০।

তথ্য
ধরনবেসরকারী
ধর্মীয় অন্তর্ভুক্তিখ্রিস্টান ক্যাথলিক গির্জা
প্রতিষ্ঠাকাল১৮৮২ সাল
ইআইআইএন১০৮৪৯৭ উইকিউপাত্তে এটি সম্পাদনা করুন
অধ্যক্ষব্রাদার উজ্জল প্লাসিড পেরেরা,সিএসসি
সহকারী অধ্যক্ষব্রাদার টরেন যোসেফ পালমা সি.এস.সি
শ্রেণীশ্রেণী ১-১২
ওয়েবসাইটwww.sghsbd.com

ইতিহাস সম্পাদনা

১৮৮২ সালে আমেরিকান মিশনারিদের দ্বারা এই বিদ্যালয় এর জন্ম। ঢাকার নটরডেম কলেজ-এর জন্ম এই স্থানেই। ১৯৫৩ সালে এখানকার ক্যাম্পাস থেকে নটরডেমকে সরিয়ে মতিঝিলে স্থানান্তরিত করা হয় এবং একে সেন্ট গ্রেগরী উচ্চ বিদ্যালয় হতে আলাদা করে দেয়া হয়। ১৯১২ সালে সেন্ট ফ্রান্সিস জেভিয়ার বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার আগ পর্যন্ত এখানে ছেলে ও মেয়ে এক সাথে পড়াশুনা করত। পরবর্তীতে এটি বয়েজ স্কুল এ পরিণত হয়। বাংলাদেশ স্কাউটের সূচনা হয় এখানেই ১৯১৪ সালে। অপরদিকে ১৯২৩ সালে এই স্কুল এর মাধ্যমেই বাংলাদেশে বাস্কেটবল খেলার প্রচলন হয়। দেশ বিভাগের আগে সেন্ট গ্রেগরি উচ্চ বিদ্যালয়ে শুধু ইংরেজি মাধ্যমে পড়াশোনা হতো। পরে ১৯৪৭ সালে দেশ বিভাগের পর এখানে বাংলা মিডিয়ামের পড়াশোনা শুরু করা হয়। ১৯৭১ সালে বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার পর এখানে ইংরেজি মাধ্যমে পড়াশোনা বন্ধ করে দেয়া হয়। শুধু বাংলা মাধ্যমে পড়াশোনা চলতে থাকে। তবে ২০০৮ সালের দিকে আবার ইংরেজি ভার্সন চালু করা হয়। ২০১৬ সালে স্কুলটিকে কলেজে উন্নীত করা হয়।

৩১শে মার্চ এই বিদ্যালয়ের ইতিহাসে এক বেদনাময় দিন। ১৯৭১ সালের এই দিন এই স্কুলের প্রাঙ্গণ থেকে ছাত্র, শিক্ষকসহ মোট ৩০ জনকে পাক হানাদার বাহিনী জগন্নাথ কলেজ সংলগ্ন আর্মি ক্যাম্প এ ধরে নিয়ে যায় ও নির্মম ভাবে হত্যা করে। এই দিন শ্রদ্ধেয় শিক্ষক পি ডি কস্তাসহ আরো একাধিক শিক্ষক কে নির্মম ভাবে হত্যা করা হয়। প্রতি বছর এই দিনটিতে তাই তাঁদের উদ্দেশে শ্রদ্ধা অর্পণ করে এই প্রতিষ্ঠানটি।

গুণীজন সম্পাদনা

ফাদার গ্রেগরী ডি গ্রুট এই বিদ্যালয়ের প্রথম প্রধান শিক্ষক ছিলেন। বর্তমান অধ্যক্ষের নাম ব্রাদার প্রদীপ প্লাসিড গোমেজ সি, এস, সি এবং সহকারী অধ্যক্ষ ব্রাদার টরেন যোসেফ পালমা সি.এস.সি। এটা বর্তমানে বাংলাদেশের শ্রেষ্ঠ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে অন্যতম। এই প্রতিষ্ঠান থেকেই অমর্ত্য সেন, একিউএম বদরুদ্দোজা চৌধুরী, কামাল হোসেন, জামিলুদ্দিন হাসানদের মত গুণীজনেরা বেরিয়েছেন। তাছাড়া, এ স্বনামধন্য বিদ্যালয়েরই ছাত্র ছিলেন তাজউদ্দিন আহমদ যিনি কিনা বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধে মুখ্য অবদান রেখেছিলেন এবং স্বাধীন বাংলাদেশের প্রথম প্রধানমন্ত্রী ছিলেন। বিখ্যাত ব্যান্ড শিরোনামহীনের প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমান জিয়া ও এই স্কুলেরই ছাত্র ছিলেন। এছাড়া এই স্কুলের সুযোগ্য দেশের দুই গুণী ব্যক্তিত্ব ১৯৫০ সালে সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী ও ১৯৫৭ সালে জামিলুর রেজা চৌধুরী এখান থেকেই পাস করে উচ্চ শিক্ষার পথে এগিয়ে যান।

গ্রেগরীয়ানদের শপথ সম্পাদনা

আমি প্রতিজ্ঞা করছিঃ

  • সর্বদা পিতামাতা, শিক্ষক এবং গুরুজনদের বাধ্য থাকব।
  • প্রতিদিন অপরের জন্য ভালো কিছু করতে সচেষ্ট থাকব।
  • সত্য, সরল, বিশ্বস্ত, ন্যায্য এবং শ্রমসাধ্য করে নিজের জীবনকে গড়ে তুলব।
  • পরিবেশকে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন ও স্বাস্থ্যকর রাখতে নিজেকে নিয়োজিত রাখবো।
  • প্রতিদিন তিন থেকে পাঁচ ঘণ্টা নিজে অধ্যয়ন করবো।
  • মানবতার সেবায় নিজের জীবনকে উৎসর্গ করব।
  • স্রষ্টার প্রতি গভীর বিশ্বাস রাখব; দেশ এবং শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের সব নিয়মকানুন মেনে চলব।

তথ্যসূত্র সম্পাদনা

  1. "St Gregory's School – Banglapedia"en.banglapedia.org (ইংরেজি ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ২০১৭-০৮-২৩ 
  2. Mohsin, Maria। "OLD SCHOOLS – PART 4: St Gregory's High School"The Independent। ১৭ আগস্ট ২০২১ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৭ আগস্ট ২০২১ 
  3. "Friendship beyond boundaries"। The Financial Express। ৫ আগস্ট ২০২১। সংগ্রহের তারিখ ১৮ আগস্ট ২০২১