মুজিব বাহিনী
মুজিব বাহিনী (বাংলাদেশ লিবারেশন ফোর্সেস নামেও পরিচিত) ১৯৭১ খ্রিস্টাব্দে বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধে অংশ গ্রহণকারী মুক্তিবাহিনীর একটি বিশেষ অংশ।
মুজিব বাহিনী | |
---|---|
নেতা | শেখ ফজলুল হক মনি আবদুর রাজ্জাক তোফায়েল আহমেদ সিরাজুল আলম খান |
অপারেশনের তারিখ | মার্চ - ডিসেম্বর ১৯৭১ |
সক্রিয়তার অঞ্চল | বাংলাদেশ |
মতাদর্শ | বাঙালি জাতীয়তাবাদ সমাজতন্ত্র গণহত্যা প্রতিরোধ ও প্রতিহত করা |
এর অংশ | মুক্তিবাহিনী |
মিত্র | ভারত |
বিপক্ষ | পাকিস্তান |
খণ্ডযুদ্ধ ও যুদ্ধ | বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ |
১৯৭১ খ্রিস্টাব্দের মে মাসের শেষের দিকে শেখ ফজলুল হক মনি,[১] আবদুর রাজ্জাক, তোফায়েল আহমেদ ও সিরাজুল আলম খান - এই চার যুবনেতার উদ্যোগে এই বিশেষ বাহিনী প্রতিষ্ঠা করা হয়।[২] এই বাহিনী অস্থায়ী মুজিব নগর সরকারের নিয়ন্ত্রণ বহির্ভুত ছিল। একই সঙ্গে এই বাহিনী স্বাধীনতা যুদ্ধে ভারতীয় মিত্রবাহিনীর সেনাপতি জেনারেল অরোরার নিয়ন্ত্রণের বাইরে ছিল। এই বাহিনীর প্রশিক্ষণ ও পরিচালনার দায়িত্বে ছিলেন জেনারেল সুজন সিং উবান, যিনি ভারতীয় স্পেশাল ফ্রন্টিয়ার ফোর্সের কমাণ্ডার (ইন্সপেক্টর জেনারেল) ছিলেন। ভারতের ভূখণ্ডে একটি গোপন স্থানে এই বাহিনীর সদস্যদের প্রশিক্ষণ দেয়া হতো যার তত্ত্ববধায়ক ছিলেন ব্রিগেডিয়ার টি. এস ওবেরয়। কর্ণেল বি ডি কুশাল এই বাহিনীর প্রশাসনিক বিষয়াদি দেখাশোনা করতেন।[৩] মেজর জেনারেল এস. এস. উবান ১৯৯৫ প্রকাশিত ফ্যান্টমস্ অব চিটাগাং গ্রন্থে লিখেছেন যে, এই মুজিববাহিনী মুক্তিযুদ্ধ কালে পার্বত্য চট্টগ্রাম এলাকায় স্পেশাল ফ্রন্টিয়ার ফোর্সের সহযোগী হিসাবে দায়িত্ব পালন করেছে।[৪] জনাব আব্দুল মালেক (লোহা মালেক), রাজনীতিবিদ, মুক্তিযুদ্ধের সংগঠক বাংলাদেশ লিবারেশন ফোর্স - বি এল এফ (বিলোনিয়া) প্রধান | দেশের দক্ষিণ অঞ্চলের মুক্তিযোদ্ধাদের সংগঠন ও ট্রেনিং এর জন্য তিনি অন্যতম ভূমিকা রাখেন। মুক্তিযুদ্ধের শেষে স্বাধীন বাংলাদেশে রক্ষীবাহিনী গঠিত হয়। এ সময় মুজিব বাহিনীর সদস্যদের নবগঠিত রক্ষীবাহিনীতে আত্মীকরণ করা হয়।[৫][৬]
১৯৭১ সালে ভূমিকা
সম্পাদনাযুদ্ধে মুজিব বাহিনির সঠিক সম্পৃক্ততা নিয়ে বিতর্ক রয়েছে। জাফরুল্লাহ চৌধুরী বলেন, "মুজিব বাহিনী মুক্তিযুদ্ধের জন্য যুদ্ধ করেননি।[৭] ২০১৪ সালে এ কে খন্দকারের বিরুদ্ধে ১৯৭১ঃ ভেতরে বাহিরে মুজিব বাহিনির বিরুদ্ধে গুন্ডামি ও লুটপাটের অভিযোগ আনার অভিযোগে মামলা করা হয়।[৮][৯] চরমপত্রের কথিকা এম আর আখতার মুকুল তার লেখা আমি বিজয় দেখেছি বইয়ে উল্লেখ করেছেন দেশের পশ্চিম রণাঙ্গনে মুজিব বাহিনী বরং মুক্তিবাহিনীর বিরুদ্ধেও সংঘর্ষে লিপ্ত হয়েছিল।[১০]
আরো দেখুন
সম্পাদনাতথ্যসূত্র
সম্পাদনা- ↑ রাঘাভান, শ্রীনাথ (২০১৩-১১-১২)। 1971 (ইংরেজি ভাষায়)। হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয় প্রেস। আইএসবিএন 978-0-674-73127-1।
- ↑ ইব্রাহিম, সৈয়দ মুহাম্মদ (২০১১-০২-০১)। মিশ্র কথন। ইজি পাবলিকেশন্স। পৃষ্ঠা ২৩০।
- ↑ মেজর জেনারেল মইনুল হোসেন চৌধুরী (অব:) বীরবিক্রম : এক জেনারেলের নীরব সাক্ষ্য, মাওলা ব্রাদার্স, ঢাকা, ২০০০ খ্রি. পৃষ্ঠা: ৩৬-৩৭।
- ↑ ইউবান, সুজান সিং (১৯৮৫)। Phantoms of Chittagong: The "Fifth Army" in Bangladesh (ইংরেজি ভাষায়)। Allied Publishers। আইএসবিএন 978-81-7023-042-7।
- ↑ আনোয়ার-উল আলম: রক্ষবিাহিনীর সত্য-মিথ্যা, প্রথমা প্রকাশণী, ঢাকা, ২০১৩।
- ↑ "Mujib Bahini sowed rift between Bangabandhu, Tajuddin"। দ্য ডেইলি স্টার (ইংরেজি ভাষায়)। ২০১৪-০৯-০৭। সংগ্রহের তারিখ ২০২০-১২-২১।
- ↑ "Mujib Bahini didn't fight liberation war" (ইংরেজি ভাষায়)। ২০২০-১২-৩০ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০২০-১২-২১।
- ↑ "AK Khandker sued for 'Mujib Bahini's looting' claim"। দ্য ডেইলি স্টার (ইংরেজি ভাষায়)। ২০১৪-০৯-১০। সংগ্রহের তারিখ ২০২০-১২-২১।
- ↑ খন্দকার, এ কে (২০১৪)। ১৯৭১: ভেতরে বাইরে। প্রথমা প্রকাশনা। আইএসবিএন 978-984-90747-4-8।
- ↑ মুকুল, এম আর আখতার। আমি বিজয় দেখেছি। অনন্যা প্রকাশনী। আইএসবিএন 9844126177।