ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়

বাংলাদেশী বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়

ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয় বাংলাদেশের একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়[১] এটি ২০০১ সালে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় আইন ১৯৯২-এর অধীনে ফজলে হাসান আবেদের ব্র্যাক সংস্থার শাখা হিসাবে প্রতিষ্ঠিত হয়।

ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়
ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের সিল
নীতিবাক্যউৎকর্ষের অনুপ্রেরণা
ধরনবেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়
স্থাপিত২০০১
আচার্যরাষ্ট্রপতি মোহাম্মদ সাহাবুদ্দিন
ডিন
শিক্ষার্থী১৬,৩৭৫ (২০২৩ পর্যন্ত)
স্নাতক১০,০২৯
স্নাতকোত্তর১১৯১
ঠিকানা
খ-২২৪ বীর উত্তম রফিকুল ইসলাম এভিনিউ, মেরুল বাড্ডা
, ,
২৩°৪৬′২৩″ উত্তর ৯০°২৫′২৯″ পূর্ব / ২৩.৭৭৩১৫৪° উত্তর ৯০.৪২৪৬৩৬° পূর্ব / 23.773154; 90.424636
শিক্ষাঙ্গনশহুরে
পোশাকের রঙ            
সংক্ষিপ্ত নামব্রাকইউ
অধিভুক্তিবিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশন
ওয়েবসাইটbracu.ac.bd
মানচিত্র

ইতিহাস সম্পাদনা

স্যার ফজলে হাসান আবেদ ২০০১ সালে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় আইনের অধীনে ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করেন।[২] ঢাকার মেরুল বাড্ডায় অবস্থিত, বিশ্ববিদ্যালয়টি আমেরিকান লিবারেল আর্ট কলেজ মডেলের উপর ভিত্তি করে তৈরি। ২০০১ সালে ঢাকার মহাখালীতে মাত্র তিনটি বিভাগ এবং প্রায় ৮০ জন শিক্ষার্থী নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়টি শুরু হয়। [৩] [৪] ২০০৬ সালের জানুয়ারিতে এটিতে প্রথম সমাবর্তন অনুষ্ঠিত হয়। বিশ্ববিদ্যালয় বৃদ্ধির সাথে সাথে এটি প্রোগ্রামের সংখ্যা বৃদ্ধি করে এবং স্নাতকোত্তর ডিগ্রি চালু করে।[৫] উচ্চ শিক্ষাগত মানসম্পন্ন একটি লাইব্রেরির উন্নয়ন স্যার আবেদের কাছে গুরুত্বপূর্ণ ছিল। আয়েশা আবেদ লাইব্রেরিটি প্রতিষ্ঠার পরপরই ডিজিটালাইজড করা হয়।[৬] ২০২০ সালে বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০টি স্কুল, বিভাগ এবং ইনস্টিটিউটে ১১,২০০ শিক্ষার্থী ছিল।[তথ্যসূত্র প্রয়োজন]

একাডেমিক সম্পাদনা

স্কুল সম্পাদনা

  • ব্র্যাক বিজনেস স্কুল
  • ব্র্যাক ল স্কুল
  • জেমস পি গ্রান্ট স্কুল অফ পাবলিক হেলথ

ইনস্টিটিউট সম্পাদনা

  • ব্র্যাক ইনস্টিটিউট অব গভর্নেন্স অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট
  • ব্র্যাক ইনস্টিটিউট অব ল্যাঙ্গুয়েজ (বি.আই.এল.)
  • ব্র্যাক ইনস্টিটিউট অব এডুকেশন ডেভেলপমেন্ট
  • ব্র্যাক জেমস পি গ্রান্ট স্কুল অব পাবলিক হেলথ

কেন্দ্র সম্পাদনা

  • জলবায়ু পরিবর্তন ও পরিবেশগত গবেষণা কেন্দ্র
  • উদ্যোক্তা উন্নয়ন কেন্দ্র
  • নিয়ন্ত্রণ এবং প্রয়োগ গবেষণা কেন্দ্র
  • পেশাগত উন্নয়ন কেন্দ্র

