সিলেটি ভাষা
সিলেটি ভাষা বা সিলোটি ভাষা (সিলেটি নাগরি: ꠍꠤꠟꠐꠤ silɔʈi) বাংলাদেশের সিলেট অঞ্চলে এবং ভারতের আসাম রাজ্যের বরাক উপত্যকা ও হোজাই জেলায় প্রচলিত একটি ইন্দো-আর্য ভাষা। প্রায় ১ কোটি ১৮ লাখ মানুষ এই ভাষায় কথা বলেন। বাংলাদেশের সিলেট বিভাগের সিলেটি ভাষার ভিত্তি পূর্বাঞ্চলীয় হওয়ায় এবং বাংলা ভাষার প্রমিত রীতির ভিত্তি নদীয়া তথা পশ্চিমাঞ্চলীয় আঞ্চলিক বাংলা হওয়ায়, বাংলা ভাষার মূল রীতির সাথে এর যথেষ্ট পার্থক্য দেখা যায়।[৩][৪][৫] অনেক ভাষাবিদ এটিকে বাংলার উপভাষা হিসেবে বিবেচনা করেন, অনেকে এটিকে একটি স্বাধীন ভাষা বলে মনে করেন।
সিলেটি | |
---|---|
সিলটি সিলোটি | |
ꠍꠤꠟꠐꠤ | |
উচ্চারণ | silɔʈi |
দেশোদ্ভব | বাংলাদেশ ও ভারত |
মাতৃভাষী | ১ কোটি ১৮ লাখ (২০২০)
|
সিলেটি নাগরী লাতিন লিপি বাংলা লিপি পূর্ব নাগরী (ঐতিহাসিক)[১] | |
ভাষা কোডসমূহ | |
আইএসও ৬৩৯-৩ | syl |
ভাষাবিদ তালিকা | syl |
গ্লোটোলগ | sylh1242 [২] |
লিঙ্গুয়াস্ফেরা | 59-AAF-ui |
দক্ষিণ এশিয়ায় সিলেটি ভাষাভাষী | |
নাম
সম্পাদনাবৃহত্তর সিলেট জেলার নাম থেকে সিলেটি নামটির উৎপত্তি, যা এই অঞ্চলের উপভাষা বা ভাষাকে বোঝাতে ব্যবহার করা হয়।[৬] গ্রিয়ারসনের (১৯০৩) মত অনুসারে, সিলেটের নাম অনুসারে ইউরোপীয়রা এখানকার স্থানীয় ভাষাকে সিলেটিয়া নামে অভিহিত করত।[৭] যদিও সেই সময়ের ভাষাভাষীরা এটিকে জৈন্তিয়াপুরি, পূর্ব শ্রীহট্টীয়া বা উজানিয়া হিসেবে ডাকত।[৭]
সিলেটি ভাষা সিলেট্টি, সিলেটি বাংলা, ছিলটি, সিলোটীয়া ইত্যাদি নামেও পরিচিত।[৮]
ইতিহাস
সম্পাদনাএ ভাষার প্রচলন শুধু সিলেটেই সীমাবদ্ধ নয়, ভারতের আসাম, ত্রিপুরা এবং মেঘালয়ের বহু সংখ্যক লোকের মুখের ভাষা সিলটী। গবেষক সৈয়দ মোস্তফা কামাল ও অধ্যাপক মুহম্মদ আসাদ্দর আলীর মতে জটিল সংস্কৃত-প্রধান বাংলা বর্ণমালার বিকল্প লিপি হিসেবে ‘সিলটী নাগরী’ লিপির উদ্ভাবন হয়েছিল খ্রিষ্টীয় চতুর্দশ শতাব্দীর মাঝামাঝি সময়ে। গবেষকদের ধারণা, ইসলাম প্রচারক সুফী দরবেশ এবং স্থানীয় অধিবাসীদের মনের ভাব বিনিময়ের