রাণী বিলাসমনি সরকারি বালক উচ্চ বিদ্যালয়
এই নিবন্ধটিকে উইকিপিডিয়ার জন্য মানসম্পন্ন অবস্থায় আনতে এর বিষয়বস্তু পুনর্বিন্যস্ত করা প্রয়োজন। (জানুয়ারি ২০২৩) |
রাণী বিলাসমনি সরকারি বালক উচ্চ বিদ্যালয় বাংলাদেশের গাজীপুর জেলার একটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। জয়দেবপুরে অবস্থিত এই বিদ্যালয়টি ১৯০৫ সালে প্রতিষ্ঠিত হয়। তৎকালীণ ভাওয়ালের রাণী বিলাসমনি দেবীর বহু স্মৃতি বিজড়িত এই শতাব্দীপ্রাচীন বিদ্যালয়টি প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। এই স্কুলটি ঐতিহ্যবাহী ভাওয়াল রাজবাড়ীর একেবারে কাছ ঘেঁষে অবস্থিত। বিদ্যালয়টি কেবল গাজীপুর নয় বরং সমগ্র বাংলাদেশের জন্য নিঃসন্দেহে একটি আদর্শ বিদ্যালয়।
রাণী বিলাসমনি সরকারি বালক উচ্চ বিদ্যালয় | |
---|---|
অবস্থান | |
স্থানাঙ্ক | ২৩°৫৯′৫৮″ উত্তর ৯০°২৫′৩০″ পূর্ব / ২৩.৯৯৯৩৯৮° উত্তর ৯০.৪২৫০৯২° পূর্ব |
তথ্য | |
ধরন | সরকারি |
নীতিবাক্য | শিক্ষার জন্য আসো, সেবার জন্য বেরিয়ে যাও |
প্রতিষ্ঠাকাল | ১৯০৫ সাল |
প্রতিষ্ঠাতা | রাণী বিলাসমণি দেবী |
ইআইআইএন | ১০৮৯৫৫ |
শিক্ষকমণ্ডলী | প্রায় ৫৫ |
শ্রেণি | ৬-১০ |
লিঙ্গ | বালক |
শিক্ষার্থী সংখ্যা | ২,০০০+ Mosque =১টি |
অবকাঠামো
সম্পাদনারাণী বিলাসমনি সরকারি বালক উচ্চ বিদ্যালয় ১৯০৫ সালে ভাওয়াল রাজা কর্তৃক প্রতিষ্ঠিত হবার পর এর নাম করা হয় এম.ভি স্কুল। রাজবাড়ীর একদম কোল ঘেঁষে এর স্কুল ভবনটি নির্মান করা হয়। যেটি বর্তমানে রাজবাড়ী রোডের উত্তর পাশে অবস্থিত এবং স্কুলের শহিদ মিনার এই ভবনের মাঠেই স্থাপন করা হয়েছে।ভাওয়াল রাজ আমলেই এই ভবনের সামনে বিস্তৃত একটি দীঘি খনন করা হয়েছে। এই ভবনটি এখন স্কুলের স্কাউট ডেন এবং স্কুলে নিয়োগপ্রাপ্ত সরকারি কর্মচারীদের কোয়ার্টার হিসেবে ব্যাবহার করা হয়। রাজবাড়ী রোডের দক্ষিন পাশে স্থাপিত ভবনগুলোতেই এখন শিক্ষা কার্যক্রম পরিচালিত হয়। এখানে ৩ তলা ২ টি ভবন ( পশ্চিম ভবন এবং দক্ষিণ ভবন একটি করিডোর দিয়ে যুক্ত) এবং ৫ তলা বিশিষ্ট একটি নতুন ভবন সহ ৩টি ভবন আছে। এছাড়া, স্টেডিয়াম রোডের পশ্চিমে স্কুলের হোস্টেল এবং জামে মসজিদ অবস্থিত।
উল্লেখযোগ্য প্রধান শিক্ষকগণ
সম্পাদনা১৯০৫ সালে প্রতিষ্ঠিত হবার পর থেকেই উচ্চ শিক্ষিত এবং যথেষ্ট দক্ষতা সম্পন্ন প্রধান শিক্ষকগণ সুনামের সাথে উক্ত বিদ্যালয়ের যশ- খ্যাতি উত্তরোত্তর বৃদ্ধি করে চলছেন। বাবু বিনোদ বিহারি বাবু (কার্যাকাল ০৯-১১-১৯০৫ হইতে ৩১-০৭-১৯০৬ পর্যন্ত) উক্ত বিদ্যালয়ের প্রথম প্রধান শিক্ষক হিসেবে দ্বায়িত্ব প্রাপ্ত হন। জনাব আশহার আলি (কার্যাকাল ০৩-০৪-১৯৫১ হইতে ৩০-০৬-১৯৫২ পর্যন্ত) উক্ত বিদ্যালয়ের প্রথম মুসলিম প্রধান শিক্ষক এবং অষ্টম প্রধান শিক্ষক হিসেবে