বিভাগ/অনুষদ সম্পাদনা

  • স্থাপত্য
  • অর্থনীতি ও সামাজিক বিজ্ঞান
  • ইংরেজি
  • নৃবিজ্ঞান
  • গণিত ও প্রাকৃতিক বিজ্ঞান
  • ফার্মেসি
  • কম্পিউটার বিজ্ঞান ও প্রকৌশল
  • তড়িৎ ও বৈদ্যুতিন প্রকৌশল
  • বৈদ্যুতিক ও যোগাযোগ প্রকৌশল

প্রশাসন সম্পাদনা

উপাচার্য সম্পাদনা

২০১৮ সাল থেকে ২০২৩ সাল পর্যন্ত উপাচার্যের দায়িত্বে ছিলেন ভিনসেন্ট চ্যাং। এক মেয়াদে চার বছর দায়িত্ব পালনের পর তিনি সরে দাঁড়ান। নতুন উপাচার্য হিসেবে নিয়োগ পেয়েছেন সৈয়দ মাহফুজুল আজিজ।

যোগদানের বছর কার্যকালের মেয়াদ শেষ নাম
২০০১ ২০১০ জামিলুর রেজা চৌধুরী
২০১০ ২০১৪ আইনুন নিশাত
২০১৪ ২০১৮ সৈয়দ সাদ আন্দালিব
২০১৮ ২০২৩ ভিনসেন্ট চ্যাং
২০২৩ বর্তমান সৈয়দ মাহফুজুল আজিজ (ভারপ্রাপ্ত)

ক্যাম্পাস সম্পাদনা

স্থায়ী ক্যাম্পাস সম্পাদনা

এই বিশ্ববিদ্যালয়ের স্থায়ী ক্যাম্পাস নির্মিত হয়েছে মেরুল বাড্ডায়। নভেম্বর ২০২৩ পর্যন্ত অস্থায়ী ক্যাম্পাস মহাখালীতে শিক্ষা কার্যক্রম পরিচালিত হলেও জানুয়ারি ২০২৪ থেকে মেরুল বাড্ডার স্থায়ী ক্যাম্পাসে সকল কার্যক্রম পরিচালিত হচ্ছে।

আবাসিক ক্যাম্পাস সম্পাদনা

স্নাতকার্থীদের জন্য ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয় একটি বাধ্যতামূলক ত্রৈমাসিক সেমিস্টারের ব্যবস্থা করেছে। এটি টার্ক নামে পরিচিত। এই আবাসিক সেমিস্টার ক্যাম্পাসটি সাভার, ঢাকায় অবস্থিত। এই ক্যাম্পাসে পুরুষ ও নারী শিক্ষার্থীদের জন্য আলাদা ডর্মেটরি রয়েছে। পাশাপাশি শিক্ষকের থাকার ঘর, কম্পিউটার ল্যাব, শ্রেণিকক্ষ, সেমিনার হল শাল্লা (যা শাল্লা থেকে নামকরণ করা হয়েছে), সাধারণ স্থান, ভোজনশালা , গ্রন্থাগার, চিকিৎসা কেন্দ্র এবং মানসিক পরামর্শ কেন্দ্র রয়েছে।

সংস্থান এবং সুবিধা সম্পাদনা

  • আয়েশা আবেদ গ্রন্থাগার
  • জিডিএলএন কেন্দ্র
  • পরামর্শদান ইউনিট
  • লেখা কেন্দ্র
  • ক্যাফেটারিয়া
  • ক্লাব

আর্থিক সহায়তা সম্পাদনা

ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয় পূর্ণ অনুদান দেয়া থেকে শুরু করে আংশিক মওকুফসহ শিক্ষার্থীদের আর্থিক সহায়তা প্রদান করে।[৭]

বৃত্তি সম্পাদনা

  • কর্মক্ষমতা ভিত্তিক বৃত্তি
  • মেধাভিত্তিক বৃত্তি
  • বিনামূল্যে বৃত্তি

আর্থিক দাবিত্যাগ সম্পাদনা

  • সহোদর
  • ব্র্যাক বৃত্তিদান
  • প্রয়োজন ভিত্তিক বৃত্তি
  • শারীরিকভাবে প্রতিবন্ধী শিক্ষার্থী
  • ব্র্যাক-ইউ কর্মী শিশু বৃত্তি
  • মুক্তিযোদ্ধাদের সন্তান
  • পত্নী, বাবা - ছেলে / মেয়ে, মা - ছেলে / মেয়ে
  • ব্র্যাক কর্মীদের শিশু