সুবিধার জন্যে নাগরী লিপির উদ্ভাবন হয়েছিল। এই নাগরী বা সিলেটি ভাষা শুধু ভারত বা বাংলাদেশেই সীমাবদ্ধ নয়, ক্রমে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে বিস্তৃতি লাভ করেছে। এক পরিসংখ্যানে দেখা গেছে, সিলেট অঞ্চল এবং ভারত ছাড়াও বিশ্বের অন্যান্য দেশে এ ভাষা ব্যবহারকারীর সংখ্যা সাত লক্ষেরও বেশি।[তথ্যসূত্র প্রয়োজন]
বর্ণমালা
সম্পাদনাসিলেটে প্রাচীনকাল হতে বাংলার অন্যান্য অঞ্চলের মত বাংলা লিপিতে লেখালেখি হলেও মধ্যযুগে ইসলামের আগমনের পর বাংলার পাশাপাশি সিলেটি নাগরী লিপি প্রচলিত হয়। তবে বর্তমানে নাগরী লিপি তেমন চোখে পড়ে না, লেখার জন্য এখন শুধু বাংলা বর্ণমালাই ব্যবহৃত হয়। ভারতের বিহার রাজ্যের কৈথী লিপির সঙ্গে সিলেটি নাগরী লিপির সম্পর্ক রয়েছে। যদিও এর প্রকৃত উৎপত্তি সম্পর্কে এখনও জানা যায়নি। তবে সর্বপ্রাচীন খোঁজ পাওয়া পাণ্ডুলিপিটি আনুমানিক ১৫৪৯ অথবা ১৭৭৪ খ্রিস্টাব্দের মাঝামাঝি সময়ে লেখা। (যদিও পাণ্ডুলিপিতে তারিখ লিপিবদ্ধ ছিল, কিন্তু লেখা থেকে তা পরিষ্কার নয়)
সিলেটি নাগরী লিপিতে ৩৩টি হরফ বা বর্ণ রয়েছে। এর মধ্যে স্বরবর্ণ ৫টি, ব্যঞ্জনবর্ণ ২৭টি, অযোগবাহবর্ণ বা ধ্বনিনির্দেশক চিহ্ন ১টি।
টোন
সম্পাদনাসিলেটি একটি টোনাল উপভাষা। ইন্দো-আর্য ভাষাসমূহ সাধারণত টোনাল হয় না। সিলেটিতে দু’রকমের টোনাল বৈপরীত্য আছে: মহাপ্রাণতা লোপ পাওয়ার দরুন উচ্চ টোনের উদ্ভব এবং অন্যত্র সমতল বা নিরপেক্ষ টোন। [৯]
শব্দ | লিপ্যন্তর | টোন | অর্থ |
---|---|---|---|
অত (ꠀꠔ) | at | সমতল | অন্ত্র |
আত (‘ꠀꠔ) | át | উচ্চ | হাত |
কালি (ꠇꠣꠟꠤ) | xali | সমতল | কালি |
খালি (ꠈꠣꠟꠤ) | xáli | উচ্চ | ফাঁকা |
গুড়া (ꠉꠥꠠꠣ) | guṛa | সমতল | গুঁড়ো |
ঘুড়া (ꠊꠥꠠꠣ) | gúṛa | উচ্চ | ঘোড়া |
চুরি (ꠌꠥꠞꠤ) | suri | সমতল | চুরি |
ছুরি (ꠍꠥꠞꠤ) | súri | উচ্চ | ছুরি |
জাল (ꠎꠣꠟ) | zal | সমতল | জাল |
ঝাল (ꠏꠣꠟ) | zál | উচ্চ | ঝাল |
টিক (ꠐꠤꠇ) | ṭik | সমতল | টিক |
ঠিক (ꠑꠤꠇ) | ṭík | উচ্চ | ঠিক |
ডাল (ꠒꠣꠟ) | ḍal | সমতল | ডাল |
ঢাল (ꠓꠣꠟ) | ḍál | উচ্চ | ঢাল |
