বব ম্যাসি

অস্ট্রেলীয় ক্রিকেটার

রবার্ট আর্নল্ড লকিয়ার ম্যাসি (ইংরেজি: Bob Massie; জন্ম: ১৪ এপ্রিল, ১৯৪৭) পশ্চিম অস্ট্রেলিয়ার সুবিয়াকো এলাকায় জন্মগ্রহণকারী সাবেক ও বিখ্যাত অস্ট্রেলীয় আন্তর্জাতিক ক্রিকেট তারকা। ১৯৭২ থেকে ১৯৭৩ সময়কালে সংক্ষিপ্ত সময়ের জন্যে অস্ট্রেলিয়া ক্রিকেট দলের পক্ষে ৬ টেস্ট ও ৩টি একদিনের আন্তর্জাতিকে অংশগ্রহণ করেছেন।

বব ম্যাসি
ব্যক্তিগত তথ্য
পূর্ণ নামরবার্ট আর্নল্ড লকিয়ার ম্যাসি
জন্ম (1947-04-14) ১৪ এপ্রিল ১৯৪৭ (বয়স ৭৬)
সুবিয়াকো, অস্ট্রেলিয়া
ডাকনামফার্গ
ব্যাটিংয়ের ধরনবামহাতি
বোলিংয়ের ধরনডানহাতি মিডিয়াম-ফাস্ট
ভূমিকাবোলার
আন্তর্জাতিক তথ্য
জাতীয় দল
টেস্ট অভিষেক
(ক্যাপ ২৬০)
২২ জুন ১৯৭২ বনাম ইংল্যান্ড
শেষ টেস্ট৬ জানুয়ারি ১৯৭৩ বনাম পাকিস্তান
ওডিআই অভিষেক
(ক্যাপ ১৪)
২৪ আগস্ট ১৯৭২ বনাম ইংল্যান্ড
শেষ ওডিআই২৮ আগস্ট ১৯৭২ বনাম ইংল্যান্ড
ঘরোয়া দলের তথ্য
বছরদল
১৯৬৫-১৯৭৫ওয়েস্টার্ন অস্ট্রেলিয়া
খেলোয়াড়ী জীবনের পরিসংখ্যান
প্রতিযোগিতা টেস্ট ওডিআই এফসি এলএ
ম্যাচ সংখ্যা ৫২ ১৫
রানের সংখ্যা ৭৮ ১৬ ৩৮৫ ১৭
ব্যাটিং গড় ১১.১৪ ৯.৬২ ১৭.০০
১০০/৫০ ০/০ ০/০ ০/০ ০/০
সর্বোচ্চ রান ৪২ ১৬* ৪২ ১৬*
বল করেছে ১,৭৩৯ ১৮৩ ১০,৬১২ ৮৮৩
উইকেট ৩১ ১৭৯ ১৭
বোলিং গড় ২০.৮৭ ৪৩.০০ ২৪.৮৩ ২৫.২৩
ইনিংসে ৫ উইকেট
ম্যাচে ১০ উইকেট
সেরা বোলিং ৮/৫৩ ২/৩৫ ৮/৫৩ ৩/২২
ক্যাচ/স্ট্যাম্পিং ১/– ১/– ৮/– ৪/–
উৎস: ইএসপিএনক্রিকইনফো.কম, ২৬ আগস্ট ২০১৭

ঘরোয়া প্রথম-শ্রেণীর অস্ট্রেলীয় ক্রিকেটে ওয়েস্টার্ন অস্ট্রেলিয়ার প্রতিনিধিত্ব করেছেন তিনি। দলে তিনি মূলতঃ সুইং বোলার ছিলেন। স্বল্পতম খেলোয়াড়ী জীবনে টেস্ট ক্রিকেট অভিষেকে ষোল উইকেট দখল করে সবিশেষ কৃতিত্ব প্রদর্শন করেছেন বব ম্যাসি

প্রারম্ভিক জীবন সম্পাদনা

আর্নল্ড ও বারবারা ম্যাসি দম্পতির সন্তান তিনি। বেডফোর্ড পার্ক ইয়ুথ ক্লাবে দশ বছর বয়স থেকে ক্রিকেট খেলতে শুরু করেন তিনি। এসময় তিনি হিল ক্রেস্ট প্রাইমারি স্কুলে অধ্যয়ন করতেন। এরপর তিনি মাউন্ট ললে সিনিয়র হাই স্কুলে ভর্তি হন। পশ্চিম অস্ট্রেলিয়ার ক্লাব প্রতিযোগিতায় বাসেনডিন-বেজওয়াটারে যোগ দেন।[১][২]

১৯৬৫-৬৬ মৌসুমে ওয়েস্টার্ন অস্ট্রেলিয়ার পক্ষে অভিষেক ঘটে তার। সাউথ অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে প্রথম ইনিংসে তিনি শূন্য রানে আউট হন ও ৮১ রান দিয়ে কোন উইকেট লাভে ব্যর্থ হন। ঐ মৌসুমে শিল্ডের আর কোন খেলায় অংশ নেননি কিংবা ঐ বছর ওয়েস্টার্ন অস্ট্রেলিয়ার পক্ষে আর খেলেননি। ঐ বছরই তিনি স্কটিশ লীগের কিলমারনকে যোগ দেন। ইংরেজ কাউন্টি ক্রিকেটে নর্দাম্পটনশায়ারের অনুশীলনীতে যোগ দেন। কিন্তু দ্বিতীয় একাদশের পক্ষে দুই খেলায় ৩/১৬৬ দেবার পর কোন চুক্তিতে আবদ্ধ হননি তিনি।[১][২]