বিতর্ক ও বয়কট সম্পাদনা

বাংলাদেশে পাঠ্যপুস্তক বিতর্কের ধারাবাহিকতায় ২০২৪ সালের জানুয়ারিতে অনুষ্ঠিত এক শিক্ষক সম্মেলনে ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন খন্ডকালীন শিক্ষক 'আসিফ মাহতাব' সপ্তম শ্রেণির পাঠ্য বইয়ের পাতা ছিঁড়ে রূপান্তরকাম বিরোধী প্রতিবাদ প্রদর্শন করেন।[৮][৯] এই প্রতিবাদের প্রতিক্রিয়ায় ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ আসিফ মাহতাবকে চাকরিচ্যুত করে। ঘটনাটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়লে অনেকেই ব্র্যাকের সমালোচনা করেন এবং ব্র্যাক সংশ্লিষ্ট সকল পণ্য ও সেবা বর্জনের আহ্বান জানান।[১০][৯]

শিক্ষক আসিফ মাহতাবকে চাকরিচ্যুত করার প্রতিক্রিয়ায় এবং রূপান্তরকামিতার বিষয়ে ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের অবস্থান স্পষ্ট করার আহ্বান জানিয়ে ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা বিক্ষোভ সমাবেশ করেন। বিক্ষোভ সমাবেশে শিক্ষার্থীরা ব্র্যাক সংশ্লিষ্ট সকল পণ্য, সেবা এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্লাস বর্জনের ঘোষণা দেন।[১১][১২] পাশাপাশি ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ রূপান্তরকাম বিরোধী প্রতিবাদের অংশ হিসেবে আড়ংব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয় বয়কটের আহ্বান জানান।[১৩]

তথ্যসূত্র সম্পাদনা

  1. "বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন"। ১৭ এপ্রিল ২০১৫ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৬ আগস্ট ২০১২ 
  2. "Südasien-Institut. Universität Heidelberg."। ১৭ অক্টোবর ২০১৮ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৬ ডিসেম্বর ২০২৩ 
  3. "Brac University Annual Report 2009" (পিডিএফ)। ৫ এপ্রিল ২০২৩ তারিখে মূল (পিডিএফ) থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৬ ডিসেম্বর ২০২৩ 
  4. BRAC (১৯৯৮)। Brac University Project Proposal and Application, Submitted to: Education Ministry and University Grants Commission। পৃষ্ঠা 8। 
  5. BRAC (১৯৯৮)। Brac University Project Proposal and Application, Submitted to: Education Ministry and University Grants Commission। পৃষ্ঠা 10। 
  6. BRAC (১৯৯৮)। Brac University Project Proposal and Application, Submitted to: Education Ministry and University Grants Commission। পৃষ্ঠা 9, 10। 
  7. "বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়, বৃত্তি নিয়ে পড়ালেখা"প্রথম আলো। ১৫ জানুয়ারি ২০০৭। ৬ মে ২০১৭ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৬ এপ্রিল ২০১৭ 
  8. "পাঠ্যবই নিয়ে কথা বলায় চাকরিচ্যুত ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক আসিফ মাহতাব"দৈনিক ইনকিলাব। ৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৪ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৪ 
  9. "আসিফ মাহতাবকে চাকরিচ্যুত, ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের তুমুল সমালোচনা"দৈনিক ইনকিলাব। ২২ জানুয়ারি ২০২৪ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৪ 
  10. "সামাজিক মাধ্যমে ব্র্যাক-বিকাশ-আড়ং বয়কটের ডাক; বাস্তবে যা দেখা গেলো"দ্যা বাংলাদেশ মোমেন্টস। ৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৪ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৪ 
  11. "ব্র্যাক বয়কটের ডাক শিক্ষার্থীদের"দৈনিক ইনকিলাব। ৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৪ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৩ 
  12. প্রতিবেদক, কালবেলা। "দাবি না মানায় ব্র্যাক বয়কটের ডাক শিক্ষার্থীদের"কালবেলা। ৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৪ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৪ 
  13. "আড়ং ও ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয় বয়কটের আহ্বান"দেশ রূপান্তর। ৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৪ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৪ 

বহিঃসংযোগ সম্পাদনা