তাল (ꠔꠣꠟ) | tal | সমতল | তাল |
থাল (ꠕꠣꠟ) | tál | উচ্চ | থালা |
দান (ꠖꠣꠘ) | dan | সমতল | দান |
ধান (ꠗꠣꠘ) | dán | উচ্চ | ধান |
পুল (ꠙꠥꠟ) | ful | সমতল | সেতু |
ফুল (ꠚꠥꠟ) | fúl | উচ্চ | ফুল |
বালা (ꠛꠣꠟꠣ) | bala | সমতল | বালা |
ভালা (ꠜꠣꠟꠣ) | bála | উচ্চ | ভালো |
বাত (ꠛꠣꠔ) | bat | সমতল | বাত |
ভাত (ꠜꠣꠔ) | bát | উচ্চ | ভাত |
ধারণা করা হয় মহাপ্রাণ ধ্বনিগুলোর মহাপ্রাণতা লোপ পাওয়ার ফলে এই টোনের উদ্ভব হয়েছে। সিলেটি ভাষার সহাবস্থানের সুদীর্ঘ ইতিহাস আছে অন্যান্য তিব্বতি-বর্মী ভাষার সঙ্গে যেমন ককবরক, রেয়াঙের বিভিন্ন উপভাষা যেগুলো টোনাল প্রকৃতির। যদিও ওই সমস্ত টোনাল ভাষা থেকে আভিধানিক উপাদান সরাসরি ঋণ করার কোনও প্রমাণ নেই, তথাপি ওই সমস্ত তিব্বতি-বর্মী ভাষাভাষী আদিবাসী জনগোষ্ঠী, যারা সিলেটিকে কমবেশি যোগাযোগের মাধ্যম হিসেবে ব্যবহার করে থাকেন, তাদের ভৌগোলিক অবস্থান সিলেটি টোনের উদ্ভবের পিছনে একটি কারণ হতে পারে।
ধ্বনিতত্ত্ব
সম্পাদনা
|
|
তুলনা
সম্পাদনাপ্রমিত বাংলা | অসমীয়া | সিলেটি | আইপিএ |
---|---|---|---|
চরণস্পর্শ | চৰণস্পৰ্শ | কদম বুচি (ꠇꠖꠝ ꠛꠥꠌꠤ) | /xɔdɔmbusi/ |
ঢাকা | ঢাকা | ঢাকা | /ɖaxa/ |
একজন লোক | এজন লোক | একজম মানুস (ꠄꠇꠎꠘ ꠝꠣꠘꠥꠡ) | /exzɔn manuʃ/ |
একজন | এজন | একজন (ꠄꠇꠎꠘ) | /exzɔn/ |
একজন পুরুষ | এজন পুৰুষ | একটা বেটা (ꠄꠇꠐꠣ ꠛꠦꠐꠣ) | /exʈa beʈa/ |
কীসের | কিহৰ | কিওর (ꠇꠤꠅꠞ) | /kioɾ/ |
কন্যা, মেয়ে | কন্যা, জী | কৈন্না (ꠇꠂꠘ꠆ꠘꠣ), ঝি (ꠏꠤ), পুরি (ꠙꠥꠠꠤ) | /xoinna/,/zi/,/ɸuɽi/ |
মানবজাতি | মানৱজাতি, মানুহৰ জাতি | মাইনসর জাত (ꠝꠣꠁꠘꠡꠞ ꠎꠣꠔ) | /mainʃɔɾ zat̪/ |
অসমীয়া, অহমিয়া | অসমীয়া | অহমিয়া (ꠅꠢꠝꠤꠀ) | /ɔɦɔmia/ |
আঙুল | আঙুলি | অঙ্গুইল (ꠀꠋꠉꠥꠁꠟ) | /aŋguil/ |
আংটি | আঙুঠি | আংটি (ꠀꠋꠐꠤ) | /aŋʈi/ |
আগুনপোড়া | জুইত পোৰা, জুইত সেকা | আগুইনপুরা (ꠀꠉꠥꠁꠘꠙꠥꠞꠣ) | /aguinfuɽa/ |
অসিধারী | অসিধাৰী | তলুয়ারধারি (ꠔꠟꠥꠀꠞꠗꠣꠞꠤ) | /t̪ɔluaɾd̪aɾi/ |
পাখি, পক্ষী | চৰাই, পক্ষী | পাখি (ꠙꠣꠈꠤ), পাখিয়া (ꠙꠣꠈꠤꠀ) | /ɸaki/,/ɸakia/ |