দ্বায়িত্ব পালন করেন। উল্লেখযোগ্য,বাবু মনিন্দ্র মোহন ঘোষের (কার্যাকাল ০৮-০৮-১৯৪০ হইতে ২৪-১২-১৯৪৯) অব্যাহতি লাভের পর ২৫-১২-১৯৪৯ হইতে ০২-০৪-১৯৫১ পর্যন্ত প্রধান শিক্ষক পদটি প্রাতিষ্ঠানিক ভাবে শুণ্য ছিল। মিসেস আমিনা খাতুন (কার্যাকাল ০৬-০৪-১৯৯৪ হইতে ১৩-০৪-১৯৯৪ পর্যন্ত) রাণী বিলাসমনি সরকারি বালক উচ্চ বিদ্যালয় এর প্রথম মহিলা প্রধান শিক্ষক হিসেবে দ্বায়িত্ব পালন করেন।
তবে,রানী বিলাসমনণি শিক্ষা পরিবারের সবচেয়ে বেশি আলোচিত এবং বিখ্যাত প্রধান শিক্ষক হলেন জাতীয় পুরস্কার প্রাপ্ত বিশিষ্ট ভাওয়াল গবেষক জনাব মোঃ নূরুল ইসলাম (ভাওয়াল রত্ন)। তিনি তিন বার এই বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক পদ অলংকৃত করেছেন। প্রথমবার (০১-০৮-১৯৭১ হইতে ৩০-০৬-১৯৭২) দ্বিতীয়বার (২৮-০৫-১৯৭৩ হইতে ২৫-০৮-১৯৮৭) এবং তৃতীয় ও শেষবার (২৬-০৬-১৯৮৮ হইতে ০৯-০১-১৯৯৪) প্রধান শিক্ষক পদে বহাল ছিলেন। তিনি দুইবার বাংলাদেশের শ্রেষ্ঠ শিক্ষক পদক অর্জনের গৌরব অর্জন করেছেন। ১৯৭৮ সালে তিনি ঐতিহাসিক রাজবাড়ি ময়দান এ গাজীপুর স্বতন্ত্র মহুকুমা হিসেবে ঘোষনা করতে তৎকালীন রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান বীরউত্তম বরাবর এক সুবিশাল জনসমাবেশে উন্মুক্ত চিঠি পাঠ করেন এবং তা রাষ্ট্রপতির দপ্তরে প্রেরণ করেন। এর ফলে অতি সত্তর গাজীপুর মহুকুমা হিসেবে স্বীকৃতি পায় এবং পরবর্তীতে এরশাদ সরকার দেশের সকল মহুকুমাকে জেলায় রূপান্তরিত করলে ১৯৮৪ সালে জেলা হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হয়। তার দ্বিতীয় মেয়াদকালে (১লা এপ্রিল,১৯৮১) "রানী বিলাসমনি স্কুল" সরকারি অনুমোদন পায় এবং এর নাম হয়ে যায় বর্তমানের রাণী বিলাসমনি সরকারি বালক উচ্চ বিদ্যালয়। উল্লেখ্য, স্কুলটির প্রতিষ্ঠাকালীন নাম "এম ভি স্কুল" ছিল বলে জানা যায়।
এ বিদ্যালয়ে নুরুল ইসলাম ভাওয়ালরত্ন, এ টি এম জালাল উদ্দিন খান বিটি, ইসমাইল হোসেন, জুলফিকার আলী, মুল্লুক হোসেন, দেলোয়ার হোসেন, অক্ষয় কুমার সাহা, ফজলুল কবির, অশোক কুমার নাথ, শৈলেন মুখার্জি, এ এম মোস্তাইন নুর রহমান, আব্দুর রাজ্জাক স্যারদের মত প্রবাদপ্রতিম বিদ্বজ্জন পাঠদান করেছেন।
শিক্ষার্থীবৃন্দ
সম্পাদনাঐতিহ্যমন্ডিত এ বিদ্যাপীঠের ছাত্ররা সমাজ-রাষ্ট্রের অনেক গুরুত্বপূর্ণ পদে অধিষ্ঠিত ছিলেন-আছেন। সাবেক মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক , ঢাকার সাবেক মেয়র সাদেক হোসেন খোকা, সাবেক প্রতিমন্ত্রী ও গাজীপুর সিটি কর্পোরেশন এর প্রথম মেয়র অধ্যাপক এম এ মান্নান, প্রয়াত সাংসদ মোঃ হাবিবুল্যাহ, সড়ক বিভাগের সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম মিলু, রিয়ার এডমিরাল (অব:) আমির আহমদ মোস্তফা, ব্রিগেডিয়ার (অব:) কাজী