রজার টলচার্ড
রজার উইলিয়াম টলচার্ড (ইংরেজি: Roger Tolchard; জন্ম: ১৫ জুন, ১৯৪৬) ডেভনের টরকুয়াই এলাকায় জন্মগ্রহণকারী সাবেক ইংরেজ আন্তর্জাতিক ক্রিকেটার ও আম্পায়ার।[১] ইংল্যান্ড ক্রিকেট দলের অন্যতম সদস্য ছিলেন তিনি। ১৯৭০-এর দশকের শেষদিকে সংক্ষিপ্ত সময়ের জন্যে ইংল্যান্ডের পক্ষে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অংশগ্রহণ করেছেন।
ব্যক্তিগত তথ্য | ||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|
পূর্ণ নাম | রজার উইলিয়াম টলচার্ড | |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
জন্ম | টরকুয়াই, ডেভন, ইংল্যান্ড | ১৫ জুন ১৯৪৬|||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
ডাকনাম | টলি | |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
উচ্চতা | ৫ ফুট ৯ ইঞ্চি (১.৭৫ মিটার) | |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
ব্যাটিংয়ের ধরন | ডানহাতি | |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
বোলিংয়ের ধরন | ডানহাতি অফ ব্রেক | |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
ভূমিকা | উইকেট-রক্ষক, আম্পায়ার | |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
আন্তর্জাতিক তথ্য | ||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
জাতীয় পার্শ্ব |
| |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
টেস্ট অভিষেক (ক্যাপ ৪৭৩) | ১ জানুয়ারি ১৯৭৭ বনাম ভারত | |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
শেষ টেস্ট | ১১ ফেব্রুয়ারি ১৯৭৭ বনাম ভারত | |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
একমাত্র ওডিআই (ক্যাপ ৪৮) | ১৩ জানুয়ারি ১৯৭৯ বনাম অস্ট্রেলিয়া | |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
ঘরোয়া দলের তথ্য | ||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
বছর | দল | |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
১৯৬৫ - ১৯৮৩ | লিচেস্টারশায়ার | |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
খেলোয়াড়ী জীবনের পরিসংখ্যান | ||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
| ||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
উৎস: ইএসপিএনক্রিকইনফো.কম, ২১ জুন ২০২০ |
ঘরোয়া প্রথম-শ্রেণীর ইংরেজ কাউন্টি ক্রিকেটে লিচেস্টারশায়ার দলের প্রতিনিধিত্ব করেন। দলে তিনি মূলতঃ উইকেট-রক্ষক হিসেবে খেলতেন। এছাড়াও, ডানহাতে ব্যাটিংয়ের পাশাপাশি ডানহাতে অফ ব্রেক বোলিং করতে পারতেন ‘টলি’ ডাকনামে পরিচিত রজার টলচার্ড।
প্রথম-শ্রেণীর ক্রিকেটসম্পাদনা
১৯৬৫ সাল থেকে ১৯৮৩ সাল পর্যন্ত রজার টলচার্ডের প্রথম-শ্রেণীর খেলোয়াড়ী জীবন চলমান ছিল। ওলবোরা হিল প্রেপ স্কুলে পড়াশুনো করেন। এরপর, ম্যালভার্ন কলেজে অধ্যয়ন করেছিলেন রজার টলচার্ড। উইকেট-রক্ষক হিসেবে লিচেস্টারশায়ারে পেশাদারী পর্যায়ে ১৯৬৫ থেকে ১৯৮৩ সাল পর্যন্ত পুরোটি সময় অতিবাহিত করেছিলেন। মাঝারিসারিতে ব্যাটিং করতে নামতেন।
১৯৭২-৭৩ মৌসুমে এমসিসি দলের সাথে ভারত ও পাকিস্তান গমন করেছিলেন। চমৎকারভাবে উইকেট-রক্ষণ কার্য সম্পাদন করতেন। তবে, অ্যালান নট ও বব টেলরের কারণে দূর্ভাগ্যজনকভাবে মাঠের বাইরে তাকে অবস্থান করতে হতো। তুলনামূলকভাবে প্রথম-শ্রেণীর ক্রিকেটে ৩১.১৩ গড়ে রান তুলে অ্যালান নটের চেয়ে এগিয়েছিলেন। এক পর্যায়ে ধারণা করা হয়েছিল যে, তিনি হয়তোবা উইকেট-রক্ষকের দায়িত্ব ছেড়ে দিয়ে টেস্ট পর্যায়ের ব্যাটসম্যানের দিকে ধাবিত হবেন।
আন্তর্জাতিক ক্রিকেটসম্পাদনা