ভালোবাসা, প্রেম, পিরিতি | ভালপোৱা, প্রেম, পিৰিটি, মৰম | ভালাপাওয়া (ꠜꠣꠟꠣꠙꠣꠅꠣ), পেরেম (ꠙꠦꠞꠦꠝ), পিরিতি (ꠙꠤꠞꠤꠔꠤ), মহব্বত (ꠝꠢꠛ꠆ꠛꠔ) | Firiti/balaɸawa/,/ɸeɾem/,/ɸiɾit̪i/,/mɔɦɔbbɔt̪/ |
পরে | পিছত | পরে (ꠙꠞꠦ), বাদে (ꠛꠣꠖꠦ) | /ɸɔɾe/,/bad̪e/ |
সকল, সমস্ত, সব | সকল, সকলো, সমস্ত | হকল (ꠢꠇꠟ), হক্কল (ꠢꠇ꠆ꠇꠟ), শব (ꠡꠛ) | /ɦɔxɔl/,/ɦɔkkɔl/,/ʃɔb/ |
সারা | গোটেই | হারা (ꠢꠣꠀꠣ) | /ɦaɾa/ |
সাত বিল | সাত বিল | হাত বিল (ꠢꠣꠔ ꠛꠤꠟ) | /ɦat̪ bil/ |
সাতকড়া | সাতকৰা | হাতকড়া (ꠢꠣꠔꠇꠠꠣ) | /ɦat̪xɔɽa/ |
সাতবার | সাতবাৰ | হাতবার (ꠢꠣꠔꠛꠣꠞ) | /ɦat̪baɾ/ |
সিলেটি | ছিলঠীয়া | ছিলটি (ꠍꠤꠟꠐꠤ) | /silɔʈi/ |
সৌভাগ্য | সৌভাগ্য | সওভাইগ্গ (ꠡꠃꠜꠣꠁꠉ꠆ꠉ), খুশনছিব (ꠈꠥꠡꠘꠍꠤꠛ) | /ʃɔubaiggɔ/,/kuʃnɔsib/ |
ভালো করে খান। | ভালকৈ খাওক। | ভালা করি খাউক্কা (ꠜꠣꠟꠣ ꠇꠞꠤ ꠈꠣꠃꠇ꠆ꠇꠣ), ভালা ঠিকে খাউক্কা (ꠜꠣꠟꠣ ꠑꠤꠇꠦ ꠈꠣꠃꠇ꠆ꠇꠣ)। | /bala xɔɾi xaukka/,/bala ʈike xaukka/ |
স্ত্রী, পত্নী | স্ত্রী, ঘৈণী, পত্নী | বউ (ꠛꠃ) | /bɔu/ |
স্বামী, বর, পতি | স্বামী, গিৰি, পতি | জামাই (ꠎꠣꠝꠣꠁ) | /zamai/ |
জামাই | জামাই | দামান (ꠖꠣꠝꠣꠘ) | /d̪aman/ |
শ্বশুর | শহুৰ | হউর (ꠢꠃꠞ) | /ɦɔuɾ/ |
শাশুড়ি | শাহু | হড়ি (ꠢꠠꠣ) | /ɦɔɽi/ |
শালা | খুলশালা | হালা (ꠢꠣꠟꠣ) | /ɦala/ |
শালী | খুলশালী | হালি (ꠢꠣꠟꠤ) | /ɦali/ |
শেখা | শিকা | হিকা (ꠢꠤꠇꠣ) | /ɦika |
সরষে Shorshe |
সৰিয়হ | হৈরহ (ꠢꠂꠞꠢ) | /ɦoiɾoɦ/ |
শিয়াল | শিয়াল | হিয়াল (ꠢꠤꠀꠟ) | /ɦial/ |
বেড়াল | মেকুৰী | মেকুর (ꠝꠦꠇꠥꠞ), বিলাই (ꠛꠤꠟꠣꠁ) | /mekuɾ/,/bilai/ |
শুঁটকি | শুকান মাছ | হুটকি (ꠢꠥꠐꠇꠤ), হুকৈন (ꠢꠥꠇꠂꠘ) | /ɦuʈki/,/ɦukoin/ |
আপনার নাম কী? | আপোনাৰ নাম কি? | আপনার নাম কিতা? (ꠀꠙꠘꠣꠞ ꠘꠣꠝ ꠇꠤꠔꠣ?) | /aɸnaɾ nam kit̪a/ |
ডাক্তার আসার পূর্বে রোগী মারা গেল। | ডাক্তৰ অহাৰ আগতেই ৰোগী মৰি গ’ল। | ডাক্তর আওয়ার আগেউ বিমারি মরি গেল (ꠒꠣꠇ꠆ꠔꠞ ꠀꠅꠣꠞ ꠀꠉꠦꠃ ꠛꠦꠝꠣꠞꠤ ꠝꠞꠤ ꠉꠦꠟ)। | /ɖaxt̪ɔɾ awaɾ ageu bemaɾi mɔɾi gelo/ |
