ইলিয়াস আহমেদ চৌধুরী

বাংলাদেশী রাজনীতিবিদ

ইলিয়াস আহমেদ চৌধুরী (১৫ আগস্ট ১৯৩৪-১৯ মে ১৯৯১) যিনি দাদাভাই নামেও পরিচিত। বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের একজন রাজনীতিবিদ, গণপরিষদের প্রাক্তন সদস্য ও সাবেক সাংসদ। তিনি ১৯৭০ সালের নির্বাচনে পূর্ব পাকিস্তান প্রাদেশিক পরিষদের সদস্য নির্বাচিত হন। এর পর ১৯৭৩ সালের প্রথম জাতীয় সংসদে ফরিদপুর-১৩ (বিলুপ্ত) আসন থেকে ও ১৯৯১ সালের পঞ্চম জাতীয় সংসদে মাদারীপুর-১ আসন থেকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন।[১][২] স্বাধীনতা ও মুক্তিযুদ্ধে অবদানের জন্য তিনি ২০২২ সালে স্বাধীনতা পুরস্কারে ভূষিত হন।[৩]

ইলিয়াস আহমেদ চৌধুরী
ফরিদপুর-১৩ (বিলুপ্ত) ও মাদারীপুর-১ আসনের সংসদ সদস্য
কাজের মেয়াদ
১৯৭৩ – ১৯৭৫
কাজের মেয়াদ
২৭ ফেব্রুয়ারি ১৯৯১ – ১৯ মে ১৯৯১
পূর্ব পাকিস্তান গণপরিষদের সদস্য
কাজের মেয়াদ
১৯৭০ – ১৯৭১
ব্যক্তিগত বিবরণ
জন্ম (1934-08-15) ১৫ আগস্ট ১৯৩৪ (বয়স ৮৯)
দত্তপাড়া, শিবচর, মাদারীপুর, বেঙ্গল প্রেসিডেন্সি, ব্রিটিশ ভারত
(বর্তমান বাংলাদেশ)
মৃত্যু১৯ মে ১৯৯১
নাগরিকত্বব্রিটিশ ভারত (১৯৪৭ সাল পর্যন্ত)
পাকিস্তান (১৯৭১ সালের পূর্বে)
বাংলাদেশ
রাজনৈতিক দলবাংলাদেশ আওয়ামী লীগ, গণফোরাম
দাম্পত্য সঙ্গীফিরোজা বেগম মায়া চৌধুরী
সন্তাননূর-ই-আলম চৌধুরী, মজিবুর রহমান চৌধুরী
পিতামাতানুরুদ্দিন আহমেদ চৌধুরী, চৌধুরী ফাতেমা বেগম
প্রাক্তন শিক্ষার্থীঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, সরকারি হরগঙ্গা কলেজ
পুরস্কারস্বাধীনতা পুরস্কার (২০২২)
ডাকনামদাদাভাই

জন্ম ও প্রাথমিক জীবন সম্পাদনা

ইলিয়াস আহমেদ চৌধুরী ১৫ আগস্ট ১৯৩৪ সালে মাদারীপুরের শিবচরের দত্তপাড়া এলাকার জমিদার পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। তার বাবা নুরুদ্দিন আহমেদ চৌধুরী ও মা চৌধুরী ফাতেমা বেগম। তিনি দত্তপাড়ার টিএন একাডেমী থেকে শিক্ষা জীবন শুরু করে মুন্সিগঞ্জের সরকারি হরগঙ্গা কলেজ থেকে উচ্চ মাধ্যমিক এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বিএসসি পাশ করেন।[৪]

রাজনৈতিক ও কর্মজীবন সম্পাদনা

ইলিয়াস আহমেদ চৌধুরী ১৯৬৬ সালের ছয় দফা আন্দোলন, ঊনসত্তরের গণঅভ্যুত্থান ও ১৯৭১ সালের বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধে সংগঠক ছিলেন, একই সাথে মুজিব বাহিনীর কোষাধ্যক্ষ হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। তিনি বাংলাদেশ আওয়ামীলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য ও মাদারীপুর জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ছিলেন। এছাড়াও তিনি গণফোরামের রাজনীতিবিদ ছিলেন।[৫]