সমগ্র খেলোয়াড়ী জীবনে চারটিমাত্র টেস্ট ও একটিমাত্র একদিনের আন্তর্জাতিকে অংশগ্রহণ করেছেন রজার টলচার্ড। সবগুলো টেস্টই ভারতের বিপক্ষে খেলেছিলেন তিনি। ১ জানুয়ারি, ১৯৭৭ তারিখে কলকাতায় স্বাগতিক ভারত দলের বিপক্ষে টেস্ট ক্রিকেটে অভিষেক ঘটে তার। ১১ ফেব্রুয়ারি, ১৯৭৭ তারিখে মুম্বইয়ে একই দলের বিপক্ষে সর্বশেষ টেস্টে অংশ নেন তিনি। এছাড়াও, তারিখে ১৩ জানুয়ারি, ১৯৭৯ তারিখে সিডনিতে স্বাগতিক অস্ট্রেলিয়া দলের বিপক্ষে একটিমাত্র একদিনের আন্তর্জাতিকে অভিষেক ঘটে তার।
১৯৭৬-৭৭ মৌসুমে ভারত গমনার্থে ইংল্যান্ড দলের সদস্যরূপে তাকে অন্তর্ভুক্ত করা হয়। দলের নিয়মিত উইকেট-রক্ষকের দায়িত্বে ছিলেন অ্যালান নট। ফলে, তিনি শুধুমাত্র ব্যাটসম্যান হিসেবে চার টেস্টে অংশগ্রহণ করেছিলেন। নিজস্ব প্রথম ইনিংসে ৬৭ রানের গুরুত্বপূর্ণ ইনিংস খেলেন। কিন্তু, পরবর্তী ছয় ইনিংসে সর্বসাকুল্যে মাত্র ৬২ রান যুক্ত করতে পেরেছিলেন।[১]
ইংল্যান্ডের পক্ষে টেস্ট ক্রিকেটে অংশ নিলেও কোনটিতেই উইকেট-রক্ষকের দায়িত্ব পালন করতে পারেননি। ১৯৭৬-৭৭ মৌসুমে ভারত সফরে কেবলমাত্র ব্যাটসম্যান হিসেবেই তাকে মাঠে নামানো হয়। বেপরোয়াভাব ছেড়ে দিয়ে দীর্ঘ সাড়ে পাঁচ ঘণ্টা ক্রিজে অবস্থান করে অভিষেক ইনিংসে ৬৭ রান তুলেন। টনি গ্রেগের সাথে ১৪২ রানের জুটি গড়েন। এরফলে, কলকাতা টেস্টে প্রথমবারের মতো ইংল্যান্ড দল গুরুত্বপূর্ণ জয় তুলে নেয়। সিরিজের চার টেস্টেই তার অংশগ্রহণ ছিল। দূর্দান্তভাবে ফিল্ডিং করেন। তবে, ব্যাট হাতে আর সফলতার স্বাক্ষর রাখতে পারেননি তিনি।
হেনরি ব্লোফেল্ড তার সম্পর্কে মন্তব্য করেছিলেন যে, ব্যাঙ্গালোরে ভাগবত চন্দ্রশেখরের বলে এলবিডব্লিউতে আউট হবার বিষয়টি সর্বাপেক্ষা বাজে ছিল।
অস্ট্রেলিয়া গমনসম্পাদনা
রজার টলচার্ড একদিনের ক্রিকেটের উপযোগী করে নিজেকে গড়ে তোলেন। সচরাচর এক রান তুলে নেয়ার ক্ষেত্রে তার জুড়ি মেলা ভার ছিল ও স্ট্রোকপ্লে’র দিকে মনোনিবেশ ঘটান। তবে, ইংল্যান্ডের পক্ষে মাত্র একটি একদিনের আন্তর্জাতিকে অংশ নিতে পেরেছিলেন। কিন্তু, এক ঘণ্টার মধ্যেই বৃষ্টির কবলে পড়ে খেলাটি পরিত্যক্ত হয়ে যায়।
১৯৭৮-৭৯ মৌসুমে অ্যাশেজ সিরিজে অংশ নেয়ার সুযোগ ঘটে রজার টলচার্ডের। অস্ট্রেলিয়া গমনার্থে তাকে ইংল্যান্ড দলের সদস্যরূপে রাখা হয়। সিডনিতে একদিনের আন্তর্জাতিকে উইকেট-রক্ষক হিসেবে তাকে খেলানো হয়। তবে, ৭.২ ওভার শেষে বৃষ্টির কবলে পড়ে খেলাটি পরিত্যক্ত ঘোষিত হয়। তবে, বাদ-বাকী ওডিআই অনুষ্ঠিত হবার পূর্বে চিবুকের হাড়ে আঘাতের কারণে তাকে ইংল্যান্ডে ফেরৎ পাঠিয়ে দেয়া হয়।[১]
খেলোয়াড়ী জীবনের শেষ তিন বছর লিচেস্টারশায়ার দলের অধিনায়কের দায়িত্বে ছিলেন।[১] ১৯৮১ থেকে ১৯৮৩ সময়কালে দল পরিচালনাকালে ১৯৮২ সালে একবার দলকে কাউন্টি চ্যাম্পিয়নশীপের দ্বিতীয় স্থানে নিয়ে যান।
অবসরসম্পাদনা
১৯৮৩ সালে অবসর গ্রহণের পর মাইনর কাউন্টিজ ক্রিকেটে অংশ নেন। ক্রিকেটের পাশাপাশি স্কোয়াশ ও র্যাকেট খেলায় দক্ষতা প্রদর্শন করেছেন। পেশাদারী খেলোয়াড় হিসেবে অবসর গ্রহণের পর তিনি ম্যালভার্ন কলেজে যুক্ত হন। সেখানে ১৯৮৪ থেকে ২০০৬ সাল পর্যন্ত ক্রিকেট ও র্যাকেট বিষয়ে প্রশিক্ষণ দিতেন।
তার ভ্রাতা জেফ টলচার্ড লিচেস্টারশায়ারের পক্ষে ক্রিকেট খেলতেন। এছাড়াও, তার ভ্রাতৃষ্পুত্র রজার টোজ নিউজিল্যান্ডের পক্ষে আন্তর্জাতিক পর্যায়ে খেলেছেন।
তথ্যসূত্রসম্পাদনা
- ↑ ক খ গ ঘ Bateman, Colin (১৯৯৩)। If The Cap Fits। Tony Williams Publications। পৃষ্ঠা 173। আইএসবিএন 1-869833-21-X।
আরও দেখুনসম্পাদনা
বহিঃসংযোগসম্পাদনা
- ইএসপিএনক্রিকইনফোতে রজার টলচার্ড (ইংরেজি)
- ক্রিকেটআর্কাইভে রজার টলচার্ড (সদস্যতা প্রয়োজনীয়) (ইংরেজি)