বহুদিন দেখিনি। | বহুদিন দেখা নাই। | বাক্কা দিন দেখছি না (ꠛꠣꠇ꠆ꠇꠣ ꠖꠤꠘ ꠖꠦꠈꠍꠤ ꠘꠣ)। | /bakka d̪in d̪exsi na/ |
ভালো আছেন? | ভাল আছে নে? | ভালা আছৈন নি? (ꠜꠣꠟꠣ ꠀꠍꠂꠘ ꠘꠤ?) | /bala asoin ni/ |
আমি তোমাকে ভালোবাসি। | মই তোমাক ভাল পাওঁ। | আমি তুমারে ভালা পাই (ꠀꠝꠤ ꠔꠥꠝꠣꠞꠦ ꠜꠣꠟꠣ ꠙꠣꠁ)। | /ami t̪umare bala ɸai/ |
আমি ভুলে গেছি। | মই পাহৰি গৈছোঁ। | আমি পাওরি লিছি (ꠀꠝꠤ ꠙꠣꠅꠞꠤ ꠟꠤꠍꠤ)। | /ami ɸaʊɾi lisi/ |
মাংসের ঝোলটা আমার খুব ভালো লেগেছে। | মাংসৰ তৰকাৰীখিনি মোৰ খুব ভাল লাগিছে। | গুস্তর সালনটা আমার খুব ভালা লাগছে (ꠉꠥꠍꠔꠞ ꠍꠣꠟꠘꠐꠣ ꠀꠝꠣꠞ ꠈꠥꠛ ꠜꠣꠟꠣ ꠟꠣꠉꠍꠦ)। | /gust̪ɔɾ salɔnʈa amaɾ kub bala lagse/ |
শিলচর কোনদিকে? | শিলচৰ কোন ফালে/দিশত? | হিলচর কুন বাএ/বাইদি/মুখা? (ꠢꠤꠟꠌꠞ ꠇꠥꠘ ꠛꠣꠄ/ꠛꠣꠁꠖꠤ/ꠝꠥꠈꠣ?) | /ɦil͡tʃɔɾ kun bae, baid̪i, muka/ |
শৌচাগার কোথায়? | শৌচালয় ক’ত? | টাট্টি কুনখানো/কুনানো/খানো/কই? (ꠐꠣꠐ꠆ꠐꠤ ꠇꠥꠘꠈꠣꠘꠧ/ꠇꠥꠘꠣꠘꠧ/ꠈꠣꠘꠧ/ꠇꠁ?) | /ʈaʈʈi kunxano, kunano, xano, xoi/ |
এটা কী? | এইটো কি? | ইগু/ইকটা/ইটা কিতা? (ꠁꠉꠥ/ꠁꠇꠐꠣ/ꠁꠐꠣ ꠇꠤꠔꠣ?) | /igu, ikʈa, iʈa kit̪a/ |
সেটা কী? | সেইটো কি? | হিগু/হিকটা/হিটা কিতা? (ꠢꠤꠉꠥ/ꠢꠤꠇꠐꠣ/ꠢꠤꠐꠣ ꠇꠤꠔꠣ?) | /ɦigu, ɦikʈa, ɦiʈa kit̪a/ |
শেষ | শেষ | ছেশ (ꠢꠦꠡ) | /ɦeʃ/ |
শ্রেণিবিভাগ
সম্পাদনাঅমৃতা দাস সিলেটি ভাষার বৈচিত্র্যকে দুটি দলে শ্রেণীবদ্ধ করেছেন। পূর্ব-সিলেট পশ্চিম গ্রুপ এবং সিলেট-কাছার গ্রুপ।[১০]
সিলেট-কামরূপ অঞ্চলের বিভিন্ন অঞ্চলে ভাষার বৈচিত্র্য বা বিভিন্ন উপভাষিক পরিবর্তন লক্ষ্য করা যায়। যেমন পশ্চিম সিলেটের উপভাষা, উত্তর-পূর্ব সিলেটের উপভাষা, উত্তর সিলেটের উপভাষা, শহরের উপভাষা (সিলেটিয়া/নাগরিয়া)। ময়মনসিংহের উপভাষার মতো পশ্চিমা উপভাষা।[১১]
শাহেলা হামিদ উল্লেখ্য করেন যে, প্রায়শই ভুলভাবে বলা হয় যে সমগ্র জেলার ভাষা অভিন্ন এবং শ্রীহট্টিয়া শব্দটি দিয়ে জেলার পশ্চিম ও দক্ষিণের উপভাষায় ভুলভাবে প্রয়োগ করা হয়েছে।[১২]
উপভাষা বৈচিত্র