তিনি ১৯৭০ সালের নির্বাচনে পূর্ব পাকিস্তান প্রাদেশিক পরিষদের সদস্য নির্বাচিত হন। এর পর ১৯৭৩ সালের প্রথম জাতীয় সংসদে ফরিদপুর-১৩ (বিলুপ্ত) আসন থেকে ও ১৯৯১ সালের পঞ্চম জাতীয় সংসদে মাদারীপুর-১ আসন থেকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন।[৫][৬]

১৯৭৫ পরবর্তী সময়ে আওয়ামী লীগ পুনর্গঠন ও শেখ হাসিনার স্বদেশ প্রত্যাবর্তনে ভূমিকা পালন করেন তিনি।[৭]

তিনি দৈনিক বাংলার বাণী পত্রিকার সম্পাদক মন্ডলীর সভাপতি ছিলেন। আরামবাগ ক্রীড়াচক্রের সভাপতি ও খুলনা আবহানী ক্রীড়াচক্রের সভাপতি ছিলেন তিনি।[৭]

পারিবারিক জীবন সম্পাদনা

ইলিয়াস আহমেদ চৌধুরীর মা চৌধুরী ফাতেমা বেগম বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের বড় বোন। তিনি বিয়ে করেন খালাতো বোন ফিরোজা বেগম মায়া চৌধুরীকে। তার বড় ছেলে মাদারীপুর-১ আসনের সংসদ সদস্য নূর ই আলম চৌধুরী। ছোট ছেলে মজিবুর রহমান চৌধুরী (নিক্সন চৌধুরী) ফরিদপুর-৪ আসনের সংসদ সদস্য।[৪]

মৃত্যু সম্পাদনা

ইলিয়াস আহমেদ চৌধুরী ১৯ মে ১৯৯১ সালে জাতীয় সংসদের সদস্য থাকাকালে হৃদযন্ত্রের ক্রিয়া বন্ধ হয়ে মৃত্যুবরণ করেন।[৮] তার স্মৃতিতে পারিবারিক ভাবে প্রতিষ্ঠা করা হয় ইলিয়াস আহমেদ চৌধুরী ডিগ্রি কলেজ

সম্মাননা সম্পাদনা

তথ্যসূত্র সম্পাদনা

  1. "১ম জাতীয় সংসদে নির্বাচিত মাননীয় সংসদ-সদস্যদের নামের তালিকা" (পিডিএফ)জাতীয় সংসদবাংলাদেশ সরকার। ৯ সেপ্টেম্বর ২০১৮ তারিখে মূল (পিডিএফ) থেকে আর্কাইভ করা। 
  2. "৫ম জাতীয় সংসদে নির্বাচিত মাননীয় সংসদ-সদস্যদের নামের তালিকা" (পিডিএফ)জাতীয় সংসদবাংলাদেশ সরকার। ১৭ সেপ্টেম্বর ২০১৮ তারিখে মূল (পিডিএফ) থেকে আর্কাইভ করা। 
  3. "স্বাধীনতা পুরস্কার পাচ্ছেন ১১ ব্যক্তি-প্রতিষ্ঠান"চ্যানেল 24। ১৫ মার্চ ২০২২। সংগ্রহের তারিখ ১৫ মার্চ ২০২২ 
  4. "বঙ্গবন্ধুর ভাগ্নে ইলিয়াস আহমেদ চৌধুরী (দাদা ভাই)-এর ২৮তম মৃত্যুবার্ষিকী ১৯ মে | সারাদেশ"ittefaq। ২০২০-০২-০১ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০২০-০২-০১ 
  5. BanglaNews24.com। "বঙ্গবন্ধুর ভাগ্নে ইলিয়াস আহমেদের ২৮ তম মৃত্যুবার্ষিকী"banglanews24.com (ইংরেজি ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ২০২০-০২-০১ 
  6. "ইলিয়াস আহমেদ চৌধুরী"প্রথম আলো। সংগ্রহের তারিখ ২০২০-০২-০১ 
  7. "ইলিয়াস চৌধুরীর ২৮তম মৃত্যুবার্ষিকী রোববার"Risingbd.com (ইংরেজি ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ২০২০-০২-০১ 
  8. "বঙ্গবন্ধুর ভাগ্নে ইলিয়াস আহমেদের ২৮ তম মৃত্যুবার্ষিকী"বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম। ১৫ মে ২০১৯। সংগ্রহের তারিখ ১ ফেব্রুয়ারি ২০২০