১৯৬৯ সাল পূর্বাঞ্চলীয় সমুদ্রযাত্রায় অংশগ্রহণের পূর্ব-পর্যন্ত নিজ রাজ্য দলে খেলার সুযোগ পাননি। প্রথম খেলায় দক্ষিণ অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে ৪/৭৫ পেয়েছিলেন। কিন্তু ঐ মৌসুমে তার ক্রীড়াশৈলী চোখে পড়ার মতো ছিল না। ১৯৬৯-৭০ অস্ট্রেলীয় মৌসুমে তিনি ১৫ উইকেটেরও কম পেয়েছিলেন। ১৯৭০-৭১ মৌসুমে সফরকারী ইংল্যান্ডের বিপক্ষে পশ্চিম অস্ট্রেলিয়ার প্রতিনিধিত্ব করেন। কিন্তু তিনি উইকেটশূন্য অবস্থায় থাকেন ও আন্তর্জাতিক দায়িত্ব পালন শেষে গ্রাহাম ম্যাকেঞ্জি ফিরে আসায় তার খেলার সুযোগ সীমিত হয়ে পড়ে। ওয়াকা গ্রাউন্ডে কুইন্সল্যান্ডের বিপক্ষে খেলার জন্য তাকে অন্তর্ভুক্ত করা হয়। ঐ খেলায় ৮/৯৫ পেয়ে রাজ্য দলে তার অবস্থান পাকাপোক্ত করেন।

১৯৭১-৭২ অস্ট্রেলীয় মৌসুমের শুরুতে অস্ট্রেলিয়া দলে খেলার জন্য অন্তর্ভুক্ত হন। সফরকারী দক্ষিণ আফ্রিকাকে বর্ণবৈষম্যবাদের অভিযোগে আন্তর্জাতিক ক্রীড়াঙ্গন থেকে নিষেধাজ্ঞা প্রদান করলে আয়োজকেরা দ্রুত মেলবোর্নে খেলা আয়োজন করেন। বহিঃবিশ্ব একাদশের বিপক্ষে দ্বিতীয় খেলায় অংশ নেন ও তিন উইকেট লাভ করেন। সিডনিতে পরের খেলায় ২১ ওভারে ৭/৭৬ পান। তন্মধ্যে গ্যারি সোবার্সেরও উইকেট ছিল। ফলশ্রুতিতে ১৯৭২ সালের অ্যাশেজ সফরে দলের সদস্যতা নিশ্চিত করেন।[২]

আন্তর্জাতিক ক্রিকেট সম্পাদনা

১৯৭২ সালে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে ডেভিড কোলি’র সাথে তার একযোগে টেস্ট অভিষেক ঘটে। লর্ডসে অনুষ্ঠিত টেস্টে উভয় ইনিংসে আট উইকেট লাভ করেন। খেলায় তার বোলিং পরিসংখ্যান ছিল ১৬/১৩৭। পরবর্তীতে ভারতের নরেন্দ্র হিরওয়ানি মাত্র এক রান কমে টেস্ট অভিষেকে ষোল উইকেট তুলে নিয়ে তার বিশ্বরেকর্ড ভঙ্গ করেন। কিন্তু উভয় বোলারের ক্ষেত্রেই তাদের টেস্ট খেলোয়াড়ী জীবন দীর্ঘস্থায়িত্ব পায়নি। উভয়েই ২৫-এরও কম টেস্টে অংশ নিয়েছেন।

২৪ আগস্ট, ১৯৭২ তারিখে ৩ ওডিআই নিয়ে গড়া প্রুডেন্সিয়াল ট্রফি প্রতিযোগিতার প্রথম খেলায় অস্ট্রেলিয়ার রস এডওয়ার্ডস, ডেনিস লিলি, বব ম্যাসি, পল শিহানগ্রেম ওয়াটসন এবং ইংল্যান্ডের ডেনিস অ্যামিস, জিওফ আর্নল্ড, ব্রায়ান ক্লোজ, টনি গ্রেগবব উলমারের একযোগে ওডিআই অভিষেক ঘটে।[৩] ম্যানচেস্টারের ওল্ড ট্রাফোর্ড ক্রিকেট গ্রাউন্ডে স্বাগতিক ইংল্যান্ডের বিপক্ষে অনুষ্ঠিত ঐ খেলায় তার দল ৬ উইকেটে পরাজয়বরণ করেছিল।

খেলার ধরন সম্পাদনা

ম্যাসি তার অসাধারণ চিন্তাশৈলীর জন্য স্মরণীয় হয়ে আছেন। পেস ও সঠিক নিশানায় বল ছুঁড়ে মারতে সবিশেষ পারদর্শীতা দেখিয়েছেন। এছাড়াও শেষ মুহুর্তে উভয় দিকেই বলকে সুইং করাতে পারতেন তিনি। সুপরিচিত ট্রাক্টর ব্রান্ড ম্যাসি-ফার্গুসনের নামানুসারে তার ডাকনাম ‘ফার্গ’ হয়েছে।[১][২]

তথ্যসূত্র সম্পাদনা

  1. "Wisden 1973 - Bob Massie"Wisden। ১৯৬২। সংগ্রহের তারিখ ২ আগস্ট ২০০৭ 
  2. Cashman; Franks; Maxwell; Sainsbury; Stoddart; Weaver; Webster (১৯৯৭)। The A-Z of Australian cricketers। পৃষ্ঠা 104–105। 
  3. "Prudential Trophy (1972): Scorecard of first ODI"। Cricinfo। সংগ্রহের তারিখ ফেব্রুয়ারি ৯, ২০১০ 

আরও দেখুন সম্পাদনা

বহিঃসংযোগ সম্পাদনা