সম্পাদনাসিলেটি ভাষার উপভাষাসমূহ (সিলেটি: ꠍꠤꠟꠐꠤ ꠛꠥꠟꠤꠘ) বলতে সিলেটি ভাষা বৈচিত্রের দুটি গ্রুপ নিয়ে গঠিত, পূর্ব-সিলেট পশ্চিম গ্রুপ এবং সিলেট-কাছার গ্রুপকে নির্দেশ করে।[১০] বেশিরভাগ উপভাষাগুলিকে ইন্দো-আর্য হিসাবে শ্রেণীবদ্ধ করা হলেও এদের তিব্বত-বর্মন ভাষার মতো টোনল বা স্বরীয় বৈশিষ্ট্যও রয়েছে।[১৩]
২০০৫ সালে, শাহেলা হামিদের একটি গবেষণায় সিলেট সদর, সিলেট শহর, দক্ষিণ সিলেট(মৌলভীবাজার), হবিগঞ্জ এবং সুনামগঞ্জে সিলেটি ভাষার বৈচিত্র্যকে প্রদর্শন করে।[১২]
সিলেট সদর | সখাল/বিয়ান/ ওই গেছে আর হখলপাকিন্তে ডাকিরা। |
---|---|
সিলেট শহরে | /সখাল/ ওই গেছে আর সকল পাকিন্তে ডাকিরা। |
দক্ষিণ সিলেট | /বিয়ান/ ওই গেছে আর হকল পাকিন্তে ডাকিরা। |
হবিগঞ্জ | /বিয়াইন/কাল ওই গেছে গা আর অখল পাইক্কাইন্তে ডাকতাছে। |
সুনামগঞ্জ | /সখাল/ অই গেছে আর সব পাইক্কে ডাকরা/ডাকতাছে। |
ভৌগোলিক সীমানা
সম্পাদনাসিলেটি ভাষার ভৌগোলিক সীমানা একভাষিক নয়, তবে এটি অন্যান্য স্বরীয় ভাষা যেমন ককবরক, রেয়াং ইত্যাদির সাথে সহ-অবস্থান করে।[১৩] সিলেটি ভাষার বৈচিত্র্যগুলোকে দুই ভাগে ভাগ করা হয়েছে।[১০]
দক্ষিণ-পশ্চিম সিলেটি গোষ্ঠী: হবিগঞ্জ - সুনামগঞ্জ অঞ্চল এই গ্রুপের অন্তর্ভুক্ত।
উত্তর-পূর্ব সিলেটি গোষ্ঠী: সিলেট, মৌলভীবাজার ও বরাক উপত্যকা এই গ্রুপের অন্তর্ভুক্ত।[১০]
-
হবিগঞ্জ (প্রাচীন: তরফ রাজ্য)
-
সুনামগঞ্জ (প্রাচীন: লাউড় রাজ্য)
-
মৌলভীবাজার (প্রাচীন: ইটা রাজ্য)
-
সিলেট সদর (প্রাচীন: গৌড়/জৈন্তিয়া রাজ্য)
-
বরাক উপত্যকা (করিমগঞ্জ, হাইলাকান্দি, কাছাড়)
ধর্মীয় বৈচিত্র
সম্পাদনাকতিপয় শব্দচয়ন এবং অভিবাদন জানানো হিন্দু, মুসলিম এবং ধর্মীয় শাস্ত্র দ্বারা প্রভাবিত অন্যান্য ধর্মীয় গোষ্ঠীর ক্ষেত্রে ভিন্ন হয়ে থাকে।[১০]
হিন্দু ভাষাভাষীরা বেশিরভাগই সংস্কৃত থেকে উদ্ভূত ঋণ শব্দ ব্যবহার করেন।
মুসলিম ভাষাভাষীরা বেশিরভাগই ফার্সি ও আরবি ভাষা থেকে উদ্ভূত ঋণ-শব্দ ব্যবহার করেন।
আরও দেখুন
সম্পাদনাতথ্যসূত্র
সম্পাদনা- ↑ "Sylheti language and the Syloti-Nagri alphabet"। omniglot.com। সংগ্রহের তারিখ ২০২২-০৯-১৫।