মাহমুদুল হাসান, ব্রিগেডিয়ার (অব:) আবু সোহেল, সাবেক সচিব মোহাম্মদ আসাদুজ্জামান,প্রখ্যাত ইন্জিনিয়ার ড. এম এ কাদের,অতিরিক্ত সচিব আমজাদ হোসেন,অতিরিক্ত সচিব আখতার হোসেন খান, যুগ্ম সচিব আবুল কাসেম তালুকদার,রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় এর অধ্যাপক আব্দুল গফুর ,ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এর অধ্যাপক ড.আমজাদ হোসেন, সাবেক অতিরিক্ত সচিব আখতার হোসেন, বঙ্গতাজ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিকেল কলেজ এর পরিচালক (ভারপ্রাপ্ত ) আলী হায়দার খান, অধ্যাপক ইয়াকুব আলী সরকার,খালেদ মাহবুব মোর্শেদ(কাজল)মহাব্যবস্থাপক,বাংলাদেশ ব্যাংক, অধ্যাপক শহীদুল্লাহসহ উজ্জ্বল সব তারকারা এ বিদ্যালয়ে পড়াশোনা করেছেন । প্রতিষ্ঠিত-সফল শিক্ষার্থীদের তালিকা করলে তা দীর্ঘ থেকে দীর্ঘতর হবে। এ বিদ্যালয়টি কত চিকিৎসক, প্রকৌশলীর জন্ম দিয়েছে তার ইয়ত্তা নেই।
এছাড়াও প্রয়াত জনপ্রিয় অভিনয় শিল্পী আহমেদ রুবেল এবং জনপ্রিয় সংগীত ব্যান্ড হাইওয়ে এর প্রধান ভোকালিস্ট ইথার হাসান এই বিদ্যাপীঠেরই কৃতি ছাত্র।
খেলার মাঠ
সম্পাদনাবিদ্যালয়ের ঠিক সামনেই অবস্থিত ঐতিহাসিক রাজবাড়ি ময়দান। এটিই মূলত খেলার মাঠ হিসেবে ব্যবহার করা হয়। তবে নিরাপত্তা জনিত কারণে বাউন্ডারি দিয়ে ক্যাম্পাসের জন্য নির্ধারিত অংশ আলাদা করা হয়েছে।
মুক্তিযুদ্ধে অবদান
সম্পাদনা১৯৭১ সালে পাকিস্তানী হানাদার বাহিনীর বিরুদ্ধে স্বাধীনতাযুদ্ধে অংশ নিতে গাজীপুরে মোঃ সামসুল হকের তত্ত্বাবধানে মোঃ হাবিবউল্লাহ এবং আ ক ম মোজাম্মেল হক এর নেতৃত্বে ডাঃ সাঈদ বক্ম ভূঁইয়া, আবদুল বারিক মিয়া, মোঃ হয়রত আলী, শ্রমিক নেতা মোতালেব, মোঃ শহীদুল্লাহ বাচ্চু, মোঃ নুরুল ইসলাম (ভাওয়াল রত্ন) প্রমুখ এগিয়ে নিয়ে যান ।মরহুম মোঃ হাবিবউল্লাহ ও আ ক ম মোজাম্মেল হক এর ব্যবহৃত রাণী বিলাসমনি সরকারি বালক উচ্চ বিদ্যালয়ের হোস্টেলের কক্ষ ছিল স্বাধীনতা সংগ্রামের কেন্দ্র বিন্দু । থানার পশু চিকিৎসক ডাঃ আহমেদ ফজলুর রহমানের বাসভবনে ২রা মার্চ সন্ধ্যায় স্বাধীনতা আন্দোলনের রূপরেখা প্রণয়ন এবং জয়দেবপুর মুক্তি সংগ্রাম পরিষদ গঠন করা হয় । সংগ্রাম পরিষদের হাই কমান্ডে ছিলেন, মরহুম মোঃ হাবিবউল্লাহ, প্রয়াত ডাঃ মনীন্দ্রনাথ গোম্বামী , মরহুম এম.এ মোতালিব । আহ্বায়ক ছিলেন আ ক ম মোজাম্মেল হক, কোষাধ্যক্ষ-নজরুল ইসলাম খান। সদস্য নির্বাচিত হন মোঃ নুরুল ইসলাম ভাওয়ালরত্ন, মোঃ শহীদুল্যাহ বাচ্চু, শেখ মোঃ আবুল হোসেন, মোঃ আঃ ছাত্তার মিয়া, শহীদুল ইসলাম পাঠান জিন্নাহ, অধ্যাপক আয়েশ উদ্দিন ও মোঃ হারুন-অর-রশীদ ।
তথ্যসূত্র
সম্পাদনাএই নিবন্ধটি অসম্পূর্ণ। আপনি চাইলে এটিকে সম্প্রসারিত করে উইকিপিডিয়াকে সাহায্য করতে পারেন। |