- ↑ হ্যামারস্ট্রোম, হারাল্ড; ফোরকেল, রবার্ট; হাস্পেলম্যাথ, মার্টিন, সম্পাদকগণ (২০১৭)। "সিলেটি"। গ্লোটোলগ ৩.০ (ইংরেজি ভাষায়)। জেনা, জার্মানি: মানব ইতিহাস বিজ্ঞানের জন্য ম্যাক্স প্লাংক ইনস্টিটিউট।
- ↑ সিলেটি | এথনোলগ
- ↑ ছিলটী | অমনিগলট
- ↑ স্টার | সিলেটী
- ↑ অ্যান কেরশেন (২০০৪)। স্ট্রেঞ্জার্স, এলিয়েন্স অ্যান্ড এশিয়ান্স: হিউগেনাটস, জিউস অ্যান্ড বাংলাদেশিস ইন স্পাইটালফিল্ডস ১৬৬৬-২০০০ (ইংরেজি ভাষায়)। পৃষ্ঠা ১৪৫। রাউটলেজ।
- ↑ ক খ গ্রিয়ারসন, জি এ, সম্পাদক (১৯০৩)। Linguistic Survey of India: Indo-Aryan Family Eastern Group [ভারতের ভাষাগত সমীক্ষা: ইন্দো-আর্য প্রিবার পূর্বাঞ্চলীয় গোষ্ঠী]। ৫ম। পৃষ্ঠা ২২১–২২৪। সংগ্রহের তারিখ ২৭ জুন ২০২০।
- ↑ উইলিয়াম ফারউলি (২০০৩)। দি ইন্টারন্যাশনাল এনসাইক্লোপিডিয়া অফ লিঙ্গুইস্টিকস: আ ৪-ভলিউম সেট। পৃষ্ঠা ৪৮৩। অক্সফোর্ড ইউনিভার্সিটি প্রেস, যুক্তরাষ্ট্র। ৯ সেপ্টেম্বর ২০২০।
- ↑ Gope, Amalesh; Mahanta, Shakun (মে ২০১৪)। "Lexical Tones in Sylheti"। ResearchGate।
- ↑ ক খ গ ঘ ঙ দাশ, অমৃতা রানী (অক্টোবর ২০১৭)। A Comparative Study of Bangla and Sylheti Grammar [বাংলা ও সিলেটি ব্যাকরণের তুলনামূলক অধ্যয়ন] (পিডিএফ) (পিএইচডি) (ইংরেজি ভাষায়)। উনিভার্সিতা দেইলি স্তুদি দি নাপোলি ফেদেরিকো সেকোন্দো। পৃষ্ঠা ২০–৩০।
- ↑ জি. এ. গ্রিয়ারসন (১৯০৩)। লিঙ্গুইস্টিক সার্ভে অফ ইন্ডিয়া (ইংরেজি ভাষায়)।
- ↑ ক খ হামিদ, শাহেলা (জুন ২০০৫)। A Study of Language Maintenance and Shift in the Sylheti Community in Leeds [লিডসে সিলেটি সম্প্রদায়ের ভাষা রক্ষণাবেক্ষণ এবং পরিবর্তনের একটি অধ্যয়ন] (পিডিএফ) (পিএইচডি) (ইংরেজি ভাষায়)। ইয়র্ক বিশ্ববিদ্যালয়। পৃষ্ঠা ৫২।
- ↑ ক খ গোপ, অমলেশ; মহন্ত, শকুন্তলা (মে ২০১৪)। লেক্সিক্যাল টোনস ইন সিলেটি। ভাষার স্বরীয় দিক নিয়ে ৪র্থ আন্তর্জাতিক সম্মেলন (ইংরেজি ভাষায়)। পৃষ্ঠা ১১।
এই নিবন্ধটি অসম্পূর্ণ। আপনি চাইলে এটিকে সম্প্রসারিত করে উইকিপিডিয়াকে সাহায্য করতে পারেন। |